![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ওলামা-মাশায়েখ শ্রেণীর সাথে দেশের ধান্দাবাজ, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা শ্রেণীর একটি অচ্ছেদ্য ও অলিখিত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সম্পর্কই দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধক হিসেবে অবির্ভূত হয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো ওলামা-মাশায়েখগণ কর্তৃক ইসলাম বিষয়টি সম্পর্কে সংকীর্ণতম ব্যাখ্যা। এই ওলামা-মাশায়েগণ ইসলাম বলতে বুঝায় শুধুমাত্র কোরআন-হাদীস চর্চা এবং নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাত আদায়। ইসলাম সম্পর্কে তাদের এই ব্যাখ্যা ও উপলব্ধি দ্বীন থেকে মুসলমানদেরকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠিত এই ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্ম, যার নাম ইসলাম ধর্ম। এই ধর্মে দ্বীন নাই। আছে শুধু ইসলাম ধর্ম। এই ইসলাম ধর্ম দেশের ধান্দাবাজ, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা শ্রেণীকে নৈতিক আদর্শগত সমর্থন দিয়ে চলেছে। কেনোনা, ওলামা-মাশায়েখদের প্রতিষ্ঠিত এই ইসলাম ধর্মের প্রসারের ফলে দেশের সর্বত্র এখন মসজিদ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের মুসলমানগণের প্রায় সবাই নিয়মিত নামাজ, রোজা ও হজ আদায় করে থাকে। তার অর্থ হলো দেশে ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। কিন্তু যে ধান্দাবাজ, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা শ্রেণীর নিকট থেকে ইসলাম ধর্ম পরিচালনার বৃহৎ পুঁজি আসে, সেই শ্রেণীর রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক শক্তি আমরা জানি। এই শ্রেণীর আদর্শ, চরিত্র ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও আমরা জানি। এ প্রসঙ্গে আমরা ধান্দাবাজ, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা শ্রেণীর আদর্শ, চরিত্র ও কর্মকাণ্ডকে বিশ্লেষণ করতে পারি। আমরা জানি যে একটি উপজেলায় যারা প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করে তাদের মধ্যে রয়েছে মেম্বার, চেয়ারম্যান, কমিশনার, ঠিকাদার, মজুতদার, আড়ৎদার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ক্যাডার ও নেতাগণ। আমরা জানি যে, দেশের ওলামা-মাশায়েখ শ্রেণীর সাথে এই শ্রেণীর রয়েছে নিবিড় সখ্যতা। কারণ ওলামা-মাশায়েখ তাদের প্রতিষ্ঠিত ইসলাম ধর্ম পরিচালনার অর্থের যোগান আসে এই ধান্দাবাজ, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা শ্রেণীর নিকট থেকে। অথচ ধান্দাবাজ, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা এই শ্রেণী কৃত কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতিনিয়ত সমাজের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ হচ্ছে। কিন্ত ইসলামের প্রকৃত অর্থ হচ্ছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার। এখন যদি ওলামা-মাশায়েখগণ ইসলামের আসল অর্থ বুঝতো তাহলে তারা ধান্দাবাজ, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা এই শ্রেণীর নিকট থেকে ইসলাম ধর্ম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অর্থ দান হিসেবে গ্রহণ করতো না। অথচ সমাজে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এই শ্রেণির নিকট থেকে ওলামা-মাশায়েখগণ দান, ছদকা ও হাদীয়া গ্রহণ করে তাদেরকে এক ধরণের সামাজিক স্বীকৃতি দিয়ে চলেছে। এর মাধ্যমে ওলামা-মাশায়েখ শ্রেণী ইসলাম বিরোধী ধান্দাবাজ, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা শ্রেণীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর নৈতিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
সেই শ্রেণীর রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক শক্তি আমরা জানি। এই শ্রেণীর আদর্শ, চরিত্র ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও ন্যায়বিচার , কায়েমে গ্রাম থেকে উপজেলা, উপজেলা থেকে জেলা এবং জেলা থেকে রাজধানী পর্যন্ত এই অভিজাত শ্রেণীর বিরুদ্ধে লড়তে হবে। কাজেই সরকারের পতন ঘটাবো বলে জিহাদ ঘোষণা করে সরকারের পতন ঘটালেও, অন্তিমে গ্রাম থেকে রাজধানী পর্যন্ত অভিজাতদের শক্তি বলয়ের সাধে লড়াই কররে জিততে না পারলে, দেশে ইসলাম কায়েম করা যাবে না। অর্থ্যাৎ দেশে ইসলাম ধর্ম কায়েম হয়েছে, আরও হবে; কিন্তু দেশে যে ইসলাম কায়েম হবে এমন কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। য
©somewhere in net ltd.