![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করায় এক প্রাইভেট কারের ড্রাইভারকে চর মারার দায়ে আমাকে গ্রেফতার করল পুলিশ।কি আর বলব,আমাদের দেশে নিয়ম ভঙ্গকারীকে জয়ের মালা পরিয়ে নির্দোষ কিংবা প্রতিবাদী লোকের বিচার আগে করা হয়।আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটলো আজ।
যাক সমস্যা নেই, পুলিশকে মামাবাড়ির গল্প শুনিয়ে কিভাবে বশ করতে হয় তা আমি বেশ জানি।কারণ পুলিশের জেরার মুখে আমি এই প্রথম নয়।সে আমার অভ্যাস আছে।
এমনি হাজতে পুড়ে দিল আমাকে।কষ্ট শুধু একটাই হাজতে বসে সিগারেট খেতে পারবনা।দিনটা কোনরকম পানশে পানশেই কেঁটে গেল।
সন্ধ্যায় দুই একজন কনস্টেবলের ফিসফাস গল্পে কিছুটা অনৈতিক ভাবে তাদের গল্প শুনে ফেললাম।তবে আগেই বলেছি অনৈতিক কাজের বিচার আমাদের দেশে নেই তাই এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিন্ত।
শুনলাম এ থানার ওসি সাহেব নাকি বেশ রাগী মানুষ।প্রতিদিন বৌয়ের সাথে সাংসারিক ঝামেলায় অস্থির হয়ে রাতে এসে কিছুটা সময়ের জন্য কয়েদীদের নিষ্পাপ মুখের দর্শন দিয়ে যান।
ঠিক ই আজো এলেন।রাত ৯টা ৩৫ মিনিট।
খেয়াল করলাম ওসি সাহেব নিজের রিভলভিং চেয়ারে বসে চিন্তিত হয়ে সিগারেট টানছেন।হুম....এই হলো সাহসী পুরুষ জাতি।ঘরে বৌয়ের ওপর রাগ করে এসে একলা বসে সিগারেট টানছে।এভাবেই মানুষ সুখের তালাশ করে যাচ্ছে সিগারেটের আগুনে।
আমি একটু সাহস করেই বললাম,কি স্যার কি এত ভাবছেন?এভাবে বৌয়ের সাথে ঝামেলা না করলেই পারতেন।
বলেই আমি চুপ হয়ে তাকিয়ে থাকলাম।
এই শুনে ওসি সাহেব রক্তলাল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।ওনার চোখ দেখে মনে হলো বাংলাদেশ ভারসেস পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে যাওয়ায় উনি বেশ শোকার্ত।
ভারী গলায় বললেন কি নাম?
সৌমিক।
থানায় কেন?
আইন ভঙ্গকারী এক ড্রাইভারের গালে চর মেরেছিলাম।
হুম...দাদা হয়ে গেছ নাকি?আইন ভঙ্গকারীদের জন্য পুলিশ আছে তুমি কেন?
শুনে আমার ব্যাপক হাসি পেল কিন্তু হাসার সাহস হলো না পুরোপুরি।
মনে হলো বাংলাদেশ পুলিশ আবার আইন মানতে শুরু করল কবে খেকে?
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো ওসি সাহেব একটা বিষয় নিয়ে চিন্তিত তা হলো আমি কিভাবে আমি কিভাবে জানলাম ওনার পারিবারিক কাহিনী।যাক এই সুযোগেই আরো পথ এগুনো যাবে।
এরপর ওসি সাহেব আমার পুরো বায়োডাটা শুনলেন আমি কে? কি করি?
আমি বললাম এক সময় আর্মি অফিসার হবার ইচ্ছে ছিল তবে বর্তমানে শুধুই ভবঘুরে একজন কবি।
কবি?
হুম..কিন্তু সমস্যা হলো কেউ বিশ্বাস করতে চায়না আমি কবি।
কিছুটা আগ্রহ নিয়েই বললেন,
কেন?
আর বলবেন না।আমার পরিবারের লোকের এক কথা তা হলো প্রেমে ছ্যাকা খেলেই নাকি সবাই নিজেকে কবি বলে দাবি করে।আসলে কেউ কবি না।
শুনে ওসি সাহেব সজোরে হেসে দিলেন।
এতে অবশ্য কিছুটা স্বস্তি বোধ করলাম।
ওসি সাহেব হঠাত বললেন,আপনি কি সাইকোলজি পড়েন নাকি?
কেন বলুন তো?
এই যে আমাকে দেখেই আপনি বুঝে ফেললেন আমার কাহিনী।
আমি বুঝতে পারলাম না হঠাত করে ওসি সাহেব আমাকে আপনি বলছেন কেন।
যা কৌতুহল তাই প্রশ্ন।
বললাম আগে বলুন আমাকে আপনি করে বলছেন কেন?আমি তো আপনার ছেলের বয়সী।
আমি অচেনা মানুষকে আপনিই বলি।তার ওপর আপনি একজন কবি বলে কথা।
যাক এই প্রথম কেউ কবি বলে সম্মান দিল তাহলে।
শুনে আবারো হাসলেন ওসি সাহেব।
তবে এরপর গল্পে গল্পে উনি অনেক কথাই বলে ফেললেন।
বললেন ওনার এক মেয়ে আছে।সাইকোলজি বিষয়ে অনার্স করছে।
উনি আরো বললেন ওনার মেয়ে নাকি কবি এবং কবিতা উভয়েরই ভক্ত।তাই ওনার খুব ইচ্ছে আমি ওনার মেয়ের সাথে দেখা করি।এক পর্যায়ে বাসায় যাওয়ার কথা বললেন।
এভাবে একরকম আড্ডা দিয়ে আনন্দেই বাসায় ফিরে গেলেন।পরদিন ই সসম্মানে আমার জামিন করালেন।
আমিও ওনার কথামতই ওনার বাসায় গেলাম।
ওনার বাসায় গিয়ে আমি চোখে সানগ্লাস টা দেয়া মাত্র ই ওসি সাহেব প্রশ্ন করে বসলেন,কি ব্যাপার সানগ্লাস পরলেন যে?
আপনি যে বললেন আপনার একটা যুবতী মেয়ে আছে.
হ্যাঁ কিন্তু মেয়ে থাকার সাথে সানগ্লাসের সম্পর্ক কি?
না আসলে খালি চোখে মেয়েদের চোখে তাকানো খুব বিপজ্জনক।
শুনে কোনরকম দ্বিধা ছাড়াই হাসলেন।
এরপর ভেতরে গিয়েই দেখি ওসি সাহেবের মেয়ে চা নাস্তা নিয়ে বসে আছে।
চোখে লাল ফ্রেমের চশমা পরা ঠিক ঠিক বার্বি ডলের মত একটা মেয়ে।
মেয়েও বাবার মতই সানগ্লাসের ব্যাপারে প্রশ্ন করল।
নিরুপায় হয়ে আবারো বললাম.
শুনেই বার্বি ডলের মুখে অদ্ভুত এক হাসি,
এভাবে কবিতার কথা দিয়ে আমাদের গল্পটা শুরু হলো।কিন্তু যেখানেই ভয় সেখানেই ছয়।
গল্পে গল্পে ভালোবাসার গল্প।ভালোবাসার গন্ধ পেয়ে আমি মাঝে কয়েকদিন নিরুদ্দেশ।
কিন্তু বেশীদিন দূরে থাকতে পারলাম না।অবশেষে এক বসন্তে নিজের ভালোবাসা জানাতে আমি যাত্রা করলাম তার উদ্দেশ্যে,
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৪৫
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: সুন্দর , ভাল লাগল বেশ