নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রেদওয়ান রাফি

রেদওয়ান রাফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি আমেনা খাতুনের জীবনে কাহীনি ।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:০১

বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার পৌরসভাধীন বাঘানগর গ্রামের মৃত নো য়াব আলীর কন্যা ষাটো র্ধ্ব বৃ দ্ধা আমিনা খাতুন আজ ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবনযাপন করছেন । এমন হাজারও আমিনা রয়েছে যাঁদের খবর আমরা কখনও কেউ রাখি না । জানার ইচ্ছাও করিনা আমিনারা কেমন আছে । দীর্ঘ ১৫বছর ধরে ভিক্ষা করছেন তিনি । বাবা মায়ের মেঝো মেয়ে আমিনা বেগম । মক্তব পর্যন্ত পড়েছেন । ছোট বেলা কেঁটেছে বিলের জলে শাপলা তুলে আর খেলার মাঠে বৌ-ছি খেলে। অতিদারিদ্র বাবার ঘরে জম্ন নেয়া আমিনা ছিল বাবা মায়ের অত্যন্ত আদরের সন্তান। মাত্র ১২বছর বয়সে তার বাবা সখ করে তাঁকে পাশের বাড়ি দিনমজুর আবুবক্কর ছিদ্দিকের সঙ্গে সাদামাঠা আয়োজনে বিয়ে দেন । অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে অর্ধপেটা খেয়ে চলতে থাকে আমিনার সংসার জীবন। দাম্পত্য জীবনে তাঁদের ঘর আলো করে আসে পিয়ারা ও আশিক নামে দুই সন্তান । সন্তান দুইটি নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল আমিনা বেগমের। কিন্তু একমাত্র ছেলে আশিকের বয়স যখন ২১দিন, হঠাত আমিনার স্বামী আবুবক্করের দেখা দেয় মরণ ব্যাধি ক্যান্সার।সংসারে দেখা দেয় অমাবস্যারঘোর অন্ধকার। অর্থাভাবে একপ্রকার বিনা চিকিতসায় মারাযায় তাঁর স্বামী। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে বিচলিত না হয়ে আমিনা অন্যের বাড়িতে জিয়ের কাজ শুরু করেন। পিতার শূন্যতাকে কখনও বুঝতে দেয়নি তাঁর সন্তানদের। সংসার চালাতে গিয়ে প্রতিদিন একপ্রকার নীরব যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে তিনি অতিবাহিত করেছেন। স্বামীর রেখে যাওয়া মাত্র ৮শতাংশ জায়গায় বসবাস করতেনতিনি। অসহায়ত্বের সুযোগে স্বামীর রেখে যাওয়া শেষ সম্ভলটুকুও কেঁড়ে নেয় তার ভাসুর। এখন তিনি পাশের গায়ে তাঁর বাবার বাড়িতে থাকেন। আমিনা এর মধ্যে এক মাত্র মেয়ে পিয়ারাকে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় বিয়ে দেন। কিন্তু নিয়তি কি নির্মম পরিহাস হঠাত চলতি বছরের ৬ জুন আমিনার পেটে প্রচন্ড ব্যথা। পরীক্ষা করে ধরা পড়ে ৫কেজী ওজনের একটি টিউমার। তাতেও ভেঙে পরেননি তিনি। নিজের জমানো কিছু অর্থ আর মানুষের দেয়া অর্থসাহায্য দিয়ে ঢাকা সরোয়ারদী হাসপাতালে চিকিতসা নেয় সে। এই ভাবেই জীবন থেকে কেঁটে যায় অনেক গুলি সময়। এখন আগের মত প্ররিশ্রম করতে পারে না। বড় আশা ছিল একমাত্র ছেলে নবী হোসেন সংসারের হাল ধরবে। ছেলেকে বিয়ে করানোর পর, নারী ছেঁড়া ধন একমাত্র ছেলেও সময় মত মুখ ফিরিয়ে নেয়। নারায়ণগঞ্জের বন্দরের নবীগণঞ্জ এলাকায় স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। মায়ের খবর রাখে না ছেলে। নবী মিয়া নারায়ণগঞ্জ শহরে রিকশা চালায়। দীর্ঘ ৩৫ বছরের বুকের জমা দুসহ স্মৃতির কথাগুলি বলতে গিয়ে মনের অজানতে চোখের পানিতে বুক বেসে গেছে আমিনার। তাঁর এই বুকফাটা কষ্টের কথাগুলি শোনে আশেপাশের অনেকে তাঁর মত কেঁদে ফেলেন। এখন আমিনার মনে হয় বাঁচার জন্য খাওয়া, খাওয়ার জন্য বাঁচা নয়।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:০৮

এস এম রাসেল মাহমুদ বলেছেন: আমিনার মনে হয় বাঁচার জন্য খাওয়া, খাওয়ার জন্য বাঁচা নয়

বাংলাদেশে অনেক আমেনা আছে ।

ভালো লাগলো

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:২৭

রক্তলেখা বলেছেন: :(

ধন্যবাদ আপনাকে।

কিছু টাইপো আছে, ঠিক করে নিবেন।

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৪৫

মুশাসি বলেছেন: মনটা খারাপ হয়ে গেলো।

৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৪৪

কামরুল হাসান জনি বলেছেন: ধন্যবাদ রাফি ভাই এমন একটা সত্য ঘটনা পোষ্ট করার জন্য। ভাল লাগল পোষ্টটা। শুধু ভাল লাগলে হবে না আমাদের প্রত্যেকেরই এই আমেনার মত মানুষদের জন্য কিছু করা উচিত। এটা তাদের প্রতি আমাদের করুণা নয়, এটা আমারেদর দায়িত্ব। কারণ আমাদের সম্পদে তাদের অধিকার রয়েছে। ধন্যবাদ।

৫| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:০৯

রোকেয়া ইসলাম বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো। পোষ্টে অনেক অনেক ভালো লাগা রেখে গেলাম।
ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটা পোষ্টের জন্য। ভালো থাকবেন।

৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১২:১৯

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: মধ্যবিত্তের দুঃখ বিলাস। ভালো।

হাজারো আমেনাকে সমাজ কিভাবে সৃষ্টি করে জানেন তো?দুঃখ বিলাস করে কোনো লাভ নেই। অর্থনৈতিক তথা সমাজ কাঠামো পরিবর্তনের জন্য কাজ করুন। ধন্যবাদ।

৭| ২০ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১:১৬

রেদওয়ান রাফি বলেছেন: আপনাদের সকলেকেও ধন্যবাদ আমাকে যারা উত্‍সাহ করার জন্য ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.