নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোধ হয় এখনও মানুষই আছি....

রাজ বিদ

মানুষ হওয়ার চেষ্টায় আছি। জীবনের অমোঘ সত্যগুলো উদঘাটনের চেষ্টায় আছি। যেদিন বুঝবো আমার আর সত্য খুজার স্পৃহা নেই সেদিন বুঝবো আমি মারা গেছি

রাজ বিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অদ্ভুত এক অনুভূতি

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫২

সেদিনকার এক তুচ্ছ ঘটনা আমার কাছে বড় অসামান্য মনে হচ্ছিল। এমন এক অনুভূতি যা বোধহয় আমার স্মৃতিপট থেকে কখনও বিলীন হবে না,ঘটনাপ্রবাহে হারিয়ে যাবে না। অথচ ব্যাপারটা বাহ্যত অতি সামান্য। এক সন্ধ্যায় কোন এক শপিং মলের সিঁড়ির ধাপ পেরিয়ে উঠতে যাব। সিঁড়ির ধাপ বেয়ে নামছিল ছোট একটা পরিবার। দম্পতী আর দুই ছোট বাবু, একেবারে ছোট সদস্যটি মাত্র হাটতে শিখেছে এমনই মনে হচ্ছিল। হাটছিল সাবলীলভাবেই। তবে সিঁড়ির মুখে এসে পরিবারের তিন সদস্য নেমে গেল আর দাঁড়িয়ে পড়ল বাবুটা। মুখ কাচুমাচু করে একবার তাকাচ্ছিল নিচের দিকে আরেকবার তার আব্বু আম্মুর দিকে,আর ডাক পাড়ছিল আব্বু আব্বু বলে।বুঝলাম বড় বেকায়দা অবস্থায় পড়েছে সে। ঘটনাক্রমে আমি এসে পড়লাম বাবুটার কাছাকাছি । বাবুটার কাঁদোকাঁদো মুখের দিকে তাকিয়ে ইচ্ছা করছিল কোলে করে তাকে নামিয়ে দেই, মাত্র চার- পাচ ধাপের সিঁড়ি, তার বাবাই এগিয়ে আসতে পারে এমনটা ভেবে আর অত ব্যস্ত হলাম না
।তবে বাবুটার কাছাকাছি এসে আমার গতি যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধীর হয়ে এল। সহজাত প্রবৃত্তিবশতই যেন হাত সামান্য এগিয়ে গেল তার দিকে। হঠাৎ হাতের আস্তিন খামছে ধরল সে,অনেক শক্ত সেই আঁকড়ে ধরা টের পাচ্ছিলাম। খামছে ধরে রেখেই নামল এক ধাপ,অতি সন্তর্পণে,কাপা কাপা পায়ে। অসাড় হয়ে তাকিয়ে ছিলাম আমি। বাবুটার আম্মু ওদিকে ডাকছে,বাবু আস্তে নেমে আসো,কার হাত ধরেছ তুমি।বলছিল এই কথা ভেবে যে হাত ধরাতে হয়ত আমি কিছু মনে করতে পারি বা এই আশংকা করে যে বাবুটার হাত ছেড়ে দিতে পারি। বাবুটার হাত আরও ভালভাবে ধরে এক ধাপ নামিয়ে দিলাম।এক পলক তাকালাম মায়ের দিকে,এই আশ্বাস দিতে যে আমি তাকে ছাড়ছিনা।মায়ের মুখে তখন এক পরম নির্ভরতার হাসি। এই এক হাসি আর বাবুটার খামছানি, কেমন যেন এক গভীর রেখাপাত করে গেল মনে,যার কোন কারণ বা ব্যাখ্যা খুজে পাচ্ছিনা,খুজতে যাচ্ছিও না।মনে হচ্ছিল কয়েকটা যুগ পার করে দিতে পারব একমাত্র এই স্মৃতিকে অবলম্বন করেই।হাস্যকর শুনালেও এমনই এক অদ্ভুত রকমের প্রশান্তি বিরাজ করছিল আমার দেহের কিছু অংশ জুড়ে। এক নিখাদ নিখুঁত মানসিক তৃপ্তি। যা বলে বোঝানোটাও এক অতিমানবিক ব্যাপার।ভাবছিলাম এমন কী ছিল এর মধ্যে।এইসব সেন্টিমেন্ট আমার মধ্যে একটু আধটু কাজ করে স্বীকার করছি,তবে এত তীব্রভাবে না। এই তুচ্ছ ব্যাপারটার মাহাত্ম্য আমাকে গবেষণা করে বের করতে হয়নাই।ঘটনাটা ঘটে যাওয়ার আগে এমনও কিছু মাথায় আসে নাই যে এতে চরম অনুভূতিদায়ক কিছু থাকবে। শুধু এইটুকুই অনুভব করেছি যে এতে এমনই কিছু ছিল।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এই মানবিক অনুভূতিগুলোই আমাদের জীবনের সম্পদ। তবে বাইরে কোথাও বের হলে মা-বাবার উচিত সাথে থাকা নিজের ছোট সন্তানের প্রতিও মনোযোগ থাকা সে ঠিক আছে কিনা, তাদের সাথে আছে কিনা।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২০

রাজ বিদ বলেছেন: সহমত। হ্যা,এই অনুভূতিগুলোই হয়ত জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।
ভাল থাকবেন অপর্ণা মম্ময়।

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:১০

মধ্য রাতের আগন্তক বলেছেন: আপনার বর্ণনার ধরণটা খুব সাবলীল । চালিয়ে যান...

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১০

রাজ বিদ বলেছেন: ধন্যবাদ মধ্য রাতের আগন্তুক। আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.