নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

সোশ্যাল মিডিয়ার সাইড ইফেক্ট

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪০

মুসলিম মাত্রই জানি যে, মানুষের দু’কাঁধে দু’জন সম্মানিত ফেরেশতা আছেন যারা মানুষের পাপ-পূণ্যের হিসাব রাখেন। তাদেরকে বলা হয় কিরামান কাতেবীন বা "সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ"। তারা একজন মানুষের প্রতিটি পল, অনুপল দেখেন, লেখেন এবং ধারণ করে রাখেন। সেটাই পরকালে ‘আমলনামা’ হিসেবে সবার গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হবে। স্বস্ব ‘আমলনামা’ দেখে মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত কন্ঠে বলে উঠবে, ‘হায়! এখানে দেখছি সব আছে! ছোটবড় কিছুই বাদ যায়নি’!



তবে মোবাইল-ফেসবুক-টুইটার তথা ইন্টারনেট আসার পর কিরামান কাতেবীনের কাজ কিছুটা কমে গেছে বোধহয় (আল্লাহ ক্ষমা করুন)। কারণ মানুষ প্রতিনিয়ত নিজেরাই তাদের কিছু কাজ করে দিচ্ছে। কিরামান কাতেবীন শুধু স্ক্রীণশট নিয়ে কপি+পেষ্ট করবেন। অনেকেই হয়ত বলবেন, সোশ্যাল মিডিয়ার সামান্য কয়েকটা পোষ্ট দিয়ে মানুষকে চেনা যায় না। আসল মানুষ লুকিয়ে থাকে তার অন্তরে। আমি আপনাদের সাথে একমত। তবে এটাও কিন্তু ঠিক যে, পোষ্টগুলো একজন মানুষের চিন্তা-ভাবনা, মন-মানসিকতা, পছন্দ-অপছন্দ, রুচির বহিঃপ্রকাশ।

একটা টাটকা উদাহরণ দেই। দুই/তিন আগে কোন এক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া আমার এক মেয়ে ফেসবুক ফ্রেন্ড রীতিমত অশ্লীল একটা পোষ্ট শেয়ার দেয়। এটি আমার কাছে খুব দৃষ্টিকটু লাগায় কমেন্টে বললাম, ‘এসব কি শেয়ার দেন’। অতঃপর সে পোষ্টটি ডিলিট করলেও ‘বোনাস’ হিসেবে আমাকে ‘আনফ্রেন্ড’ করেছে। হাহা। মেয়েটি যে পোষ্ট শেয়ার দিয়েছিল তা আমরা ফ্রেন্ড সার্কেলে বলতেও দ্বিধাবোধ করি। অথচ সে ‘পাবলিকলি’ এটা শেয়ার দিয়ে মজা করছে! আজব ব্যাপার।

এই মেয়েটিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। ফেসবুকের মাধ্যমেই পরিচয়, বন্ধুত্ব। মাঝে মাঝে আমরা একে অপরের পোষ্টে লাইক-কমেন্ট করতাম। এভাবেই একটা ভার্চুয়াল সম্পর্ক গড়ে ওঠেছিল। দু’জন মানুষের মধ্যে যে কোন সম্পর্ক গড়ে উঠার সাথে সাথে একটা দায়বদ্ধতাও তৈরী হয়। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই একজন শুভাকাংখী হিসেবে তাকে শুধরে দিতে গিয়ে ‘আনফ্রেন্ড’ হলাম। যদিও তার আনফ্রেন্ড করাতে আমার কিছু আসে যায় না। তবু পুরো বিষয়টি নিয়ে আমি ব্যথিত।



মেয়েটি প্রথমদিকে খুব সাধারণই ছিল। একদা সেই আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালে আমিও একসেপ্ট করেছিলাম। সে ফেসবুকে আহামরি কিছু লিখত তা না। প্রতিদিন তার কাজই ছিল বিভিন্ন ঢংয়ে নিজের, বয়ফ্রেন্ডের এবং রিলেটিভসহ ছবি দেয়া; কিছু ফান, কিছু ফ্লার্ট ইত্যাদি। এই করেই চার হাজারের উপরে ফলোয়ার নিয়ে সে এখন মাঝারি মাপের ফেসবুক সেলিব্রেটি হয়ে উঠেছে। সেটা হোক আপত্তি নেই। আমি মেয়েটিকে বোঝাতে চেয়েছিলাম যে, পাবলিকলি এসব পোষ্ট শেয়ার করা অনুচিত। কেননা, এখানে অনেকেই আছেন যারা তার পোষ্ট পড়ে লজ্জিত হবে। এমনকি তার ফ্রেন্ডলিষ্টে নিজের বাবা-মা, ভাই-বোন, ঘনিষ্ট আত্মীয়-স্বজন থাকাও অসম্ভব না। সব থোরাই কেয়ার করে সে যা-তা পোষ্ট শেয়ার করে যাচ্ছে! হয়ত সোস্যাল মিডিয়ার চক্করে পরে সে আজ বিপথে পরিচালিত হচ্ছে।

পরে ঐ শেয়ার করা পোস্টের সূত্র ধরে মূল পোষ্টদাতার পেজে ঢু মারলাম। তার কয়েকটা পোষ্ট পড়ে পুরাই তাজ্জব হয়ে গেলাম। আমার মাথাই কাজ করছিল না। চরম নোংরা টাইপের সব পোষ্ট। এসব লেখাও ‘পাবলিক’ করা যায়?! ছেলেটি চরম বিকৃত রুচির মানুষ! নাম্বার ওয়ান ‘পারভার্টেড’। সে সমাজের কীট; সে সমাজের ভারসাম্য নষ্ট করছে। সে অনেককে নীতি-নৈতিকতাহীনতার পথে নিয়ে যাচ্ছে। আমার জন্য আরও বিস্ময় অপেক্ষা করছিল। সেটা হল, সেসব নোংরা পোষ্টের বেশীরভাগ কমেন্টকারী মেয়েরা!! মেয়েরা ‘সহমত’ প্রকাশ করেই কমেন্ট করছে!! কি হচ্ছে এসব? এরা কি বাবা-মা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব তথা সমাজ-সংস্কৃতি কিছুই মানে না? এদের দেখার কেউ নেই, শাসন করার কেউ নেই? এরা পাবলিকলিই যদি এমন করে তাহলে মেসেঞ্জারে বা একান্তে কি করে তা ভাবতেই অস্থির লাগছে।

যাদের টিনেজার ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে, আত্মীয়-স্বজন আছেন তারা দ্রুত সাবধান হন। চরম খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। টিনেজারদের ফেসবুক, মোবাইল ব্যবহার সীমিত করে দিন। কারা তাদের বন্ধু তা খেয়াল করুন। মাঝে মাঝে তাদের ফেসবুক পেজ ভিজিট করুন। তাদের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে বিনিময় হওয়া কমেন্টগুলো ভালভাবে লক্ষ্য করুন। তাদের বন্ধু হয়েই তা করুন। সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই সাবধান হোন।

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: এযুগের টিনএজ পোলাপানরা একটু আলাদা। তারা তাদের মতো একটা সমাজ বানিয়ে নিয়েছে। তারা কাউকে মানতে চায় না। এমন কি তারা তাদের জন্য একটা আলাদা ভাষা পর্যন্ত ব্যবহার করে।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১১

ইছামতির তী্রে বলেছেন: তা ঠিক। প্রতিটা যুগই ভিন্ন কিছু নিয়ে হাজির হয়। এই ভিন্নতার সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার নিমিত্তে মানষগুলোও ভিন্নতর হয়। এটা আমাদের মেনে নিতেই হবে। তবুও কিছু কিছু বিষয় চিরায়ত। সেটাকে শ্রদ্ধা করতে হবে। অশ্লীল ভাষা, আচরণ কোন যুগে, কোন কালেই কাম্য ছিল না, এখনো নেই।

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩০

নীল আকাশ বলেছেন: রাজিব ভাই কিছুদিন আগে আমার একটা পোষ্টে লিখেছিলেন: এ যুগের ডিজুস ছেলে মেয়েদের জ্ঞান বুদ্ধি খুব কম। সব চেয়ে বেশি কম হলো তাদের লজ্জা। আর পদ্ম পুকুর বলেছেন: আদতে আমার মনে হয়েছে যে ফেসবুক সৃষ্টিশীলতা ধ্বংস করে। এখানে ফেসবুক কে আর এই সময়ের ছেলে মেয়েদের কে নিয়ে কিছুটা লিখেছিলাম, সুত্র: Click This Link

ফেসবুক আমার মতে জঘন্য একটা জিনিস, এত এত বেহায়া লেখা এখানে আসে যে সেগুলি দেখলে মাথা ঘুরতে থাকে। কিছুদিন আগে আমার বউ মেয়েদের সাইটে একটা পোষ্ট আমাকে দেখালো, একটা মেয়ে তার নতুন বিয়ে করা স্বামীর কি কি ভাবে শারীরিক সম্পর্ক করতে পারে জানতে চাইছে? মেয়ের পোষ্ট পড়েই তো আমি হতম্ভব, নীচের সাজেশন গুলি যদি আপনাকে দেখাতে পারতাম! হায় খোদা, সব গুলি মেয়ে মন্তব্য করেছে। সুতরাং আপনার লেখাটা পড়ে আমি খুব একটা অবাক হয়নি।

সমাজ টা খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আর সব চেয়ে বেশি কমে যাচ্ছে লাজ লজ্জা শরম। কেয়ামতের নির্দশন নাকি এগুলি কমে যাবে, মানুষ পশুর মতো রাস্তা ঘাটে........

ভালো বিষয়ে লিখেছেন, বক্তব্যের জন্য প্রশংসা আপনার প্রাপ্য।
ভালো থাকুন, সমাজের এই সব দৃস্টি কটু বিষয় লিখুন।
শুভ কামনা রইল!

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৫

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আপনার তিক্ত অভিজ্ঞতা জেনে খারাপ লাগল। আমি এর আগেও এরকম কিছু পোষ্ট দেখেছি। ফেসবুকে কিছু পেজই আছে নাকি যেখানে ভালগারিটি খুব হয়, অশ্লীলতা সকল সীমা অতিক্রম করে। ফেসবুক সামাজিক মূল্যবোধ ধ্বংসে বিরাট ভূমিকা রাখছে। আমাদের সবার সচেতন হওয়া জরুরী।

আপনার বলা সব কথার সাথেই একমত। সত্যি, লাজ-লজ্জা, সম্মান উঠে যাচ্ছে। এটা রোধ করা না হলে আরো খারাপ কিছু দেখতে হবে আমাদের।

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৩| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১১

সাইন বোর্ড বলেছেন: সতর্ক কথা, না মানলে সামনে বিপদ !

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৪

ইছামতির তী্রে বলেছেন: একদম তাই। না মানলে সামনে বিপদ !

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৪| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৯

নীল আকাশ বলেছেন: সেই বিকৃত রুচির ছেলেটার ফেসবুক পেজ পেলে দেখে আসা যেত, আর জন স্বার্থে একট পোস্ট দেয়া দরকার.....এভাবে তো চলতে দেয়া যায় না।

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১১

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমি তার আইডি জানালে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গ হবে। এটা অনুচিত। আর এসব যত কম জানা যায় ততই মঙ্গল।

সেই ছেলের বন্ধু তালিকায় থাকা কোন একজনই হয়ত প্রতিবাদ করবে।

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৪

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:

আসলে নীতি নৈতিকতা আর শালিনতার শিক্ষাটা পরিবার থেকেই প্রথম আসে । তার সাথে আছে বন্ধু আর আসে পাশের পরিবেশ । যদিও এখন এই ভার্চুয়াল যুগে ছেলে মেয়েরা অনেক বেশি এগিয়ে গিয়েছে । যেটা যখন জানা দরকার তার আগেই জেনে বসে আছে । আসলে বয়সের এবং মানসিকতার সংযোগ ঘটানো যাচ্ছে না ।

আর কিছু মানুষ এমন রয়েছে তারা এই অশ্লীলতাকে ই আধুনিকতা মনে করে । এটা আমাদের ই দোষ আধুনিক হতে গিয়ে আমরা অনেক কিছুই ছাড়া দিয়েছি যেটা আমাদের আজকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে ।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৭

ইছামতির তী্রে বলেছেন: দারুণ বলেছেন ভাই। কোথায় যেন একটা গ্যাপ তৈরী হয়েছে। হতে পারে যোগাযোগ ব্যবস্থার অতি আধুনিকায়ণের ফলেই এরূপ হচ্ছে।

হুম, কিছু অশ্লীলতাকে ই আধুনিকতা মনে করে। এদের কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব তা এক বিশাল প্রশ্ন।

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৬| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:


নিয়ন্ত্রন এখন হাতের বাইরে যায়নি । তবে ইন্টারনেট ব্যবহার মোবাইল কম্পিউটার এসব ব্যবহার এর উপর একটু নজরদারী ও পারিবারিক আড্ডা গল্প এসব বাড়াতে হবে ।

সবচেয়ে বড় কথা নিজের সোশ্যাল মিডিয়াকে সাইড করে রাখতে হবে । সেটা আছে তবে প্রয়োজনে ব্যবহার করব ।

১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২৭

ইছামতির তী্রে বলেছেন: নিয়ন্ত্রণ হাতের বাইরে চলে যায়নি। তবে কাজটা খুব কঠিন। এখনকার বাচ্চারা বাবা-মায়েদের কথা শুনতে চায় না। আর সব সময় তাদের চোখে চোখে রাখাও অসম্ভব। আপনার হয়ত জানা থাকার কথা, কিছুদিন আগে ঢাকার কোন এক স্কুলে মোবাইল চেক করার পর দেখা গিয়েছিল প্রায় ৭০/৮০% ছাত্র-ছাত্রীরা অশ্লীল ছবি দেখে। এই হল অবস্থা।

তবে আমি আশাবাদীই থাকতে চাই। পারিবারিক শিক্ষা, ধর্মীয় অনুশাসন, খেলাধুলা, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে মেলামেশা ইত্যাদি বাড়ালে এসব সমস্যা কমে যেতে পারে। আর অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়ার নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এসব পরিবারের লোকজনকেই করতে হবে।

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.