নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কবি ও লেখক।

কবি রাকিবুল ইসলাম

কবি রাকিবুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

Only for you

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬

সাফিন, রিদিত ও রিমা তিনজন কলেজ লাইফের বন্ধু। তিনজন ভার্সিটিতেও একই সাথে পড়ে। একদিন ক্যাম্পাসে তিনজন আড্ডাদিতে সময় খেয়াল করল,পরীর মত সুন্দরী এক মেয়ে ক্যাম্পাসের সামনে গাড়ি থেকে নামলো। এমন এক অপরূপা মেয়ে দেখে সবাই তাকিয়ে রইল মেয়েটির দিকে। মেয়েটির মুখ দেখেই মনে হলো সে কতটা নিষ্পাপ আর জীবন সম্বন্ধে বোকা। সাফিন প্রায় প্রথম দেখাতেই মেয়েটির ভালবাসায় দূর্বল হলো। তবে মেয়েটির ভালবাসা পাওয়া যে অতটা সহজ নয় তা বুঝতেও বেশী দেরী হলোনা তার। কিন্তু ভালবাসা, তাই এত সহজেই বিনা প্রচেষ্টায় হেরে যেতে নারাজ সাফিন। হঠাৎ কথার ছলে রিমাকে সবটা খুলে বলল সাফিন। প্রথমত প্রেমের এমন অনুভূতি শুনে রিদিতও রিমা অনেকটাই হাসি আর ঠাট্টায় মেতে উঠল। তবে সাফিন যে এ ব্যাপারে কতটা সিরিয়াস তা বুঝতেও রিদিত ও রিমার দেরী হলো না। এতসবের পর রিমা বলল, অত ভাবিস না ভালো যখন লেগেছে তখন ভালবাসাও হবে। just wait & see.
রিমার একথাতে সাফিন অনেকটাই ভরসা পেল।

এরপর সত্যি সত্যিই একদিন রিমা সেই নতুন মেয়েটার সাথে বন্ধুত্ব করল। নতুন বন্ধুত্বের একরকম আড্ডাও দিল। কিন্তু সাফিন একটিবারের জন্যেও কথা বলতে পারলো না সেই মেয়েটির সাথে। কারণ ভালবাসা পাওয়ার জন্য যেমনি থাকে আকাঙ্ক্ষা তেমনি থাকে না পাওয়ার ভয়। এই ভয়েই কোন কথা বলতে পারল না মেয়েটির সাথে। তবে রিমা তার প্রচেষ্টায় কোন কমতি রাখলো না। এমনি মেয়েটির নাম জিজ্ঞেস করায় মেয়েটি নাম বলল, ‘জয়া’। জয়ার একেকটি কথা শুনে সাফিনের বুকের ভেতর শুধু প্রতিধ্বনি হতে থাকে।

রিদিত ও রিমা জয়াকে সাফিনের ভালবাসার কথা সরাসরি কিছু না বললেও বিভিন্ন ইশারা,ইঙ্গিত আর কথাতে প্রকাশ করে তাদের বক্তব্য।

এমনি বন্ধুত্বের ছলে রিমা জয়ার Contact Number চাইলে জয়া তার Contact Number রিমাকে দেয়।
রিমা চেয়েছিল সাফিন জয়াকে ফোনেই সব কথা জানাক কিন্তু নাম্বার পেয়েও সাফিন কল করার পর একটি কথাও বলতে পারল না জয়াকে। কোন কথা না বলেই ফোন রেখে দিল।
তবে জয়া অনেক বেশীই সরল একটা মেয়ে। জীবন ও প্যাঁচের ধারণা প্রায় নেই বললেই চলে।


সাফিন একদিন জয়ার সাথে ক্যাম্পাসে কথা বলতে সময় জিজ্ঞেস করল, তোমার বাবা কি করে?
জয়া বলল,বিজনেস ম্যান।
এরপর আর সাফিন কোন কথাই বলতে পারল না। কেবল দ্বিধাতেই মন ভরে গেল। তবে এই কথা শোনার পর রিমা অবশ্য সাফিনকে মজা করে বলল, আসলে তুই জয়ার সাথে প্রেম করতে চাস নাকি ওর বাবার অফিসে জব করতে চাস?
মানে?
মানে হলো, জয়ার বাবা কি করে তা তোর জেনে কি দরকার?
একথা শুনে সাফিন লজ্জিত হয়ে চুপ করে থাকে আর রিদিত ও রিমা হাসি আর ঠাট্টায় মেতে ওঠে।
অবশ্য এত কিছুর পরও সাফিন জয়াকে মনের কথা কিছুই জানাতে পারল না। তাই ভাবলো সে জয়াকে কিছু একটা Gift দিয়ে তারপরই বলবে সব কথা।
যেমনি কথা তেমনি কাজ। র‍্যাপিং পেপারে মোড়ানো একটা বই জয়াকে দিল। জয়া কোন রকম প্রশ্ন ছাড়াই বই নিল।
এরপর সাফিন একরকম আনন্দেই রিমাকে জানালো বই দেওয়ার ঘটনা।
রিমা শুনে অনেকটা আনন্দেই বলল, ভালো করেছিস। বইয়ে তোর Phone Number দিয়েছিস?
সাফিন চুপ করে থাকল। রিমা ঠিকই বুঝতে পারল সাফিন তার Phone Number দিতে ভুলে গেছে।
রিমা বলল, তুই একটা রাম গাঁধা, এমন বোকার মত কাজ কেউ করে?

এত কিছুর পরও সাফিন কিন্তু আশা ছেঁড়ে দেয় না। একদিন ঠিকই জয়াকে জিজ্ঞেস করল, জয়া, তুমি তোমার অবসর সময়ে কি করো?
Video Games খেলি।
না মানে বলছি, আর কিছু করো না?
কেন কি করব?
আমার কথা ভাব না?
কি সব আজে বাজে কথা বলছ, তুমি আমার বন্ধু তোমার কথা মনে পড়তেই পারে।
সাফিন এরপর আর থেমে না থেকে হঠাতই বলে ফেলল,
আসলে আমি তোমাকে ভালবাসি।
জয়া শোনার পর আর কোন কথা না বলে কিছুক্ষণ পর সাফিনের সামনে থেকে মন খারাপ করে চলে গেল।
সাফিনের ডাকে আর সাড়া দিল না।
এরপর অবশ্য সাফিন বুঝতে পারলো, আসলে জয়া অনেক বড়লোকের মেয়ে। অতি প্রাচুর্যতায় জীবন আর ভালবাসা সম্বন্ধে প্রায় অজ্ঞ একটা মেয়ে। কেউ যে তাকে খুব ভালবাসতে পারে এ ব্যাপারে সে কোন ধারণাই রাখে না। দামী দামী ইলেক্ট্রনিক খেলনা আর মিডিয়ার ফ্রেমে জড়ানো তার জীবন। তাই ভালোবাসাকে অনুভূতি দিয়ে বোঝার জ্ঞান তার নেই।

এরপর একদিন জয়া অবসর সময়ে বাসায় হঠাৎ সাফিনের কথা মনে করে। অমনি টেবিলে রাখা সাফিনের দেওয়া বইটির দিকে দেখে। এখনো র‍্যাপিং পেপার খোলা হয়নি। অমনি বইটি খুলে জয়া প্রথম বইটি পড়তে শুরু করল। পড়তে পড়তে গল্পের এক পর্যায়ে দেখলো, সেখানে লেখা,
‘আসলে ভালবাসা পুরোপুরি একটা অনুভূতি। তা বুক চিঁরে প্রকাশ করা যায় না। কিছু মানুষ তার ভালবাসাকে কোন ভাবেই বোঝাতে পারে না তার প্রিয়জনকে। তাই ব্যর্থতা নিয়েই গুমরে কেঁদে মরে প্রতিনিয়তই’।
একথাগুলোই আশ্চর্যকরভাবে জয়ার মন ছুঁয়ে গেল।
অমনি বইয়ের প্রথম ও শেষ পৃষ্ঠায় সাফিনের Phone Number খোঁজার চেষ্টা করল কিন্তু খুঁজে পেল না। সাফিনের অপেক্ষায় এই প্রথম তার অনেকটা শুন্য মনে হলো।
পরদিন ক্যাম্পাসে গিয়ে রিদিত ও রিমার কাছে জানতে পারল সাফিন ভার্সিটিতে আসে নি। জয়ার অপেক্ষা আরও বেড়ে গেল।
তবে অপেক্ষার পর হঠাৎ একদিন সাফিনের সাথে জয়ার মুখোমুখি দেখা,
সাফিন চুপ করে থাকে।
জয়া অমনি বলল, এই বুঝি তোমার ভালবাসা?
আরে আমি নাহয় ভালবাসা কম বুঝি তাই বলে তুমিও?
শুনে সাফিন চমকে উঠে।
জয়া আবারও বলল, এত সুন্দর একটা ভালবাসার বই দিয়েছ আর তোমার Phone Number টাই দাও নি।
এমন বোকামি প্রেমে করে?
জানো আমার কত কষ্ট হয়েছে তোমার Phone Number খুঁজতে গিয়ে।
এমনি কথার পর কথা। আর সাফিন ফিরে পেল তার ভালবাসা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.