![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জবাব -
একজন মানুষকে দিয়ে আমি কঠিন একটা কাজ করাবো ! এখন কঠিন কাজ করানোর জন্য আমি যদি তার মধ্যে জসবা সৃষ্টি না করতে পারি, তাহলে কি সেই কঠিন কাজটি কাউকে দিয়ে করানো সম্ভব ??!
ইসলামের হুকুম আহকাম গুলোর ধরনও দেখেন -
মক্কী জীবনে সেরফ নামাযের হুকুম আসছে তাও একদম শেষ পর্যায়ে গিয়ে ! আর ১৩ বছর যাবত মেইনলি সাহাবীদের ইমানেরই তালিম দেয়া হয়েছে,তাদের মনকে আগে শক্ত করা হয়ছে যাতে পরবর্তিতে কোন কঠিন হুকুম আসলে যাতে তারা সহজেই মেনে নিতে পারে ! তো এই ১৩ বছর চলেছে ইমানের মেহনত,এরপর যখন ইমান পাকাপোক্ত হয়েছে এবং যে কোন আমলের কথা আসলে তারা মেনে নিতে পারে সেই যোগ্যতা যখন তৈরি হয়ে গেছে,তখন তাদের উপর একের পর এক আমলের হুকুম জারী করা হয়েছে !
এখন একজন মানুষের ইমানের দৃঢ়তা নাই,কাজের লাভ-ক্ষতির ভাল বুঝ নাই,তো এই মানষটাকে যদি আমি আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে চাই ??
তো প্রথমেই যদি আমি তার সামনে পেশ করি,যে শীতকালে প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যে বরফশীতল পানি দিয়ে ওযু করে তার পর তাহাজ্জুযে দাড়াতে হবে,তাহলে কি ঐ লোকটা তা করবে ?
যে লোকের কৃপণতায় হাতের পানি সরেনা,তাকে যদি আমি বলি তোমার তো ১ কোটি টাকা আছে,তা থেকে আড়াই লক্ষ টাকা তুমি গরীব-মিছকীনদের দিয়ে দাও ! ঐ লোকটা কি তা দিবে ?
এখন এই লোকদের দিয়ে যদি আমাকে কাজ করাইতে হয় তাহলে কি করতে হবে ? একদিকে বর্ণনা করতে হবে যাকাত আদায়ের লাভ কি,অপরদিকে তার সামনে বর্ণনা করতে হবে যাকাত না আদায় করার ক্ষতি কি ? এই দুইটা দিকই যখন আমি তার সামনে তুলে ধরবো তখন তার মনের মধ্যে পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে,তখন সে যাকাতের হুকুম সহজ ভাবে পালন করতে পারবে !
তো ফাযায়েলে আমল কি ?
যে মানুষটি আমলের উপর উঠতে পারেনি তাকে আমলের উপর উদ্বুদ্ধ করার জন্যই তো হল ফাযায়েলে আমল ! এখন এই কাজতো বুখারী দিয়ে হবেনা,এই কাজতো ফাযায়েলে আমল দিয়েই হবে !
হ্যা তবে কথা এই,যে ফাযায়েলে আমলের মধ্যে যদি আপনাদের দাবি অনুযায়ী জাল-যয়ীফ হাদীস থেকে থাকে তাহলে জাল হাদীস গুলো আমাদের চিহ্নিত করে দিন ! আমরা তাহলে তালিমের মধ্যে আর সেগুলো আনবোনা !
আর যদি যয়ীফ হাদীস থাকে,তো হাদীস গ্রহনের যে একটা নীতিমালা আছে যেটাকে বলা হয় উসূলে হাদীস ! কিসের ভিত্তিতে হাদীস গ্রহন করা হবে যেমন - কোনটা সহীহ, হাসান বা যয়ীফ,এটাকে বলে উসূলে হাদীস !
এই উসূলে হাদীসের বক্তব্য হল এই,যে ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে যয়ীফ হাদীস দলিল হিসেবে গ্রহনযোগ্য ! তাহলে ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে যদি যয়ীফ হাদীস থাকে তাহলে,মুহাদ্দীসিনে কেরামগণ যদি একথা বলে থাকেন যে যয়ীফ হাদীস ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে দলিল হিসাবে গ্রহনযোগ্য সেখানে আমাদের দোষটা কাথায় ?!
আমরা কি হাযার বছর পিছনে গিয়ে সেই ইমাম বুখারীর সময়কার মুহাদ্দীসদের গিয়ে বলে এসেছিলাম যে ১৪'শ হিজরীতে গিয়ে আমরা একটা কিতাব লিখবো 'ফাযায়েলে আমল' যার মধ্যে যয়ীফ হাদীস থাকবে ?! তোমরা আগের থেকেই একটা নীতিমালা রেখে দাও যে যয়ীফ হাদীস ফাযায়েলে আমলে চলে ?!
এই মূলনীতিটা মেশকাত শরীফের ভূমিকার মধ্যে (শায়েখ আব্দুল হাসান সাব) আছে,ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ) এর লেখা সুবিখ্যাত উসূলে হাদীসের যে কিতাব “শরহু নুখবাতিল ফিকার” এর মধ্যেও এই কথা বর্ণিত আছে যে,ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে যয়ীফ হাদীস দলিল হিসাবে গ্রহণযোগ্য !
তো উসূল অনুযায়ী বা মুহাদ্দীসিনে কেরামগণের সর্বসম্মত মত অনুযায়ী যদি 'ফাযায়েলে আমল' কিতাবে যয়ীফ হাদীস এসে থাকে তাহলে তাতো দলিল হিসেবে গ্রহনযোগ্যই ! তো সেই ক্ষেত্রে আমাদের অন্যায় কোথায় ?! . . .
স্বয়ং হুজুর পাক (সাঃ) সাহাবীদেরকে আমলের ফাযায়েল বলে বলে তাদের আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন ! নবীজি ফাযায়েল বলেছেন বিধায় ফাযায়েল বলতে হবে ! নবী বর্ণিত ফাযায়েল যারা অস্বীকার করে তারা নিজেদের মুমীন মুসলমান বলে পরিচয় দেয় কিভাবে ?
সাধারণ মানুষের পক্ষে তো আর সম্ভব নয় বিভিন্ন হাদীসের কিতাব থেকে আমলের ফাযায়েল সম্বলীত হাদীসগুলো খুজে খুজে বের করে আমল করা ! সেজন্য উলামাগণ বিভিন্ন হাদীসের কিতাবে থাকা বিসৃত হাদীসগুলো আমলের সুবিধার জন্য আলাদা ভাবে ফাযায়েলের কিতাব গুলোতে সংকলীত করেছেন ! যাতে মানুষকে আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা সহজ হয় ! এতে দোষের তো কিছু নেই !
আর হযরত শায়খুল হাদীস (রহঃ) কর্তৃক রচিত এ কিতাবটি ফাযায়েল সম্পর্কিত প্রথম কিতাব নয় ! বরং দ্বিতীয় শতাব্দীতেই ফাযায়েল,তারগীব,তারতীব ও তারহীব,আদব-আখলাক যুহদ ও পরকাল ভাবনা সম্পর্কে সংকলনকার্য শুরু হয় ! এখনও কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক হাদীস সংকলনের পূর্ণতা আসেনি ! নিম্নে এ বিষয়ে লিপিবদ্ধ কিতাব সমূহের তালিকা দেয়া হলঃ
১.কিতাবুয যুহদ (আব্দু্লাহ আল মোবারক,১৮১ হিঃ)
২.ফাযায়েলে কূরআন (ইমাম শাফেয়ী,২০৪ হিঃ)
৩.ফাযায়েলে কূরআন (আবু উবাইদ,২২৪ হিঃ)
৪.কিতাবুয যুহদ (ইমাম আহম্মদ বিন হাম্বল,২৪০ হিঃ)
৫.আল আদাবুল মুফরাদ (ইমাম বুখারী,২৫৬ হিঃ)
৬.কিতাবুল আদাব (ইমাম বায়হাকী)
৭.কিতাবুয যুহদ (ইমাম বায়হাকী)
৮.ফাযায়েলুল আওকাত (ইমাম বায়হাকী,৪৫৮ হিঃ)
৯.আত তারগীব ওয়াত তারহীব (ইবনে শাহীন,৩৮৫ হিঃ)
১০.আত তারগীব ওয়াত তারহীব (আবুল কাশেম,৫৩৫ হিঃ)
১১.আত তারগীব ওয়াত তারহীব (হাফেয আব্দুল আযীম,বিন আব্দুল্লাহ ক্বাবী আল মুনযীরু,৫৫৬ হিঃ)
যিকির ও দুআ সম্পর্কিত কিতাব -
১২.আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাতি (নাসাই,৩০৩ হিঃ)
১৩.আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাতি (ইবনে নাসাই,৩৬৩ হিঃ)
১৪.কিতাবুদ দুআ (তাবরানী,৩৬০)
১৫.আদ দাওয়াতুল কাবীর (বায়হাকী,৪৫৮ হিঃ)
১৬.আল আযকার (নববী,৬৭৬ হিঃ)
দরূদ শরীফ এবং উহার শব্দ বিশেষের ফাযায়েলের উপর 'হাফিয শামছুদ্দীন সাখাবী রহঃ' (৯০২) এর লিখিতঃ
'আল ক্বউলুল্ বাদী ফিস্ স্বলাতি ‘আলাল ‘হাবিবিশ্ শাফী'
অধিক প্রসিদ্ধ একটি কিতাব . . !
শাইখুল ‘হাদীস যাকারিয়্যা রহঃ লিখিত “ফাযায়েলে ‘আমাল” এই সোনালী ধারাবহিকতায় প্রণিত।
যা উর্দ্দু ভাষায় নিজ স্বকীয়তা,সুসংক্ষিপ্ততা এবং শরাহ-বিশ্লেষন ও ব্যাখ্যা হিসেবে আলাদা বিশেষত্বের অধিকারী।
বিস্তারিত -
ইতিহাসে ফাযায়েলের কিতাব সমূহ -
https://www.facebook.com/671776092904818/photos/a.672089142873513.1073741828.671776092904818/682881908460903/?type=1&theater
(চলবে) . . . r_R_
©somewhere in net ltd.