![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী মানেই এক শ্রেনীর মানুষের চোখের বিষ, আর এখানে সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচার বা মিথ্যাচারও নতুন কিছু নয়। পাহাড়ে এক কথায় “যত দোষ নন্দ ঘোষ”।
“কথায় আছে, যার জন্য করে চুরি, সে ই বলে চোর”, যেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তাবাহিনী কর্তৃক সাধারণ উপজাতীয়দের প্রায়ই ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট, সেতু, বিদ্যালয় নির্মান করে দেয়া হয়, সেখানে এবার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীয়দের মন্দির ভাংচুরের মিথ্যা অভিযোগ উঠেছে সেই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেই । বলতে গেলে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতেই যেন বার বার টার্গেট হয় সেনাবাহিনী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি গুইমারা রিজিয়ন ও সিন্দুকছড়ি জোনের সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে এমই কয়েকটি মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক ও উস্কানীমূলক স্ট্যাটাস দেয়া হয়েছে, চাইলাপ্রু মারমা, চাইন্দাসুরিয়া থেরোসহ কয়েকটি আইডি ও চিটাগাং হিল ট্রাকট্স ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস নামের একটি পেজ থেকে।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার গুইমারা উপজেলায় ধর্মীয় উপাসনালয় (বৌদ্ধ মন্দির) তৈরি করার নামে সেনাবাহিনীর একটি পরিত্যক্ত ক্যাম্পের সরকারী খাস ভূমি দখলের অভিযোগ উঠেছিলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গুইমারা উপজেলার ২ নং হাফছড়ি ইউনিয়নের কুকিছড়ায় পরিত্যাক্ত সেনাক্যাম্পের সরকারী খাসভূমি দখল করে ধর্মীয় উপসনালয় তৈরীর নামে এক রাতের ব্যবধানে একটি ঘর তৈরী করে তাতে মন্দিরের অবয়ব বসিয়ে উক্ত ভূমিটি দখল করেছিলো কতিপয় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি নিয়মিত টহল দল স্থানীয় কার্বারীসহ জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিহার নির্মানকারী উপজাতীয়দের কাছে খাস ভূমিতে তড়িঘড়ি করে ঘর নির্মানের কারণ জানতে চাইলে তারা নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে উক্ত ভূমি তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন বলে দাবি করেন।
তাৎক্ষনিক নিরাপত্তাবাহিনী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কিংবা ভূমির মালিকের অনুমতি নিয়ে ঐ দলটিকে ঘর নির্মান করার অনুরোধ করেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় উপজাতিরা বিভিন্ন ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নিরাপত্তাবাহিনীকে নিয়ে নানা রকম মিথ্যা ও উস্কানীমূলক অপপ্রচার চালিয়েছিলো।
সোমবার (২৬ জুন) প্রতিবেদক কর্র্র্তৃক সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুকিছড়ায় পরিত্যক্ত সেনাক্যাম্পের স্থানে কতিপয় উপজাতীয় কর্তৃক ভূমি দখল করে একরাতের দিনের মধ্যে নির্মানের নিমিত্তে একটি কাঠের ঘরের অবকাঠামো দাড় করায়।
এখানে উল্লেখ্য যে, নির্মিতব্য বৌদ্ধ বিহারটির প্রায় ৩০০ গজের ভেতর আরো ২ টি বিহার থাকলেও কেন বা কি কারণে উপজাতীয়রা আরেকটি বিহার নির্মানের নামে সরকারী ভূমি দখল করতে চাইছে এ নিয়ে প্রশ্ন জেগেছে স্থানীয়দের মনে। তাদের দাবি পাহাড়ের আঞ্চলিক একটি সশস্ত্র সংগঠন সাধারণ উপজাতীদের আড়ালে থেকে সরকারী এ খাস ভূমিটি দখলের পায়ঁতারা করছে।
এসময় স্থানীয় কার্বারী এচিং মারমা জানান, যেখানে কুকিছড়ায় আরো দুটি বৌদ্ধ বিহার রয়েছে সেখানে কতিপয় ভূমিদস্যুরা বিহারের নামে এ ভূমিটি দখলের পায়তারা করছে। এটি মূলত সরকারী খাস ভূমি।
তখন এ বিষয়ে ২ নং হাফছড়ি ইউপি’র চেয়ারম্যান চাইথোয়াই মারমা জানান, কুকিছড়ায় সরকারী খাস ভূমি দখল করে স্থানীয় কিছু লোকজন একটি বিহার নির্মান করছিলো, পরে ইউএনও স্যারসহ সেখানে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অ.দা) বিভিষন কান্তি দাস এই প্রতিবেদককে তখন জানিয়েছিলেন, কুকিছড়ায় সরকারী একটি খাস ভূমিতে অবৈধভাবে উপজাতীয়রা বৌদ্ধ বিহার নির্মান করছে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা বিহার নির্মানে স্থগিতাদেশ দিয়েছি, মূলত ঐ ভূমিটি সরকারী খাস ভূমি, এছাড়া আপাতত বিহার নির্মানের কাজ বন্ধ রয়েছে। এখানে আগে সেনাবাহিনীর পরিত্যক্ত ক্যাম্প ছিল।
কিন্তু সরকারী আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তখন বিহারটি নির্মান করে খাস ভূমিটি দখলে নিয়েছিলো সন্ত্রাসীরা। এরপর সেখানে এই প্রতিবেদক সহ স্থানীয় সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহে গেলে মন্দিরের দেখ-ভালকারীরা রহস্যজনক কারণে তাদের মন্দিরের প্রাঙ্গনে প্রবেশ করতে দেয়নি।
তখন সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচারে ব্যর্থ হয়ে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আঞ্চলিক সন্ত্রাসীরা, সুযোগ খুঁজতে থাকে, কিভাবে পাহাড়েরে শান্ত পরিবেশ অশান্ত করা যায়, যার ধারাবাহিতকায় বর্তমানে আবারো সেনাবাহিনীকে টার্গেট করে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে তারা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সত্যতা নিশ্চিত করতে এই প্রতিবেদক কথা বলেন স্থানীয় কার্বারী এচিং মারমার সাথে, তিনি জানান, গতরাতে এই এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল টিম এসেছে বলে আমার জানা নেই তবে রাতে মন্দিরের আশে-পাশে স্থানীয়দের হট্টগোল শোনা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, গতরাত আনুমানিক ১টার দিকে একদল ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী মন্দিরে প্রবেশ করে সেখানে ব্যাপক ভাংচুর চালায় এবং হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলে যায়, কেউ এবিষয়ে কিছু জানতে চাইলে সেনাবাহিনীর নাম বলতে হবে, ভূলেও কেউ তাদের কথার বাহিরে গেলে গুলি করে মারা হবে।
স্থানীয় সাধারণ উপজাতীয় বাসিন্দাদের দাবি, উক্ত মন্দিরটিকে ঘিরে সন্ত্রাসীদের একটা ঘাটি তৈরী হয়েছে এখানে। অতিদ্রæত সরকার উক্ত স্থানে নিরাপত্তাবাহিনীর ক্যাম্প পূনঃবহাল করে এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে গ্রাম ছাড়তেও বাধ্য হবেন তারা।
ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাহাড়ে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলো এবং নিরাপত্তাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ পাহাড়ীদের বিভ্রান্ত করে নিজেদের পাল্লা ভারী করার অংশ হিসেবেইএসব অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলো।
কার্টেসীঃ এম.সাইফুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি:
©somewhere in net ltd.