নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নৈতিকতার দিক থেকে আমি নিঃস্ব। লেখাপড়ায় চরিত্রের সংস্কার বদলায় না। ভেতরের অন্ধকার ঘোচে না। নাচ মহলে হাজার বাতির রোশনাই, খাসমহলে অন্ধকার।

আহমেদ রাতুল

আমি খুব সাধারন একজন মানুষ। আমার কোন ইতিহাস নেই, আর ভূগোল দেখতেই পারছেন।

আহমেদ রাতুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষ যেমন কুৎসিত হয়, তেমনি সুন্দরও হয়।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:৪৬

আমি বেরিয়ে এলাম। বাড়ি থেকে নয়, অফিস থেকে নয়, কারখানা থেকে নয়, রেস্তরাঁ থেকে নয়,বেরিয়ে এলাম মাতৃগর্ভ থেকে। কি কষ্টে ছিলাম রে ভাই ! নড়বার চড়বার উপাই নেই। ছোট্ট একটা পলিথিন ব্যাগ। তার মধ্যে খানিকটা জল ভরেছে। একটা দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। বললে, মা ‘লাইফ লাইন‘ সাপ্লাই করছেন। মা, যা খাচ্ছেন তুমি সেটা টানছ। আর তিলে তিলে তেএটে হচ্ছ। মাথাটা নীচের দিকে পা দুটো উপর দিকে। মাছের ফাতনার মত টাপুর টপুর ভাসছি। মা যেখানে যায় আমিও সেখানে যাই। প্লাস্টিকের জল ভরা প্যাকেটে টুলুর টুলুর করতে করতে।
এ এক ধরনের কারাবাস। মেয়াদ ন’মাস থেকে দশমাস। কি অপরাধে ? যারা সব জানেন টানেন, তারা লিখে রেখে গেছেন, মানুষকে এই পৃথিবীতে আসতে এটাই প্রসিসিউর। এভাবেই আসতে হয়। এসে যা তা কাজ করে। বিড়ি খায়, সিগারেট খায়। মেয়েদের সিটি মারে। মদ খায়, জুয়া খেলে। বউয়ের কথায় বাপ-মা’ কে দেখে না। বউকে জামদানী কিনে দেয়। মা ছেড়া শাড়ি পরে ঘোরে, দেখেও দেখে না। বাপ কেশে,কেশে মরে যায়। একশ টাকা দিয়ে "কপ সিরাপ" এনে দিয়ে পারে না। নিজে ঢক-ঢক করে দিনে গোটা দশ তুসকা চালান করে। বিয়ের আগেই খোলা ময়দানে বউকে চুমু খায়। মিথ্যা কথা বলে, জ্বাল জোচ্চুরি করে সম্পত্তি নিজের মানে করে নেয়। মা কে নির্বাসন দেয় বৃদ্ধা আশ্রমে।
আমাদের ছোট সংসারে, মা তুমি বড্ড বেমানান। দুটো রুম, ছোট ফ্ল্যাট, গোছানও সংসার। মা তোমার পানের ডিব্বাটা কোথায় রাখি বল,ওখানে ‘আশা’ তার সদ্য নিয়ে আসা সপিছটা রেখেছে, তার চেয়ে মা তুমি গ্রামেই গিয়েই থাক না, সিঁড়ি ভেঙ্গে উঠতে তোমার কষ্ট হয়।প্রতিদিন না হোক ৩৬৫ দিনে এক, দিন তোমায় গিয়ে দেখে আসবো। মাসে মাসে টাকা পাবে,এত দিন তুমি আমায় দিয়েছ, এখন আমি তোমায় দিব। টাকা দিয়ে টাকা শোধ।

প্রেম আছে, প্রেমিকা কোথায়? ভালোবাসার আগ্রহ নেই। বাস্তবে যা আছে,তা হল শিল-নোড়া। যান্ত্রিক মানুষ, জগৎ এক যন্ত্র। সরষে পেষাই কল। তবু প্রেম আছে, প্রেম থাকবে। কত কথা জমে আছে ভেতরে। কত অনুভূতি ! দুঃখ, বেদনা, অভিমান। সপ্ন আসে কত। হঠাৎ হঠাৎ প্রকৃতি কেমন সেজে ওঠে। সূর্য জলের আয়নার কাচের চুড়ি। আলো নিভিয়ে চাঁদ ছড়িয়ে দেয় রুপর তবক। ট্রেনের জানলায় আঁটকে আছে একটি মুখ। কোন সুদুরে কে চলে যায়। চিঠির মত। যা দেওয়ার ছিল,সব দিয়ে দেওয়া। যে নেই সে আছে।
ভাবনার গভীরে প্রবেশ করে আশা-নিরাশায় দোদুল্যমান,এ জগৎ থেকে সে জগতে চলে যাওয়া।
একবারই এসেছি ভাই। আবার আসা হবে না।
স্বীকার করছি, বিয়ে করে ভুল করেছি। সেই যৌবনকালে কোথা থেকে একটা প্রেম প্রেম ভাব এসেছিল। কাঙ্গালের মত অবস্থা, ‘শিল্পি আমাকে এক লিটার প্রেম দাও”। শিল্পি ‘বাইপাস’ দিয়ে কেটে পড়ার ধান্দা খুজছে। চোখের নীচে কালসে দাগ, রাত জেগে ফিসফিস করে কথা বলা। বেশ কিছু টাকার শ্রাদ্ধ। বদনামও হল। বাজারের টাকা মেরেছি। মা বললেন,ওটাকে আর বাজার করিও না। ওর ক্যারেক্টার নষ্ট হয়ে গেছে। ও ওর জন্য যেটা অপেক্ষা করছে, সেটা প্রেমিকার ভালোবাসা নয়, ছ্যাকা। মাথার টাক দেখেছ! ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
কি বিপদ রে ভাই! মানুষের ভেতরে অদৃশ্য,অস্পষ্ট সব ব্যাপার থাকে থাকে তার জন্য মানুষ দায়ী? আমি কি আমায় সৃষ্টি করেছি? আমার অনেক প্রশ্ন সেই সৃষ্টিকর্তার কাছে, যে সৃষ্টিকর্তা সর্বত্র আছেন; কিন্তু দেখা যায় না। এ এক অদ্ভুত লুকোচুরি। সর্বত্র আছি বলেই অদৃশ্য। এই আমার বয়েসের দোষ, সহজ একটা কথা কে প্যাচিয়ে-পেঁচিয়ে জটিল ও দুর্বোধ করে তোলা। কি প্রশ্ন, সেটা বলে ফেল না। প্রশ্নটা হল-একটা ছেলে কেন মেয়েদের দিকে তাকায়? মেয়েরা কেন ছেলেদের দিকে তাকায়? মেয়েদের তাকানোটা বঝা যায় না। আড়ে আড়ে। সুট করে দেখে নিল। ছেলেরা বোকার মত হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। যেন বাঁদর কলা খাচ্ছে। তাকাবেই তাকাবে। যাকে দেখছে তারই প্রেমে পড়ছে।
আমি তন্ময় হয়ে দেখতে লাগলাম। মন যেন মনে-মনে বলল,আহা! কি সুন্দর! পুরুষের চক্ষু, নারীর বক্ষ। নিয়ন্ত্রনে আনিব কার বাপের সাধ্য।
আশা শুয়ে পড়ল। সর্বনাশ ! শুধু মেয়ে নয় সুন্দরী মেয়ে। মাথায় লম্বা লম্বা ফুরফুরে চুল,আমার এত কাছে? আশা হাত দিয়ে গলার পেছনে দিকটা জড়িয়ে ধরে আমার মুখটাকে ধীরে ধীরে সামনের দিকে নামিয়ে আনতে লাগল। আমার মুখটা যত কাছাকাছি হতে লাগল আশার মুখটা ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। অসম্ভব ফর্সা। টান টান মুখের চামড়া। রোদের আভায় গোলাপি হয়ে উঠছে। পাতলা নাক। কুচকুচে কালো ধনুকের মত ভুরু। ছোট্ট কপাল, রেশমের মত চুলে ঢাকা। খয়েরি টিপ লাল ঠোঁট। মানুষ যেমন কুৎসিত হয়, তেমনি সুন্দরও হয়। এত সুন্দর। ছবির চেয়েও সুন্দর। কোন দিন কি মুহূর্ত এসে যায়। মরতে মরতে বেঁচে এসে একেবারে বোটানিক্যাল গার্ডেনে। মুখটা অনেক নীচে নেমে এসেছে। আশার মিষ্টি গরম নিঃশ্বাস নাকে এসে লাগছে। চরাচর ব্যাপ্ত করে চোখের সামনে আর কিছু নেই। কেবল পূর্ণিমার চাঁদের মত একটী মুখ, টিপ, নাক, চোখ, ভুরু, ঠোঁট, সারি সারি মুক্ত।
এই হল নারী। মানুষের দাসত্বের আর একটি শৃঙ্খল। এতে কি আছে ! যা প্রকৃতিতে নেই, অসিমে নেই, জ্ঞানভাণ্ডারে নেই, ঈশ্বর চিন্তায় নেই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:১৮

বেগুনী ক্রেয়ন বলেছেন: লেখাটা সঞ্জীব এর মত!

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৪

আহমেদ রাতুল বলেছেন: অবলম্বনে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.