নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একদা এসেছিলাম তোমাদের সান্নিধ্যে। ভালো মন্দ মিশিয়ে কেটেছে বেলা। বিদায় বেলায় শুধু এটাই জানিয়ে যাওয়া বড় ব্যথা জাগে মনে পেলে অবহেলা।

ইসিয়াক

আমার লেখা কবিতা আপনার পছন্দ হলে হোয়াটসঅ্যাপ এই চ্যানেলটি ফলো করুন প্লিজ Follow the রফিকুল ইসলাম এর কবিতা সমগ্র। channel on WhatsApp: https://whatsapp.com/channel/0029VbBPuTzBA1epLIRBZX1x

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতাঃ ওরা কি আমাকেও মেরে ফেলবে?

০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৯

পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে
আমি ক্রমশ বাকরুদ্ধ!
এবং আতংকিত
এই মৃত্যু উপত্যকা কি আমার দেশ?
একি অরাজকতা!
কোথায় মানবিকতা?
কোথায় বিবেকবোধ?
মূল্যবোধের একি অবক্ষয়!
না, এ সব মেনে নেওয়া যায় না।
মানছি না।
যদিও বহু আগে থেকেই মানবিকতা বিবেকবোধের চর্চা এদেশে খুব একটা ছিল না।
তবে বর্তমানের মত এতটা ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হয়নি কখনও তা।
স্বাধীনতা 2.0!
চারদিকে মারমার কাট কাট অবস্থা ।
এ যেন তামিল ছবির সফল দৃশ্যায়ণ চলছে চতুর্দিকে।
লুটপাট
অগ্নি সংযোগ
ভাঙচুর
মারামারি
গুজব গণহত্যা..
আমার বারবার মনে হয় এ-সবই দুঃস্বপ্ন, ঘুম ভাঙলেই...
আচ্ছা আমিও কি খুব শীঘ্রই এভাবে আক্রান্ত হতে পারি?
কোন একদিন কি ওরা আমাকেও
প্রকাশ্যে জনসম্মুখে পিটিয়ে মেরে ফেলবে?
যেভাবে মেরেছে তোফাজ্জেলকে?
চলতি পথে পিছু ডেকে উদ্ধত ভঙ্গিতে জানতে চাইবে অদ্ভুত কিছু প্রশ্নের উত্তর?
উত্তর মন মত না হলে..
আমাকে গান গাওয়াবে?
কাতুকুতু দিয়ে হাসাবে?
আমার হাসিতে ওরাও হাসবে তারপর হাসতে হাসতে ভিডিও করে ডাকাত ট্যাগ দিয়ে ওরাও কি আমাকে প্রকাশ্য জনপদে হাত পা ভেঙে দিয়ে হত্যা করবে?
কথাটা বার-বারই মাথায় ঘুরছে ক'দিন ধরে
কিছুতেই সরাতে পারছি না।
কিছুতেই...
জানি আপনারা বলবেন,এমন অবান্তর কথা বলার মানে কি?
এতো সংশয়বাদী হলে চলবে কি করে ?
সবাই স্বাধীনতা উদযাপন করছে,একটু আধটু অমন হয়।
স্বাভাবিক থাকুন,
নুতন স্বাধীনতা উপভোগ করুন।
দেশতো সঠিক পথেই চলছে, সব ঠিকঠাকই আছে। যা কিছু অনিয়ম দ্রুতই ঠিক হয়ে যাবে।
জঞ্জাল সরাতে লাগছে যা একটু সময়,
অচিরেই আধার কাটবে।
হয়তো! কিন্তু
আমার আশংকা অন্যখানে।
আমি যে ভীষণভাবে স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির লোক।
আমি একাত্তরকে বুকে ধারণ করেছি জন্মাবধি ।
আজন্ম ভালোবেসেছি এবং আজীবন ভালোবাসবো
আমার দেশ,আমার মানচিত্র ,আমার পতাকা,আমার জাতীয় সংগীতকে।
বুকে আগলে রেখেছি এবং রাখবো।
তাতে যদি আমার মৃত্যু হয় হোক।
আমি আমার আদর্শকে বিসর্জন দিতে পারবো না।

মানিয়ে নিতে বলছেন?
দুঃখিত!
আমি তো বেনিয়া নই।
আমি সুবিধাভোগীও নই।
যখন যে পাত্র তখন সে পাত্রের আকার ধারণ করতে পারিনি কখনও
পারবোও না।
এখনও আমি পনেরশ টাকার মাইনে আর টিউশনিতে চলি।
আমার চাহিদা সামান্য।
আমি লুটেরা দূর্নীতিবাজ কাপুরুষ নই।
আমি বিশ্বাস করি
এ দেশটা আমার মা!
এক জীবনে আমার চাওয়া একটাই,
আমার মা যেন যেকোনো মূল্যে ভালো থাকে।

যুদ্ধ দিনের কথা ভাবলে এখনও আমার রক্ত টগবগিয়ে ফোটে।
আমি ভুলতে পারি না ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষের উপর মা বোনের সাথে ঘটে যাওয়া পাশবিক নির্যাতনের কথা।
অন্যায় অত্যাচারের সেই সব দূর্বিষহ স্মৃতিগুলো এখনও আমায় আতঙ্কিত করে।
দুঃস্বপ্ন হয়ে বারবার ফিরে আসে সেই সব অতীত দিনগুলো।
সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনায়
একাত্তর আমার রক্তে মিশে আছে।
আসলে এছাড়া আমার উপায়ও নেই।
যে সময় আমার রক্তে মিশে রয়েছে তাকে অস্বীকার করি এমন ইচ্ছা বা শক্তি কোনোটাই নেই।
একাত্তর আমার ঘর নিয়েছে
আমার বাবা, মা, ভাই...
আমার বোনকে দিনের পর দিন অত্যাচার করে হত্যা করেছে।
আর তাই আমি জোর গলায় বলি বলবো
আমি রক্তাক্ত সবুজ জাতীয় পতাকার পক্ষের লোক।
আমি, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি এই সংগীতের ধারক ও বাহক।
পতাকায় আঁকা রূপক অর্থে সারা বাংলা আমার আত্নার আত্নীয় ।
আমার মা আমার ভাই আমার বাবা আমার বোন।
এছাড়া আমার যে আর কেউ নেই।
হ্যাঁ যুগ যুগ ধরে বাংলা মায়ের উপর অত্যাচার
অবমূল্যায়ন
দমন পীড়ন আমাকে পীড়া দেয় এবং দিয়েছে।
প্রতিটা অন্যায় অন্যায্য আচরণ
প্রতিহত করার না পারার যন্ত্রণা কুরে কুরে খায় এখনও আমার বিবেক।
আমি আমার সীমাবদ্ধতা জানি।
আমি বরাবরই সকল অন্যায় অত্যাচারের বিরোধী।
যেখানেই অন্যায় সেখানেই প্রতিবাদ
শুধু এটুকুই চাওয়া আমার বাংলা মা ভালো থাকুক
আমার বাংলার মানুষ ভালো থাকুক
সে যে কোন মূল্যে।
ব্যস
এটুকুই তো আমার স্বান্তনার
বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা।
সুনিদিষ্ট
কোন আদর্শকে অন্তরে ধারণ করা বা ভালোবাসার জন্য
আমাকে ওরা যদি ধরে নিয়ে যায়, যাবে?
আমাকে যদি দালাল বলে
বলবে।
আমি ছদ্মবেশী হতে পারবো না।
ক্ষমতাবানদের কে কবে ঠেকাতে পেরেছে?
যাক ধরুক আমাকে
মারলে মারুক
মেরে ফেলুক আমাকে।
মেরে ফেলবার আগে
আমাকে নিশ্চয় জিজ্ঞেস করবে
তুমি ভাত খাবে? পানি লাগবে, পানি ?
আমি বলবো খাবো।পেট ভরে ভাত খাবো, পানি খাবো।
শহীদ তোফাজ্জেলের মত।
শোল মাছ অথবা মুরগী নয়-
কাতলা মাছের মুড়িঘন্ট আমার বড্ড প্রিয়
টক মসুরের ডাল আর ঝুরি আলু ভাজাও আমার প্রিয়।
এরপর
আমার শেষ আহার শেষে ওরা আমায় হাসতে হাসতে
নির্মম অত্যাচার করতে করতে মেরে ফেলবে হয়তো।
ফেলুক
তবু আমি আমার মতাদর্শ বদলাতে পারবো না।
ওরা ভাষা আন্দোলনের কী জানে না, আমি জানি।
ওরা ছয় দফার কী জানে না, আমি জানি।
ওরা ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান কি জানে না, আমি জানি।
ওরা একাত্তর কি জানে না, আমি জানি।
ওরা জিন্নাহকে জাতির পিতা মানে, মানুক।
আমি মানতে পারবো না ।
ওরা উর্দুকে সাদরে বরণ করে নেয় তো নিক । আমি বরণ করতে পারবো না।
এটাই ফাইনাল,
আমি আমার আদর্শ বদলাবো না।
ওরা কাওয়ালীর মজমা বসাক
পাকিস্তানী ব্যান্ড সংগীতের আসর বসায় বসাক।
আমার জারি সারি মুরশিদিই কবি গানের আসরই ভালো।
আমি কোনক্রমে ওদের মতাদর্শে বিশ্বাসী নই
হতে পারবোও না।
এজন্য যদি ওরা আমায় মেরে ফেলে
ফেলুক।
আমি হাসতে হাসতে আমার মাতৃভূমিকে আকড়ে মরে যাবো।

© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৬

জুল ভার্ন বলেছেন: সব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটানোর পেছনে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া সহযোগী দানবদের হাত।

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১০

আজব লিংকন বলেছেন: অনেক গভীর প্রশ্ন।
উত্তর জানা নেই তবে একটা গান মনে পরে গেল।





"হায়রে কপাল মন্দ চোখ
থাকিতে অন্ধ
এই জীবন জ্বইলা পুইড়া
শেষ তো হইল না
এই জীবন জ্বইলা পুইড়া
শেষ তো হইলো না"

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:০৭

কামাল১৮ বলেছেন: কেবল শুরু।সামনে আরো অনেক কিছু অপেক্ষা কতছে।জামাতিরা যখন ক্ষমতা দখল করবে তখন টের পাবেন দেশি।কবিতা ভালো হয়েছে।

৪| ০২ রা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:২২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কাওয়ালি তো ভালো জিনিস। স্বৈরাচারের দোসরা তো কত জায়গায় আযান দিতেই দেয়নি। আল্লাহ ছেড়ে দেন ছাড় দেন না। এখন বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটতেছে। তলিয়ে দেখলে দেখা যাবে সেখানে লীগের লোকজন জড়িত। এরা যেকোন ভাবেই হউক দেশে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করার পায়তারা করতেছে।

আল্লাহ ভরসা কিছুই হবে না। যা হবে ইংশাআল্লাহ ভালো হবে। ইসলামের বিধি বিধান, ন্যায়, মানবিকতা ফিরে আসুক সেই দোয়া করি দেশের জন্য।

৫| ০২ রা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: #জুলভার্ণ ভাইয়ার সাথে এক মত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.