![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চেনা মানুষ অচেনা হয়ে যাওয়া কিংবা কখনো কখনো একেবারে অচেনা মানুষকে চেনা চেনা মনে হওয়ার মতো ঘটনা আমাদের মাঝে মধ্যে মোকাবিলা করতে হয়। অচেনাকে চেনা মনে হওয়ার পেছনে কিছু রহস্যজনক বিষ্ময় কিংবা অলক্ষ্যে কিঞ্চিৎ স্মৃতিকাতরতা লুকিয়ে থাকলেও চেনাকে অচেনার মোড়কে আবৃত করলে সেখানে বিষ্ময়ের পাশাপাশি খানিকটা কষ্ট গড়িয়ে পড়ে। দুনিয়ার এই ছোট্ট জীবনে কারণে অকারণে কত মানুষের সাথে আমাদের পরিচয় হয় তার হিসাব রাখা আসলেই কঠিন। তবে পরিচয়ের গভীরতার মাত্রানুযায়ী কোন কোন পরিচয় অমোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছে- আর কোন কোন পরিচয় সময়ের ধূসর অববাহিকায় মিশে যায়।
আমার কর্মজীবনের শুরু থেকে ২০১৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় পনেরো বছর যাবৎ ঢাকা মহানগরীর দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকার একই ভবনে অফিস করেছি। এরপর বদলিজনিত কারণে আমার অফিস ঠিকানা পরিবর্তন হয়। স্বার্থপরতা ও ব্যস্ততম নগরীর হন্ত-দন্ত হয়ে ছুটাছুটি কালচার কিছুটা হলেও পাশ কাটিয়ে নগরীর একটি আবাসিক এলাকার অপেক্ষাকৃত শান্ত, ছায়া সুনিবিড় ও নির্বিঘ্ন এলাকায় বর্তমান আমার অফিস। বাণিজ্যিক এলাকায় বাণিজ্যিক অফিস ও ভবনগুলো বাণিজ্য নিয়েই ব্যস্ত থাকতেই পারে- কিন্তু এর বাইরের আবহাওয়া, রাস্তা-ঘাট, ইট-পাথরও প্রখর বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি লালন করলে তা নির্মম বিষ্ময়ই বৈকি।
দিলকুশা অফিসের সামনের ফুটপাতের এক ব্যাগ ব্যবসায়ীর সাথে আমার পরিচয়ের সূত্রপাত হয়েছিল ২০০৪ সালের দিকে। প্রথমে ক্রেতা-বিক্রেতা, তারপর কর্মস্থলের অবস্থানগত নৈকট্যের দরুন কর্পোরেট সম্পর্ক- এক পর্যায়ে আদর্শ মুসলিম হিসাবে দুজনের মধ্যে আপাত দৃশ্যমান সমতা থাকায় তা সৌভ্রাতৃত্যের পর্যায়ে পৌঁছে। নিজে ও অন্যান্য সহকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রয়োজনীয় কেনা-কাটার বাইরেও প্রতি বছর আমার অফিসের একটি আকর্ষণীয় ক্যালেন্ডার নিতে আসা, আমার অফিসের নিচে লবিতে নামাজ পড়তে আসা এবং এমন আরো বহুবিধ অবাণিজ্যিক লেনদেনের কারণে তার সাথে আমার পরিচয়টা উল্লেখযোগ্য গভীরতা লাভ করে। এমনকি তার সাথে দু‘ তিন দিন দেখা না হলে ফোন কিংবা সরাসরি অফিসে এসে খোঁজ নিতেন যে আমার কোন সমস্যা হলো কিনা।
গত বৃহস্পতিবার (১৭/০৮/২০১৭) দিলকুশাস্থ সেই ভবনের আমার এক সহকর্মীর সাথে জরুরি প্রয়োজন থাকায় আসরের পর পরই সেখানে পৌঁছি। দিলকুশার দেয়ালে দেয়ালে তখন ঠিকরে পড়ছিল শারদ বিকেলের অসম্ভব আকর্ষণীয় চিকচিকে সোনা রোদ। খুব ভালো লাগছিল আমার। একে তো কয়েকদিন টানা বৃষ্টির পর এমন মিষ্টি রোদ, তদুপরি পেশাজীবীদের জন্য দিলকুশায় বিকেলের এ উম্মুক্ত ও পরিচ্ছন্ন নীলাকাশ যেন ভাবতেই পারা যায় না। নির্ধারিত সময়ে ভবনের নিচে পৌঁছে সহকর্মীকে ফোন দিলে জানতে পারলাম তার নামতে ২০/২৫ মিনিট দেরি হবে। ভালোই হলো, অনির্ধারিত এই খণ্ড অবসরটুকু ইচ্ছা মতো কাটানো যাবে। মনে পড়ল ব্যাগওয়ালা ভাইয়ের কথা। ১০/১২ গজ এগিয়ে সুন্দরবন কুরিয়ারের সামনে দোকানটিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন একজন ক্রেতা ছিলেন সেখানে। তিনি চলে গেলে সামনে আমি একা। দোকানীর চোখে চোখ পড়ল, সালাম দিলাম। অনুচ্চ আওয়াজে তিনি উত্তর দিলেন। ঐ পর্যন্তই ! তারপর চোখ নামিয়ে তার নিজের কাজে মনোনিবেশ করলেন। দোকানের সামনের ভাগে এক পা দু‘ পা করে এদিক ওদিক কিছুক্ষণ হাঁটলাম। তার দিকে তাকিয়েছিও কয়েকবার- কিন্তু তিনি আমায় চিনলেন না। এ জীবটাকে তিনি তার জীবদ্দশায় কখনো কোন কারণে দেখেছেন ম্যাগনিফাইং গ্লাস ব্যবহার করেও তার মধ্যে এমন ভাব খুঁজে পাওয়া গেল না। পরিচয়ের বটবৃক্ষটি কবে যে দেশান্তরিত হয়েছে তা বেমালুম ঠাহর করতে পারিনি।
২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:১২
সালেহ মতীন বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই, আপনার পোস্ট আমি কিন্তু পড়ি, সময়ের অভাবে খুব একটা আওয়াজ দিতে পারি না, এখন থেকে সেটাও চেষ্টা করব। ভালো থাকবেন।
২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:১৬
এডওয়ার্ড মায়া বলেছেন: কিছু সম্পর্ক এমনি হয়
২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৫
সালেহ মতীন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল।
৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:২৩
কালো আগন্তুক বলেছেন: আপনার ব্যাগওয়ালা ভাই হয়ত এক্সিডেন্টলি স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছে।
২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৫
সালেহ মতীন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল।
৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৮
তাশমিন নূর বলেছেন: বিস্মিত হওয়ার মতোই ব্যাপার।
২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৬
সালেহ মতীন বলেছেন: সাথে থাকা ও মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল।
৫| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৫
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আপনি নিজেও কেন মনে করিয়ে দিলেন না?
২২ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:২০
সালেহ মতীন বলেছেন: ব্রাদার, ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য। তিনি তো আমাকে চিনতে বাধ্য নন। আর আমি কিন্তু দোষারোপও করিনি। চেনা অচেনার দোলাচলে আমাদের সামাজিক জীবনে অনেক কিছুই বহমান তারই একটি উপপাদ্য আমি আবিষ্কার করেছি মাত্র যা আমার অত্যন্ত প্রিয় পাঠক বন্ধুদের উদ্দেশে নিবেদন করেছি আর কি। আমি কিন্ত তাকে উদ্দেশ্য করেই গিয়েছি, তিনি চিনতে না পারলে তাকে অপ্রস্তত করতে বাধ্য করা জরুরি ছিল বলে মনে করিনি। ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: আমার পোষ্ট গুলো একটি পড়বেন মাঝে মাঝে খুশি হবো।