নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

pramanik99

আমার স্কুল জীবনের স্মৃতিগুলো বার বার মনে পড়ে। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই দিনগুলোতে।

প্রামানিক

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

প্রামানিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

টুঙ্গিপাড়া ভ্রমণে ইলিশের ঝোল

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫০


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

বঙ্গবন্ধুর গ্রামের বাড়ি টুঙ্গিপাড়ার অনেক গল্প শুনেছি কিন্তু স্বচক্ষে দেখা হয় নাই। টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার জন্য সুযোগ খুঁজতে ছিলাম। অবশেষে সেই সুযোগ পেয়ে গেলাম। শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পরের ঘটনা। ডিসেম্বর মাস। সবেবরাতের ছুটির সাথে সাপ্তাহিক ছুটি মিলে গেল। তখন সাপ্তাহিক ছুটি একদিন হওয়ায় একই সাথে দুই দিনের ছুটি খুব একটা ভাগ্যে জুটতো না। দুই দিনের ছুটি পেয়ে নতুন কোন জায়গায় ভ্রমণ করার জন্য মাথা কুটকুটাতে লাগল। ডিসেম্বর শীতের মাস হওয়ায় শীতের কাপড়সহ ছোট্ট একটি ব্যাগ ঘাড়ে ফেলে রওনা হলাম।

তখনকার সময় দক্ষিণ এবং পূর্বাঞ্চলের বাসগুলি ঢাকার সায়েদাবাদ আর যাত্রা বাড়ি থেকে ছেড়ে যেত। যাত্রাবাড়ি গিয়ে লক্কর ঝক্কর মার্কা একটি লোকাল বাসে উঠে পড়লাম। ঐ রুটে লক্কর ঝক্কর বাস ছাড়া ভালো বাস তখনও চালু হয় নাই। বাসের গতি মন্দ নয় যতো দৌড়ায় তার চেয়ে বেসি থামে। যাত্রী উঠুক বা না উঠুক মনের ভুলে কেউ রাস্তায় হাত তুললেও বাস থেমে যায়। থামাথামি করতে করতেই এক সময় বুড়িগঙ্গা সেতু পার হয়ে কুচিয়ামারা ঘাটে পৌঁছিলাম। কুচিয়ামারা ঘাটে তখন ব্রিজ ছিল না। ফেরি দিয়ে বাস ট্রাক পারাপার হতো। নদীর মাঝখানে চর থাকায় একই নদীতে দুইবার ফেরি পার হতে হতো। কুচিয়ামারা ঘাটের পর পর দুইটা ফেরি পার হয়ে ডাঙ্গায় উঠে বাস আবার চলতে লাগল। অল্প কিছুক্ষণ পরেই মাওয়া ঘাটে পৌঁছে গেলাম। ঢাকার লোকাল বাসগুলো মাওয়া ঘাট পর্যন্তই যাতায়াত করে এর পরে পদ্মা নদী। যাত্রীরা এখানে নেমে ব্যাগ পত্র নিয়ে লঞ্চ ঘাটের দিকে রওনা দিলে আমিও ওদের সঙ্গী হয়ে হাঁটতে লাগলাম।

সেই সময় মাওয়া ঘাট খুব একটা জাকজমক ছিল না। পুরো ঘাট মিলে তিন চারটি হোটেল। হোটেলগুলো বাঁশের বেড়া দেয়া একচালা টিনের ছাপড়া ঘর। নদীর পারসহ পুরো এলাকা ফাঁকা। আশে পাশে গাছ পালার কোন চিহ্ণ নাই, পুরোটাই বালুচর। হোটেল থাকলেও ঢাকার খুব কাছে হওয়ায় যাত্রিরা খুব একটা খাওয়া দাওয়া করে না। বাস থেকে নেমেই বেশিরভাগ যাত্রী দৌড়ে লঞ্চে উঠে যায়। কারো ক্ষিদে লাগলে লঞ্চেই খাওয়ার ব্যাবস্থা আছে। খাঁটি পদ্মা নদীর ইলিশের সাথে পদ্মা নদীর এক হাঁটু ঝোল দিয়ে রান্না করা। তরকারি দেয়ার জন্য আলাদা কোন বাটি ছিল না, ভাতের প্লেটেই এক টুকরো ইলিশ মাছের সাথে বড় চামচের এক চামচ ঝোল ঘপাৎ করে ঢেলে দিত। শুধু হলুদ মরিচ লবন দিয়ে রান্না করলেও খেতে বেশ মজাদার। ইলিশ যেমন তেমন ঝোল দিয়েই পেট পুরে ভাত খাওয়া যায়। মাওয়া ঘাটে যারা নিয়মিত যাতায়াত করে তাদের মুখে লঞ্চের ঝোলের অনেক প্রশংসা শুনেছি। আমিও এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পিছপা হলাম না। টিনের প্লেটের একপ্লেট ভাতের সাথে যে পরিমাণ ঝোল দিয়েছে মাছের টুকরা না হলেও চলবে, ডাল নেয়ার তো প্রশ্নই আসে না। খাওয়ায় তাড়াহুড়া নেই এপার থেকে ওপার যেতে প্রায় দেড় ঘন্টা সময় লাগবে। পদ্মা নদীর ইলিশের সাথে পদ্মা নদীর ঝোল দিয়ে পদ্মা নদীর মাঝখানে ভসমান অবস্থায় অনেক মজা করেই খেলাম। নদীর সুশীতাল বাতাস আর টাটকা ইলিশের সুস্বাদু খাবার সেই যে খেয়েছি এর পরে আর কখনো এমন খাবার ভাগ্যে জোটে নাই।

(চলেব)

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৩৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: স্মৃতির নাম বেদনার ফুল। সুন্দর স্মৃতিচারণ।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০২

প্রামানিক বলেছেন: পুরানো দিনে তো আর ফিরে যাওয়া যাবে না স্মৃতিচারণ করেই এখন আত্মতৃপ্তি পেতে হচ্ছে।

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১১

সাইফুলসাইফসাই বলেছেন: সুন্দর লেখা

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৪

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



পদ্মা নদীর ইলিশের সাথে পদ্মা নদীর ঝোল দিয়ে পদ্মা নদীর মাঝখানে ভসমান অবস্থায় অনেক মজা করেই খেলাম। - আপনার লেখার হাত খুবই ভালো।

ইলিশ মাছের একটি রহস্য আছে। অনেকেই ইলিশ রান্না করেন প্রচুর মসলা দিয়ে। ইলিশ রান্নায় যতো কম মসলা হবে, আপনি ইলিশ মাছের আসল স্বাদ পাবেন।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৬

প্রামানিক বলেছেন: আপনি ঠিক বলেছেন, ইলিশের রান্নায় হলুদ, মরিচ, পিয়াজ, লবন ছাড়া অন্যান্য মসলা এড করলেই ইলিশের ঘ্রাণ নষ্ট হয়ে যায় তখন ইলিশের প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যায় না। ধন্যবাদ আপনাকে

৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৪

বিজন রয় বলেছেন: ২০২৪ পর কি বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু বলা যাবে?

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৭

প্রামানিক বলেছেন: আমি যখনকার ঘটনা বলতেছি তখন তো এই নামটাই প্রচলিত ছিল কাজেই এখনকার ঘটনা তো আমি লিখছি না। ধন্যবাদ বিজন রয়

৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:০৫

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:


আপনি কি এখন ঢাকায়, নাকি নিজ গ্রামে?

নুরু সাহবের পরিবারের সাথে কোন যোগাযোগ হয়েছিলো?

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:০৮

প্রামানিক বলেছেন: আমি এখন গ্রামে, নুরু ভাই মৃত্যুর পর আর যোগাযোগ করতে পারি নাই। ধন্যবাদ

৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৬

এইচ এন নার্গিস বলেছেন: খুব ভালো লাগলো ।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৭

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২৯

শায়মা বলেছেন: পদ্মার ইলিশের স্বাদটা একদম লেখায় পেয়ে গেলাম ভাইয়া! :)

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৫

প্রামানিক বলেছেন: তখন মাওয়া ঘাটে সস্তায় পদ্মার অরিজিনাল ইলিশ পাওয়া যেত। সেই মাছের ঘ্রাণ স্বাত সবই অতুলনীয় ছিল। এক বাড়িতে রান্না করলে অন্য বাড়ি থেকেও মাছের ঘ্রাণ পাওয়া যেত। এখন ইলিশ খাই বটে কিন্তু সেই স্বাদ আর পাই না।

৮| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪

বিজন রয় বলেছেন: এখনকার ঘটনা লিখলে কি বঙ্গবন্ধু বলা যাবে না? বঙ্গবন্ধু কি পরিবর্তন হয়ে গেল?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.