নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভবোঘুরে বাউল

উদ্ভট অনুর্বর মস্তিষ্ক প্রসূত অহেতুক উৎকট কষ্ট কল্পনামাত্র!

ভবোঘুরে বাউল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালো থাকিস দোস্ত তুই :\'(

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:২০

শাইখ নেই বিশ্বাস করিনি।
এইতো সেদিন রেজিস্টার বিল্ডিং থেকে বিলম্ব ভর্তির কাগজ নিয়ে হন্তদন্ত করে কলাভবনে এসেছি চেয়ারম্যান ম্যামের সাইন নিতে।

-(পেছন থেকে) কিরে! এত দৌড়াইয়া কই যাস?
-(হ্যান্ডসেক করতে করতে) দোস্ত আর কইস না, কাল ফর্ম ফিল-আপের লাস্ট ডেট। অহনো ২ টা ভর্তি বাকি। আইজকার মদ্ধে সব সিল-সাপ্পর নেওন লাগবো। নইলে ইয়ার ড্রপ খামু।
-বেটা! এসব দরকারি কাজ আগে থেকে করে রাখবি না?
-আরে মামু! বাপের থাইকা ট্যাকা নিছিলাম। কিন্তু ট্যাকা খাইয়া ফালাইছি। বহুত কষ্টে ধার-ধর কইরা ম্যানেজ করছি আইজ।
-যা, ফর্ম জমা দিয়ে আয়। তারপর কথা কই।

ফর্ম জমা দিয়ে সল্প সময়ের আলাপ হয়েছিল শাইখের সাথে। হাস্যজ্জল মুখ! হালকা কথার ফাইজলামি। এইতো আমাদের শাইখ।
চেয়ারম্যান ম্যামের সাইন নিয়ে যখন অফিস রুম থেকে বের হয়ে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যাব সে সময় ওর সাথে শেষ কথা হয়।

-দোস্ত যাই রে! টিএসসি তে টাকা টা দিয়ে আসি। তুই থাক ডিপার্টমেন্টের দিকে। আমি আসছি ব্যাংক থেকে।
-ওকে আয়, আমার ক্লাস আছে একটু পর। টাকা দিয়ে আয় তারপর দেখা হবে।

ব্যাংকে টাকা দিয়ে এসে শাইখ কে পাইনি আর। হয়তবা ক্লাসে গিয়েছিল বা অন্য কোন কাজে।
তবে সেদিন ভাবিনি শাইখের সাথে ওটা আমার শেষ কথা, শেষ দেখা হবে।

বান্দরবনের কোন এক জায়গায়

বাইক চালিয়ে কুয়াকাটা যাত্রা

কেওক্রাডং পর্বতের চুড়ায়

হাজাছড়া ঝরনা, খাগড়াছড়ি

বরিশাল শহরের কোন এক জায়গায়

জিরো পয়েন্ট। বাংলাবান্ধা,তেতুলিয়া।

সিলেটের তামাবিল

তাজিওডং, কেওক্রাড়ং, চিম্বুক কিংবা সাজেক ছিল যে দুরন্ত ছেলেটার পদতলে পিষ্ট সে আর বলবেনা, “দোস্ত এবার সিলেট যাব, যাবি আমার সাথে?” কিংবা পর্বত জয় করে পরবর্তী টুরে সঙ্গী বানানোর পরিকল্পনায় নেশা ধরাতে বলবেনা “দোস্ত চান্দের গাড়ি চড়তে কি যে মজা! মিস করে ফেললি।”

ডিপার্টমেন্টের ইন্ডিয়া টুরের ব্যাপারে হয়তো ও খুব বেশি উৎকণ্ঠায় ছিল। এ ব্যাপারে ওর সাথে কথা না হলেও আন্দাজ করতে পারি ও বলতো, “এবার কিন্তু আর না শুনব না। তোকে যেতেই হবে।” আমি হয়তো এবার বলে দিতাম, “আর মিস করছি না মামু। এবার ইন্ডিয়া টুরে যাব।”

গতকাল সন্ধায় শাইখের মৃত্যুসংবাদ শুনে শরীর অবশ হয়ে গিয়েছিল। চলতে পথে দু-ফোটা গরম নেত্রজল পড়েছে পিচের উপর।
ঐ যে শাইখ হাসছে, কলাভবনের নিচে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে হাসছে, ডিপার্টমেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে হাসছে, কলাভবনের ৪০৬৫ নাম্বার রুমের সামনে হাসছে। ও হাসি মলিন হবে কেন? ও যে মলিন হবার মত হাসি না। ও হাসি মলিন হবেনা।

যেখানে গেছিস ভাল থাকিস দোস্ত। তোর হাস্যজ্জল মুখ ওখানে অটুট থাকবে এই কামনা।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭

এহসান সাবির বলেছেন: দুঃখজনক। শাইখ ভাই য়ের জন্য দোয়া।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৭

ভবোঘুরে বাউল বলেছেন: সৃষ্টিকর্তা যেন ওকে সর্বোত্তম প্রশান্তিতে রাখেন এই দুয়া।

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:১০

রিপি বলেছেন:
ইন্নালিল্লাহ। যেখানেই থাকুক আল্লাহ যেন উনাকে অনেক ভালো রাখেন।
উনি কিভাবে মারা গেলেন? মানুয মরে গেলে তার ছবি না দেওয়াই হয়তো ভালো।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৫

ভবোঘুরে বাউল বলেছেন: গত বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার দিন ওখানে গিয়েছিলাম। হঠাৎ এক বন্ধু ফোন দিয়ে বলেছিল শাইখ আর নেই। বিশ্বাস করতে পারিনি আমি। সদা প্রাঞ্চল প্রিয়মুখ আমাদের।

প্রথমে ভেবেছিলাম এক্সিডেন্ট হবে হয়তো কিন্তু পরে জানতে পারি স্টোক।

৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:৫১

রিপি বলেছেন:
হায় খোদা এই বয়েসে স্টোক !!!! খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। আল্লাহ উনাকে বেহেস্ত নসীব করুক আমীন।

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৩৫

ভবোঘুরে বাউল বলেছেন: হুম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.