নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
কোথায় যেন নিরবিচ্ছিন্নভাবে একটা শব্দ হচ্ছে। কিসের শব্দ তা ঠিক বোঝা যাচ্ছেনা।অবনী বেশ সাহসী ধরনের মেয়ে। ভয় ডর তার খুব একটা কোনদিনই ছিলো না।সে ভয় পাচ্ছে না তবে তার বিরক্ত লাগছে।
আজ অবনীর এই বাড়িতে অনেকক্ষণ ধরে একা একা রয়েছে। এ বাড়ির মালিক লিপি আর কাজল দম্পতি। ওরা কি একটা কাজে যেন বাইরে গেছে।লিপি সাধারণত বাইরে যায় না তবে কাজল অফিসের কাজে বাইরে থাকে বেশির ভাগ সময়।অবনী ওদের মামা মামী বলে ডাকে। আসল মামা মামী নয়। সে এবাড়িতে কাজের লোক হিসাবে থাকে।
বাড়িটা একদম ছিমছাম আর খুব সুন্দর সাজানো গোছানো।বাসের জন্য নিরিবিলি আর আরামদায়কও বটে।ঢাকা শহর থেকে একটু দুরে হলেও চমৎকার পরিবেশ ।সুখ স্বাচ্ছন্দের কোন কমতি নাই এখানে।
বাব্বা! এতোদিন ধরে কি কষ্টই না গেছে তার তেরো বছরের এই ছোট্ট জীবনে,অবনী ভাবে। এক ঘরে দশজন গাদাগাদি করে থাকা।কি একটা অবস্থা। এখন তো সে সব কথা ভাবতেই দম বন্ধ হয়ে আসে।দুঃস্বপ্নমনে হয়, তবে ছোট ভাইটার কথা তার খুব মনে পড়ে ।এবার গ্রামে গেলে ওর জন্য কিছু না কিছু কিনে নিয়ে যাবে।
দুমাস চব্বিশদিন হলো সে এই বাড়িতে এসেছে।এখানে আসার পর থেকে একটা জিনিস তার খুব খারাপ লাগে মনের মধ্যে, বেশ খানিকটা খচখচ করে বলা যায়। আহারে সে একা একা কত মজার মজার জিনিসি খায়।বাড়ির সবাই যদি একটু খেতে পারতো তাহলে কত ভালো হতো।ওরা তো বলতে গেলে না খেয়েই থাকে।
এখন তার বাবা অবশ্য প্রতি মাসে হাজার চারেক টাকা করে পায়। এটা অবনীর মাসিক বেতন।এই বাড়িতে কাজ করার দরুন মাসিক মাসোহারা। কাজ তেমন না,টুকটাক ফাইফরমাস। আনন্দেই আছে সে।কাজ শেষে টিভি নিয়ে বসে সে আরাম করে, লিপি মামীই বলেছে যত খুশি টিভি দেখো,টিভি জিনিসটা দারুণ আকর্ষনীয়।অবনীর টিভি দেখতে খুব ভালো লাগে।
সে মনে মনে ঠিক করে রেখেছে এবার বাবার সাথে দেখা হলে বাবাকে বলবে, অন্য ভাইওেবোনগুলোকেও না হয় শহরে এনে কাজে ঢুকিয়ে দিতে। অন্তত ভালো ভাবে খেয়ে পরে তো তারা বাঁচবে।সাথে কপাল ভালো হলে সুন্দর সুন্দর পোষাকও জুটে যেতে পারে। যেমন সে পেয়েছে।
গ্রামে কোন সুখ শান্তি ছিলো না তাদের
থাকবে কি করে দশজনের অভাবের সংসার নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা ছিলো। সবসময় তাদের পরিবারে ঝগড়া ফ্যাসাদ আর মারামারি লেগেই থাকতো।আর ছিলো প্রচন্ড খাবারের কষ্ট। কত দিন আর কচু ঘেচু খেয়ে থাকা যায় জানোয়ারের মতো।
অবনীর বাবা তার এক পরিচিত ভাইয়ের মাধ্যমে অনেক কষ্টে এই বাড়িটায় তার কাজের ব্যবস্থা করে দিলো। সহজে কি আর হচ্ছিলো।রহিম চাচার মেয়েটা আরেকটু হলে এখানে ঢুকে পড়ছিলো আর কি।
যাক সে সব কথা এখানে থাকতে মোটামুটি ভালো লেগেছে অবনীর,মায়ের কথা মাঝে মাঝে মনে পড়ে না তা নয়,ভাইবোনগুলোর কথাও তার খুব মনে পড়ে। বিশেষ করে খাওয়া দাওয়ার অঢেল আয়োজনের সময়।
মামা মামী এতোটাই ভালো যে তাকে যেন খাওয়াতে পারলেই বাঁচে। খুব খোঁজ খবর নেয়। নতুন জামাও কিনে দিয়েছে গুটি কয়েক।দুঃখের দিন শেষ এবার সুখ করো।অবনী মনে মনে ভাবে তারপর পরম তৃপ্তিতে এক পিস চিকেনে কামড় বসালো।
-আহ! দারুণ স্বাদ।
আজ এরা তাকেও বাইরে বেড়াতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলো, সে যায়নি। বাসায় বসে সে টিভিতে সিনেমা দেখবে আর খাবে,শহরে ঘোরাঘুরিতে তার একটা ভয় আছে, সে গাড়ির শব্দ খুব একটা পছন্দ করে না আর কেন জানি গাড়ি দেখলে তার মনে হয় এই বুঝি তার ঘাড়ে এসে পড়বে।
কিন্তু অনেকটা সময় হয়ে গেছে, সে বেশ অস্থির হয়ে ওঠে কখন যে আসবে মামা মামী! কারেন্ট চলে গেছে বেশ কিছুটা সময়। খুব গরম পড়ছে আজ। ছোটবেলা থেকেই তার কিছুতেই গরম সহ্য হয় না।গা হাত পা জ্বলে।
গ্রামে থাকতে গরমের দিনে পানিতেই কাটতো সারাটা সময়।সবাই তাকে রাজহাঁস বলে ডাকতো।
সেই সব দিনগুলোতে খুব স্বাধীনতা ছিলো কিন্তু অভাব ছিলো নিত্য সঙ্গী বলেই থাকা হলোনা সেখানে। ক্ষুধার জ্বালা যে কী জ্বালা তা সে ভালো করে জানে তাইতো সে এই স্বেচ্ছাবন্দিত্ব মেনে নিয়েছে।শহরে তার সাথে খুব বেশি মানুষের সাক্ষাৎ হয়নি যদিও তবু তার মনে হয়েছে শহরের মানুষ গুলো খুব ভালো।
এরা নানা পদের নানা ঢং এর খাবার বানায়।দারুন করে সাজু গুজু করে।ইচ্ছা মতো সুন্দর সুন্দর জায়গাতে বেড়াতে যায়। খাওয়া পরার চলা ফেরার কোন অভাব নেই এখানে। শুধু শান্তি আর শান্তি।
সন্ধ্যা হয়ে আসছে। আঁধার ঘনিয়ে এলো।এই এলাকায় বসতি অনেক পাতলা।
দুরের অন্যান্য বাড়িগুলোও কেমন যেন চুপচাপ ।একটু বেশিই নিরিবিলি মনে হচ্ছে আজ। দারুণ গুমোট গরমের পরে হঠাৎ করে দমকা বাতাস ছাড়লো । বিদ্যুৎ চমকাতে লাগলো ঘনঘন।কারেন্ট এখনো আসেনি। বাসায় মোম বা চার্জার লাইট জাতীয় কিছু আছে কিনা কে জানে। মামা মামী তো বলে গেছে তাড়াতাড়ি ফিরবে। সন্ধ্যার আগেই চলে আসবে। এখনো আসছে না কেন?
অবনীর কেমন যেন ভয় ভয় করছে। কাছে মনেহয় কোথাও বিড়াল ডেকে উঠলো।
মিয়াও!
এখানে এতোদিন এসেছে বিড়াল তো কোনদিন দেখেনি। বিড়াল এলো কোথেকে? অবনীর গা ছমছম করছে।
হঠাৎ ঝড় সেইসাথে বৃষ্টি শুরু হলো রান্নাঘরের জানালার কপাটগুলো বাড়ি খাচ্ছে ঝড়ো বাতাসে।কপাট বন্ধ করা দরকার কিন্তু অবনীর প্রচুর ভয় করছে। হঠাৎ কি যেন পড়ে গিয়ে ঝনঝনিয়ে উঠলো। বাইরে প্রচন্ড জোরে বাজ পড়লো ঠিক তখনি। অবনীর মনে হচ্ছে সে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যাবে। তার প্রচন্ড ভয় করছে। তার এতো ভয় করছে কেন? সে তো এরকম ভীতু না।জানালার কপাটগুলো লাগানোর দরকার,বৃষ্টি পানিতে ঘর ভরে যাবে না হলো।
হঠাৎ ডোর বেল বেজে উঠলো।আগে পিছে কিছু না ভেবে অবনী দ্রুত দরজা খুলে দিতেই চমকে গেলো।
-একি!
কিন্তু ভয়ে তার গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বের হলো না।
-ছুরি!
এতো বড় ছুরি সে জীবনেও দেখেনি। ছুরি উচু করে এগিয়ে আসছে কেন? এরা তাকে মারবে নাকি? যদি নাই মারে তো তার দিকে ছুরি উচিয়ে এগিয়ে আসবে কেন?সে মনে হচ্ছে এবার সত্যি সত্যি জ্ঞান হারাবে।এটা কি ভুল না স্বপ্ন?
জ্ঞান হারাবার আগে কোন রকমে সে শুধু মুখ দিয়ে উচ্চারণ করলো, আমারে মাইরেন না।আমারে ছাইড়া দেন।আমি বাড়ি যামু...........
কাজ শেষে লিপি আর কাজল দম্পতি দ্রুত অবনীর লাশ টুকরো টুকরো করে ডিপে রেখে দিলো।অনেকক্ষণ পরে ধোয়া মোছা শেষে নিশ্চিন্তে গা এলিয়ে কাজল তুপ্তির ঢেকুর তুলে বলল,
-যাক আগামী দু মাস নিশ্চিন্তে চলে যাবে।চলো কাজ শেষ টাটকা মাংস খাওয়া দাওয়া হলো।এবার একটু ঘুমিয়ে নেওয়া যাক।কাল সকালে অবনীর বাবার কাছে এ মাসের টাকাটা বিকাশ করে পাঠিয়ে দিতে হবে মনে করিয়ে দিও কিন্তু।
বাইরে তখনও ঝড়ের দাপট,একটা জানালার কপাট কি করে যেন আবার খুলে গেছিলো, লিপি কপাট লাগাতে লাগাতে হাসতে হাসতে বলল,
-তোমার ভাগ্নির মাংসটা কিন্তু দারুণ স্বাদের ছিলো, কি বলো?
কাজল ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠে বলল,
-এবার কিন্তু অন্য প্লানে কাজ করতে হবে।
লিপি কাজলের গলাটা আলতো করে জড়িয়ে ধরে বলল,
-আচ্ছা।ও নিয়ে তোমাকে আর ভাবতে হবে না। আমি ভেবে রেখেছি কি করতে হবে।
কাজল প্রবল কামনায় মলিপিকে সজোরে জড়িয়ে ধরলো।
পিশাচ কাহিনীঃশিকার
মোঃ রফিকুল ইসলাম।
২৩ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৪৮
ইসিয়াক বলেছেন:
সরি অনেক অনেক দেরি হয়ে গেলো।
এতো দেখি ক্যানাবালিজমের গল্প! আর সাবজেক্ট খুইজা পাইলেন না? আপনের চিন্তাধারা দেখি আস্তে আস্তে হিংস্র হয়া যাইতাছে। আপনের লগে দেখা-সাক্ষাতের চিন্তা বাদ। ডরাইছি!!!
#একটু মানুষের মাংস টেস্ট করলাম আর কি? কেন হিংসা হইতাছে । আপনে মানুষের মাংস খাইতে পারেন আর আমি পারি না? ডর খাইয়েন না আপনেরে খাইমু না।আচ্ছা মাইনসের মাংসের স্বাদ আপনে কেমনে পাইলেন?জাতি জানতে চায়
# আবার রি রাইট করার ইচ্ছা আছে। তখন নাম সহ অন্যান্য অসংগতিগুলো ঠিক করে দেবো। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। শুভকামনা বাঘ ভাইয়ু।
২| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৩
অজ্ঞ বালক বলেছেন: শারুখ খানের মতন কওয়া লাগে, একটু চেঞ্জ কইরা যদিও, আমিও বদমাইশ হইলাম আর দুনিয়াও খারাপ হইয়া গেলো। সবাই শেষে টুস্ট দিলে ক্যামনে কি!? সুন্দর হইসে ভাইডি। জোস।
২৮ শে আগস্ট, ২০২০ ভোর ৬:১১
ইসিয়াক বলেছেন:
পাঠে ও মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা রইলো।
ভালো থাকুন। নিরন্তর শুভকামনা।
৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৯
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: পিশাচ কাহিনী । কাজেই তাগো কাম-কাজ পৈশাচিক হবে এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু এবার মনে হ্য় পিশাচিনী ,পিশাচ কে খাওয়ার পায়তারা করবার লাগছে!!!!
৪| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: কি হচ্ছে দিন দিন আপনার?
হায় আল্লাহ!!!
৫| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:০৫
ঘরহীন বলেছেন: শেষে টুইস্ট থাকতে পারে, কিন্তু স্ল্যাশার ধরণের কিছু থাকবে ভাবি নি। সুন্দর।
৬| ২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:৫৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মানুষের গোস্ত মানুসে খায় !!
কেমন পিশাচ এগুলো
৭| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:২৪
সোহানী বলেছেন: আরে ধুর মিয়া, এতোদিন পরে সামুতে ঢুইকা দেখি ক্যাচাল আর মাইনষের মাংস খাওয়া খায়ি...... এর কুনু মাইনে হয়!!!!!!
৮| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১:৪৮
মা.হাসান বলেছেন: যশোরে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সেবকরা কিশোর সংশোধনাগারের তিনটা কিশোরকে খেয়ে ফেলেছে। প্রতিদিনই গরিবের ঘরের বাচ্চারা এরকম খাদকদের ক্ষুধা মিটাচ্ছে। সমাজপতিদের কল্যানে কাজল-লিপিদের খাদ্যের অভাব ঘটেনা।
খুব ভালো লিখেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯
ভুয়া মফিজ বলেছেন: এতো দেখি ক্যানাবালিজমের গল্প! আর সাবজেক্ট খুইজা পাইলেন না? আপনের চিন্তাধারা দেখি আস্তে আস্তে হিংস্র হয়া যাইতাছে। আপনের লগে দেখা-সাক্ষাতের চিন্তা বাদ। ডরাইছি!!!
আচ্ছা, মাইনসের গোস্তের টেসট নাকি ইকটু মিঠা মিঠা........আপনের অভিজ্ঞতা কি কয়?
কাজের মেয়ে হিসাবে অবনী বেশ আধুনিক নাম! আর দাড়ির পরে সবসময়ে একটা স্পেস দিয়েন (বেশীরভাগ সময়ে অবশ্য দিছেন), তাইলে পড়তে ভালো লাগে।