![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার আকাশ মেঘে ঢাকা \nজমতে থাকা আগুন ;\nহঠাত আলোর পরশ পেলেই \nঝরবে রোদের ফাগুণ।
অন্য সবার যেখানে এক কিলো যেতে লাগে প্রায় দশ মিনিট সেখানে হেলাল মাত্র পাঁচ মিনিটেই পুরো রাস্তা কাবার করতে পারে।জটিল জ্যাম বা দম বন্ধ করা ধোঁয়া কোনটাই তাকে ঠিক কাবু করতে পারেনা ,সে হেঁটে চলে আপন গতিতে।বিয়ের পর এই কারণে কম বিপত্তি ঘটেনি,অনেক সময় দেখা গেছে রুমু-ঝুমুর মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছে ; মফস্বলের রাস্তা ভাঙ্গা -চোড়া ,ডাক্তার বলে দিয়েছে বাচ্চা হবার কিছু দিন আগ অব্দি রিক্সায় ওঠা যাবে না। হেলাল অফিস থেকে ফিরে শায়লাকে নিয়ে ঠিকি ডাক্তারের চেম্বার পর্যন্ত গিয়েছে , খুব যত্ন করে বউয়ের হাত নিজের মুঠোতে রেখে হাঁটি হাঁটি পা পা করে চেম্বারে পৌঁছে গেছে।কিন্তু আল্ট্রাসনোগ্রামে যখন দেখা গেল একটি না হেলাল সাহেব দু দুটো মেয়ের বাবা হতে যাচ্ছে-এই শুনে সে বেশ লাফাতে লাফাতেই বাড়ি ফিরে এলো।পথের মধ্যে যে বৌটা দাঁড়িয়ে আছে সে কথা সে দিব্যি ভুলে গেছে। ছোট বোন মনে করিয়ে দিল-ভাইয়া, ভাবীকে দেখতে পাচ্ছি না কেন?হাসপাতালে ভর্তি করে দিলে বুঝি?কথার উত্তর কি দেবে , হেলালের গলা শুকিয়ে কাঠ।
স্বামীর সাথে বাইরে ঘুরতে যাবার ইচ্ছে সে দিনই শায়লা বাদ দিল,এমনিতেই ছোট চাকরী ।বাড়ি ভর্তি দেবর-ননদ,সবাই কলেজের ছাত্র-ছাত্রী।প্রেম করে বিয়ে করার এই এক যন্ত্রণা -বিয়ে করতে যে বাড়ি ঘর দেখতে হয় সেই হুঁশ ছিল না শায়লার।তবে এটা সত্য,জোরে হাঁটা ছাড়া হেলালের আর কোন বাজে অভ্যেস নেই।রাত করে কোন দিনই সে বাড়ি ফেরে না, ভুলেও একটা সিগারেটে টান দেয় না, বন্ধের দিন বন্ধু- বান্ধব নিয়ে মেতে ওঠে না।এই যে এক সাথে দু দুটো মেয়ে হলো ; শায়লা কিন্তু রাত জেগে বসে থাকেনি, বুকের দুধে ওদের পেট ভরতো না ;তাই দুই জনের মুখে দুটো ফিডার দিয়ে সে ঘুমিয়ে পড়তো।রাত জেগে বাচ্চাদের প্রস্রাবের কাঁথা বদলাতো হেলাল ,রুমু ঘুমালে জেগে থাকতো ঝুমু -আবার ঝুমু ঘুমালে জেগে থাকতো রুমু।পালা করে সারা রাত হাঁটতো সে বারান্দায়।
এই দুই বোন ছোট বেলায় এক সাথে না ঘুমালেও বাকী সব কাজ এক সাথেই করে। কে কতো সেকেন্ড আগে জন্মেছে তা নিশ্চিত করে যদিও ডাক্তার বলতে পারেনি ধারনা করা হয় যার হাইট একটু বেশী সেই বড়।আর বড় যে সেই রুমু।যমোজ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশীর ভাগ দেখা যায় দুই জনের আচরণ দুই রকম।কিন্তু রুমু ঝুমু এক সাথে একই ধরণের জামা পড়লে হেলাল নিজেই গুলিয়ে ফেলে রুমু কোনটা আর ঝুমু কোনটা ।দুজনই খুবই শান্ত প্রকৃতির, কোন বাড়তি চাহিদা তাদের নেই,বাইরে গেলে বাবা-মার কাপড় দোকানীর সামনে টেনে ধরে না ,কেউ বাড়ি এলে চিৎকার করে বায়না ধরে না।শখের মধ্যে তাদের একটাই-পত্রিকা পড়া। হেলাল অফিস থেকে ফেরার সময় যে পত্রিকাটা আনেন সেটা খুটিয়ে খুটিয়ে দেখা ।অবশ্য এই অভ্যেস হেলালই তাদের করেছে,আজকাল বাচ্চারা কেবল ফেইসবুকে মুখ গুঁজে থাকে।তাদের মধ্যে সৃষ্টিশীল কিছু নেই, হেলাল সাহেব মনে মনে চাচ্ছিলেন তার মেয়ে দুটো বই পড়ুক, পড়ে পড়ে বিশ্বকে জানুক।বিষয়টা তাই ঘটেছে, মেয়েরা সারাদিন খুব একটা টেলিভিশন দেখে না, বিকেল বেলা কিছু নাস্তা খেয়ে অপেক্ষা করতে থাকে বাবার হাতের পত্রিকাটার জন্য।
হেলাল তার চির চেনা শহরের ওলি গলি ধরে হেঁটেই চলেছে । চৈত্রের হালকা বাতাস এসে মাঝে মাঝে তার এলো মেলো চুল ছুঁয়ে দিচ্ছে ,হঠাত মনে হলো এক দলা ধূলো উড়ে আসছে দূর থেকে। অভ্যাস বশত ডান হাতের পাতা দিয়ে দু’চোখ ঢেকে ফেললো আর ওমনি তার মনে হলো-পত্রিকা নেই। সেকি ,অফিস থেকে বের হবার সময়তো হাতেই ছিল ।ফিচার পাতাসহ পত্রিকাটা গোল করে হাতের মুঠোয় নিয়ে বের হয়েছে ,তাহলে কি বাসেই ফেলে এসেছে ?ঠিক মনে করতে পারছে না হেলাল ।বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠলো।সারাটা দিন মেয়ে দুটো এই ফিচার পাতা দেখার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে থাকে।তেমন কিছুই না -কোন মডেল কি পোশাক পড়লো, কোন নায়িকা কি সিনেমা করছে কিংবা এই গরমে কোথায় ঘুরতে যাবেন-এই সব হাবি জাবি।কিন্তু এই সব হাবি জাবি মেয়ে দুটো খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ে ,পছন্দের ছবি কেঁচি দিয়ে কেটে পড়ার টেবিলে লাগিয়ে রাখে। পত্রিকা কিনতে এলেও তারা সেগুলো বিক্রী করেনা ,স্তূপের পর স্তূপ বানায় ঘরের এক কোনে।ঘর ময়লা হচ্ছে বলে শায়লা বহুবার বকা ঝকা করেছে ,কিন্তু কোন ভাবেই তারা পত্রিকা বিক্রী করবে না, তা যতোই পুরনো হোক।
হেলাল এবার উল্টো পথ ধরলো,পথে কোথাও পত্রিকাটা পড়ে গেল কিনা। নীচের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে লাগলো।ওদিকে ঝড় উঠেছে ভীষন, দোকান গুলো একটা একটা করে ঝাপি টেনে দিচ্ছে।তবু হেলাল হেঁটেই চলেছে-কোথাও যদি আজকের পত্রিকাটা কিনতে পাওয়া যায়।রাত নয়টা, এই সময় বাস স্ট্যান্ডের দোকানে সমস্ত পত্রিকা শেষ হয়ে যায়।এমন তো হতেই পারে কোন শপিং সেন্টারে কোন কোন দোকানের মালিক এই পত্রিকাটাই রাখতে পারে।বাবার মন,বার বার মেয়ে দুটোর মুখ ভেসে উঠছিল।মলীন দু’জোরা চোখ বলে দিচ্ছে-আজ,পত্রিকাটা আনতে ভুলে গেলে বাবা।হেলাল জানে তারা কোন দিন অভিযোগ করে কিছুই বলবেনা।যদি দেখে বাবার হাত খালি ছোট্ট করে জিজ্ঞেস করবে -আজ পত্রিকা আনোনি বাবা?ওই একটি প্রশ্নই হেলালের দুনিয়া এদিক ওদিক করে দেবে।
শপিং মলের ভেতরে ঢুকে একটা উপকার অবশ্য হলো-বাইরের বাতাসের তীব্রতা তাকে আর আঘাত করতে পারলো না।সে পকেট থেকে রুমাল বের করে ধূলো মুছে নিল, পাশের ক্যান্টিন থেকে এক গ্লাশ পানিও খেয়ে নিল ।এখনো বেশ কয়েকটা দোকান খোলা আছে।কথা নেই বার্তা নেই অর্নামেন্টসের দোকানে ঢুকে পত্রিকা চাওয়াটা অনেকটা হাস্যকর হলেও সে তাই করলো। দোকানী প্রথমটা অবাক হলেও,পরে বললেন -আমরা পত্রিকা রাখিনা ,তবে আপনি ওই ওষুধের দোকানে খোঁজ নিতে পারেন।হেলাল প্রচন্ড আশা নিয়ে এগিয়ে গেল-আসলে হয়েছে কি,অফিস থেকে ফেরার পথে পত্রিকাটা যে কোথায় ফেলেছি ঠিক বলতে পারছিনা।আপনি কি ...পত্রিকাটা রাখেন? বিক্রেতা তাকে আরো অবাক করে দিয়ে বললেন-ভাই ,আমি সকালেই পেপারটা পড়ে বাড়িতে পাঠায় দেই, সারাদিন বৌ বসে বসে পেপার পড়ে।
রাত খুব বেড়ে গেছে, ভীষন ক্লান্ত লাগছে নিজেকে।মোবাইলে চার্জ শেষ, শায়লা নিশ্চই আজ খুব টেনশন করবে।এতো রাত তার কোন দিন হয় না ,কিন্তু পত্রিকা না নিয়ে ফিরতে তার ইচ্ছে করছেনা মোটেও।কলেজ পড়ুয়া দুটো মেয়ে কখনো কোন দিন বায়না ধরেনি , কান্না-কাটি করে অস্থির করেনি সেই ছোট বেলাতেও একটা খেলনার জন্য।কোন দিন আবদার করে বলেনি-বাবা,আমাদের কক্সবাজার বেড়াতে নিয়ে চলো।হেলালের স্বল্প আয়ের সংগতি শায়লা যেমন বুঝেছে তেমন বুঝতে পারে তার ফুটফুটে দুটো মেয়ে।এদের করুন চোখের মায়া ভরা চাহনী সে কিভাবে সহ্য করবে ? যেভাবেই হোক , আজ রাতের মধ্যে একটা পত্রিকা তাকে জোগাড় করতেই হবে।
২৭ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০০
রোদেলা বলেছেন: অধন্যবাদ বিজয় রয় ।
২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৭:৩৫
বিজন রয় বলেছেন: অধন্যবাদ বিজয় রয় ।
আমাকে অধন্যবাদ দিলেন?!!!
হা হা হা হা
শুভসকাল, শুভকামনা।
২৭ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২৬
রোদেলা বলেছেন: ইহা স্লীপ অব রাইটিং।কয় জন ইরাম দিতে পারে কন?
৩| ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:০৪
সুমন কর বলেছেন: প্যারাতে গ্যাপ দেন নাই ক্যান !!! দেখতে খারাপ লাগে।
গল্প ভালো লেগেছে এবং লাইক !
২৭ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২৭
রোদেলা বলেছেন: প্যারাতে গ্যাপ দিয়েছি।কপি পেস্ট করলে কিছু নড়ে যায়।ধন্য হইলাম।
৪| ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৭
প্রীতম বলেছেন: আমাদের প্রত্যাশাগুলো এমনি হবার কথা।
ভালো লাগলো ভালোবাসার কথাগুলো পড়ে।
আমারতো দুটোই ছেলে। ভালোবাসি তাদের খুব। কিন্তু মাঝে মধ্যে মনে হয় যদি মেয়ে হতো তবে আমার ভালোবাসার সাথে সাথে মেয়েদের ভালোবাসাও খুব খুব পেতাম।
ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য।
২৭ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২৮
রোদেলা বলেছেন: কোথায় যেন পড়েছিলাম মেয়ে সন্তান ইশ্বরের আশীর্বাদ।আমার কিন্তু তাই মনে হয়। ভালো থাকুন সব সময়।
৫| ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:০৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: বেশ টাচি।
২৭ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২৯
রোদেলা বলেছেন: স্পর্শ করার জন্যই এই প্রচেষ্টা।
৬| ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:১১
মায়াবী রূপকথা বলেছেন: ষ্পর্শ করে গেল আপু
২৮ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:২০
রোদেলা বলেছেন: ধন্যবাদ অনিমেষ মায়াবী রূপকথা।
৭| ২৮ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩০
উল্টা দূরবীন বলেছেন: কেমন যেন ছুঁয়ে দিয়ে যায়.....
২৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১০
রোদেলা বলেছেন: শুনে খুব প্রিত হলাম।
৮| ২৮ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৫৪
আহমদ মেহেদী বলেছেন: অনেক ভাল লাগলো রুমু -ঝুমু আর তার বাবার গল্প।
২৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১১
রোদেলা বলেছেন: হা হা হা খুশী হলাম।
৯| ২৯ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭
রানার ব্লগ বলেছেন: পত্রিকা না পাওার বেদনাটা আমাকেও আক্রান্ত করেছে। আমিও খুজছি পত্রিকা খানি।
৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৬
রোদেলা বলেছেন: হুম,সময় চলে গেলে সেটা আর ফেরত পাওয়া যায় না।ভুল করে ফেলে আসা পত্রিকা তাই পাওয়াই গেল না।
১০| ২৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪২
প্রামানিক বলেছেন: খুব ভাল লাগল। ধন্যবাদ
৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৭
রোদেলা বলেছেন: বহু দিন পর দাদা,কেমন আছেন?
১১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:১৯
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: সার্থক বাবারা এমনই হয়।
দারুন লেখা পড়লাম। শুভকামনা জানবেন।
০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩২
রোদেলা বলেছেন: সব বাবারা এমন হলে পরিবার গুলোতে আর হাংগামা থাকতো না,বাচ্চারা নির্বিঘ্নে সুন্দর সান্নিধ্যে বড় হতো।শুভেচ্ছা নিরন্তর।
১২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৪৫
নেক্সাস বলেছেন: মর্ম ছুঁয়ে যাওয়া লিখনী
০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:২৩
রোদেলা বলেছেন: হুম,বাবা মেয়ের সম্পর্ক বড় ভাবায় আমাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৫১
বিজন রয় বলেছেন: ভাল লেগেছে ।
+++