নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইখলাসের সাথে কেবলমাত্র আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে যাবতীয় কাজ সম্পাদন করিতে চাই ! আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইখলাস অর্জনের তৌফিক দান করুক! আমিন

আব্দুর রাহমান রিপন

আব্দুর রাহমান রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাকদীরের প্রতি ঈমানের তাৎপর্য

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৯


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

তাকদীর বা ভাগ্য: এ মহাবিশ্বে যা কিছু ঘটবে আল্লাহ তাআলা কর্তৃক তাঁর পূর্বজ্ঞান ও প্রজ্ঞা অনুযায়ী সেসব কিছু নির্ধারণ করে রাখাকে তাকদীর বলা হয়।

তাকদীরের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে।

এক:

এই ঈমান আনা যে, আল্লাহ তাআলা প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে সমষ্টিগতভাবে ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানেন। তাঁর এ জানা অনাদি ও অনন্ত -তাঁর নিজ কর্ম সম্পর্কে অথবা বান্দার কর্ম সম্পর্কে।

দুই:

এই ঈমান আনা যে, আল্লাহ তাআলা লওহে মাহফুজে সবকিছু লিখে রেখেছেন।

এ দুটি বিষয় সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন: “তুমি কি জান না যে,নভোমণ্ডলে ও ভুমন্ডলে যা কিছু আছে আল্লাহ সবকিছু জানেন। নিশ্চয় এসব কিতাবে লিখিত আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর কাছে সহজ।”[সূরা হজ্জ, আয়াত: ৭০] সহিহ মুসলিমে আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে- তিনি বলেন, “আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন: আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিকূল সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর আগে সৃষ্টিকূলের তাকদীর লিখে রেখেছেন।”

তিনি আরো বলেন: “আল্লাহ তাআলা প্রথম সৃষ্টি করেছেন কলম। সৃষ্টির পর কলমকে বললেন: ‘লিখ’। কলম বলল: ইয়া রব্ব! কী লিখব? তিনি বললেন: কেয়ামত পর্যন্ত প্রত্যেক জিনিসের তাকদীর লিখ।”[ আবু দাউদ (৪৭০০)] আলবানি সহিহ আবু দাউদ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।

তিন:

এই ঈমান রাখা যে, কোন কিছুই আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে ঘটে না। হোক না সেটা আল্লাহর কর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট অথবা মাখলুকের কর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আপনার পালনকর্তা যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং (যা ইচ্ছা) মনোনীত করেন।”[সূরা কাসাস, আয়াত: ৬৮] তিনি আরো বলেন: “এবং আল্লাহ যা ইচ্ছা সেটাই করেন”[সূরা ইব্রাহিম, আয়াত: ২৭] তিনি আরো বলেন: “তিনিই মাতৃগর্ভে তোমাদেরকে আকৃতি দান করেন যেভাবে ইচ্ছা করেন সেভাবে।”[সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৬]

বান্দার কর্ম সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর আল্লাহ ইচ্ছা করলে অবশ্যই তাদেরকে তোমাদের উপর ক্ষমতা দিতে পারতেন। যাতে তারা নিশ্চিতরূপে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারত।”[সূরা নিসা, আয়াত: ৯০] তিনি আরো বলেন: “তোমার রব যদি ইচ্ছা করত, তবে তারা তা করত না”[সূরা আল-আনআম, আয়াত: ১১২]

অতএব, সকল ঘটনা, সকল কর্ম, সকল অস্তিত্ব আল্লাহর ইচ্ছাই হয়। আল্লাহ যা চান সেটাই হয়, তিনি যা চান না, সেটা হয় না।

চার:

যাবতীয় সবকিছুর জাত, বৈশিষ্ট্য, গতি ও স্থিতি সব আল্লাহর-ই সৃষ্টি।

আল্লাহ তাআলা বলেন: “আল্লাহ সবকিছুর স্রষ্টা এবং তিনি সবকিছুর তত্ত্বাবধায়ক।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬২] তিনি আরো বলেন: “তিনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেককে যথোচিত আকৃতি দান করেছেন।” [সূরা ফুরকান, আয়াত:২] তিনি নবী ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেন তিনি তাঁর কওমকে উদ্দেশ্য করে বলেন: “অথচ আল্লাহই তোমাদেরকে এবং তোমরা যা কর তা সৃষ্টি করেছেন?”[সূরা আস্‌-সাফ্‌ফাত, আয়াত:৯৬]

যে ব্যক্তি এ বিষয়গুলোর প্রতি ঈমান এনেছে সে তাকদীরের প্রতি স� িকভাবে ঈমান এনেছে।

এতক্ষণ আমরা তাকদিরের প্রতি ঈমান আনার যে বিবরণ দিলাম সেটা কর্মের ক্ষেত্রে বান্দার ইচ্ছাশক্তি থাকা ও ক্ষমতা থাকার সাথে সাংঘর্ষিক নয়। বান্দার ইচ্ছাশক্তি রয়েছে। বান্দা ইচ্ছা করলে কোন নেক কাজ করতে পারে এবং ইচ্ছা করলে তা বর্জন করতে পারে। ইচ্ছা করলে কোন গুনাহর কাজ করতে পারে এবং ইচ্ছা করলে তা বর্জন করতে পারে। শরিয়তের দলিল ও বাস্তব দলিল বান্দার এ ইচ্ছাশক্তি সাব্যস্ত করে।

শরয়ি দলিল হচ্ছে- আল্লাহ তাআলা বলেন: “ঐ দিনটি সত্য। অতএব যার ইচ্ছা সে তার রবের নিকট আশ্রয় গ্রহণ করুক।”[সূরা নাবা, আয়াত: ৩৯]

তিনি আরো বলেন: “সুতরাং তোমরা তোমাদের ফসলক্ষেতে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে গমন কর”[সূরা বাকারা, আয়াত: ২২৩]

তিনি বান্দার সক্ষমতা সম্পর্কে বলেন: “অতএব, তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর”[সূরা তাগাবুন, আয়াত: ১৬]

তিনি আরো বলেন: “আল্লাহ কোন ব্যক্তিকে তার সামর্থ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না। সে যা অর্জন করে তা তার-ই জন্য এবং সে যা কামাই করে তা তার-ই উপর বর্তাবে।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ২৮৬]

এ আয়াতগুলো সাব্যস্ত করে যে, মানুষের ইচ্ছাশক্তি ও ক্ষমতা রয়েছে। এ দুটির মাধ্যমে সে যা ইচ্ছা তা করতে পারে এবং যা ইচ্ছা তা বর্জন করতে পারে।

বাস্তব দলিল: প্রত্যেক মানুষ জানে যে, তার ইচ্ছাশক্তি ও ক্ষমতা রয়েছে। এ দুটোর মাধ্যমে সে যা ইচ্ছা তা করতে পারে এবং যা ইচ্ছা তা বর্জন করতে পারে। মানুষ তার ইচ্ছায় সাধিত কর্ম যেমন- হাঁটা এবং তার অনিচ্ছায় সাধিত কর্ম যেমন- রোগীর কাঁপুনি এতদুভয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে। তবে মানুষের ইচ্ছা ও ক্ষমতা আল্লাহর ইচ্ছা ও ক্ষমতার অনুবর্তী। এর দলিল হচ্ছে আল্লাহ তাআলার বাণী: “যে তোমাদের মধ্যে সরল পথে চলতে চায়- তার জন্য। আর তোমরা ইচ্ছা করতে পার না, যদি না সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ ইচ্ছা করেন।” [সূরা তাকবীর, আয়াত: ২৮-২৯]

তাছাড়া গোটা মহাবিশ্ব আল্লাহ তাআলার মালিকানাধীন। অতএব, তাঁর মালিকানাভুক্ত রাজ্যে কোন কিছু তাঁর অজ্ঞাতসারে অথবা অনিচ্ছায় ঘটা সম্ভব নয়।

আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৮

না খান্দা বান্দা বলেছেন: আল্লাহর কুরআনে কি শুধু 'আইন' আছে? ব্যক্তির করণীয় বলা নেই? সামাজিক করণীয় বলা নেই? দেখুন 'আইন,রাষ্ট্র,শাসন' দিয়ে যদি ইসলাম মানুষের জীবনে আসত তাহলে আল্লাহ নবীদেরকে নিরস্ত্র ক্ষমতাহীন করে পাঠাতেন না। ইসলাম পূর্ণাংগ জীবন বিধান।পুরাপুরি ইসলামের ওপর চলতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তা প্রতিষ্ঠাও জরুরি।কিন্তু সবার আগে দরকার মানুষের সংশোধন।মানুষ যখন দ্বীন মানতে তৈরি হয়ে যাবে, তখন এমনিতেই শান্তি আসবে।পুলিশ লাগবে না।নবী সল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একজন মহিলা সাহাবি যিনা করার স্বীকারোক্তি দিয়ে 'হদ' কায়েম করতে বলেছেন।তাঁর পেছনে গোয়েন্দা ছিল না।ঠিক তেমনি যখন মদ নিষিদ্ধের আয়াত আসে,তখন নবী সল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লামের তরফ থেকে একটা ঘোষণাই যথেষ্ট হয়ে গেছে।ঘরে ঘরে পুলিশ পাঠিয়ে তল্লাশি চালাতে হয় নি।তাই সবার আগে দরকার ব্যাপক পরিসরে ব্যক্তির সংশোধন।এই কাজটি অত্যন্ত কঠিন।আর এটি হয়ে গেলে বাকি কাজও হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। সূরা নূরের ৫৫ নং আয়াতটি দেখুন-
وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُم فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّن بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব দান করবেন। যেমন তিনি শাসনকতৃত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববতীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের ধর্মকে, যা তিনি তাদের জন্যে পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে শান্তি দান করবেন। তারা আমার এবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না। এরপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে, তারাই অবাধ্য।


আল্লাহ ও তাঁর রসূল ভাল জানেন

২| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৮

পিচ্চি হুজুর বলেছেন: গায়ের জোরে যদি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা যাইত তাহলে নবী ও রাসুল (সা) এর পাঠানোর দরকার ছিল না। দুনিয়ার বুকে কিছু ফেরেশতা উইথ ডান্ডা পাঠাইয়া দিলে হইত।
আপনাদের মত লোকজনের জন্য সাধারণ মানুষ মানুষ দিন কে দিন ধর্ম থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

৩| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০১

কলাবাগান১ বলেছেন: সুইডেন, নরওয়ে, জাপান, কোরিয়া, চীন এরা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শান্তির দেশ

৪| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৮

বাংলার জামিনদার বলেছেন: মিডলইস্টে যাইয়া আগে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। তারা ইসলামের আলো থেকে বন্চিত, এইডস বাধাইয়া ফালাইতাছে খালি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.