নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একান্ত ব্যক্তিগত কারণে ব্লগে আর পোস্ট দেওয়া হবে না। আপাতত শুধু ব্লগ পড়বো। বিশেষ করে পুরানো পোস্টগুলো। কোন পোস্টে মন্তব্য করবো না বলে ঠিক করেছি। আমি সামহোয়্যারইন ব্লগে আছি এবং থাকবো। ভালো আছি। ভালো থাকুন সকলে।

ইসিয়াক

সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক গল্পঃ পরভৃতা -৪

২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:৩৮



৩য় পর্ব
(৪)
বেশ অস্বস্তিকর পরিবেশ, স্নেহলতা একটানা কেঁদেই চলেছে, অচিরেই কামরুন্নাহারের চোখও আদ্র হয়ে এলো ,সে বুঝতে পারছে না কী আলাপ করবে বা কী কথা বলবে। আসলে সে নিজেই তো জানে না, সে কেন এখানে এসেছে।

পলাশ তাকে নিয়ে কেন যে এ-ই দুঃখী, রোগে শোকে জীর্ণ মেয়েটির সাথে দেখা করতে এসেছে, সেটাও তার কাছে একটা রহস্য । তিনি প্রথমে অবশ্য ,প্রেম সংক্রান্ত কোন ব্যপার ভেবেছিলেন। কিন্তু এখন সে সব কিছু মনে হচ্ছে না।

আহারে কার না কার মেয়ে। কত কষ্ট পাচ্ছে, এ বাসার ভদ্রমহিলাটি ওর মা। তবে তার ব্যবহারটা অস্বাভাবিক। মেয়েটির সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না বোঝাই যাচ্ছে,চারিপাশে প্রকট আকারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সীমাহীন দারিদ্র্যের চিহ্ন। আর পলাশই বা হঠাৎ কোথায় গেল? বেশ কিছুটা সময় পরে কামরুন্নাহার বললেন,
-তোমার কী খুব কষ্ট হচ্ছে ? খারাপ লাগছে?
স্নেহলতা মাথা নাড়ালো,
-তুমি কিছু বলতে চাইলে বলতে পারো।আমি শুনছি।
-না ঠিক আছে। আপনি বসে থাকুন আমার পাশে, তাতেই আমার ভালো লাগবে।এটুকুই বা কে করে।
স্নেহলতা জোরে জোরে শ্বাস নিলো।
- ওই ভদ্র মহিলা কে হন তোমার?
- আমার মা মণি।
-নিজের মা?
স্নেহলতা অবাক চোখে চাইলো। সে আহত হলো কিনা বোঝা গেল না।
- বাসায় আর কেউ থাকে না?
- না। মা মণি আর আমিই থাকি।
-ও,তাহলে তো দেখা শোনার লোকের সমস্যা।
স্নেহলতা অনেক কষ্ট করে বলল,
- আমি কি আপনার হাতটা একটু ধরতে পারি? কামরুন্নাহার নিজের হাতটা বাড়িয়ে দিলেন।
এরপর আবার বিরতি অনেকক্ষণ আর কোন কথা নেই, দুজনে হাতে হাত দিয়ে বসে থাকলো চুপচাপ । কামরুন্নাহারেরও খুব ভালো লাগছে মেয়েটির হাতের স্পর্শ।
এদিকে কিছুক্ষণ পরে স্নেহলতার মা মণি এঘরে এসে এসে কটমটিয়ে বলে উঠলো,
- আপনি ওর হাত ছেড়ে বসুন। একটু সরে বসুন। রোগী মানুষ বোঝেন না?
স্নেহলতার মা মণির ব্যবহার অদ্ভুত লাগছে কামরুন্নাহারের কাছে। তিনি কামরুন্নাহারকে পছন্দ করছেন না তা বোঝাই যাচ্ছে। কামরুন্নাহার সরে এলেন,

আরো কিছুটা বাদে স্নেহলতার মা মণি ক'খানা বিস্কুট দিয়ে গেলো,বিস্কুট দেওয়ার সময়ও সে বেশ অদ্ভুতভাবে তাকাচ্ছিল। সে এই অতিথিদের যে একেবারেই পছন্দ করেনি তা তার হাবভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছিলো বারংবার।

চারদিকে প্রবল দারিদ্র্যের চিহ্ন , ঘরখানাও জীর্ণ তবে বেশ পরিপাটি ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। ভদ্রমহিলা ব্যবহারে রুক্ষ হলেও কাজে যে তিনি পটু তা বোঝা যাচ্ছে। দেয়ালে একটা ছবি ঝুলছে একজন ভদ্রমহিলার সাথে কিশোরী কন্যা । আশ্চর্যজনক ভাবে ছবিটির কিশোরীর সাথে কামরুন্নাহারের চেহারার প্রচন্ড মিল। এটা কি করে সম্ভব?

মেয়েটি হাতের স্পর্শে কি কোন জাদু আছে? তার মনের মধ্যে শান্তি শান্তি লাগছিল। এই মেয়েটির সাথে তার কি কোন সম্পর্ক আছে? কিন্তু.....
মেয়েটি বেশ দূর্বল তা স্পর্শে বোঝা গেছে। সমস্যা হচ্ছে মেয়েটি নিজের কথা তেমন কিছুই বলছে না এড়িয়ে যাচ্ছে। কামরুন্নাহার এখনও জানেন না এই মেয়েটির সাথে সে কেন দেখা করতে এসেছে। পলাশকে এখনই কোন প্রশ্ন করা যাচ্ছে না।
পলাশ অনেক আগেই আসছি বলে উঠে গেছে এখনও তার কোন খোঁজ নেই।কোথায় গেছে কে জানে!
এবার কামরুন্নাহার বললেন,
- তুমি কি আমায় কিছু বলতে চাও মা? মানে দেখা করতে চেয়েছিলে।সেজন্য বলছিলাম।
স্নেহলতা মাথা ঝাঁকালো।
-হ্যাঁ বলতে চাই।
-বলো,তোমার কি বলার আছে?
-আমি কি আপনাকে মা বলে ডাকতে পারি?
কামরুন্নাহার অবাক হলেন।
- মা! ডাকবে? কেন?
তারপর কী ভেবে বললেন,
-আচ্ছা ডাকো।
কামরুন্নাহারের বিয়ে হয়নি আজ অবধি ।মা হওয়া তো দুরের কথা তবে মা ডাক শোনার আকাঙ্খা তার মনে চির জাগরূক প্রতিটি নারীর মত।
এখন কামরুন্নাহারের কেন জানি মনে হচ্ছে মেয়েটি বুকে টেনে নিলে শান্তি লাগতো । সে জানে না কেন তার এই ভাবনার উদয় হচ্ছে, মনে হচ্ছে মেয়েটিকে সে অনেক দিন ধরে চেনে,কোথায় যেন দেখেছে। এমন মনে হচ্ছে কেন তার? এটুকু সময়ের মধ্যে কি কারো প্রতি এতোটা মায়া পড়া সম্ভব?
ছবির ওই মহিলাকেও তার চেনা চেনা মনে হচ্ছে। কেন এমন মনে হচ্ছে?
নানান কথা ভাবতে ভাবতে নিজের অজান্তে স্নেহলতাকে তিনি বুকে জড়িয়ে নিলেন। চোখ মুছিয়ে দিলেন, পরম মমতায় পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন, ওর সান্নিধ্যে তার নিজের মন প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে অজানা কোন কারণে। আহ!
কী যে ভালোলাগা ছুঁয়ে যাচ্ছে, এমন মনে হচ্ছে কেন তার?
চলবে
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
ছবিঃ গুগোল
ফুটনোটঃ পরভৃত ১. /বিশেষণ পদ/ পরপুষ্ট, পরের দ্বারা প্রতিপালিত। ২. /বিশেষ্য পদ/ পরের দ্বারা প্রতিপালিত এইজন্য. কোকিল। /পর+ভৃত/। /বিশেষণ পদ/ স্ত্রীলিঙ্গ. পরভৃতা।
গল্পটি সাত পর্বে সমাপ্ত। আশা করি সবাইকে পাশে পাবো। শুভকামনা।

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৪২

স্থিতধী বলেছেন: লেখাটা এখন চোখে পড়লো। তবে যেহেতু মাঝের পর্বে ঢুকে গেছি, ইনশাল্লাহ অন্য কোন সময়ে এসে একটানে সব পর্ব পড়ে ফেলবো। আশা করি আপনি আবার লেখা ড্রাফট করে ফেলবেন না! :P ভালো থাকেন ভাই।

২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৪৭

ইসিয়াক বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার। আগের পর্বগুলো সময় করে পড়বেন জেনে ভালো লাগলো।
#না লেখাটা আপাতত ড্রাফটে নেবার ইচ্ছা নাই্ :D
ভালো থাকুন শুভকামনা।

২| ২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:০২

ফয়সাল রকি বলেছেন: লেখা অনেকদূর এগোলো কিন্তু পড়া হয়নি। এবার পড়বো আশাকরি।
শুভ কামনা কবি।

২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:২৩

ইসিয়াক বলেছেন: আশা করি গল্পটি পড়ার পরে আপনার মন্তব্য পাবো ভাইয়া।
ভালো থাকুন । শুভকামনা রইলো।

৩| ২১ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:১৮

ST COVER SONG বলেছেন:

২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:২৫

ইসিয়াক বলেছেন: কোন মন্তব্যই তো করলে না। যাহোক ব্লগে অনেকদিন পরে এলে তো কেমন আছো? আশা করি ভালো আছো।
#তুমি কিন্তু খুব ভালো গজল গাও। শুভকামনা রইলো তোমার প্রতি।

৪| ২১ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:১৮

ST COVER SONG বলেছেন: tnx

২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:২৬

ইসিয়াক বলেছেন: তোমাকেও ধন্যবাদ।
শুভ সকাল

৫| ২১ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কবি এবং গল্পকার।

২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:২৮

ইসিয়াক বলেছেন:

মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়েছি অস্বীকার করবো না।
কিন্তু একথা বলার সময় এখনো আসেনি। এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। আমি তো কেবলি শিখছি। পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো বন্ধু।

৬| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪০

আমি সাজিদ বলেছেন: এইটা চার নম্বর পর্ব হবে? রহস্যময় ছবি।

২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:২৯

ইসিয়াক বলেছেন: ঠিক করে দিয়েছি প্রিয় সাজিদ ভাইয়া।
শুভকামনা রইলো।

৭| ২১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:২৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: হঠাৎ টার্ন নিলেন? বোধগম্য হলো না। যাইহোক পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
পর্ব সংখ্যাটা একবার চেখে করে নিন।

পোস্টে লাইক।
শুভেচ্ছা জানবেন।

২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৩০

ইসিয়াক বলেছেন: হে হে হে...।একটু ঘুরে ফিরে দেখছি ,পড়তে থাকুন। আশা করি ভালো লাগবে।

৮| ২৩ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১২:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কবি হলেও সাহসী মানুষ।

২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৩১

ইসিয়াক বলেছেন: কবি কিনা জানিনা তবে আমি সাহসী। তবে আগে আরো বেশি সাহসী ছিলাম।
শুভসকাল।

৯| ২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৩০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভালো লাগলো

২৩ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:২৩

ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকুন সবসময়।

১০| ২৩ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:২১

করুণাধারা বলেছেন: মনে হচ্ছে স্নেহলতার সাথে কামরুন্নাহারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে! দেখি কিভাবে রহস্যের আবরণ ওঠে!

২৯ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৩৩

ইসিয়াক বলেছেন: পরের পর্ব দিয়েছি আপু। আর এক পর্ব বাকি আছে। তাড়াতাড়ি পোস্ট দিব।
শুভকামনা রইল

১১| ২৪ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৪৬

সামিয়া বলেছেন: ভালো লিখেছেন

২৯ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৩৪

ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ আপু।

ভালো থাকুন সবসময়।

১২| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ২:০৩

মা.হাসান বলেছেন: গল্পের নামকরণের সার্থকতা পাওয়া গেলো। এখানেইতো শেষ হতে পারতো। দেখি আর কি চমক রেখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.