![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সাধারন একজন মানুষ। আমার কোন ইতিহাস নেই, আর ভূগোল দেখতেই পারছেন।
লোকে বলে অলস মস্তিষ্ক হল শয়তানের আখরা। সত্যি-মিথ্যা জানিনে তবে আমার উপর যে শয়তান মাঝে মধ্যে ভর করে বুঝতে পারি। রাতের ঘুম হারাম করে রাজ্যের বাজে চিন্তায় ডুবে যাই। আর তাতে না কারও কোন কাজে আসে, না কারও কোন ক্ষতি হয়। ক্ষতি যা হবার তা হয় আমার নিজের। মাথার উপরের অংশটা ফাঁকা হয়ে গেছে। ২৮ বছর চলছে লোকে দেখলে বলে ফোরটি আপ। নিজেকে নিয়ে নিজেই চিন্তত কি করা যায় বলুন।
এতটা কাল গরুর গাড়ির মত গড়িয়ে গড়িয়ে চলা জীবনটা, আজ মনে হচ্ছে পুরুই ব্যর্থ। কি করার ছিল? কি করলাম? লাভ-ক্ষতির হিসাব মেলাতে মেলাতে রাত পুরুই কাবাব। সকালের দিকে মনে হল? কি করছি, কি এ সব বেকার। সব ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে আমি সকালের তাজা বায়ু সেবন করতে করতে, মনে হল, আরে শালা, আমার তো ভাগ্য বলতেও কিছু নেই, বিশ্বাস বলতেও কিছু নেই। আমি শালা কি? মানুষ না আর কিছু! একবার মনে হচ্ছে মানুষ, না মানুষের মত কি যেন?
আচ্ছা ধরা যাক, আমি মানুষ। মানুষ হতে হলে আমার কি কি থাকা আবশ্যক। আসুন দেখা যাক!
১। একজন স্রষ্টা থাকতে হবে। যে আমাকে ভালো-মন্দ সমান কাজে প্ররোচিত করবে।
২। দু-একটা ডিগ্রি থাকা চাই। যদি মামা-খালু থাকে তবে আর আবশ্যকতা নেই।
৩। নিশ্চিত চাকুরি থাকা চাই। গর্ভমেন্ট সার্ভিস হলে ভালো। আর পুলিশ-প্রশাসন হলে তো কথাই নেই। মাইনে কম কিন্তু উপরি।
৪। পাশে একপাল মাইডিয়ার টাইপ বন্ধু থাকা চাই।
আপাতত মনে হয় এই হলেই চলে, নারী, গাড়ি, বাড়ি সব আপনার দিকে ধেয়ে আসবে। আর মহান স্রষ্টা সদা হাস্যুজ্জল মুখে আপনার দিকে তাকিয়ে থাকবে। আমার এসব কিছুই নেই তার মানে আমি মানুষের মধ্যে পরি না। আমার সংখ্যাটা জগতে পরিমানে বেশি। মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কম। ছাঁকতে গেলে হয়ত খুজে পাওয়াই দুস্কর। এবার চিন্তার রথ, যে দিক ইচ্ছে ছুটাতে পারেন। আমি এইখানে স্টপ করলাম।
বলবেন ভাই, আপনি ভাগ্য বিশ্বাস করেন না? হ্যাঁ করব না কেন? “ছেলেবেলায় মা বলত” এইখানে যেও না, ভুত আসবে! বাবা মসজিদে নিয়ে গিয়ে বলতেন আমাদের একজন স্রষ্টা আছেন। যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছন। সেই থেকে ভুত আর স্রষ্টা দুইজনাই আমার মনে বাসা বেধেছে। একজন অন্ধকারে টানে না। ভয় দেখায়। অন্য জন খেলা দেখছেন,যা করার করে নে বাছা ফিরে তোকে আসতেই হবে।
তাহলে ভাই, এই যে ভাগ্য ভাগ্য করছেন তার কি হবে? বলছেন বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বুহু দূর।
“ভাগ্য” আমি ভাই সঙ্গাটঙ্গা দিতে পারবো না। অত বিদ্যে আমার পেটে নেই। আমি ভাই মূর্খ মানুষ।
ধরাযাক, আপনি একটা বড় কোন কোম্পানির হোমরা-চমরা টাইপের কিছু। কারও বৌভাত অনুষ্ঠানে গেছেন। খাবার টেবিলে আপনি আর এলাকার ঈমাম সাহেব।
আপনাদের কথপকথপন হচ্ছে এই টাইপ।
--ঈমাম সাহেব আগে সালাম দিবেন।
--অলাইকুম সালাম।
--জী ভালো আছেন। মনে মনে শালা কে আমার এই টেবিলে ডাকল?”আর দেখি কোন টেবিল ফাকাও নেই”
ঈমাম সাহেব ভাবছেন? এই হচ্ছে মানুষের বরাত। আমি ছয় হাজার টাকা মাইনে পাই, আর এ সারে চার লাখ। ব্যাটা একটা কঞ্জুস। দানের বেলায় ঠন ঠন। ব্যাটা মরলে তো সারে তিন হাত ছাড়া কিছুই নিতে পারবি না, তাও আবার পারমান্টে না। কদিন পরেই আর একাটা কে তোর কবরে চালান করে দেবে।
--হে আল্লাহ এই লোকটাকে হেদায়েত দাও।
আপনি যখন মানুষ, তখন জন্মের সময় আল্লাহতায়ালা আপনাকে সমান সব কিছু দিয়েছিল। তবে কেন। আপনার আর ঈমাম সাহেবের মধ্য পার্থক্য? বলবেন শিক্ষায়! বাল্য কালে আপনার উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যার রেজাল্ট আপনারা দুইজন দুই কোয়ালিটির।
তাহলে ভাগ্য? আড়ে ভাই বুঝলেন না........................
চাপিয়ে দেওয়া অন্য কারও ইচ্ছে, আর আপনার একগুঁয়েমিটা আজ আপনাকে এই অবস্থায় দাড় করিছে।
সারা বছর পড়াশুনা করলেন। পরিক্ষা দিতে যাচ্ছেন। “মা বলছে বাবা এবার কিন্তু একটা স্থান আনা চাই”। আপনি?
দুমাস পর একদিন রেজাল্ট আনতে গেলেন। “আপনার পাশের ছেলেটা গোল্ডেন এ+”। আপনি টেনেটুনে “সি গ্রেড”।
ভাগ্য হচ্ছে আপনার কর্মের ফল। বাল্য কালে যা করেছেন, করছেন বৃদ্ধ কালে টা পাবেন। ছাত্র জীবনে যা করেছন, করছেন সার্ভিস লাইফে পাবেন।
ভাগ্য বলতে কিচ্ছু নেই। এখনকার কর্মই আগামি দিনের ভাগ্য।
তাই মানুষ হিসাবে আপনার প্রথম দায়িত্ব একটা লক্ষ্য ঠিক করা। এবং সেই লক্ষ্য ঠিক রেখে যা করতে আপনার ইচ্ছে তাই করা। তবে লক্ষ্য ঠিক রেখে। একবার পা পিছলে গেল তো ছিটকে গেলেন প্রতিষ্ঠার রেস থেকে। হাজার চেষ্টাও রেসে ফিরতে পারবেন না। কাজেই সাবধান।
একটা একজাম্পল দি। ঘটনাটা আমার নিজের। খুব কামুকছিলাম। মনের ভেতরটা উতকুত করত মেয়েদের ঢেকে রাখা সমপদ দেখার জন্য।
সব সয়ম লোকাল বাসে চরেছি। তাও যাত্রীর ভীর দেখে উঠতাম। একটাই কাজ ছিল। সুড়ুত করে ভীররে মধ্যে ঢুকে কোন মেয়ের পাশে সটান দাড়িয়ে যাওয়া।
বুঝতেই পারছেন আগুন আর মোম পাশাপাশি। আর চোখে মেয়েটির দিকে তাকাতাম বুঝতে চেষ্টা করতাম। সনমান আর লোকলজ্জার ভয়ে হয়ত কিছু বলত না। আমি সেইটে কে পুজি করে দিগুন উৎসাহে আমার কাজ চালয়ে যেতাম।
একদিন আমার বউ, আমায় এই রকম একটা কথা বলল। নিজেকে শুধরে নিলাম।
“বিশ্বাস” সেই কোন ছোটবেলায় গুরুজনেরা ভুত আর ঈশ্বরের বিশ্বাষের বিজ মনের জমিতে বপন করেছেন তার পর থেকে সবাই সেই বিশ্বাস কে আরও পাকাপক্ত করার নানান সামগ্রী সামনে উপস্থিত করছে।
একটা বয়সে প্রায় সব ছেলেই কারও না কারও উপর নির্ভর হয়ে পড়ে। নিজের আত্মীয় স্বজন কে তখন অনেক দুরের মানুষ বলে মনে হয়।
তার সাথে সব কিছু শেয়ার, এক সাথে কাটান সময়, তার কেয়ার করা। সব কিছু মিলিয়েই সে দিন দিন আপনার খুব কাছের মানুষ হয়ে উঠে।
হ্যাঁ ভাই আমি গার্ল ফ্রেন্ড এর কথা বলছি? এতটা কেয়ার আর কে করবে?
চোখে রঙ্গিন স্বপ্ন, একটা ভালো সার্ভিস যোগদেবেন, তার গার্ল ফ্রেন্ডকে বিয়ে করবেন । বাড়ি করবেন। গাড়ি কিনবেন। দশটা ছেলের বাপ হবেন। সেই সপ্নেই আনপি বিভর। হটাৎ একদিন কফি শপে বা পার্কার সিমেন্টের বেঞ্চে বসে আপনার গার্ল ফ্রেন্ড, আপনাকে বলছে...
তুমি আমাকে ভালবাসো?
-এটা কেমন প্রশ্ন? রাতুল ভীষণ
অবাক হল!
-তোমার স্বভাব বদলাও। প্রশ্নের
উত্তরে প্রশ্ন করবেনা।
-ভালোবাসি।
-কতটা?
-অনেক।
-আমাকে না পেলে কি করবে?
-কি বলছো এসব?
-আবার প্রশ্ন?
-না পেলে সুইসাইড করবো.
-সিরিয়াস?
-অবশ্যই।
-তাহলে আগামী শনিবার
তোমাকে আত্মহত্যাই করতে হবে।
-কিন্তু কেন?
-কারণ ঐ দিন আমার বিয়ে।
-তুমি কি বিয়ের দাওয়াত
দিতে এসেছো?
-হুমম।
-কি বলছ এসব শিল্পী?
আমরা একে অন্যেকে ভালোবাসি। আমার নতুন চাকরী হয়েছে। তুমিই গত
সপ্তাহে আমাদের বিয়ে নিয়ে আলাপ
করেছিলে আর আজ
এসে বলছো তোমার বিয়ে!
-আমার বিয়ে নাকি অনেক আগেই ঠিক
করা রাতুল। আর আব্বুর একবার হার্ট এটাক হয়েছিলো তুমি জান।
আমি চাইনা আব্বুকে উত্তেজিত
করে তুলতে। ডাক্তার বলেছেন আবার
কোন কারণে ছোটখাটো এটাক হলেও
তিনি মারা যাবেন। এখন তুমিই
বলো মেয়ে হয়ে বাবাকে মেরে ফেলব আমি?
-আর আমি যদি আত্মহত্যা করি?
-আমার কিছু করার নেই। আমি সরি।
তাছাড়া তুমি এটা করবেনা আমি জানি রাতুল।
-তুমি ভুল জান শিল্পী।
-কেন পাগলামি করছো বল? আমি ছাড়া কি মেয়ে নেই দুনিয়ায়?
-আমি ছাড়া কি ছেলে ছিলনা দুনিয়ায়
প্রেম করার?
শিল্পী চুপ। কথা বলছেনা আর রাতুলও।
পিনপতন নীরবতা।
নীরবতা ভেঙ্গে খানখান করে দিল যেন রবি। দু কাপ কফির বিল নিয়ে এসেছে।
ব্যাস হয়ে গেল। কোথায় যেন পরেছিলাম পছন্দের মেয়ে না পেলে জীবন নরক হয়ে যায়। ঠিক কিনা এবার নিজেই অনুমান করুন আপনার অবস্থা?
একজন অন্য টপকে যাওয়াতে ব্যাস্ত। ভালো থাকতে কে না চাই বলুন? তোমায় মারলে তবেই না আমি ভালো থাকব। তোমায় টপকাতে পারলেই না আমি মানুষ। তাছাড়া রাস্তার কুকুরের সাথে আমার কি পার্থক্য। ঘেউ ঘেউ করে তো সবাই করে মানুষ হতে পারে কয়জন।
স্রষ্টা আমাদের কুকুর বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে একপাল কুকুরের মাঝে। লড়াই কর বেঁচে থাক, প্রুভ কর তুই মানুষ? তোর পরিচয় ভণ্ড, মিথ্যেবাদী, প্রতারক, বেঈমানি তোর রক্তে। স্বয়ং শয়তানও লজ্জায় মুখ লুকিয়ে পালিয়ে যায়।
জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। জানেন, আপনি কোন গাড়ি আপনাকে চাপাদেবে না। তারপরও একবার ডাইনে, আর একবার বাইয়ে।
মসজিদে নামাজ পরতে গেছেন। সিজদায় গিয়ে চিন্তা করছেন। রহমান সাহেব ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসার কথাছিল এখন ফোন দিল না। অথচ ফোনটা আপনি নিজেই মসজিদে ঢুকা মাত্র বন্ধ করে দিয়েছেন।
ভাই আপনি না মুসলিম। আল্লহতে বিশ্বাস করেন। আসলে আমাদের নিজেদের প্রতি আস্থা নেই। এই কারনে একগ্রতাও নাই। আমরা যে পারি এইটে বারবার ভুলে যাই।
তাই আমাদের বিশ্বাস গাছের ডালে আটকে থাকা ছেড়া পলিথিনের মত বাতাসে পতপত করে উরতে থাকে।
২| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৫৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
"লোকে বলে অলস মস্তিষ্ক হল শয়তানের আখরা। "
-শুধু বেকুবেরা বলে।
৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:০৯
বিজন রয় বলেছেন: আমাদের বিশ্বাস গাছের ডালে আটকে থাকা ছেড়া পলিথিনের মত বাতাসে পতপত করে উরতে থাকে।
কখনো কখনো।
৪| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১৭
আহমেদ রাতুল বলেছেন: হয়ত বা এই কারনেই বিশ্বাস কে ক্যাপিটাল করে মানুষ, মানুষের সাথে খেলা করে।
৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৪:২৫
আহমেদ রাতুল বলেছেন: একজন অন্য জন কে টপকে যাওয়াতে ব্যাস্ত। ভালো থাকতে কে না চাই বলুন? তোমায় মারলে তবেই না আমি ভালো থাকব। তোমায় টপকাতে পারলেই না আমি মানুষ। তাছাড়া রাস্তার কুকুরের সাথে আমার কি পার্থক্য।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৪৯
আহমেদ রাতুল বলেছেন: আমার এই পোস্টে, আল্লাহ, ঈমাম সাহেব, মসজিদ ইত্যাদি শব্দ উল্লেখ করেছি বাক্যটাকে আরও দৃঢ় করবার জন্য। কোন উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কাউকে ছোট কারবার জন্য নয়। এসব আমার অলস মস্তিস্কের ফসল। ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।