নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অর্থনীতিবিদ

অর্থনীতিবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মান্নান নাকি আজমতউল্লাহ?

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৪৬

আগামী ৬ জুলাই শনিবার গাজীপুরে সিটি কর্পোরেশন ও ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন আর প্লাকার্ডে চারদিক ছয়লাব। মূলত মেয়র নির্বাচন নিয়েই উৎকন্ঠা, উদ্বেগ আর আলোচনা সব জায়গায়। একদিকে আছে ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত সাবেক প্রতিমন্ত্রী বিএনপি চেয়ার পার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক (অথবা প্রভাষক) এম এ মান্নান আর অপরদিকে আছে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল সমর্থিত টঙ্গী পৌরসভার সাবেক মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান। এগুলো মোটামুটি সবারই জানা। তাহলে কেন আবার এই আলোচনা?



আমি টঙ্গী এলাকার বাসিন্দা এবং একজন নগন্য কলেজ শিক্ষক। আর এক দিন পরেই নির্বাচন। অথচ একজন নিরপেক্ষ ভোটার ও নাগরিক হিসেবে কাকে রেখে কাকে ভোট দিব সেটাই ঠিক করতে পারছি না।



কমিশনার এবং মহিলা কমিশনার নিয়ে অবশ্য কোন টেনশন নেই। কারণ আমি যে বাড়িতে ভাড়া থাকি সে বাড়িরই ছোট ছেলেই ওয়ার্ড কমিশনার পদে দাড়িয়েছে। ভদ্রলোকের বয়স খুব বেশি না হলেও দীর্ঘদিন যাবত তাদের বাড়িতে থাকার ফলে সে কেমন প্রকৃতির মানুষ সে সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা হয়েছে। ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে আমার ভোট আমি তাকেই দিব ঠিক করেছি।



মহিলা কমিশনার পছন্দ করা নিয়েও কোন চিন্তা করতে হয় নি। আমি যে স্কুল থেকে এস এস সি পাশ করেছি সে স্কুলেরই এক শিক্ষিকা নির্বাচনে দাড়িয়েছেন। গতবারও তাকেই ভোট দিয়েছি। বিশিষ্ট ভদ্রমহিলা। স্বভাব অত্যন্ত অমায়িক। আমার আব্বার এক সময়কার কলিগ। আব্বার ইন্তেকালের পরে ভদ্রমহিলা পৌরসভা থেকে আনুষঙ্গিগ কাগজপত্র উত্তোলনের ব্যাপারে অনেক সাহায্য করেছেন। অন্তরের অন্তস্থল থেকে আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই এজন্য। তখন বেশ কয়েকবার টঙ্গী পৌরসভায় যেতে হয়েছিল। দেখলাম ভদ্রমহিলা অত্যন্ত নরম সুরে কথা বলেন এবং সবার সঙ্গেই অত্যন্ত আন্তরিক ব্যবহার করেন। বুঝলাম কেন তাকে লোকজন এত পছন্দ করে।



এখন সমস্যা হলো মেয়র নির্বাচন নিয়ে। কাকে ভোট দিব? মান্নান নাকি আজমতউল্লাহ?



দু’জনই প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ। নিজ নিজ এলাকায় ও এলাকার বাইরে তাদের আছে সম্মান, পরিচিতি, সমালোচনা, আলোচনা ইত্যাদি। রাজনীতির পঙ্কিল পথ, চড়াই উৎরাই অতিক্রম করে তারা আজ নিজ নিজ স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তাদের ঘিরে বিতর্কও কম নেই। তারপরও যারা আওয়ামী লীগ করেন তারা মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই আজমত উল্লাহকেই ভোট দিবেন। আবার যারা বি এন পি ও জামায়াত করেন তারাও ধরে নেওয়া যায় নিশ্চিতভাবে মান্নানকেই ভোট দিবেন। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের মতো নিরপেক্ষ সাধারণ মানুষদের যারা আওয়ামী লীগও করেন না আবার বি এন পি জামায়াতও করেন না তাদের। তারা কাকে ভোট দেবেন? আজমত উল্লাহ নাকি মান্নান?



টঙ্গীতে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করলেও আজমত উল্লাহ বা মান্নান তাদের কারো সাথেই আমার কোনদিন সাক্ষাৎ হয়নি। এমনকি সরাসরি কোনদিন দেখাও হয়নি। আগেই বলেছি আমি একজন নগন্য কলেজ শিক্ষক। তাই কোনদিন তাদের জাহাজের খবর নিতে যাইনি। যদি তাদের কারো সাথে কোন ব্যক্তিগত পরিচয় থাকতো তবে তাকে ভোট দিতে কোন দ্বিধা থাকতো না। টঙ্গী পৌরসভায় বেশ কয়েকবার গেলেও আজমত উল্লাহ-র সাথে কোনদিন দেখা হয়নি। আবার বিভিন্ন কাজে গাজীপুর কোর্ট, আজিমুদ্দিন কলেজ, গাজীপুর থানা, প্রশাসনিক ভবন ইত্যাদিতে গেলেও কোনদিন মান্নানের সাথে দেখা হয়নি। তাই ব্যক্তিগত পরিচয়ের সুবাদে যে কাউকে ভোট দিব সে সুযোগও থাকছে না।



দল দেখে ভোট দিব? কিন্তু সমস্যা হলো আওয়ামী লীগ বলুন বা বি এন পি বলুন তারা দু’দলই একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। গত সাড়ে চার বছরে আওয়ামী লীগ যেমন বিভিন্ন কাজের জন্য সমালোচিত ও বিতর্কিত হয়েছে তেমনি অতীতে বি এন পি সরকারও অনুরূপ সমালোচনা ও বিতর্কের সম্মুখীন হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে দু’দলের কোনটিকেই পছন্দ করি না। তাই দল দেখে ভোট দিব সে সমাধানও প্রযোজ্য হচ্ছে না।



পরিচিতদের অনুরোধের ভিত্তিতে যে সিদ্ধান্ত নিব তাও পারছি না। কারণ আজমত উল্লাহর পক্ষে থাকার জন্য যেমন অনুরোধ পেয়েছি তেমনি মান্নানের পক্ষে থাকার জন্যও অনুরোধ পেয়েছি। আজকেইতো সিলেট থেকে এক পরিচিত ভাই ফোন দিয়ে মান্নানকে ভোট দেওয়ার জন্য বললো। আবার সন্ধ্যার পরে হেঁটে হেঁটে বাজারে যাচ্ছি তখন পরিচিত একজন রিকশায় লিফট দিলো আর অনুরোধ করলো আজমতউল্লাহকে ভোট দেওয়ার জন্য।



প্রকৃতপক্ষে আজমত উল্লাহ এবং মান্নান কেউ কারও চেয়ে কম নয়। রাজনৈতিক, অবস্থানগত এবং দলগত বিচারে দু’জনেরই সম্ভাবনা আছে নির্বাচনে জয় লাভ করার। এবং তাদের মধ্যে কেউ না কেউ অবশ্যই জয়লাভও করবেন এবং নগর পিতা হবেন। কিন্তু আমার সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। আমি কাকে ভোট দিব?



আজমতউল্লাহ নাকি মান্নান?









মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আশাকরি, নিজ বিবেচনায় যোগ্য লোকটাকেই ভোট দিয়েছিলেন। সে হারুক বা জিতুক, সেটা বড় কথা নয়। বিবেক অনুযায়ী ভোট দিলে ভারমুক্ত থাকা যায়।

২২ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৪০

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: ঠিক বলেছেন। আমি মার্কা দেখে নয়, অনেক চিন্তা করে যে আমার কাছে ভালো মনে হয়েছিলো তাকেই ভোট দিয়েছিলাম। তবে বাংলাদেশের রাজনীতি অত্যন্ত নোংরা। এখানে মার্কাধারী ঐ দুইটা দল ছাড়া আর কেউ জয়ী হতে পারে না। আমরা সাধারণ জনগণ সৎ ও যোগ্য প্রার্থীর কথা বলি বটে, কিন্তু বাস্তবতা হলো এগুলো আসলে ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছুই নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.