নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায়চৌধুরী

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায়চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবি: এক বৌদিবাজ(!) জমিদারের কাহিনী

১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ১২:১২

১৮৬১ সাল। বঙ্গদেশে এক শিশু জন্মাল।
ছোটবেলা থেকেই স্কুলের বদ্ধ পরিবেশ তার ভাল লাগতনা। কিন্তু বাবা, দাদা এবং গৃহশিক্ষকের সহায়তায় সুশিক্ষিত হয়ে ওঠে।

জন্মসূত্রে ও পরিবেশগত কারণে তার ভিতর আর্য রীতিনীতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ছিল।
কিন্তু জ্ঞানের উন্মেষের সাথে সাথে শেষ ব্য়সে সেই ভাব অনেকাংশেই লোপ পায়। তার স্থানে আসন লাভ করে মার্কসবাদী বস্তুবাদী চিন্তা।

১৮৯৭ সাল। লন্ডনে অর্থাভাবে তার বাল্যবন্ধুর গবেষণা বন্ধ হতে বসেছে।
আক্ষরিক অর্থে বিভিন্ন ধনী ব্যক্তির দ্বারে দ্বারে সাহায্য চেয়েছেন।
তৎকালীন ত্রিপুরার রাজা ছেলের বিয়ের খরচ বাঁচিয়ে সর্বাধিক ১০,০০০ টাকা দান করেন। বাঙালী বিজ্ঞানীর গবেষণা সফল হয়। বিজ্ঞানীর নাম আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু।
শুধু এটুকুই নয়। ১৯২৮ সালে হাইজেনবার্গ, ১৯৩০ সালে আইনস্টাইন, যখনই সুযোগ পেয়েছেন এসকল বিজ্ঞানীদের থেকে জানার চেষ্টা করেছেন,শেখার চেষ্টা করেছেন। এই জ্ঞানের পরিচয় তার শেষ জীবনের লেখাতে পাওয়া যায়।

প্রথম জীবনে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসী নেতাদের আস্ফালন ও মিথ্যা বাগাড়ম্বর দেখে আশা ভঙ্গ হয়।
তখন তিনি বুঝতে পারেন দেশের প্রাণকেন্দ্র গ্রামগুলির উন্নতি করতে পারলেই দেশবাসীর প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব।
গড়ে উঠল 'বিশ্বভারতী', 'শ্রীনিকেতন'।
গরীব চাষিরা মহাজনের ঋণের দায়ে জর্জরিত হয়ে মারা যেত। নোবেল জয়ে প্রাপ্ত অর্থের প্রায় সবটা দিয়ে গড়ে তুললেন গ্রামীণ ব্যাঙ্ক।
বাংলার চাষিরা যা ফসল ফলায় তাতে তাদের সারা বছর চলেনা।
উপায় কী? বিদেশ থেকে পত্রিকা আনিয়ে বুড়ো বয়সে আবার শুরু হল পড়াশুনা। হাতের কাজ শিখিয়ে তাদের বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা হল।

ধনীর ছেলে বিলেতে ব্যারিস্টারি পড়তে যাবে এটাই তো দস্তুর!
কিন্তু মাথার পোকা আবার নড়ে উঠল। স্ত্রীর গয়না বেচে বড়ছেলে আর জামাইকে 'কৃষিবিদ্যা' পড়তে পাঠালেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারই খয়রা এস্টেটের অর্থে নতুন বিভাগ শুরু হল 'কৃষিবিজ্ঞান'।

ব্যক্তিটির নাম রবি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নিজেকে নিঃস্ব করে দিয়ে যাওয়ার কথা আরো অনেক আছে যা স্বল্পপরিসরে বলা সম্ভব নয়।
কিন্তু এই নিয়ে চর্চা, লেখালেখি, সিনেমা তৈরি খুবই পরিশ্রম সাধ্য। তার থেকে এই ভাল। স্বামী, স্ত্রী ও স্বামীর বৌদি।
বেশ একটা রগরগে ত্রিকোণ প্রেমের গল্প!
দেখবেন সুপারহিট হবেই।

অনেকে বলবেন, তাঁকে সামগ্রিক ভাবে জানতে এরও প্রয়োজনীয়তা আছে।
তাদের বলব, রবীন্দ্রনাথ ও তার বৌদি কাদম্বরী দেবী, এই দুজন শিক্ষিত সমমনস্ক ব্যক্তির ভিতর কোনো বিশেষ সম্পর্ক থাকতেই পারে।
কিন্তু তাদের একান্ত অনুভুতি কে যেভাবে চাটনি করে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তা অবশ্যই নিন্দনীয়।

আর সামগ্রিকতার কথা বলছেন? আসুন আনন্দবাজার পত্রিকার বেস্টসেলার লিস্টে তাকান যাক,
কাদম্বরী দেবীর সুইসাইড নোট, আমি রবি ঠাকুরের বউ, কাদম্বরী, ঠাকুরবাড়ির গোপনকথা: দ্বারকানাথ থেকে রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথের জায়া ও জননী।
নাম দেখেই বইগুলির বিষয়বস্তু বুঝতে পারছেন। তার সুবিশাল কর্মকান্ডের উপর একটি বইও চোখে পড়ল কী?

আসলে আমরা বাঙালীরা খুবই গসিপ প্রিয়।
উত্তমকুমার ও সুপ্রিয়াদেবীর ভিতর কেমন সম্পর্ক ছিল তা আজও অত্যন্ত মুখরোচক বিষয়।
আর ব্যক্তিটি যদি হন, বাঙালীর সর্বকালীন সেলিব্রিটি রবীন্দ্রনাথ, তবে তো কথাই নেই।
বর্তমান লেখকগণ(!) বিষয়টি খুব ভালভাবেই জানেন।
তাই এই বিষয়ের উপর একের পর এক বই লেখা হচ্ছে, সিনেমা-সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে।
সেগুলো হিটও হচ্ছে।

আর আমরাও অফিসে, ক্লাবে আলোচনার বিষয় পেয়ে যাচ্ছি, "বুঝলেন মিত্তির দা, এই রবীন্দ্রনাথ মালটা হেব্বি বৌদিবাজ ছিল"।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুন, ২০১৫ সকাল ৭:৫৬

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: অসাধারণ!

২| ১৬ ই জুন, ২০১৫ রাত ১:০৫

মণীশ রায়চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৬ ই জুন, ২০১৫ রাত ১:৪২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: যা বলেছেন| রবি তো রবিই| যারা শুধু কাদম্বরী অংশ নিয়ে মেতে আছে, তারা রবিকিরণের বাইরে অবস্থান করছে| অন্ধকারে,রাতে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.