নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভবোঘুরে বাউল

উদ্ভট অনুর্বর মস্তিষ্ক প্রসূত অহেতুক উৎকট কষ্ট কল্পনামাত্র!

ভবোঘুরে বাউল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিষাদ সূর্যরশ্মি (ছোটগল্প)

১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৬


একটার পর একটা সিগারেট টেনে ঘরটা অন্ধকার করে রেখেছে সুজন। সঙ্গী বলতে কেবল এই সিগারেটের ধোঁয়া আর বেসিনের কলটা থেকে টুপটুপ জল পড়ার শব্দ। সিলিং ফ্যানটা একটানা ঘুরেই চলেছে মাথার উপর। কিন্তু তাতে কি হবে! সুজনের কপাল দিয়ে ঘাম ঝরছে অনবরত। চিন্তার রেষ মাথায় নিয়ে কপালটা কুঁচকে সামনের দেওয়ালে সারিবদ্ধভাবে চলতে থাকা পিঁপড়েগুলোর দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সীমাহীন ভাবনা ভর করেছে মস্তকে।

অনুপমার সাথে প্রেম দীর্ঘদিনের। আনুমানিক ছয়-সাত বছর তো হবেই। এই দীর্ঘসময়কার প্রেমজ সম্পর্ক এক ঝাটকায় নিঃশেষিত হবে ভাবতেই মাথার ভেতর কেমন যেন টিসটিসিইয়ে ওঠে।

কাল অনুপমার বিয়ে। বিয়ে যে হুট করে হচ্ছে এমনটি না। গত তিন চার মাস অনুপমা সুজনকে বেশ করে বিয়ের তাগাদা দিয়ে চলেছে। কিন্তু কি করার ছিল সুজনের! এমন নিরেট বেকারের হাতে কোন ভরসায় মেয়ে তুলে দেবে অনুপমার বাবা-মা? অনেক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছুতে কিছু মেলাতে পারেনি সুজন।

বিএ পাশের সার্টিফিকেট নিয়ে বছরখানেক দ্বারে-দ্বারে চাকুরি ভিক্ষা চেয়ে ব্যর্থ সুজন পেশা হিসেবে নিতে চেয়েছিল টেলিভিশন নাটকের পরিচালনার কাজ। সহকারী হিসেবে কাজও করেছে বছর তিনেক। এই জগতের মানুষের বেশ নামডাক। স্বপ্নবিভোর সুজন নিজেকে প্রধান পরিচালকের আসনে বসাতে কম চেষ্টা করেনি। ছুটে মরেছে গল্পকার থেকে স্যাটেলাইট চ্যানেল, আবার চ্যানেল থেকে প্রযোজক মহাদয়ের কাছে। একপর্যায়ে সবকিছু ঠিকঠাক হলেও বাধ সাথে তথাকথিত প্রযোজক মহাদয়।
“কাঁড়ি-কাঁড়ি টাকা ঢালবো তো দু-একটা মাগী না খসালে চলবে? মাগীর ব্যাবস্থা করো টাকা পেয়ে যাবে।”

তক্ষনি হতাশা খুব করে পেয়ে বসে সুজনকে।
“আরে এত কষ্ট করে সব জোগাড়-জন্ত করলাম আর এখন শালা মাগী চায়? শালা আমি কি তাহলে মাগীর দালাল?”

তবুও আবার নতুন করে ছুটতে শুরু করে। কিন্তু কোনভাবেই কোন ব্যাবস্থা হচ্ছে না। গল্প কিংবা টেলিভিশন রেডি হলেও প্রযোজক আর মেলেনা। যতদিনে প্রযোজক মেলে ততদিনে গল্পকার অন্য পরিচালক দিয়ে নাটক চালিয়ে দিয়েছে টেলিভিশনে।

শেষমেশ একপ্রকার হাল ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে বসে সুজন। আর ঠিক এই মুহূর্তেই অনুপমার বিয়ে?

শুনেছে ছেলে নাকি স্কুল-মাস্টার। পাশাপাশি দু-চারটে টিউশানি করে। রোজগার বেশ ভালোই। এমন সোনার টুকরো ছেলে অনুপমার বাবা-মা কেনইবা হাতছাড়া করবে? তবুও সুজন আত্মপ্রশ্নবিদ্ধ।
“আরে! অনুপমার মা তো আমার আর ওর ভাব-ভালোবাসার কথা জানত অনেকদিন যাবত। তাহলে তো আর কয়টা দিন সবুর করতে পারতো নাকি?”
কিছুতেই যথার্থ উত্তর মেলে না।

সকাল থেকে সন্ধ্যাগড়িয়ে রাতের দ্বিপ্রহর শেষ। নির্ঘুম সুজন ভেবেই চলেছে। আজকের সূর্য বিষাদ নিয়ে উদয় হতে চলেছে সুজনের জন্য। অনুপমার হৃদয়রাজ্যের যে সিংহাসনে এতকাল সুজনের শাসন প্রতিষ্ঠিত সেখানে নতুন একজন রাজা হবে এটা ভাবা যায়?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২২

সুমন কর বলেছেন: মোটামুটি.....

১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১২

ভবোঘুরে বাউল বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা

২| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১৭

মানুষ বলেছেন: সকাল থেকে না হলেও এক কুড়ি প্রেম-ভালুবাসা সংক্রান্ত প্যাঁচের গল্প পড়লাম। জগতে প্রেম না থাকলে সামুর লেখকদের যে কি হাল হইত!

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:২৪

ভবোঘুরে বাউল বলেছেন: হুহাহাহাহাহা। আসলেই তো দাদা। কি হাল হইত এইটা ভেবে দেখিনি। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.