নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ নাজিমউদ্দিন

মোঃ নাজিমউদ্দিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছাত্ররাজনীতি - রাজনীতি/ শিক্ষা / ক্ষমতার অপব্যবহার অথবা জঙ্গিবাদ ।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:২৩

যে রাজনীতি সাধারণ মানুষকে সহায় সম্বলহীন ও নিঃস্ব করে, সে রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা করা মনুষত্বকে ধ্বংস করার শামিল ছাড়া আর কিছু নয়।
ছাত্র জীবনে প্রত্যেকটা ছাত্রের সুস্থ রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। একটা সময় ছিল যখন ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করত দেশের সকল মেধাবী ছাত্ররা, দেশ ও জনগণের সেবার প্রত্যয়ে সেই সকল তরুণ মেধাবী ছাত্ররা ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতেন। সেই জন্যেই বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্র রাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে।

উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ছাত্র রাজনীতি বাংলার রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে। বিশ শতকের প্রথম পাদে বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন, স্বদেশী আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্র রাজনীতি একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারন করে।

বিশ শতকের গোড়ার দিকে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ছাত্রদের সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণে প্রেরণা জোগায়। জাতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ সত্ত্বেও ১৯২৮ সালে কংগ্রেসের উদ্যোগে নিখিল বঙ্গ ছাত্র সমিতি গঠিত হওয়ার আগে বাঙালি ছাত্রদের কোনো নিজস্ব সংগঠন ছিল না।

১৯৫২-১৯৭১ সময়কাল ছিল ছাত্র রাজনীতির সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।


হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে এবং ১৯৯১ সালে তাঁর পতন ঘটানোর ক্ষেত্রে পুনরায় ছাত্ররা ঐক্য ও শক্তির পরিচয় দিলেও তৎকালীন ছাত্র রাজনীতির ভাবমূর্তি অব্যাহত রাখা সম্ভব হয় নি। নানা কারণে এর দ্রুত অবক্ষয় ঘটছিল। এর প্রধান কারণ ছিল ছাত্ররাজনীতিতে স্বকীয়তার অভাব। ছাত্রসংগঠনগুলো ক্রমেই পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক দলের উপাঙ্গ হয়ে উঠছিল। ছাত্রদের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টায় সবগুলো প্রধান রাজনৈতিক দল ও উপদল ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্বে অ-ছাত্রদের অনুপ্রবেশ ঘটাতে থাকে।

বিভিন্ন কারণ রয়েছে এর পেছনে | তথাকথিত কিছু ছাত্র সংগঠনের অযোগ্য, মেধাহীন, বিবেকহীন নামধারী ছাত্র নেতাদের অনৈতিক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপই এর প্রধান কারণ।

ছাত্ররাজনীতি এখন যেনো একটা ত্রাস |
ছাত্ররাজনীতি কথা শুনলেই কেমন যেনো মনে হয় এটা একটা হিংস্র গোষ্ঠীর নাম |
এর রয়েছে বিভিন্ন জাত |
বর্তমানে ছাত্ররাজনীতি মানেই ক্ষমতাহীন ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর যতো নোংরা কাজ এর আবাসস্থল আর ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাওয়ার একটা পদক্রম মাত্র |

কারণ আমাদের দেশ এ এখন রাজনীতির নাম হচ্ছে শুধু দুর্নীতি আর ক্ষমতার অপব্যবহার |
আর ছাত্রছাত্রী দের কে রাজনীতির নাম সেই নোংরা পথে পথপ্রদর্শন করছে সেইসব মতলববাজ রাজনৈতিক দলগুলো |


স্বায়ত্বশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে ছাত্র রাজনীতি খুব কাছ থেকে দেখার আর কিছুদিন করার সুযোগ হয়েছে । ছাত্ররাজনীতি যারা করছে তারা যে রাজনৈতিক কোনো আদর্শ থেকে তা করছে তা কিন্তু নয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির মূল বিষয় হচ্ছে হলে থাকা আর বড় ভাইদের থেকে সুবিধা আদায় করা। তা নাহলে আমাদের দেশ এর কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা যেখানে টিভি দেখার সময়টুকু বের করতে পারে না , তারা হঠাৎ করে কিভাবে এটাঠিক করে ফেলে কোন রাজনৈতিক দলের আদর্শ নীতিতে তাকে চলা উচিত |
এখানে ছাত্রদের মনে আদর্শ মানে কোন দলকে অনুসরণ করলে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে |
কোনো কোনো ক্ষেত্রে তো ডিপার্টমেন্ট এর সব চাইতে মেধাবী ছাত্রটিও একটি বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন রাজনৈতিক দলকে কিংবা বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন শিক্ষক কিংবা ছাত্র নেতা কে এ কারণেই অনুসরণ করে যাতে ভবিষ্যত এ ভালো কোনো চাকুরী কিংবা ওই একই বিশবিদ্যালয় এ শিক্ষক পদে সুযোগ পাওয়া যায়|
আর ক্লাসের পেছন সারির ছাত্ররা ভাবে এই রাজনৈতিক দল ই যেনো তাদের জন্য ও পারফেক্ট |

রাজনীতিতে ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিন্তু কতিপয় ছাত্র নেতার অনৈতিক কার্যকলাপ ও অন্তর্দ্বন্দ্ব ছাত্র রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

বাংলাদেশে এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৫৪টি। আর সরকারি ৩২ কি ৩৩টি। এই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেশী বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েট নিঃসন্দেহে পৃথিবীর শীর্ষ ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জায়গা করে নেয়ার যোগ্য। দেশের প্রথম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম সেরা জ্ঞানপীঠ। আর এসব বিশ্ববিদ্যালয় যেনো এই ছাত্ররাজনীতি নামের ত্রাস আর মতলববাজ রাজনৈতিক ব্যাক্তি মহলের ভয়ঙ্কর ছোবলে জর্জরিত |


একটি বিশ্ববিদ্যালয়েই নতুন নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি হয়। একটি জাতি বা সমাজের নতুন জ্ঞানের দিগন্ত উম্মোচিত হয় এ ধরনের উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই।

রাজনীতির কলুষপূর্ণ দিকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে মারাত্মক। উপাচার্য, উপ-উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে যখন একটি প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম চলে, কোন রাজনৈতিক দলের সহযোগী কোন সংগঠনের কর্মীদের যখন বিশেষভাবে সুযোগ করে দেয়া হয়, এ ধরনের পরিবেশ যতক্ষণ পর্যন্ত না পাল্টানো যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে না।


বর্তমান ছাত্র রাজনীতির যে চর্চা তার কারণে অনেকে এটি বন্ধ করার পক্ষপাতী। তবে এটি মনে রাখতে হবে ছাত্রদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই ছাত্ররাজনীতিতে পড়ে না সেটি সরাসরি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। কিন্তু এটাও সত্য যে, ছাত্র আন্দোলনের ফসল বাংলাভাষা, স্বাধীনতা।

আর একারণেই অনেক অভিবাবক নিজের সন্তানকে সরকারি বিশবিদ্যালয় এ না পড়িয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে বেশীস্বাচ্ছন্দ বোধ করেন |
কিন্তু গত কিছুদিন যাবত জঙ্গিবাদ ও শিবির আতঙ্কে যেনো সেই আশার আলো টুকু ও হারিয়ে ফেলছেন |
আর জীবন যাপন করছেন সন্তান এর অনিশ্চিত ভবিষ্যত এর ভয়ঙ্কর স্বপ্ন নিয়ে |
অন্যদিকে সরকারি বিশবিদ্যালয় গুলোকে ছাত্র রাজনীতির আবাসস্থল বলা হলেও
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যে রাজনীতিমুক্ত তা আসলে কিন্তু নয়। সরব রাজনীতি নেই তবে নীরব রাজনীতির আড়ালে সেখানে আছে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস আছে।

যতদিন আমাদের দেশ এর প্রধান রাজনৈতিক দল গুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের তাদের নোংরা রাজনীতির তাসের তুরুপ বানানো বন্ধ না করবে ততো দিন আমাদের দেশে কখনোই সুস্থ সুষ্ঠু রাজনৈতিক কাঠামো সৃষ্টি হবে না|
আর সুস্থ ছাত্র রাজনীতি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমাদের ইতিহাস লক্ষ করলেই বোঝা যায় |

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.