নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভবোঘুরে বাউল

উদ্ভট অনুর্বর মস্তিষ্ক প্রসূত অহেতুক উৎকট কষ্ট কল্পনামাত্র!

ভবোঘুরে বাউল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মূল্যহীন স্বপ্ন এবং চলমান স্বদেশ

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৩

"আমার স্বর্গীয় বাবা ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডোম। আমি যখন ১০ম শ্রেণীতে পড়ি বাবা তখন ওপারের ডাকে আমাদের ছেড়ে চলে যান। বাবার ক্যান্সার ছিল। আর্থিক অনটনের কারনে আমি আর মা আমার বাবার ঠিকমত চিকিৎসা দিতে পারিনি। বাবা মারা যাওয়ার পর মা খুব বেশি নিঃসঙ্গ হয়ে যান। সংসারে তখন কেবল আমি আর মা। থাকতাম কমলাপুরের বস্তিতে। আমি অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক ছিলাম বিধায় মা আমাকে সংসার চালানোর কাজ নিতে দেয়নি। মা নিজে কোন এক সাহেবের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ জোগাড় করে নিয়েছিলেন।

মা আমাকে নিয়ে খুব স্বপ্ন দেখতেন। মায়ের সেই স্বপ্ন হৃদয়ে ধারন করেছিলাম আমি। কত রাত যে ঘুমাইনি সে কথা আজ অব্দি মনেই পড়েনা। ঘুমকে জীবন থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি আমার বিধবা মাকে খুশি করার প্রয়াসে।

আমি মাকে কাঁদতে দেখেছি। মা নীরবে কেঁদেছে। আমার অনাকাংকিত উপুস্থিতিতে মা হচকিত চিত্তে পরনে মোটা সুতোর শাড়ীতে চোখ মুছে নিয়েছে যেন আমি বুঝতে না পারি। আমি বুঝেও না বোঝার ভানে সব দেখেছি।

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় যখন এ প্লাস পেয়েছিলাম মাকে হাঁসতে দেখেছি আমি। তখন থেকে পণ ছিল মায়ের স্বপ্ন অপূর্ণ থাকতে দেবনা। পৃথিবী ভুলে গিয়েছিলাম আমি।

গত শুক্রবার পরীক্ষা দিয়েছিলাম মেডিকেলে। প্রশ্ন যথেষ্ট সহজ ছিল। তবে আমি দেখেছি আমার পরিচিত অনেকে যারা বায়োলজি ঠিক মত বোঝে না তারা সব ৯৬-৯৮ টা প্রশ্ন দাগিয়ে এসেছে সেখানে আমি মাত্র ৮৭ টা। আমার প্রশ্ন দাগানোয় ৪ টি ভুল হয়েছিল।
আজ মেডিকেলের রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে। আমার এডমিশন মার্ক ৮২। আমি মেধা তালিকায় নেই।
খুব জোরে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে।

মা,
আমি আজ ব্যর্থ। আমি পারিনি তোমাকে ডাক্তারের মা বানাতে। তোমার স্বপ্ন আমি পুরন করতে পারিনি। ওরা টাকা দিয়ে তোমার-আমার মত ভিখেরিদের স্বপ্ন কিনে নিয়েছে। মা আমরা তো বস্তিতে থাকি। আমাদের স্বপ্নের কতই বা দাম বল? হয়তো ৫/৭ লাখ টাকা, তার বেশি না।

ওমা,
তুমি কান্না করোনা মা। দেখ আমি রিক্সা চালিয়ে তোমাকে দু-বেলা দুমুঠো মোটা চালের ভাত কিনে দিতে পারব মা।"

কথাগুলো আমার না। আমাদের দেশের হাজার স্বপ্নবাজের। যাদের স্বপ্নগুলো চুচিল শ্রেণীর ৫/৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পদদলিত হয়েছে। মেধা-যোগ্যতা সব থাকা সত্ত্বেও যাদের বেছে নিতে হয় রিক্সা চালনার মত কাজ। আমাদের কি একটুও লজ্জা পাওয়া উচিৎ না?
আপনাদের ছেলেমেয়ে গুলোকে হয়তো ৫/৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ডাক্তার বানিয়ে ঘরে তুলছেন কিন্তু একটি বার কি ভেবে দেখেছেন, আপনার সন্তান ডাক্তার হয়ে ফুটপথে মলম বিক্রি ছাড়া কোন যোগ্যতাই অর্জন করতে পারবে না?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৫

মাসূদ রানা বলেছেন: শুনেছি,প্রশাসনের ছত্র ছায়ায় ছাত্রলীগ আম্লীগের সন্ত্রাসীরাই তাদের সন্তান সন্ততি আত্মীয় স্বজনদের পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে চান্স পাইয়ে দিতে প্রতিবার এ ঘটনা ঘটায়। কি দরিদ্রতা ......

ভিক্টিম ছেলেমেয়েগুলোকে আল্লাহ পাক হেফাজত করুন ।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৭

ভবোঘুরে বাউল বলেছেন: সে কথা আর কি বলব ভাই।
বলে হয়তো কোন লাভ নাই।
উল্টো জঙ্গি নামে খ্যাত হতে পারি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.