নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিয়াদুল হক

আমি মার্কেটিং বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করেছি। এবং সেলস নিয়ে ভাল কাজ করতে চাই এবং সমাজকে কিছু দিতে চাই।

রিয়াদুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কারো মনে দিয়ো না আঘাত

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৩

কারো মনে দিয়ো না আঘাত

রিয়াদুল হক

রিয়াদুল হক
গ্রামের মাস্টার বাড়ির ছেলে রঞ্জু। সারাদিন টই টই করে ঘুরে বেড়ায়।রঞ্জুর দাদা একদা মাস্টার ছিলেন । গ্রামে অনেক দুস্থ অসহায় বাচ্চাদের তিনি শিক্ষা দিয়েছেন বিনে পয়সায়।বনেদী বাড়ির ছেলে রঞ্জু । বিশাল বাগানবাড়ি তাদের চারপাশ দেয়াল দিয়ে ঘেরা ভিতরে অনেক ফুলের গাছ। রঞ্জুর বাবার বাগান করার অনেক শখ। ছেলেকে মাঝে মাঝে ডাকে বাগান করার জন্যে। কিন্তু রঞ্জুর এতো সময় নেই।রঞ্জুর বাবা বিশ্বাস করে বাগান করলে মন মানসিকতা নরম থাকে। তাই ঢাকা শহরে চাকুরী করা সত্ত্বেও সময় পেলেই দৌড়ে চলে আসে বউ বাচ্চাদের উপর নিয়ে গ্রামের বাড়িতে। তাই গ্রামের লোকেরা তার চেহারা ভুলে যায়নি। আবার রঞ্জু গ্রামের বাড়িতে আসলে এমন এমন সব কাজ করে যে গ্রামের লোকরা অতিস্ট হয়ে যায়। শুধু মাস্টার বাড়ির ছেলে বলে কিছু বলেনা। একটা দল আছে তারাও স্কুলে পড়ে রঞ্জু আসলেই ব্যস সবার মাথাটা গরম হয়। সারা সপ্তাহ গ্রামের লোকেরা খানিকটা শান্তি পেলেও শুক্র শনিবার পুরো গ্রাম দৌড়ের উপর থাকে।
ছেলেটা বেশ রগচটে হয়েছে। কোনোভাবেই যেন সামলাতে পারেনা আরেফিন রঞ্জুকে। মাঝে মাঝে খুব কষ্ট পায় মনে। এতো রাগ করলে সে সমাজে চলবে কি করে। যাকে দেখ তাকেই মারধর করে।স্কুলের টিচাররা ও শঙ্কিত রঞ্জুর ব্যবহারে।সেদিন কোন এক ছেলেকে পেন্সিল ছুঁড়ে মেরেছে। পেন্সিল গিয়ে সরাসরি একদম ছেলের চোখের কোনে আঘাত হেনেছে। একটুর জন্যে বেঁচে গেলো।পরবর্তীতে স্কুলে এসে সেই ছেলের বাবার কি হাউকাউ চেঁচামেচি। আরেফিন বারংবার ক্ষমা চেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু না সেই ছেলের বাবা রঞ্জুকে এক নজর দেখতে চায়। বার বার হুঙ্কার ছাড়ছিল। প্রিন্সিপাল এসে শেষ রক্ষা করলো । আর এও জানিয়ে দিলো যে ,এই শেষবার তাও নাকি আরেফিন সে স্কুলের ছাত্র দেখে তিনি সমীহ করেছিলেন। ভাগ্যটা ভাল হউয়ায় এই যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিলো রঞ্জু।ছেলেটা একা থাকলে কথা বলে না। যদি কোন দল পেয়ে গেলো তবে সেই দলের সর্দার হতে সময় লাগেনা।আরেফিনের বাবা রঞ্জুর জন্মের পরপরই সদ্যোজাত রঞ্জুড় চোখ দেখে ভবিষ্যৎ বানী করেছিলেন। বানিটা ছিল এরকম।এই ছেলে যদি মানুষ হয় তবে সারা পৃথিবী ওর নাম জানবে আর যদি খারাপ হয় তবে এমন খারাপের চূড়ান্তে যাবে যে মানুষ তার নাম শুনলেই ভয়ে কেঁপে উঠবে।

আরেফিনের মাথায় এইসব চিন্তাই ঘুরপাক খায়।হঠাৎ একজনের ডাকে অনেকটা কেঁপে উঠলো।
বাড়িতে কেউ আসেন?
তাকিয়ে দেখে পাঁশের বাড়ির চাচা ?হাতে একটা টুকরি তার উপর গামছা দিয় ঢাকা ।কি যেন এনেছে বুঝতে পারেনা আরেফিন।
জি জি চাচা বলেন কেমন আছেন আপনি? বসেন না...।।
বমুনা বাজান, আইসিলাম তোমারে একখান কথা কউনের লাইগা।
তোমারে দেইখা তো ভালই মনে হয় । তোমার পোলাটা এমন জুলুমবাজ হইসে কেন বাপ কইবা?
কেন কি করসে চাচা?
‘এই দেহ’ বলে,টুকরি থেকে গামছাটা উঠিয়ে দিলো। যা দেখল আরেফিন তাতে ওর মাথা ঘোরার মতো অবস্থা। কয়দিন আগেই আমার দুই মুরগি এতগুলা বাচ্চা দিসে। জানই তো সব। তোমার কাকি মাঝে মাঝে ডিম ও তো দিয়া যায়।কি করসে দেহ তোমার পোলায়।
আরেফিন দেখে হরেক রকম সাদা,হলুদ ফুটফুটে মুরগির বাচ্চাগুলো কে যেন মেরে ফেলেছে
চাচা ক্যামনে মারা গেলো এই বাচ্চাগুলা?
আরে কয়কি এই পোলা তো কিছুই বুঝেনা। তোমার পোলায় পারাইয়া মারসে দেহনা।দৌড়াইয়া দৌড়াইয়া পারাইয়া মারসে। গায়ের মধ্যে বাচ্চাগুলার কাদামাটি।ঐ শয়তান পোলাগুলার লগে মিশা তোমার পোলা কিন্তু আস্তে খারাপের দিকে যাইতাসে সামলাও কইলাম।

চাচা আপনি রাগ করবেন না, আমি আপনার ক্ষতিপুরন দিয়ে দিবো।
ক্ষতিপূরণ বাবা আর কয় টাকাই দিবা। কিন্তু তোমার পোলা যে হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে সেটা কি করবা?
ও আসুক ওর একদিন কি আমার একদিন। ওকে আজে আমি মজা বোঝাবো।
না ওরে মাইরো না ।মারলে ও বিগরাইয়া যাইতে পারে।
না ও যা করেছে মার খাওয়ার যোগ্য সে।
না ওরে বুঝাইয়া কইয়ো।
বলে ঐ চাচা প্রস্থান করে। আরেফিন মনে মনে ফুঁসছে। কি করা যায় ও গেসে কই?কি ভাববে যদি বাবা যদি জানে। শুনলে একেবারে দেশে আসা বারণ করে দিবে। এমনিতেই বিরক্ত তার একমাত্র নাতি রঞ্জুর উপরে যদি শুনে একেবারে খবর করে ফেলবে।চুপ করে হাত মুখ ধুয়ে পড়তে বস গিয়ে । কাল থেকে বেড়ানো বন্ধ।
সূর্যের রক্তিম আভা আলো বিলিয়ে কাত হয়ে পড়ে পশ্চিম দিকে। হেলানো সূর্যের দিকে তাকিয়ে আরেফিন ছেলের অপেক্ষায় কখন ঘরে ফিরবে।রঞ্জু পা টিপে টিপে আস্তে আস্তে ঢুকছিল অমনিই আরেফিন হুঙ্কার দিয়ে উঠলো।
কই যাও?সারাদিন কই ছিলে?
এইতো পুকুর পাড়ে খেলছিলাম।
মিথ্যা কথা বল না।
ঐ বাসার মুরগীর বাচ্চাগুলোকে কে মেরেছে?
আমি জানিনা
একদম চুপ
সত্যি বলছি আমি জানিনা।
তোমার লজ্জা করলো না , এতো ফুটফুটে বাচ্চাগুলকে পা চাপা দিয়ে মারতে।একটু মায়াও লাগেনি তোমার।
বাবা আমি করতে চাইনি ।আমার বন্ধুগুলা লাফিয়ে লাফিয়ে চলে গেছে উগুলার উপর দিয়ে।

মিথ্যা কথা বলবেনা একদম।
আরেফিন দিলো কয়েক বেতের ঘা। চিৎকার করে উঠলো রঞ্জু। ভিতর থেকে আরেফিনের বাবা বেরিয়ে আসলো
কিরে এতো চেঁচামেচি কেন রে?
আরেফিন ওর বাবাকে দেখে খানিকটা সামলে নিলো।রঞ্জু ও নিজেকে গুটিয়ে নিলো কারন দাদা তার অনেক রাগি।
কি ব্যাপার তুমি রঞ্জুকে বকছো কেন?
কি করেছিস তুই?
কিছু না বাবা !এই দেখনা এতো রাত করে ফিরল। তাই একটু বকছিলাম।
এই দাদুভাই তুমি ভিতরে যাও।রঞ্জু চলে যায় ঘরের ভিতর,
মাস্টার সাহেবের অভিজ্ঞতার জীবন তো বহুবছর। ছেলের কপালে চিন্তার বলিরেখা দেখে নিজেই কিঞ্চিত চিন্তিত হয়।
কি ব্যাপার বলতো?
ও ধীরে ধীরে এরকম মারমুখো হয়ে উঠেছে। স্কুলে কলেজে সবসময় একটা না একটা ঝমেলা পাকিয়ে রাখে আর সেগুলো সামাল দিতে হয় আমাকে।
সারাদিন ও কি করে রে?
গেমস খেলে। মারামারি গোলাগুলি, কুস্তি, এসব গেমস দিয়ে একেবারে ঘর ভর্তি। সবসময় ঘরটাকে রণক্ষেত্র বানিয়ে রাখে। যে কোন বাচ্চা পেলেই হলো তার উপর চেপে বসে।
আজকালকার এই গেমসগুলোই বাচ্চাদের সুকুমার বৃত্তিগুলোকে ভিন্নদিকে প্রবাহিত করছে।গেমসগুলোকে বানানো উচিত তাদের ইন্টেলেকচুয়াল সাইটগুলোকে উন্নয়ন করার স্বার্থে তা না করে এই গোলাগুলি আর কুস্তির গেমসগুলো ছেলেমেয়েদের মধ্যে একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
একটা শিশু যখন ছোট থাকে ষে কিন্তু কিছু অনুভুতির ব্যপারে একদম অজ্ঞ থাকে। যেমন ভয়, হিংসা, বিদ্বেষ। এগুলো যত কম শিখানো যায় তত ভাল । শিশু তত সাহসী হয়।কিন্তু এইসব পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারনে শিশুগুলো সঠিক ভাবে বেড়ে উঠেনা। বাবা মায়েরা শিশুদের বাধা দেয় ঘরের বাইরে যেতে, মানুষের সাথে মিশতে,
সোশ্যাল সার্কেল থেকে দূরে রেখে বাচ্চাদের মানুষ করে এইসব গেমস আর কার্টুন দিয়ে। তাই দিনে দিনে এইসব কুস্তি আর আর গোলাগুলিড় খেলা দেখতে দেখতে সিসুরা হয়ে যায় হিংস্র, অসামাজিক বিরক্ত। নিজেকে মনে অবচেতন কোন থেকে ঐ গেমসের নায়ক ভাবতে শুরু করে।
আমি তোমাকে বারবার বলেছি। সম্য পেলেই গ্রাআমে নিয়ে আসবে তোমার ছেলেকে ।কিন্তু তুমি তো সময়ই পাওনা।
কিন্তু বাবা এসব দুসটুমি গ্রামে এসেই করছে।শহরে তো সময় প্যনা পড়াশুনা ছাড়া
কিন্তু ওর উপকরন তো তুমি যোগাচ্ছ শহরে। ওখানে সাহস পায়না তাই এখানে এসে সেগুলোকে বাস্তবে রুপ দেয়।
এবার গিয়ে সব সিডিগুলো পানিতে ফেলবো। আরেফিন রাগ করে বলে।
না তা করোনা। হিতের বিপরীত হবে। ও আরও জেদ করবে, আরও ক্ষিপ্র হবে।
রঞ্জুর দাদার সাথে রঞ্জুর সম্পর্ক অনেক ভাল।মাস্টার সাহেব খুব সকালে উঠেন এবং গিয়ে বাগানে কিছু সময় কাটান । সেই সময়টা রঞ্জুও হাত ছাড়া করেনা। দাদার পিছু পিছু হাটে। দাদা হয়তো বাগানের যেকোনো গাছ থেকে কোন না কোন ফল রঞ্জুকে খেতে দেয়।
একদিন সকালে মাস্টার সাহেব প্রাত্তাহিক সকালের মতই বাবাগ্নে রঞ্জুকে জিজ্ঞেস করলেন
তুমি এতো রাগ কর কেন?
জানিনা দাদা
রাগ করা তো ভাল নয়। এতে তোমারই কষ্ট । তোমারই পরাজয়।
জানিনা দাদু কেউ আমার কথার সাথে তাল না মেলালে আমার সাংঘাতিক ক্ষোভ হয় মনে হয় দেই গিয়ে নাকে একটা ঘুষি।
রঞ্জু আমি তোমাকে একটা কাজ দিবো দাদু ভাই কাজটা করতে পারবে।
কি কাজ দাদু ভাই?
কোন প্রশ্ন করবেনা , যা বলবো যেভাবে বলবো সেভাবেই করবে।
ঠিক আছে দাদু ভাই।
রঞ্জুর দাদা রঞ্জুকে এক ব্যাগ ভর্তি কিছু লোহার পেরেক দেয় আর একটা হাতুরি দেয় বলে
যখনি তোমার রাগ উঠবে, অস্থির লাগবে, কারও সাথে বনিবনা হবে না সাথে সাথে তুমি একটা পেরেক এই বাঁশের কঞ্চিটার উপর ঠুকে যাবে।
কেন দাদু ভাই?
বললাম না কোন প্রশ্ন করতে পারবেনা। শুধু জেনে রাখ দাদু তোমার সাথে একটা মজার খেলা খেলছি । কথা মতো এক ব্যাগ ভর্তি পেরেক বাগানে নিয়ে রাখল।
মাস্টার সাহেব রঞ্জুর বাবা আরেফিনকে ছুটি দিলো বলল, ‘তুমি এক মাস পরে আসো।আমার কাছে থাকুক কয়দিন’।
কিন্তু বাবা ওকে তুমি সামলাতে পারবেনা। আমি বরং নিয়ে যাই ওকে।
ও নিয়ে তুমি চিন্তা করোনা। মাস্টার সাহেব আশ্বস্ত করে আরেফিনকে।
প্রথম দিন গ্রামে হাঁটতে বেরিয়ে একে একে করে ওর অনেক মানুষগুলোর সাথে বাঁধে। কাউকে কিছু না বলে দৌড়ে গিয়ে বগানে পেরেক ঠুকে বাঁশের ভিতর।
গ্রাম বাসিরা অবাক হয় কি ব্যপার রঞ্জু ঝগড়া করলেই দৌড় দেয় , কোন কথা বলেনা মারধর করেনা কোথায় যায় সে।গ্রামের লোকরা খানিকটা সস্থি পায়।
প্রথমদিন প্রায় ৩০টি লোহার পেরেক ঠুকেছে একদিনে। অর্থাৎ ৩০ বার বেঁধেছে আজ তর্কবিতর্ক মানুষের সাথে।দাদুকে জানায় । দাদু কিছু বলে না মৃদু হাসি দেয় বলে চালিয়ে যাও।
পরের দিন আবারো খেলা ধুলা করতে বের হয় , তখনও ঠুকাঠুকি লাগে সবার সাথে। রঞ্জু দৌড় দিয়ে এসে পেরেক ঠুকে।দ্বিতীয় দিন লোহার পেরেকের পরিমান কমে ৩০ থেকে ১৮ থে নেমে আসে।
এ করতে করতে রঞ্জু এক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে।মনে মনে ভাবে “ আরে ঝগড়া করার চেয়ে পেরেক ঠুকা কঠিন কাজ। এর থেকে ঝগড়াই করবোনা । এটা না করলে তো আমি অনেকক্ষণ খেলতে পারছি ।অনেকসময় থাকতে পারছি।
পরের দিন খেলতে বের হয় সেদিন ষে অনেকটাই মৌনতা অবলম্বন করলেও স্বভাবের একটা রেষ তো আর সহজে ছাড় দেয় না। সেদিন বাগানে ৭ টি পেরেক ঠুকেছে রঞ্জু অর্থাৎ আজ ৭ জনের সাথে বেঁধেছে।শরীর আর কুলায় না লাগামহিন মেজাজ যেন আস্তে আস্তে লাগামে চলে আসে।রঞ্জু বুঝতে পারে কষ্ট করে পেরেক ঠুকার চেয়ে তো নিজেকে নিয়ন্ত্রন করা অনেক সহজ। নিজের রাগ ,ক্রোধ, মেজাজ ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসতে শিখে ফেলে রঞ্জু।দাদু বলেছে রাগ করলে গিয়ে পেরেক ঠুকতে । মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় রাগও করবো না পেরেক ও ঠুকবো না।
পরেরদিন আর কোন লোহার পেরেক ঠুকতে হয়না রঞ্জুর।গ্রামবাসীরা রঞ্জুর উপর খুব খুশি আর হবেইনা কেন ঝগড়াটে রঞ্জু এখন একজন সুবোধ বালক।
সেদিন সন্ধ্যায় রঞ্জু হাসিমুখে দাদার কাছে যায় এই ভেবে যে দাদাকে ষে বলবে যে ষে তার মেজাজের ঘোড়াকে বাঁধতে শিখেছে। এখন আর রাগ আসেনা।
দাদু আজ আমি কোন পেরেক ঠুকেনি।
তাই নাকি খুব ভাল।
চিন্তা করলাম দাদু ঝগড়া করার চ্যে লোহার পেরেক ঠুকা কঠিন কাজ।
মাস্টার সাহেব রঞ্জু কে নিয়ে বাগানে যায় ষে বাঁশের কঞ্চিটার কাছে গিয়ে বলে।
এখন যেই পেরেক গুলো ঠুকেছ সবগুলো একে একে খুলে ফেলো , এই নাও খোলার মেশিন।প্রতিদিন একটা করে পেরেক খুলবে।
রঞ্জু অবাক হয়ে যায়, নির্বাক থেকে কিছু না বলে।একটা করে পেরেক খোলা কোন ব্যাপারই না।কাজ করে দাদুভাইকে খুশি করে দিবো।
প্রতিদিন একটা করে পেরেক খুলে রঞ্জু। অনেকদিন কেটে গেলো এভাবে।
একদিন সকালে সব পেরেকগুলো নিয়ে দাদার সাথে দেখা করলো।
দাদা আমার সব পেরেকগুলো খোলা শেষ।
দাদা হাসি দিয়ে বলল গ্রেট জব।
হাট ধরে রঞ্জু কে ষে বাগানের ভিতর সেই বাঁশের কঞ্চির নিয়ে গেল।যেখানে পেরেকগুলোকে ঠুকা হয়েছিলো।
দেখ তুমি তো সফলতার সাথে পেরেকগুলো উঠিয়েছ কিন্তু কঞ্চির অবস্থা দেখেছো রঞ্জু তাকিয়ে দেখল একেবারে ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেছে এবং জায়গায় জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ঠিক এমনি ভাবে যখন তুমি মানুষের সাথে উচ্চস্বরে কথা বল,,মনে আঘাত দিয়ে কথা বল, মারামারি কর এবং রাগ কর। মানুষ কষ্ট পায়।তখন তাদের মনে কষ্টের এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। তুমি বলে চলে যাও কিন্তু গর্তগুলো কিন্তু অপূরণ রয়ে যায় যেটা ক্ষমা চেয়েও পূর্ণ করা যায় না ।যখন তুমি কাউকে ছুরি দিয়ে আঘাত করবে এরপর ছুরি বের করে করে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে কি লাভ হবে বল। ক্ষত তো তার জায়গাতেই রয়ে যাবে।হাজারবার ক্ষমা চেয়েও তা থেকে পরিত্রান তুমি পাবেনা।তাই কথা সাবধানে বলবে।
ছোটকালের বন্ধুরা হচ্ছে সত্যিকারের বন্ধু। নিজেকে বাচানোর জন্যে বন্ধুদের দোষ দেয়া বোকামি। তুমি জাননা তোমার কোন বন্ধুটা তোমার জীবনে কাজে আসবে।একমাত্র বন্ধুরাই সদা প্রস্তুত থাকে তোমার মনের খবর শুনতে এবং তোমাকে রক্ষনাবেক্ষন করতে।মানুষ যতটুকু আশা করবে তা থেকে একটু বেশী হলেও দেয়ার চেষ্টা করবে।যখন কারও কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হবে তার চোখে চোখ রেখে তবেই ক্ষমা চাইবে।কারও স্বপ্ন বা আশা নিয়ে ব্যাঙ্গ করবেনা। যার যার স্বপ্ন তার তার কাছে অনেক মূল্যবান।কথা বলবে ধীরে চিন্তা করবে দ্রুত।
























মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:০৪

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
+++++

২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:১৩

রিয়াদুল হক বলেছেন: ভালোবাসা দাদা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.