নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
[১]
কোন কোন মানুষের জীবনটা শুরু হয় ভুল দিয়ে। অল্প বয়সে সহপাঠীর মিথ্যা প্রলোভনে পড়ে শরীরের নেশায় মত্ত হয়ে ওঠে জবা। মা বাবার উদাসীনতা এ ক্ষেত্রে তাকে আরো সাহসী করে তোলে।
সমাজের চাপে পড়ে যখন শাসনের বেড়াজালে তাকে আবদ্ধ করার প্রচেষ্টা শুরু হয় ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে।সুযোগ বুঝে বাড়ি থেকে পালায় জবা।
এ ঘাট ও ঘাট ঘুরে এখন সে মেহেরজানের আয়ত্ত্বে ।
এতো দিনে সে তিনবার বিক্রি হয়েছে,হয়েছে অজস্রবার ধর্ষিতা।এখন তার
পরিবারের কাছে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে, ইচ্ছে করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে।কিন্তু পথ যে বন্ধ সে তা ভালো করেই জানে,ফিরবার আর কোন আর রাস্তাই নেই,সে যেনবন্দিনী এক অদৃশ্য জালে।এ জাল ভেদ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
সে এটাও জানে সে ফিরে গেলে সমাজ তাকে আর ফিরিয়ে নেবে না। এখন সে বুঝতে পারে কত বড় ভুল সে এ জীবনে করেছে।
আজ মেহেরজানের সকাল সকাল মেজাজ তুঙ্গে। নানা চিন্তায় মাথা খারাপ হবার জোগাড়।ইদানিং দৈনিক আয় রোজগারের অবস্থা মারাত্নক খারাপ।
এরকম চলতে থাকলে দল ভেঙে ফেলতে হবে।কিন্তু দল ভেঙে ফেললেও কি নিস্তার আছে নাকি?
মাসিক হিস্যা যেখানে যা দেবার ঠিকই নিয়মিত দিয়ে যেতে হবে।এ জাল এমনই জাল একবার ঢোকা যায় কিন্তু মুক্তি মিলবেনা মৃত্যু ছাড়া।
মেহেরজান দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।
তার বয়স হয়েছে, পুরানো দিনের মত তেজও নেই আর ক্ষমতাও নেই সেইভাবে।কাজেও উৎসাহ পায় না আর আগের মতো। কিছুদিন আগেও এ লাইনে সম্মান ছিলো বড় ছোট মানামানি ছিল।সবকিছুতে একটা অদৃশ্য নিয়ম ছিলো। ইনকামও ছিলো প্রচুর।
এখন এমন পরিস্থিতি যে ব্যবসা চালানো তো দুরের কথা, মান সম্মান রক্ষা করাই মুশকিল হয়েছে।ক্য়উ কাউকে মানে না, রোজগারের কথা না হয় বাদই গেলো।
মেহেরজান হাক দেয়,
-জবা ও জবা?
জবা পাশের রান্না ঘরেই আছে,কিন্তু সে উত্তর করে না। তার উত্তর করতে ইচ্ছা করছে না।সে গুনগুন করে গান গাচ্ছে।বন্ধু তিনদিন তোর বাইত গেলাম দেখা পাইলাম না।
মেহেরজান আবার গগন বিদারী হাঁক দেয়,
-কানে কথা যায় না নাকি,ও *নকি মা*?কখন ধরে ডাকি।কানের কি মাথা খাইছোস।
জবাও গগনবিদারী আওয়াজ তোলে
-এতো চেঁচাও কেন?
-তোর কথার ঝাঁঝ বাড়ছে কিন্তু কইলাম।
-কি কইবা কও।কাম আছে।সারাদিন শুধু ফেগর ফেগর।
-তোরে কিন্তু আমি এই মেহেরজান না থাকলে শেয়াল শকুনে ছিড়ইড়া খাইতো।খাইতো কিনা ক?
-এক ভাঙা রেকর্ড আর কতবার বাজাইবা।কি হইসে ঝাইড়া কাশো।শেয়াল শকুনে খাইতে আর বাকি আছে নাকি!ওই ভয় দেখাইয়ো না।
-তোর নাকি কাম কাইজে মন নাই।উড়াল দেওনের ধান্দা নাকি? পালাইলে বাঁচতে পারবি?
-কেডায় কইছে?
-সেইডা তোর জাননের কাম নাই।কাজ কাম ঠিক কইরা কর,তোরে কিন্তু লাস্ট ওর্য়ানিং দিতাছি, তেড়িবেড়ি করলে এমন জায়গায় বেইচা দিমু দিনে হাজার বার পানি তুইল্যা কুল করতে পারবি না।
জবা কিছু বলে না,জানে কিছু বলে লাভ নাই।এইসব তার নিয়তিতে আছে, সে মেনেই নিয়েছে।
-গত সপ্তাহের পোলাডার খবর কি?কি যেন নাম,মালেক না খালেক।
-দশ হাজার দিছে।আর মাসিক সিস্টেম কইরা নিছি।
-আর আলম সাহেবের মাইয়ার খবর কি?
-হাতে পায়ে ধরে।
-মায়া দেখাইলে কিন্তু ফাইস্যা যাবি।
জবা আত্নবিশ্বাসের সাথে বলে,
-খাইয়া কাম নাই, আজ টাকা দেওনের দিন,না দিলে পিকচার দেখামু,যাইবো কোই হালির পো হালি?
মেহেরজান আয়েশে চোখ বোজে।বিড়ি খেতে ইচ্ছা করতেছে,কিন্তু সকাল সকাল সে বাসি মুখে বিড়ি খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে অনেক আগে।চোখ বুজে বুজে সে ভাবতে থাকে তাড়াতাড়ি ব্যবসার ধরণ পাল্টানো লাগবে।তারপর কি জানি কি ভেবে সে হঠাৎ চোখ মেলে হাঁক দেয় ,
-আজ সন্ধ্যায় মিটিং ডাকিস তো ।জরুরী কথা আছে।কামাল আর বাবলু কই গেলি,ওই শু*রের বাচ্চারা ......সব কি বয়রা হইলি নাকি?
[২]
-ভাইজান ফুল নিবেন?টাটকা ফুল আছে,দাম কিন্তু সস্তা।
ছেলেটি আড় চোখে তাকায় তারপর দামী মোবাইলটায় সময় দেখে , রুম্পা এখনো এলো না,আধাঘন্টা লেট।অপেক্ষার প্রহরগুলো প্রচন্ড বিরক্তিকর।
আজ রুম্পার জন্মদিন।ফুল নেয়া যেতেই পারে কিন্তু কেন জানি ইচ্ছা করছে না।সে কি রুম্পার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।নাকি রুম্পা সুক্ষভাবে তাকে নিরুৎসাহিত করতে চাচ্ছে। ইদানিং রুম্পার আচরণ তার কাছে খানিকটা সন্দেহজনক লাগছে।
-ভাইজান একটা ফুল লন,পানির দামে দিমুনি।
-কত করে তোমার ফুল?
-বিশ টাকা প্রতি পিস।
-ঠিক আছে দুটো দাও।
-তিনটা নেন।একটা ফ্রী দিমুনে।
-দাও
মেয়েটি চারটি ফুল দেয়।ছেলেটি টাকা দেয়।মেয়েটি টাকা নিয়ে দাঁত দিয়ে ঠোঁট চেপে মুচকি হাসে, শিকার নিয়ে খেলতে তার ভালোই লাগে।সে তার সাথে থাকা ছোট ছেলেটার দিকে তাকিয়ে চোখ মারে।তারপর শুরু করে তার খেলা,
-ভাইজান কম দেন ক্যান।
-কই ষাট টাকাই তো দিছি।
-দিবেন তো আশি টাকা।
- কি বলো? একটা ফ্রী বললে না।
- ফ্রী তে খুব ঝোঁক দেখি? মেয়েটি একটা অশ্লীল ইঙ্গিত করে।চোখে মুখে তার গাঢ় প্রগলভতা।
-যাওতো এখান থেকে।ব্যস্ত আছি।
-কই যামু।টাকা মেটান চইলা যাই।কাম আছে।আপনের কাছে বইয়া থাকলে আমার চলবো না।
-ফুল বেচছো আমি কিনছি। টাকা পাইছো।এখন বিদেয় হও।এতো কথা কও কেন?
-আর বিশ টাকা।
-খামাখা ক্যাচাল করো কেন?
মেয়েটি এবার চিল্লাতে থাকে,
- আমি ক্যাচাল করি? আমি ক্যাঁচাল বাজ। আমি খারাপ মাইয়া? হায় আল্লাহ কয় কি? ফুল বেইচ্যা খাই তাই বইল্যা কি আমার মান সম্মান নাই। ফুল বেচি শরীর না, আপনে কেন গায়ে হাত দিলেন।মেয়েটির সাথে আসা ছোট ছেলেটি তৎপর হয় সেও এবার সুযোগ বুঝে চেঁচিয়ে ওঠে।
-ওই মিয়া আমাগো ফুলের টাকা দেন।আমরা যাই গা।আপনে আমার বইনের গায়ে হাত দিছেন ক্যান? আপনে আমার বইনের গায়ে হাত দিছেন ক্যান?
এর মধ্যে কিছু লোক জড়ো হয়ে যায়।আসলে তারা সবাই এইচক্রের সদস্য। তার মধ্য থেকে একজন জানতে চায় কি হয়েছে?ফুলওয়ালী মেয়েটি ইনিয়ে বিনিয়ে কাঁদো কাঁদো হয়ে ঘটনা বর্ণনা করে।তার পাতানো ভাইটি সাক্ষি দেয়।ছেলেটির ভয়ে মুখ শুকনো হয়ে আসে।এসব কি হচ্ছে সে কিছুই বুঝতে পারছে না।
[৩]
এই পার্কের এই অংশটা অতি মাত্রায় নিরিবিলি। তমালের কাজের জন্য বেশ আরামদায়ক।এই পরিবেশে খুব তাড়াতাড়ি তার ভাব আসে। পাখীর ডাক,বাতাসের শুনশান আওয়াজ বেশ মিষ্টি একটা পরিবেশ,আহ! কবিতা লেখার জন্য এর থেকে ভালো পরিবেশ ঢাকা শহরে কোথাও পাওয়া যাবে না।।
অল্প কয়েকজন চা ওয়ালা,বাদামওয়ালাআর একজন ফুলওয়ালী ছাড়া হকারদের বিরক্তিকর জ্বালাতনও নেই। দুরে দুরে কিছু প্রেমিক প্রেমিকা খোশ গল্পে মত্ত।তাতে অবশ্য কোন সমস্যা নেই বরং কবিতার প্লট সাজাতে বেশ সহায়ক।
তমাল প্রতিদিন ফুলওয়ালী মেয়েটিকে গভীরভাবে খেয়াল করে। এই মেয়েটিকে নিয়েও একটা কবিতা লেখা যায়।
মেয়েটির হাঁটাচলা ঘোরাফেরা কথাবলাতে কেমন একটা চেনাচেনা ব্যাপার রয়েছে ।কিছুতেই সে এই মেয়ের আকর্ষণ অগ্রাহ্য করতে পারছেনা।সে কি তাকে আর কোথাও দেখেছে?তার তো মনে পড়ছে না।
মেয়েটির বাহ্যিক পোষাক যা একটু অমলিন তাছাড়া অন্য সবখানে তার ভিন্ন মাত্রার জৌলুষ ছড়ানো।যা সত্যি দূর্লভ তার বর্তমান পরিবেশের সাথে। তমালের কেবলি মনে হয় মেয়েটি এই পরিবেশের সাথে যায় না।এর অন্য কোন পরিচয় আছে।তাকে জানতে হবে।
বিশেষ করে মেয়েটির মুখটি এতোটাই মায়াকাড়া যে চোখে চোখ পড়লে তমাল চোখ ফেরাতে পারে না কিছুতেই। যেন তার সাথে তার সাত জনমের সম্পর্ক।
এ কিসের টান? সে জানে না।
কয়েকদিনের চেষ্টায় সে মেয়েটি নাম জেনেছে,
মেয়েটির নাম জবা কুসুম।পেশায় ফুল,বাদাম,পানি বিক্রেতা,অমিত অবশ্য অন্য আরেকটি তথ্য দিয়েছে।তথ্যগুলো ভয়ানক।তমালের তাতে কিছু যায় আসে না,সে ওসব বিশ্বাস করে না ।
জবা মেয়ে হলে কি হবে? তার ভিতরে মেয়েলী ব্যাপারগুলো, রমনীসূলভ আচার আচরণগুলো সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে গেছে । সাহসেও সে দূরন্ত হয়ে উঠেছে দিনে দিনে।
জবা নিজেও বেশ কদিন ধরে খেয়াল করে দেখেছে ছেলেটি তার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে।কি এতো দেখে সে? কে জানে?সে পুরুষ চেনে।পুরুষের কাম ক্ষুধা তৃষ্ণ লোভ শয়তানি সমস্ত বিষয় তার নখদর্পনে এসব সে জীবন থেকে শিখেছে।
এ ছেলেটি যে খারাপ প্রকৃতির না সেটা সে ভালোই বুঝতে পারে।উঠতি যুবক।উঠতি যুবকদের ফাঁদে ফেলা খুব সহজ। পুরুষ মানুষকে ফাঁদে ফেলাই জবার আসল ব্যবসা।
একদিনে সামান্য বেচাকেনার সৌজন্যমূলক কথাতে ছেলেটিকে আটকে ফেলেছে সে।কিন্তু এই ছেলেটিকে কেন জানি তার শিকার বানাতে ইচ্ছা করছে না। কামালের দৃষ্টি শকুনের দৃষ্টি। তার দৃষ্টিতেও ধরা পড়েছে জবার গাফিলতি।সে ঠিক মেহেরজানের কাছে গিয়ে কুটনামি করেছে তার নামে।
জবা কি যেন ভাবে। সে কি একে সাবধান করবে? সরে যেতে বলবে? কিন্তু শিকার হাত ছাড়া হয়ে গেলে তো তার কপালে দুঃখ আছে।
সে একটু বাজিয়ে নেবার জন্য তমালের দিকে আজ দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে আসে।হাতে তার এক গুচ্ছ ফুল। সে তমালের সামনে দাড়িয়ে সরাসরি আক্রমণ চালায়।
-আ্যই মিয়া এই, হাঁ কইরা কি দেহেন?
-চমকে ওঠে তমাল,সে যেন কোন ভাবনায় ডুবে গেছিলো।অচেনা মেয়েটি তার সামনে দাড়িয়ে।মেয়েটি এভাবে সামনে এসে দাড়াবে সে সেটা ভাবতে পারেনি অবশ্য।
মাজায় হাত ঠেসে ধরে চোখ মুখ পাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে কি যেন বলে চলেছে দ্রুত তালে।
তমাল অবাক হয়ে প্রশ্ন করে,
-আমায় কিছু বলছো?
-হ আপনেরে ছাড়া তো আর কাউরে দেহি না।দেইখ্যা শুইনা তো ভদ্র ঘরের পোলা মনে হয়।চোখের নজর এতো খারাপ কেন?
-আমি কি খারাপ কিছু করেছি?
- না করেন নাই,কিন্তু করবেন।আপনের সব ভালো হইতে পারে কিন্তু নজর খারাপ।
তমাল উঠে দাড়াতে যায়।সে বিব্রত বোধ করে।
মেয়েটি আবার বলে
-ভালো চান তো চুপচাপ এইখান থাইক্যা ফুটেন।এর মধ্যে বেশ কিছু লোক জড়ো হয়ে গেছে।তমালের কেমন যেন ভয় ভয় করে।
লোকগুলোর মধ্যে ষন্ডা মতো একজন বলে, কি হইছে রে জবা?কি সমস্যা?
- ভাই কোন সমস্যা নাই। তোরা ফোট। আমার দেশি ভাই।একটু গাও গেরামের খবর লই আর কি।
তমাল কিছু বুঝতে পারে না সে শুধু হাঁ করে তাকিয়ে থাকে।
-দেশি ভাই মানে কি?আর তাকে চলে যেতে হবে কেন?
লোকজন সরে গেলেও কামাল ঠিকই দুর থেকে তাকে শকুনের দৃষ্টিতে দেখছে ,জবা পিচ্চিটাকে কৌশলে সরিয়ে দিয়ে,জবা নিচু স্বরে বলে।
-কি নাম আপনের?
-তমাল,
নাম শুনে কি যেন ভাবে মেয়েটি,কি একটু চিন্তা করে।সে যা অনুমান করেছিলো ঠিক তাই, এতোকাল সে যা করেনি আজ তাই করে,বেশ কিছু প্রশ্ন করে বসে সে।তার শরীর ঝিমঝিম করছে,চোখে পানি চলে আসতে চাচ্ছে,সে কোন রকমে নিজেকে সামলে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলে,
-ভাইরে এই পার্কে বইয়া কি করেন?
তমাল লজ্জা পায়।
-না মানে।একটু এ পাশটা নিরিবিলি তাই এদিকে বসি।কবিতা লিখি তো।এখানকার নিরিবিলি পরিবেশটা ভালো কবিতা লেখার জন্য।
-আপনে তো আমার ব্যবসা লাটে তুলবেন মিয়া।
-কেন?
-জায়গাটা ভালো না এটা কি আপনি জানেন?
-আমার কাছে তো খারাপ মনে হয়নি,বেশ শান্ত নিরিবিলি,ঝামেলাবিহীন।
-আপনে কিন্তু বিপদে পড়বেন।
-মানে?
-এখানে আর আইসেন না।
-বুঝলাম না।
-বেশি বুঝনের কাম নাই,আপনে সোজা হাইট্যা বাড়িত যান।আপনে খুব সরল সোজা ।জায়গাডা ভালা না।একা একা ঘুরঘুর কইরেন না।
-কেন?
-প্রশ্ন করেন ক্যান? নিজের বেআব্রু ছবি দেহনের সাধ হইছে।জবা জানে ভাষা খারাপ না দিলে কাজ হবে না।সহজসরল মানুষদের নিয়ে এই এক বিপদ।
তমাল কিছু বোঝে না তবে হঠাৎ করে তার অমিতের সতর্ক বানী মনে পড়ে।তারপর মনে পড়ে রবিনে কথা ।
রবিন কোন এক জায়গায় নাকি এ রকম মেয়ের পাল্লায় পড়েছিলো।
হঠাৎ করে তার দিগম্বর ছবি ফোনে ফোনে ছড়িয়ে পড়ে। সে বেচারা শেষে কোথায় যেন পালিয়ে বাঁচে।আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায় নি।বন্ধু বান্ধবী মহলে তাকে নিজে কত মজা?সবাই মজা নেয়। পৃথিবীটা এমনই।এতো কাছের বন্ধু বান্ধব অথচ ওই ঘটনার পরে তার কথা উঠলেই প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে তার স্পর্শকাতর অঙ্গ।
সে নিজেকে লুকাতে চায় অনবরত,বদলাতে চায় যে কোন মূল্যে নিজের সকলকিছু।বেশভূষা নিজের অবয়ব সবকিছু পরিবর্তনের সেকী দূরন্ত চেষ্টা তার সে সময়গুলোতে।তাতেও তার রক্ষা নেই যেন।অনেক পরে জানা গেছে মধ্যে প্রাচ্যের দেশে কামলা দেয়ার নাম করে পালিয়ে বাঁচে সে।
জবা শেষ বারের মতো বলে আপনারে যেন আর কোনদিন এইখানে না দেখি,দেখলে কিন্তু আমার চাইতে কেউ খারাপ হইবো না।
হঠাৎ কামাল এসে হাজির হয়।জবা তুই কাষ্টমার ভাগাইয়া দিতাছস কেন?
জবা ঝাঝিয়ে ওঠে,
-সেই কৈফিয়ত আমি তোরে দিমু না।
কামাল ফিক করে হাসে।বুঝবার পারছি তোর পাখনা ছাটনের টাইম হইছে।
জবা একটা বিড়ি ধরায়।তার চোখমুখের ভাব দেখে কামাল সরে যায়।
[৪]
আজ ভবিষ্যত কর্মসূচী নিয়ে মিটিং হবার কথা ছিলো। কিন্তু তার আগে জবাকে নিয়ে ওঠা অভিযোগের সুরাহা করতে হবে।মেহেরজানের মেজাজ এখন দারুণ অশান্ত। জবাকে আজ বেশ উদ্ধত লাগছে সে মনে হয় কিছুটা বেপরোয়াও।
মেহেরজান বাঁজখাই গলায় হাঁক দেয়,
-তুই কি বুঝবার পারছোস যে তুই আমাগো লগে বেইমানি করছোস।হারামজাদি *নকি *গি।
-মুখ খারাপ কইরো না যা কইবার আমারে কও। বাপ মায়েরে টানো কেন?
-ওই ছেমড়ি চান্দি গরম করাইস না কইলাম।তোরে কিন্তু কুকুর শিয়াল দিয়া খওয়াইবার পারি।
-জানি।জানি। জানি।
-দুই দুই বার সুযোগ পাইয়াও পোলাডারে তুই ছাইড়া দিছস।উত্তর দে,তোর মতি গতি কি ক, আমারে তাড়াতাড়ি ক’
জবা চুপ করে থাকে সে কোন উত্তর দেয় না আসলে তার কাছে...........
-কথা কস না কেন?
কেন জানি জবার কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না, তারপর কি ভেবে বলে ওঠে,
-আপনে কি আপনের আপনজনের লগে আকাম কুকাম করবার পারবেন ?
-জবা!!!!!!!
-চিল্লায়েন না।
-ওই ছেমড়ার লগে তোর কি সম্পর্ক। পিরিত করছোস? নাগর বানাইছোস,রসের নাগর?
-মুখ সামলাও কইলাম।
-সামলামুনা মুখ, কি করবি? মারবি? কেডায় তোরে এতো পাওয়ার দিছে? ক আমারে ?কেডায় তোরে এতো পাওয়ার দিছে?
- শুনবেন ওই পোলা আমার কি লাগে?
-হ শুনমু ক, কি লাগে তোর? কেন তুই আমার লগে বেইমানি করছোস ওই পোলার লাইগা?
-ওই পোলা আমার ভাই লাগে,ভাই।
-কেমুন ভাই?
জবা আর্তনাদ করে চিল্লায়ে ওঠে,
-আমার মায়ের পেটের আপন ভাই লাগে আপন ভাই।
-এতো খবর দিলো কে তোরে?তুই ওই পোলারে চিনলি কেমনে?
জবা চুপ।
-জবা চুপ থাকিস না।আমার চান্দি রম করাই না।কথা ক।
জবা কোন উত্তর দেয় না।সে তো তমালকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে। ডান হাতের ছয় আঙ্গুল দেখে তার
প্রথম সন্দেহ হয়।বাম হাতের জন্মদাগ দেখে সে আরো নিশ্চিত হয়।
জবা কোন কথা বলে না।সে ঠিক করেছে সে আর কিছুই বলবেনা তার যা হয় হোক। এ জীবন তার আর ভালো লাগে না। নিতান্ত আত্ন হত্যা করার মতো সাহস তার নেই। না হলে কবেই সে এই পাপের জীবন শেষ করে দিতো।
মেহের জানের গলার আওয়াজ দ্বিগুন হয়,
-কামাল বাবলু জবারে ভিতরে ল।ওর খাওন একবেলা। দরজায় তালা দিয়া চাবি আমারে দে।
কামাল আর বাবলু এগিয়ে আসে।জবাকে তার দুজন দুদিক থেকে ধরে।তাদের মুখে খুশির ঝিলিক।অনেকদিন পরে আজ তাদের খায়েশ পূরণ হবে।জবার অনেক ক্ষমতা ছিলো। মেহেরজানের খাস লোক ছিলো সে। আজ জবার কোন ক্ষমতা নেই। এই তো সুযোগ.....
জবাকে ঘরে তালা বদ্ধ করা হয়।জবা জানে মেহেরজান তাকে দিয়ে আর কাজ করাবে না।হাত বদল হতে চলেছে সে ,সেটাও সে ভালো করে জানে।এ লাইনে বেইমানির কোন ক্ষমা নাই।
কামাল আর বাবলু চলে যেতে
সে বিশেষ জায়গায় লুকিয়ে রাখা ধারালো ছুরিটা বের করে।শকুনের পাল আজ সুযোগ নেবেই।কাজে লাগবে ছুরিটা..........।
©রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮
ইসিয়াক বলেছেন: প্রতিবার যে ভাবে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয় সেভাবেই পরীক্ষা নিলে সঠিক হবে যদিও পরীক্ষা নেবার ক্ষেত্রে অনেক দেরী হয়ে গেছে।
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৪
অপু তানভীর বলেছেন: গল্প সুপাঠ্য !
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০০
ইসিয়াক বলেছেন: ভালো লেগেছে জেনে ভালো অনুপ্রাণিত হলাম ভাইয়া।
শুভকামনা
৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৯
সেনসেই বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০১
ইসিয়াক বলেছেন: সেনসেই আপনাকে আমার ব্লগে স্বাগতম।
পাঠে ও মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন।
ভালো থাকুন সবসময়।
৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমৎকার বিষয় উপস্থাপন I
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০২
ইসিয়াক বলেছেন:
ধন্যবাদ মহী ভাই্
৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫৫
শেরজা তপন বলেছেন: খুব মন দিয়ে পুরোটা পড়লাম। ভাল খুব ভাল লিখেছেন।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৪
ইসিয়াক বলেছেন: মন দিয়ে পড়েছেন জেনে কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ হলাম। ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ,সেই সাথে অনুপ্রাণিত হলাম।
শুভকামনা।
৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৩
পদ্মপুকুর বলেছেন: চাঁদের ক্ষতবিক্ষত পেছন দিকটা সুন্দর এঁকেছেন। প্লাস।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৭
ইসিয়াক বলেছেন:
মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। শুভকামনা রইলো।
৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: আগে বলেন আপনাকে ব্লগে নিয়মিত দেখি না কেন?
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৩
ইসিয়াক বলেছেন:
স্কুলের ক্লাস এখন এলোমেলো, একই ক্লাস কখনো কখনো দুই তিনবারও নিতে হয়। পরীক্ষা নিতে হয় ভেঙে ভেঙে। অনেক ছাত্র/ছাত্রীর নিজের মোবাইল বা ল্যাপটপ নেই, বাবার মোবাইল /ল্যাপটপে ক্লাস নিতে হয় । বাবারা অফিস বা কাজ থেকে ফিরলে তখন ক্লাস বা পরীক্ষা নিতে হয়। মোবাইলে সামুতে ঢুকতে পারি না। এতো কাজের পরে আর ব্লগে আসতে ক্লান্তি লাগে।
৮| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: মেহেরজান সিনেমাটা কি দেখেছেন?
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৩
ইসিয়াক বলেছেন: মেহেরজান সিনেমা সম্পর্কে কিছু নেতিবাচক কথা শুণেছিলাম বলে আর দেখেনি।
৯| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট করে গায়েব হয়ে গেলেন! মন্তব্যের উত্তর দিবেন না?
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৪
ইসিয়াক বলেছেন:
সামুতে ঢোকা কবে থেকে সহজ হবে?
১০| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৯
মা.হাসান বলেছেন: রফিক ভাই , আপনার লেখার ধার অনেক অনেক বেড়েছে। খুব ভালো লিখেছেন।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৯
ইসিয়াক বলেছেন:
প্রিয় মা,হাসান ভাই,
শুধু প্রশংসা না ভুলগুলো ধরিয়ে দিতে দ্বিধা করবেন না।যদিও সমালোচনা সবসময় তিতা লাগে।তবুও ভুল হলে শুধরে দেবেন। ভায়ের দাবি নিয়ে বলছি। আমি কিন্তু যা কিছু শেখারবা যেটুকু শিখেছি সামুরে ব্লগার ভাই বোনদের কাছ থেকে শিখেছি। আপনারা পাশে আসেন বলে আমি কিছু লিখতে সাহস পাই। শুভকামনা।
১১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ ভোর ৬:১৮
ভুয়া মফিজ বলেছেন: সমাজ-সংসার বড়ই জটিল আর কুটিল জায়গা। একবার ভুল সিদ্ধান্ত নিলে শোধরানো কঠিন, ভুলের জের সারাজীবনই টানতে হয়। সহজপাচ্য গল্প.....হজমে সমস্যা হয় নাই, এইটাই বড় কথা।
বাই দ্য ওয়ে, আমার আগের মন্তব্যের প্রতি-মন্তব্য কই? নাকি বেশী মজা লাগে নাই কইছি দেইখ্যা মাইন্ড খাইছেন! চাইলে ওমেরার মতো কইরা কইতে পারেন, আপনে খালি প্রশংসাই চান। তাইলে এমন প্রশংসা করুম যে আপনে এক্কেরে টাসকি খায়া যাইবেন। পরে নিজেই কইবেন.......ব্যাস ব্যাস, আর প্রশংসার কাম নাই!!
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২৬
ইসিয়াক বলেছেন:
হ্যাঁ সমাজ-সংসার সত্যি বড়ই জটিল আর কুটির জায়গা।
গল্প হজম হইছে জ্যাইন্যা খুশি লাগতাছে। এন্টসিডের টাকা তো বাঁচলো কি বলেন ?
# আগের মন্তব্যে প্রতি মন্তব্য দেয়া হয়নি কারণ ভীষণ কাজের চাপে ব্লগে আসা হয়নি খুব একটা। আর পোস্টে এতো এতো মন্তব্য দেখে ভয় পাইসি । এর চাইতে কবিতা লেখা আরামের। শুধু ধন্যবাদ দিলেই হয়ে যায়।
#আপনি অবশ্যই আমার লেখার সমালোচনা করবেন। ভুল ধরায়ে দেবেন। তা না হলে আমি শিখবো কি করে? আপনাদের আন্তরিকতার জন্যই তো বার বার সামুতে ফিরে আসি।শুভকামনা সবসময়।
১২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০০
রাজীব নুর বলেছেন: শুভ সকাল।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০০
ইসিয়াক বলেছেন:
এখন তো দুপুর...
শুভ দুপুর
১৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০১
করুণাধারা বলেছেন: গল্পের বিষয় আর বর্ণনা, দুই- ই চমৎকার লাগলো ইসিয়াক। এমন আরও লিখতে থাকুন।
১০ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:১১
ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। শুভকামনা রইলো।
১৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:২৭
কল্পদ্রুম বলেছেন: অফলাইনে অনেক আগেই পড়েছিলাম। তখন মন্তব্য করা হয়নি। ভালো লেগেছে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
সরকার কি ধরণের পদ্ধতিতে এইচএসসি পরীক্ষা নিলে সঠিক হবে?