নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে সবসময় হাসিখুশি রাখি,অন্যদের সবসময় হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করি,চরম কষ্টের মুহুর্তেও হাসি দিয়ে সবকিছু লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করি,লিখা পড়তে ভালোবাসি লিখালিখি করতে আরও বেশি ভালোবাসি। সামর্থ্য নেই তাতে কি,স্বপ্ন টা হোক আকাশ ছোয়া।

Rahman Tamim

Rahman Tamim › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেষ দেখা

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৩৫

সোহানের সাথে ইসরাতের সম্পর্কটা প্রায় ২ বছরের... তাদের সম্পর্কের শুরুটা ফেসবুক থেকেই... ভার্চুয়াল প্রেমের প্রতি দুজনের আগ্রহ ই ছিলো খুবই কম... তবে ভালোবাসার প্রতি তোহ আর কারো হাত থাকে না নিজের অজান্তেই হয়ে যায়...!!
.
তারা দুজনই দুজনকে প্রচন্ড ভালোবাসে... কথা না বলে একটা মুহুর্তও থাকতে পারে না... তাদের সারাক্ষনই কথা হয় ফোনে কিংবা ফেসবুকে... সোহানের অনলাইনে আসতে দেরি হলে ইসরাত রেগে থাকে আর ইসরাতের অনলাইনে আসতে দেরি হলে সোহান রেগে ফুলে থাকে...!!
.
রাগ,অভিমান,খুনসুটি,ঝগড়া নিয়ে তাদের সম্পর্কটা খুব সুন্দর ভাবেই চলতে থাকে... এদিকে ইসরাতের এইচ এস সি পরীক্ষা দেওয়া শেষ অপরদিকে সোহান 2nd semester এ... তাদের অনেকবার দেখা হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহুর্তে এসে বিভিন্ন কারনে সব প্ল্যান ভেঙে যায়... এ ২ বছরে তাদের একটাবারও সরাসরি দেখা হয় নি...!!
.
প্রতিবার ইসরাত ফোন দিয়ে অনেক কান্নাকাটি করে দেখা করার জন্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব তোহ আর অত বেশি না... সোহান এসব সহ্য করতে না পেরে প্রতিবার যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয় শেষ মুহুর্তে এসে সব পরিকল্পনা শেষ হয়ে যায়,ইসরাত ও তখন কিছু বলে না সব মানিয়ে নেয়...!!
.
এদিকে ইসরাতের বাসা থেকে বিয়ের চাপ আসা শুরু হয়... সে সোহান কে ব্যাপারটা জানাই সোহান বলে এত্তত্ত তাড়াতাড়ি তোমার আব্বু আম্মু তোমার বিয়ের জন্য পাগল হয়ে গেছে কেন? প্লিজ একটু মানাও আমার দ্বারা তোহ এখন কোনোমতেই বিয়ে করা সম্ভব না... অপরপাশে কথা বলতে বলতে ইসরাতের চোখের জল প্রতিবার নীরবে গড়িয়ে পরে তা সে সোহানকে বুঝতে দেয় না...!!
.
এভাবে আরও ৪ টা মাস পার হয়... সোহানকে জানানোর পর সে প্রতিবার একই কথা বলে অপরদিকে পরিবারের প্রচন্ড চাপ... বুকে পাথর বেধে হলেও দিন রাত চিন্তা করার পর ইসরাত একটা সিদ্ধান্তে পৌছায়... ২ সপ্তাহ পর সে রাত ১ টার দিকে সোহানকে ফোন দেয়,

- হ্যালো সোহান!

- এত রাতে ফোন দিছো কেন? কিছু হইছে তোমার?

- নাহ তেমন কিছু না,এমনি কিছু কথা ছিলো...

- হ্যা বলো কি কথা?

- আগে প্রমিস দাও যে তুমি আমার এ কথাটা রাখবা!

- আচ্ছা রাখবো বলো...

- আজ কি বার?

- রবিবার...

- শুক্রবার তুমি যেভাবে হোক চট্টগ্রাম আসবা, প্লিজ না করো না...

- হঠাৎ চট্টগ্রাম কেন? কোনো বিশেষ কারন?

- নাহ,কোনো বিশেষ কারন না শুধু তোমাকে একটাবার খুব কাছ থেকে দেখবো...

- আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসবো... কিন্তু এসে কই যাবো? এড্রেস?

- তা আমি সময়মত জানিয়ে দিবো...

বৃঃহস্পতিবার দুপুর ২ টার দিকে সোহান চট্টগ্রাম এর উদ্দেশ্যে রওনা হলো... সে ইসরাত কে ফোন দিলো,

- হ্যালো,

- হ্যা সোহান বলো...

- আমি বাস এ উঠছি... ৬/৭ ঘন্টার মত লাগবে বোধহয়,নেমে কোথাই আসবো?

- আচ্ছা আমি কিছুক্ষন পর তোমাকে এড্রেস টেক্সট করে দিবো... এ নাম্বারে আর ফোন দিয়ো না ফোন সুইচড অফ থাকবে,সময় মত চলে আইসো...

- মানেহ?? সুইচড অফ কেন থাকবে?? তোমাকে তাহলে পাবো কেমনে আমি??

- সবসময় সব প্রশ্নের উত্তর থাকে না,মাঝেমাঝে কিছু প্রশ্ন স্কিপ করে যেতে হয়,রাখি,বাইই...

সোহান কিছুই বুঝে উঠতে পারলো না... কিছুক্ষন পরই তার ফোনে মেসেজ আসলো...

" তুমি অলংকারে নামবা,এরপর একটা সি এন জি নিয়ে রাত ৯ টাই prince of Chittagong community center এর দ্বিতীয় তলায় চলে আসবা আমি ওখানেই থাকবো খুজে নিও "
.
রাত ৮ টাই সোহান অলংকারে নামলো... নেমে সে বাস কাউন্টারে অপেক্ষা করছে কখন ৯ টা বাজবে... ৮:৪০ এই সে বের হয়ে একটা সি এন জি নিয়ে Prince of Chittagong এ চলে গেলো... অনেক মানুষের ভিড় পুরো বিয়ের আমেজ... তার মনে একটা কঠিন ভয় ঢুকে গেলো তবে কি ইসরাতের আজ বিয়ে হয়ে যাচ্ছে...!!
.
তার পা চলছে না সে খুব আস্তে আস্তে ভিতরে ঢুকলো সিড়ি বেয়ে ২য় তলায় উঠলো... তার স্টেজে চোখ পড়লো সেখানে বসে আছে খুব অপরূপ সুন্দরী পরীর মত একটা মেয়ে... তার ছবি তুলা হচ্ছে,আত্মীয় স্বজনরা এক এক করে উঠে তার সাথে ছবি তুলছে... মেয়েটাকে তার খুব বেশি চেনা লাগছে,সে আস্তে আস্তে সামনে আগালো মেয়েটা তার দিকে চোখ তুলে তাকালো,নাহ তার আর বুঝতে বাকি নেই এটা ইসরাত... সোহান অনবরত দীর্ঘশ্বাস ফেলছে সে ইসরাতের পাশে যেয়ে বসলো,হেসে বলে উঠলো,

- তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে...

- ইসরাত চুপ করে নিচে তাকিয়ে আছে...

- একবার তোহ বলতে পারতে যে তোমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে,আজ তোমার বিয়ে,বললে না কেন?

- যদি বলতাম তবে তোমার সাথে আমার এ জীবনে আর কখনও দেখা হতো না...

- ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস,যেটা আমাদের প্রথম দেখা,সেটাই আজ আমাদের শেষ দেখা,তোমাদের দাম্পত্য জীবন খুব বেশি সুখের হোক,ভালো থেকো...!!

সোহান উঠে দাড়ালো ইসরাত খুব কষ্টে তার চোখের পানি গুলো আটকে রাখলো নতুন বিয়ের বউ সবার সামনে কেদে উঠলে কি লজ্জার বিষয় হবে,ইসরাত স্বাভাবিক ভাবেই আবার ছবি তোলা শুরু করলো... সোহান কান্না আটকে রাখার চেষ্টা করেও পারলো না চোখের পানি গুলো মুছতে মুছতে সে বের হয়ে গেলো... দুটো অচেনা মানুষের একটা চিরচেনা পথ আজ থেকে আবারও দুটো ভিন্য পথে বিভক্ত...!!! :)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.