![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের সম্পর্কে লেখাটা লেখকদের কাজ । তাঁরা মোটা মোটা বই লিখে, আর সেই বইয়ের শেষদিকের মলাটে বইয়ের থেকে মোটা চশমা পড়ে নিজের সম্পর্কে কি সব হিবিজিবি লিখে । আমি মোটেও লেখক না; কবিও না । মাঝে মাঝে মনে যা আসে লিখি কিন্তু তাকে কখনই সাহিত্য বলা চলে না ।
• শুক্রবার। ছুটির দিন। এই দিনে পরিক্ষা হয় না। কিন্তু হরতালের কারণে পরিক্ষা না হওয়ায় আজ পরিক্ষা ছিলো। বাংলা দ্বিতীয় পরিক্ষা। জয়নুল স্যার কোশ্চেন করছে। অনেক কঠিন। আবিরের মন খারাপ। পরিক্ষা ভালো হয়নি।
অনেকটা পথ হাঁটার পর আবির রিক্সা খোজা শুরু করল। স্কুল থেকে ওর বাড়ি আসতে ২০ টাকা চায়। দামাদামি করলে ১৫ টাকা। মামনি প্রতিদিন ৩০ টাকা করে দেয়,তাই পনের টাকা ব্যাপার না। আজ এতটা রাস্তা হাঁটার পরও রিক্সাওয়ালাগুলা ২০ টাকাই চাচ্ছে।
আবির আবার হাটা শুরু করল,আজ হেটেই বাড়ি যাবে। কাল রসায়ন পরিক্ষা। অনেক কঠিন। অবশ্য আবিরের প্রিয় লেখক এই সাব্জেক্টেরই শিক্ষক ছিলেন।
একটা রিক্সা দেখা যাচ্ছে। রিক্সাওয়ালার চোখ ঘোলা। নিশ্চয়ই রাতে নেশা করছে, গাজার নেশা। সরকার সিগেরেটে ট্যাক্স বাড়াইছে, গাজায় কোনো ট্যাক্স নাই।
নেশাখোর রিকশায় যেতে মজা আছে। এরা পৃথিবীর কেউ না। ভিনগ্রহের মানুষ। মজার মজার গল্প করে, আর যেকোনো ভাড়ায় রাজি হয়।
আবির রিক্সাটাকে ডাকলো। অন্যদিন "এই মামা" বা "এই খালি" বলে ডাকে। আজ ডাকলো এই রিসকা। আবির যখন নৈবিত্তিক নিয়ে মহা টেনশনে তখন এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে। রাস্তা ভেজা। ভেজা রাস্তা পিছলা। আবির পিছলিয়ে পড়তে পড়তে নিজেকে সামলে নিল। কিন্তু শব্দটা হয়ে গেলো এই রিচ্কা। "এই ঋ-ঋ-রিচ্কা; যাবেন?" গাজাখর রিচ্কাওয়ালা যাবে। আবিরের কাছে আসার জন্য রাস্তা পার করছে।
শরীরটাকে একটু পিছিয়ে নিয়ে সামনের চাকায় বল প্রয়োগ করল। বল ছাড়া বাংলাদেশে কিছু হয় না। রিক্সা থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত সব চলে বল প্রয়োগের মাধ্যমে। রিক্সাওয়ালা পর পর দুইবার চেষ্টা করল। প্রথম দুইবার পার করতে পারল না। প্রথমবার মোটরসাইকেল আর দ্বিতীয়বার একটা ট্রাক আসল। গাঁজাখোর রিচ্কাওয়ালা মনে হয় রবার্ট ব্রাউসের কাহিনীটা জানে; তৃতীয়বার চেষ্টা করল। হম্মম এই বার আসতে পারবে। রিক্সাওয়ালা কাছে আসায় আবির দেখলো, কৃত্রিম কোন নেশায় রিস্কাওয়ালার চোখ ঘোলা না। জন্মগত ভাবেই তার চোখ ঘোলা। অনেকে চোখে লেন্স ব্যাবহার করে চোখের রং বদলানোর জন্য। এই রিস্কাওয়ালাকে টাকা খরচ করতে হবে না। তার চোখের রং এমনিতেই আলাদা।
আবির ভালো করে দেখছে রিস্কাওয়ালাকে। উচ্চতা ৫ ফুট হবে। মুখে দাড়ি আছে। ২৫-২৬ বছর বয়সী দাড়ি। সাইজ করে কাটা,আজ শুক্রবার, আজকেই মনে হয় সাইজ করছে। কলপ ও লাগাইছে মনে হয়। দাড়ির শেষ সীমানাগুলোতে কালো কালো দাগ। ২৫ বছর বয়সী কেউ কলপ লাগাবে কেন!? কিন্তু লোকটার চোখে আধাত্বিক কিছু আছে।
-হম্ম, বাবু কই যাবা?
আবির বাবু না। 9এ পড়ে।আজকাল 9এ পড়া কেউ বাবু হয় না।
-জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন। কত?
- আপ্নে বলেন কত?
- আপনিই বলেন।
- ২০ টাকা।
- ১৫ টাকা যাবা।
- ঠিক আছে উঠ।
আবির উঠল। পরিক্ষা দিতে যাওয়ার সময়। মেঘগুলাকে অনেক সুন্দর লাগছিল। এখন কেন যেন কুৎসিত কুৎসিত মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে আকাশে ছাতা ধরছে। সাড়ে তিন ঘন্টা আগে যে জিনিস ভালো লাগছিল এখন কেন খারাপ লাগছে আবির জানে না। হয়তো মন খারাপ তাই নয়তোবা বৃষ্টি হয়ে গেছে তাই।
রিচ্কাওয়ালা একটা চেকচেক ফুলহাতা টি-শার্ট পড়ছে। কাছ থেকে দেখলে বুঝা যায় পুরনো,রং উঠে গেছে। কিন্তু একে যদি নতুন ফ্যাশন বলে চালিয়ে দেয়া হয়। ভালোই হবে। রিক্সাওয়ালা থুথু ফেলবে। থুথু ঘিন্না করার জিনিস। কেউ থুথু ফেললে দেখার কিছু নাই। কিন্তু আবিরের চোখে পড়ে গেলো। থুথুর রং গোলাপী। দেশের এক রাজনৈতিক নেত্রীর নাম গোলাপী। কিন্তু থুথুর রং গোলাপী হবে কেন? হুম, রিক্সাওয়ালা সঙ্গে ভাড়া করার সময় তার দাঁত দেখছিল আবির, পানের দাগে ভর্তি। এমন রং পানের কারনেই।
-আর কদ্দুর?
-এই তো সোজা যায়ে বামে।
হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ, এই খানে এই খানে এই খানে। ডানে থামেন।
পোকেটে একটা ১০০ টাকার একটা ৫০ টাকার নোট। আবির দুইটাই বের করল। দুইটাই একসঙ্গে এগিয়ে দিল। প্রথমে একশো টাকার দিকে হাত বাড়ালেও সেকেন্ডের ভগ্নাংশে নিজের ভুল বুঝে পঞ্চাশ টাকাটা নিল রিচ্কাওয়ালা। পোকেটে থেকে দুইটা দশ টাকার নোট আবিরের দিকে এগিয়ে দিল,তারপর আজ সারাদিনের ইনকাম জমিয়ে রাখা পুঁটলীটা বের করে ভাংতি খুজতে লাগলো। ভাংতি খুজতে খুজতে হটাৎ করুন সুরে জিজ্ঞেস করল কোন ক্লাসে পড়?
-নাইনে।
- ওও
আবিরের খুব জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করল আপনি কতদূর পড়ছেন? কিন্তু জিজ্ঞেস করল না। উত্তর টা আবির জানে। হয়তো বলবে "সিক্স পর্যন্ত তারপর আমার বাপ........."
এই সহজ কথাটা শোনার ক্ষমতা আবিরের নেই। ভাংতি নিয়ে বাড়ি চলে এল আবির। কাল রসায়ন পরিক্ষা।
২| ৩০ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৪১
লিঙ্কনহুসাইন বলেছেন: ভালো লাগলো ++++
৩| ৩০ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০৯
বাংলার হাসান বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
৪| ৩০ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৫০
মাহদী০০৭ বলেছেন: সামুতে স্বাগতম! প্রথম পোস্টের অভিনন্দন!!
৫| ৩০ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭
অনির্বাণ তন্ময় বলেছেন: সামুতে স্বাগতম।।
গল্পটা ভালো লাগল।
তবে "পরিক্ষা" বানানটা বোধহয় এভাবে "পরীক্ষা" হবে।।
হ্যাপি ব্লগিং।।
৬| ৩০ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৪
আমি ইহতিব বলেছেন: সামুতে স্বাগতম। লেখাটা ভালো হয়েছে, চালিয়ে যান। অনেক অনেক শুভ কামনা, শুভ ব্লগিং।
৭| ৩০ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩২
কাব্যহীন রেওয়াজ বলেছেন: সবাই কে অনেক ধন্যবাদ। দোয়া করবেন যেন ভালো ভাবে ব্লগিং করতে পারি।
আর ইদানিং দীর্ঘ ঈ কারের চেয়ে হ্রস্ব ই কারের ব্যবহার বেশি করা হয় । তাই পরিক্ষা বানানটা মনে হয় দুটোই ঠিক। @ তন্ময় ভাইয়া ।
৮| ৩০ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩২
কাব্যহীন রেওয়াজ বলেছেন: সবাই কে অনেক ধন্যবাদ। দোয়া করবেন যেন ভালো ভাবে ব্লগিং করতে পারি।
আর ইদানিং দীর্ঘ ঈ কারের চেয়ে হ্রস্ব ই কারের ব্যবহার বেশি করা হয় । তাই পরিক্ষা বানানটা মনে হয় দুটোই ঠিক। @ তন্ময় ভাইয়া ।
৯| ৩০ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:০৮
রায়ান ঋদ্ধ বলেছেন: সামুতে স্বাগতম।
আগে পড়লেও আরেকবার পড়লাম....
অনেক সুন্দর গল্পটা।
প্রথমে একশো টাকার দিকে হাত বাড়ালেও সেকেন্ডের ভগ্নাংশে নিজের ভুল বুঝে পঞ্চাশ টাকাটা নিল রিচ্কাওয়ালা।
ভাংতি খুজতে খুজতে হটাৎ করুন সুরে জিজ্ঞেস করল কোন ক্লাসে পড়?
এই দুটো লাইন অনেক মিনিংফুল!!! ++++++++++++++++++
শুভ হোক ব্লগিং...... কল্পনার রঙ্গে থাক বাস্তবতার সত্য।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৭
কাব্যহীন রেওয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:০২
নিরপেক্ষ মানুষ বলেছেন: +++ বেশ ভাল লিখেছ