![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষের জ্ঞানের পেয়ালা কখনো সম্পূর্ণ নয় আর একেবারে শূণ্যও নয়। তাই তৃষ্ণা মেটানোর সাধনায় ক্লান্তির অবকাশ নেই।
আজকাল আমাদের জীবনে সিদ্ধান্তের চুড়ান্ত হয় অনেক দূর সিদ্ধান্তহীনতার সাথে হাটার পর। এর কারণ হিসেবে আমরা অনেক কিছুকেই দাড়া করাতে পারি, এমনকি তা করিও।যেমনঃ জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের সহজলভ্যতা, একটি লক্ষ্যে পৌঁছানোর অনেক বিকল্প রাস্তা যা আমরা আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই তৈরি করেছি, সর্বক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষণ (মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য তাই এতে কোন দোষ আছে বলে আমি মনে করি না।), সবকিছুতেই জেতার একটা দৃঢ় বাসনা ইত্যাদি। একথা আমি মাথা পেতে মেনে নিব যে এসব বিষয়ে আমাদের কারই বিশেষ কোন হাত নেই। কেননা উন্নত হতে, সভ্য হতে, মাথা উচু করে বাচতে আমাদের সবারই এসব করতে হয়।
কিন্তু সমস্যাটা এসে দাঁড়ায় যখন আমরা কোন সিদ্ধান্ত নিতে যাই। খুবই সাধারণভাবে বর্ণনা করলে, প্রয়োজনীয় উপাদানের তুলনামুলক সহজলভ্যতা= আজকে কোন শার্টটা পরে বাইরে যাবেন, কিংবা কোন বাসটায় উঠবেন এরকম অনেক তুচ্ছ বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব। কারণ কেন যেন আপনার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলে পরের বাসটায় হয়তো ভিড় কম, একটা সিট পেলেও পেতে পারেন। শুধু তাই না, আরো অনেক ক্ষেত্রেই এটা হয়, যা হওয়া ঠিক এতটাই স্বাভাবিক যে আপনি কখনো তা reflex action এর কাতারে ফেলতে চাইবেন। এর জবাবে আপনি হয়তো বলবেন আমি আমার জন্য যেটা সেরা সেটাই তো বাছাই করে নিবো; ঈশ্বর বিদ্যা বুদ্ধি তো ঘাস খাওয়ার জন্য দেয় নি…….. আচ্ছা মানলাম।
এবার আসুন, আপনার লক্ষ্যে পৌছার অসংখ্য রাস্তা যে খোলা আছে তা আপনি জানেন।ধরুন আপনার উদ্দেশ্য পেশাজীবনে পর্বতচুম্বী সাফল্য অর্জন। আপনি কোন রাস্তায় যাবেন? যেমনটা হয় আমদের সদ্য কলেজে ওঠা কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের। কলেজ শেষে কোথায় ভর্তি হবে? ডাক্তারি পরবে নাকি ইঞ্জিনিয়ার হবে, নিজের ইচ্ছার পিছে ছুটবে নাকি বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবে? ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা অনেক বড় চিন্তার ব্যাপার হয়ে যায় তাদের জন্য। কোন রাস্তায় গেলে সে সফল হবে তা একমাত্র বিধাতাই জানেন (যদিও সফলতা ব্যাপারটা পুরোই আপেক্ষিক) ………আচ্ছা এটাও গেল।
সর্বক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষণ এই বিষয়টা একটু স্পর্শকাতর। তাই একে স্বার্থান্বেষণ না বলে আমরা একটু ভদ্র ভাষায় নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য কর্তব্য বলি। ধরুন আপনি একজন বিনিয়োগকারী। আপনি দুটো মনমত বিনিয়োগের সুযোগ পেয়েছেন। একটি একটু ছোট প্রজেক্ট, জনকল্যাণকর কিন্তু প্রচারবিমুখী। কিন্তু আরেকটি ঠিক আগেরটার মত জনস্বার্থে কাজ করে না কিন্তু এতে আপনি একটি বড় প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করার সুযোগ পাবেন যাতে আপনার প্রচারণার কাজও হবে। সেই প্রচারণা যদি আপনার কাজে নাও আসে তাও আপনি কেন যেন ২য় প্রজেক্ট টাই নিবেন, অনেকেই নিবেন, আমিও হয়ত নিতাম। আশা করি স্বার্থান্বেষণ বলতে আমি কি বুঝাতে চেয়েছি তা বুঝতে পারছেন।
এবার আসুন জীবনের সব দ্বন্দ্বে (উপরে কেবল ক্ষুদ্র মস্তিষ্কজাত কিছু তুচ্ছ উদাহরণ তুলে ধরেছি) আমাদের সিদ্ধান্ত কি হওয়া উচিত তাই বলি। অনেক কঠিন একটা বিষয়। এত সহজ করে বললে আপনাদের পছন্দ নাও হতে পারে। তবুও বলি- নিজেকে বিশ্বাস করে আপাতদৃষ্টিতে যা সঠিক বলে মনে হয় তাই করুন। ভালো লাগল না তো? তবে এটুকু জেনে রাখুন-“ No decision we make is eternally right or wrong. If anything was and we knew that before happening then world wouldn’t be such a mess” –Stephen Hawking. তাই নিশ্চিন্ত মনে যা সঠিক বলে মনে হয় তাই করুন। আর যেহেতু আপনি জানেন আপনি ঈশ্বর নন এবং ভুল আপনারো হতে পারে, তাই ভুল মেনে নেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখুন। এত বছর এতো মানুষের এতো ভুল সিদ্ধান্তর পরেও মানবজাতি অনেক এগিয়ে গেছে। তাই এটা মানতেই হবে, ভেবে বা না ভেবেই অসংখ্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আর আপনিও নিচ্ছেন।
©somewhere in net ltd.