নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
(১)
ট্রেন এত লেট করবে কে জানতো? সকালে মাধবপুর জংশনের কাছাকাছি বাসের সাথে চলন্ত ট্রেনের মারাত্মক সংঘর্ষ হয়েছে।কয়েকজন নাকি মারা গেছে। সে কারণে অনেকটা সময় আটকে থাকতে হল ধোপাদীতে। কী যে বিশ্রী অবস্থা সেজন্যই এতটা দেরি।
কিন্তু পথের এই যাত্রায় এতটা রাত হয়ে যাবে আমার কল্পনাতেও ছিল না। এর আগে বেশ ক’বার ট্রেন জার্নি করেছি কোনদিন এরকম ঝামেলায় পড়তে হয়নি।
স্টেশনে নামতে দেখি পুরো স্টেশন একদম ফাঁকা।কাছাকাছি কয়েকটি কুকুর কুন্ডলী পাকিয়ে শুয়ে আছে। ফাঁকা স্টেশনে আমার মত একলা মেয়ের এত রাতে নামা উচিত অনুচিত ভাবার আগে ট্রেন নড়ে উঠলো ।
জহির বলেছে সে স্টেশনে থাকবে। আমি ওর কথার উপর ভরসা করে হুড়মুড়িয়ে নেমে এলাম।
এতক্ষণ আমার কম্পার্টমেন্টে আর কেউ না থাকাতে কেমন যেন ভয় করছিল।এখানেও তেমনি পুরো স্টেশনে আমি একা।অদ্ভুত শুনশান। নামার মধ্যে আমিই একজন নামলাম। এখানে ট্রেন মনে হয় বেশিক্ষণ দাড়ায় না।
ট্রেন চলে যাওয়ায় শব্দ মিলিয়ে যেতেই চারপাশটায় পিন পতন নিস্তব্ধতা নেমে এলো।
এই স্টেশনে দোকান পাট সবই আছে তবে কেন যেন একটা দোকানও খোলা নেই । সবগুলো বন্ধ। এদিক ওদিক তাকালাম লোকজন কোথাও নেই।ট্রেনে থাকাকালীন ভয় ভয় ভাবটা আবার ফিরে আসতে লাগলো।
অথচ জহির বলেছিল সে স্টেশনে রিসিভ করার জন্য থাকবে। ফোন দিচ্ছি জহির ফোন ধরছে না। ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। অদ্ভুত তো।
এখন কি হবে? রাত তো কম হয়নি!
এদিক ওদিক ভালো করে তাকাতে দেখতে পেলাম দুরে একটা ভিখারি অঘোরে ঘুমাচ্ছে। কি করবো ভাবছি... মাথায় কিছু আসছে না। বিপদে পড়ে গেলাম না তো। বরাবরই আমি সাহসী প্রকৃতির কিন্তু আজ এত ভয় আমাকে পেয়ে বসছে কেন?
হঠাৎ দেখি অন্ধকার ফুড়ে উদয় হলো এক যুবক। এত রাতে চোখে সানগ্লাস পরে আছে। অদ্ভুত বটে। রাতে অবশ্য কেউ সানগ্লাস পরে না। মুভমেন্ট আর চেহারা দেখে জহিরকে চিনতো বেশিক্ষণ লাগলো না।
ছবির বা ভিডিও কলের জহির আর এই জহিরের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই।মন দুলে উঠলো যেন আবার ধড়ে প্রাণ ফিরে এলো। দ্রুত এগিয়ে গেলাম জহিরের দিকে
জহির হাসছে,
- অনেক রাত হয়েছে এত রাতে যানবাহন পাওয়ার সম্ভাবনা কম।তবে চিন্তার কিছু নেই। খুব একটা অসুবিধা হবে না চলো হেঁটে ছোট খালামনির বাড়ি চলে যাই। ওখান থেকে কাল না হয় সোজা বাড়ি গিয়ে উঠবো। মা তোমাকে দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
- আবার খালামনির বাড়ি কেন? কতদুর তোমার খালামণির বাড়ি?
-এই তো এক কিলো হবে। ভালো ভাবে মাপলে দূরত্ব আরও কিছু কম হবে।
- আর তোমাদের বাড়ি?
-এখান থেকে এগারো কিলো মিটার।পথে বেশ খানিকটা বিপদজনক জায়গা আছে প্রায় ডাকাতি হয়। এত রাতে রিস্ক নেওয়া ঠিক হবে না।
-ও
যদিও ব্যাপারটা ভালো লাগছে না তবুও ভরসা জহির। যাক ওর ভরসাতেই তো বাড়ি ছেড়েছি। যার উপর সারাজীবন ভরসা করতে হবে তার উপর নির্ভর করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আমার অত ভেবে কাজ নেই।
আমরা হাঁটা শুরু করলাম।
কিছু দূর যেতে একটা টং দোকান পড়ল। জহির বলল,
- সিগারেট কিনব?আপত্তি আছে?
আমি জানি জহির কিঞ্চিৎ ধুমপান করে।
আমি সায় দিলাম। যদিও সিগারেটের গন্ধ আমার একদমই সহ্য হয় না।
জহির সিগারেট নেবার জন্য টং দোকানের ঝাপের নিচে মাথা নিচু করে ঢুকে গেল।
আমি দুর থেকে দেখতে পেলাম টং দোকানের পিছনে চাটায়ে বসে কিছু ছেলে তাস খেলছে আর বিড়ি টানছে।
বিশ্রি দূর্গন্ধে নাম মুখ এটে আসতে লাগলো আমার। ছেলেরা এই সব বিড়ি সিগারেটে কি যে পায় আল্লাহ জানে। আরও বিরক্ত লাগলো ছেলেগুলোর তাকানোর ভঙ্গি দেখে।
ভাব ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে কোনদিন কোন মেয়ে দেখেনি। এত বিশ্রী নজর যে চোখ দিয়ে মনে হচ্ছে গিলে খাবে।
(২)
এত রাতে যারা রাস্তায় বসে তাস খেলে,বিড়ি সিগারেট খায় তারা নিশ্চয় ভালো মানুষ নয়। বাবা মা পরিবারের ধারও ধারে না হয়তো।তারা যে খারাপ হবে এক আর দুই কি!
আমি সরে এসে জহিরকে চোখ ইশারা করলাম, আমার অস্বস্তি দেখে জহির অভয় দিল।
তারপর হাঁটতে হাঁটতে বলল,
-ভয় পাবার কিছু নেই জান এটা আমার পরিচিত এলাকা তুমি ভরসা রাখতে পারো কেউ তোমায় ঘাটাবে না। কিছু বলার সাহস নেই কারো বাপের।আর সেরকম কেউ যদি আসে আসুক না সামনে খাল খেঁচে দোবো।
আমি জহিরের ভাষা শুনে অবাক হলাম। জহির এরকম ভাষায় কথা বলে নাকি?
কই প্রায় দুই বছরের পরিচয় ওর সাথে। সামনাসামনি আজই প্রথম দেখা অবশ্য তবে এর আগে ম্যাসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়েছে তখন তো এমন করে কথা বলতে শুনিনি তাকে।বেশ একটু আহত হলাম।
আমি বললাম
- ঠিক আছে চল তাড়াতাড়ি, কোথায় নিয়ে যাবে। আমার এই জায়গাটা কেন জানি ভালো লাগছে না।
জহির তাচ্ছিল্যের হাসি দিল।এই আচরণ ও নতুন আমার কাছে।ও তো কেয়ারিং ছেলে। অন্যের মতামতের প্রতি ওর যথেষ্ট শ্রদ্ধাবোধ আছে বলেই জানতাম। ওর আচরণের দ্বৈত সত্তা কিছুটা হলেও আমাকে ভাবিয়ে তুলল। তবে কি আমি ভুল করলাম?
জহির বলল,
-তোমরা মেয়েরা সবসময় এত ভয়ে সেঁধিয়ে থাকো কেন বলতো?
জহিরের ভাষাটা আমার কাছে কেমন যেন লাগছে। এ কি সেই জহির? স্পষ্ট বাচনের সুমিষ্টভাষী জহির?
হঠাৎ করে জহিরকে আমার এত অচেনা লাগছে কেন?
- কি হলো মুখের দিকে কি দেখো বারবার? আগে বাড়ি যাই তখন প্রাণ ভরে দেখো।খুব ক্লান্ত লাগছে তোমাকে।
-সেটাই স্বাভাবিক নয় কি? এতক্ষণে জহিরকে স্বাভাবিক মনে হলো্ হয়তো আমারই ভাবনার ভুল।
আমি একটু লজ্জাই পেলাম। আমরা হাঁটছি। তেো হাঁটছি।রাস্তায় কুকুর ছাড়া অন্য কোন প্রাণির দেখা নেই।সত্যি খুব ক্লান্ত লাগছে।
জহিরের খালামণির বাড়ি আর কত দুর কে জানে?
হঠাৎ পথের মধ্যে জহির বলল,
- তোমার মোবাইলটা কোথায় দাও তো দেখি।
আমি ভাবলাম জহির হয়তো কোথাও ফোন করবে কিন্তু জহির যা করলো তাতে আমি বেশ অবাক হলাম। সে ফোন খুলে ছিম বের করে ছুড়ে ফেলে দিল।
আমি বিরক্ত হয়ে বললাম
-এটা কি হলো?
-তোমাকে ডিসকানেকটড করে দিলাম।
-দরকার ছিল না। সবাই জানে আমি হোস্টেলে আছি ।তাছাড়া আমি একটা ম্যাচিউরড মেয়ে। আমি কি করবো না করবো আমি ভালো করে জানি আর আমি ঠিক করেছি বিয়ের পরে সবাইকে নিজেই জানাবো। ওসব ন্যাকামি আমার পোষায় না।
-তুমি জানালেই মেনে নেবে তোমার পরিবারের লোকজন ?
- অবশ্যই,তুমি আমার পরিবারকে চেনো না জহির। ওনারা খুব সহজ সরল আর ভালো মানুষ। আমার উপর খুব আস্থা রাখেন।
জহির এবার বলল,
- আস্থা রাখলেই ভালো, টাকা পয়সা আনতে বলছিলাম, কিছু কি এনেছো?
-হ্যাঁ ব্যাংকে আমার ডি পি এস ছিল ভাঙিয়ে ত্রিশ হাজার পেয়েছি তাই নিয়ে এসেছি।
-দাও টাকাগুলো আমার কাছে দাও। এলাকাটা সুবিধার নয়। আগে থেকে সাবধান হওয়া ভালো।
- এই নাও ব্যাগ, টাকা আর আমার কিছু গয়না আছে।
-বাহ!
জহিরের শেষ কথাটা কেন জানি আমার কাছে ভালো লাগলো না।
ও কে কেন জানি লোভী লোভী লাগছে।
রাত যেহেতু অনেক আমি বেশ ভয় পাচ্ছিলাম। যদিও জহির সাথে আছে। এত রাতে এ জীবনে এই প্রথম আমি ঘরের বাইরে আছি। বিরল অভিজ্ঞতা বলা যায়।
জহিরের হাত ধরে আমি জোরে জোরে হাঁটতে লাগলাম। আর কত পথ কে জানে?
হঠাৎ খেয়াল করলাম পিছন দিক থেকে কয়েকটা বাইক আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। তীব্র আলোর ঝলকানি। সেই সাথে বিকট শব্দ। জহিরের কথা মত আমরা দ্রুত একটা ঝোপের পিছনে আশ্রয় নিলাম। বলা যায় না। সাবধানের মার নেই। ইদানীং রাতে নাকি এ রোডে খুব ডাকাতি হচ্ছে।
৩)
আমরা যে ঝোপটার পিছনে আশ্রয় নিয়েছি সেই ঝোপ বরাবর মোটর সাইকেলগুলো এসে ঘ্যাচাং করে এক সাথে পরপর ব্রেক কষলো।
অনুমান ঠিক ছিল। ওরা আমাদের খুঁজতে এসেছে। ছেলেগুলোকে আমি চিনি মানে একটু আগে দেখেছি টং দোকানের পিছনে। আমি কিছু বলতে গেলে জহির আমার মুখ ঠেসে ধরলো।
ভয়ে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে এল। এরা নিশ্চয় খুব বাজে লোক।যদি ধরা পড়ি।কি হবে ভাবতেই গাঁয়ে কাটা দিয়ে উঠলো। জহির কি পারবে ওদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করতে?
আমার তো মনে হয় পারবে না।
ওরা সংখ্যায় বারোজন। বিশাল বড় একটা গ্যাং।
শুনতে পেলামওরা বলাবলি করছে,
- এই তো দেখলাম হঠাৎ কোথায় ভোজবাজির মত উবে গেল।
ততক্ষণে চারদিকে টর্চের আলো ফেলে তামা তামা করে খোঁজা হচ্ছে আমাদের আর আমরা যতটা সম্ভব মাটির সাথে বুক মিশিয়ে চুপচাপ শুয়ে আছি।নিঃশ্বাস নিতেও ভয় পাচ্ছি পাছে যদি টের পেয়ে যায়।
বেশ অনেকক্ষণ চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে ওরা ফিরে যাবার মুখে হঠাৎ আমার নাকের ভিতর একটা মশা ঢুকে গেল। আমি অনেক চেষ্টায় কিছুতেই হাঁচি ঠেকাতে পারলাম না। আমি হাঁচি দিতে ওরা আমাদের অবস্থান জেনে গেল।
তারপর যা ঘটলো তা আমার জন্য যেমন অপ্রত্যাশিত তেমনি ভয়ংকর। ছেলেগুলো আমাদের দুজনকে ঘিরে ধরল।যেমন শিকারী শিকার ধরে। তাদের চোখে মুখে বন্য পশুর উল্লাস।
জহির চেঁচিয়ে উঠলো
-এই তোরা কারা? কি চাস? তোদের বাড়ি কোথায়?
- সেই সব না জানলেও চলবে,তোর লগে এই মাইয়া কেডা।
-আমার কাজিন লাগে।
- মায়ের পক্ষের না বাপের পক্ষের?
-মায়ের পক্ষের।
-এই আন্ধার ঘুটঘুট্যা রাইতে কাজিনরে লইয়া হাওয়া খাতে বাইর হইচস? মিথ্যা কথা কওনের জায়গা পাস না। দেখলাম তো ইস্টিশনের দিক তন আসতছোস।
আবার কারে ভাগাইয়া আনছোস? মাল তো মনে হইতাছে খানদানি।
-কথা বুইঝা ক হালার পো হালা। তোর মাইরে.........
-একদম গালি দিবি না। চোরের আবার বড় গলা।
-জহির হঠাৎ পিস্তল বের করে।
জহিরের কাছে পিস্তল। এ তো আরেক বিষ্ময়।
আমি এসব কান্ড কারখানা দেখে ভয়ে দ্রুত একটা গাছের পিছনে আশ্রয় নিলাম। কি হতে যাচ্ছে আমি জানি না তবে এটুকু জানি যা হচ্ছে ভালো হচ্ছে না।হয়তো একটু পরে মারাও যেতে পারি।বা তার থেকে খারাপ কিছু।
অপরপক্ষও পিস্তল বের করলো। চলল মহড়া তবে বেশিক্ষণ টিকলো না জহির।জহির গুলি চালানোর আগে মাথায় লাঠির আঘাতে অচিরেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।
ওরাও কোন গুলি ছুড়লো না। জহিরকে দ্রুত বেঁধে ফেলল।
এবার এ দলের ষন্ডা গন্ডা মার্কা ছেলেটি আমার দিকে এগিয়ে এলো। আমি এতটা আতঙ্কিত কোন দিন হইনি।আমি পালানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু পা উঠলো না। ছেলেটি হ্যাচকা টানে আমাকে তার বাইকে তুলে নিয়ে বলল
- কোন রকম চালাকির চেষ্টা করলে সোজা ট্রাকের নীচে ফেলে দেব। মুখ বন্ধ করে যেখানে নিয়ে যাচ্ছি চুপচাপ সেখানে চলো।
এরপর জহিরের কাছে থাকা আমার ব্যাগটি নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো। আমি প্রতিবাদ করতে গেলে ছেলেটি বলল,
- তুমি কি চাও তোমার লাশ এই রাত্রে শেয়াল শকুনে খাক?
আমি আর কোন কথা বলার প্রয়োজন বোধ করলাম না। যা হয় হোক আমার দেখে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। বাড়ির কথা খুব মনে পড়ল। এভাবে একা একা হোস্টেল ছেড়ে বাড়ির কাউকে না জানিয়ে আসাটা চরম ভুল হয়েছে তাও বুঝতে পারলাম। নিতান্ত জহির অনুরোধ করেছিলো তাই বিয়ের আগে আমাদের সম্পর্কের কথাটা গোপন রেখেছিলাম। কিন্তু..।
কতটা সময় পেরিয়ে গেলো জানি না একটা জঙ্গল মত জায়গায় এসে বাইকগুলো থামলো। এরপর কোথায় যেন ফোন করল সেই ষন্ডা মত ছেলেটি। বলল ঠিক সব ঠিক আছে দোস্ত। সব ঠিক ঠাক সামলে নিয়েছি।
ফোন রেখে ছেলেটি এবার আমাকে নির্দেশ দিল,
-এই ভিতরে ঢোক।
আমি বাড়ির ভিতরে ঢুকতে ইতস্তত করতেই ছেলেটি বলল,
-তুমি নিশ্চয় চাও না তোমাকে ট্রাক চাপা দিয়ে মারি।
একই ঘ্যানঘ্যানে ডায়লগ।
রাগে আমার গা জ্বালা করলেও কিছু করার নেই্। বাধ্য হয়ে আমি ভিতরে ঢুকলাম। আমাকে দেখে এক গ্রাম্য মহিলা এগিয়ে এলো বলল
-একে কোথায় পেলি রে সুজন? বেশ দেখতে তো।
তোমাকে ওর রুপের গুণ বিচার করতে হবে না মাসি যা বলছি শোন। খুব টেটিয়া মেয়ে সুযোগ পেলেই পালাবে। সাবধান দেখো পালিয়ে যেন না যায়। কাজটা ভালো ভাবে করতে পারলে তোমার জন্য বখশিশ আছে। আর হ্যাঁ তোমার ওই ভেড়ার পালের সাথে এক গোয়ালে রাখলে কিন্তু ও ঠিক পালাবে। আবারো বলছি সাবধান। শুধু রাতটুকু সকাল হলে পার্সেল করে দেবো। এইটুকু সহযাগিতা চাই্।আশা করি বরাবরের মত ভালো সার্ভিস পাবো।
-ঠিক আছে।ঠিক আছে। আজকের রাতের ঘুমটা তাহলে গেল। পয়সা কিন্তু পুষিয়ে দিতে হবে বলে দিচ্চি।
-হুম। আগে কাজটা ঠিক ঠাক তো হোক।
মাসি আমাকে নিয়ে তুলল একটা পুরানো চুন সুরকির ঘরে।তারপর তালা বদ্ধ করলো।আমি তালাবদ্ধ হতে হতে বাইকগুলো চলে যাবার আওয়াজ পেলাম। নিজের উপর এত রাগ লাগছিলো কি বলবো। সে রাতে ঠিক মত ঘুম হলো না যদিও খুব ক্লান্ত ছিলাম। পেটেও পড়লো না তেমন কিছু।
পরের দিন বিকালে আমি বাড়িতে শুয়ে আছি।আমার বড় ভাই কামাল এসে দেখে গেল আমি কি করছি। এর আগেও সে বার কয়েক আমায় দেখে গেছে। ওরা আমায় সত্যি ভালোবাসে।
বলল,
-কাজল,বোনটি আমার এরকম না জেনে না বুঝে হুট করে সিদ্ধান্ত কখনই নিবি না। কত বড় বিপদ হতে পারতো বলতো। অন্তত বাবা মায়ের কথা একটু ভাববি ।ওই গ্রামের টং দোকানে যদি আমার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বন্ধু সুজন না থাকতো তোকে যদি ঠিক ঠাক না চিনতো তাহলে কি হতো বল তো।
তখনই একটা নিউজ চ্যানেলর খবর দেখে চমকে উঠলাম আমি কুখ্যাত মাফিয়া ,নারী পাচারকারী গ্যাং এর প্রধান জহির আব্বাসকে কে বা কারা অজ্ঞান অবস্থায় গত রাতে চৌমুহনী থানার বারান্দায় ফেলে রেখে গেছে। .........
শেষ
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
১০ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:০৭
ইসিয়াক বলেছেন: পাঠে মন্তব্যে ও লাইকে অনেক অনেক অনুপ্রেরণা পেলাম আপু।
কৃতজ্ঞতা জানবেন।
শুভ কামনা রইলো।
২| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:২৭
হাবিব বলেছেন: আপনি তো সব্যসাচী হয়ে উঠছেন।
১০ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:০৮
ইসিয়াক বলেছেন: কি যে বলেন প্রিয় ব্লগার।
ভালো লাগা জানবেন। আপনার সহযোগিতা সব সময় আমি মনে রাখি।
ভালো থাকুন সবসময়।
৩| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩৫
শেরজা তপন বলেছেন: ধীরে সুস্থ্যে পুরোটা পড়লাম! শেহশটা তাড়াতাড়ি হয়ে গেলেও গল্পটা বলার ধরন ও বিষয়বস্তু ব্যাতিক্রম হওয়ায় ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ সুন্দর একটা গল্প বলার জন্য।
১০ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:০৯
ইসিয়াক বলেছেন: একটু ব্যস্ততা ছিল প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন সবসময়।
শুভ কামনা সতত।
৪| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৪৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: গল্পটা বেশ সুন্দর হয়েছে।++ দারুণ টুইস্ট রেখেছেন।
আপনি বরং এখন থেকে গল্পই লিখুন।
শুভকামনা প্রিয় গল্পকারকে।
১০ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:১১
ইসিয়াক বলেছেন: আপনার ধারাবাহিকের অপেক্ষায় আছি প্রিয় কথা সাহিত্যিক।
আপনার মন্তব্য সব সময় আমাকে অনুপ্রেরণা জোগায়।
ভালো থাকুন সবসময়।
শুভ কামনা রইলো।
৫| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৪
জটিল ভাই বলেছেন:
গল্পতো অল্প হয়ে গেলো! আরো চাই.......
১০ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:১৩
ইসিয়াক বলেছেন: ইনশাআল্লাহ আরও গল্প পোস্ট করবো প্রিয় ব্লগার।
শুভ কামনা সতত।
৬| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৩৫
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: বেশ ইন্টারেস্টিং গল্প ইসিয়াক ভাই। উত্তেজনা ছিল সমগ্র গল্পে। একই সাথে আবেগের বশে নেয়া ভুল সিদ্ধান্ত আর মানুষের সম্পর্কে না জেনেই তার ব্যাপারে ভুল ধারণা পোষণ করার কুফল সম্পর্কে লিখেছেন। বেশ ভালো লেগেছে।
১০ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:১৮
ইসিয়াক বলেছেন: আপনি বরাবরই খুব মনোযোগী পাঠক প্রিয় ব্লগার। আপনার মন্তব্য আমার জন্য বড় পাওয়া।
ভালো লাগলো জেনে প্রীত হলাম।
শুভ কামনা রইলো।
৭| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:২২
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: কবি দেখছি একজন চমৎকার গল্পকারও ---
১০ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:১৮
ইসিয়াক বলেছেন: শুভ কামনা রইলো প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন সবসময়।
৮| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১:৪০
অধীতি বলেছেন: এ ধরণের গল্পের শেষটা যেরকম হয় তার থেকে ব্যতিক্রম লিখেছেন। ভালই লাগল। বাস্তবতা এরকম হতে পারে।
১০ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:১৯
ইসিয়াক বলেছেন: অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় দাদা।
শুভেচ্ছা রইলো।
৯| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:০০
আল-ইকরাম বলেছেন: ইসিয়াক ভাই বহুদিন পর ব্লগে আসলাম। আপনার কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে জেনে সুখী হলাম। নিরন্তর এগিয়ে চলুক আপনার নানা স্বাদের, ভিন্ন মাত্রার লেখনী। নিরাপদে থাকুন। সুস্থ থাকুন।
১০| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫১
আমি সাজিদ বলেছেন: আমি তো ভেবেছিলাম বাইকের ছেলেগুলোই ! শেষে কি চমৎকার টুইস্ট !
কাছাকাছি ঘটনা যদি টিকটকার মেয়েগুলো যাদের ভারতে পাচার করে দেওয়া হয়েছে, তাদের সাথে ঘটতো !
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৩০
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: বাবারে কী ভয়ংকর। আমি তো উল্টা ভাবছিলাম
কী সুন্দর গল্প লিখেন আপনি মাশাআল্লাহ