নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভারসাম্য মাত্রই কৃতিত্ব নয় ।

আল - বিরুনী প্রমিথ

আল - বিরুনী প্রমিথ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড নিয়ে দুই চার কথা

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০৯

স্ট্যাবলিশমেন্টের এক পক্ষের মানুষজন দুর্ভোগ না পোহালে সচরাচর নানাবিধ অধিকার বিশেষত মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে শহুরে নাগরিক নামক এলিট জনসমষ্টি নড়েচড়ে উঠেনা । অনেকেই একে অতি সরলীকরণ বলে ভাবতে পারেন কিন্তু বাস্তব চিত্র কিংবা পরিস্থিতি প্রকৃতপক্ষে কি এই বাস্তবতার বাইরে গিয়ে দাঁড়ায় ?



সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর র্যাতব এর ক্রসফায়ারে নিহত তাদের নেতা – কর্মীদের হত্যাকান্ডের তদন্ত দাবী করেছেন । এই নিয়ে হাইকোর্টে রিটও হয়েছে বলে আমি যতোদূর জানি । পরবর্তী সময়ে র্যাপবের ক্রসফায়ার এবং এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং নিয়ে এক সেমিনারও অনুষ্ঠিত হয় যেখানে সমাজের বিভিন্ন পেশার “ প্রণিধানযোগ্য “ নাগরিকরা রযা সবের ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে তাদের নিজস্ব মতামত দেন । একে গ্রহণযোগ্য বলে মেনে নেওয়া যেতো । তাদের বক্তব্যকে যে কোন বিচারে প্রশংসনীয় বলে অভিহিত করা যেতো । এর সবই করা “ যেতো “ যদি তারা কাজটি করতে দশ বছর সময় না নিতেন এবং স্ট্যাবলিশমেন্টের একটি অংশের নিজেদের তৈরী করা দানবের হাতেই পর্যুদস্ত হবার পর সেই অংশের অসন্তোষের ব্যাকিং এর আশ্রয়ে বসে না থেকে নিজেরাই সবসময়ে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতেন ।



বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বিষয়টির সাথে সম্পর্কিতভাবেই অনেক বিষয় চলে আসে যেগুলোর সংজ্ঞা এবং ধারণার স্বচ্ছতার বিষয়টি বেশ তাৎপর্য্যপূর্ণ । সেগুলোর মধ্যে একটি হলো নাগরিকতা সম্পর্কে ধারণা , রাষ্ট্রের ও সমাজে নাগরিকতার বিষয়টিকে আইন – কানুন ও সংবিধানে কিভাবে দেখা হয় তার উপরে । এই কথা আর নতুন করে বলার কোন প্রয়োজন নেই যে কোন বুর্জোয়া রাষ্ট্রে আইন – কানুন , সংবিধানে মানুষের রাজনৈতিক সত্তা বা পরিচয়কেই কেবল গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় । কিন্তু মানুষের প্রাণীগত কিংবা জীবগত যেই বৈশিষ্ট্যসমূহ শিল্প – সাহিত্য , সংস্কৃতি , সমাজ , রাষ্ট্র এমনকি খোদ ইতিহাস নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেই বিষয়টি প্রায় সম্পূর্ণভাবেই আইন – কানুন , সংবিধানে অনুপস্থিত থাকে । বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি আপাদমস্তক অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অত্যন্ত স্বাভাবিক কারণেই নূন্যতম নাগরিক অধিকারসমূহ যখন তখন কেড়ে নেওয়া যায় । সেই ব্যবস্থা খোদ সাংবিধানিকভাবেই স্বীকৃত । আমরা একবিংশ শতাব্দীতে এসে রাজনৈতিক – অর্থনৈতিক জটিল গতিপ্রকৃতির কারণেই প্রত্যক্ষ করি যে মানুষের জীবগত বৈশিষ্ট্য বা প্রাণীগত বৈশিষ্ট্যসমূহ যার সম্পর্কে আইন – কানুন , সংবিধান ইত্যাদিতে সম্পূর্ণই অনুল্লেখিত থাকে তার সাথে মানুষের রাজনৈতিক সত্তার যেই বর্ণনা সেখানে দেওয়া থাকে এই বিষয়গুলো প্রায়শই সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়াচ্ছে । র্যা ব , বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ভাবতে গেলে দেখা যাবে যে সন্ত্রাস , সন্ত্রাসী বা অপরাধী ইত্যাদির যেই সংজ্ঞায়ন আমরা সচরাচর আইন – কানুন , সংবিধানে দেখে থাকি সেগুলো রাজনৈতিক বাস্তবতার চিত্রনুযায়ীই অনেকাংশেই ক্রমশ বেশী প্রশ্নের উদ্রেক করছে এবং নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায় যে সামনের সময়ে আরো বেশী করে অনেক প্রশ্নের জন্ম দেবে ।



সচরাচর কোন রাষ্ট্রের আইন – কানুন , সংবিধান ইত্যাদির সবচাইতে বড় ভোক্তা হলো সেই রাষ্ট্রের মধ্যশ্রেণী । এই শ্রেণীটিই আইন – কানুন , ইত্যাদি দ্বারা সবচাইতে বেশী প্রভাবিত । বাংলাদেশও অবশ্যই তার ব্যতিক্রম নয় । বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড , বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াশীল আইন – কানুন ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন হতে গেলে বাংলাদেশে নামক রাষ্ট্রের মধ্যশ্রেণীটির বিপুল অংশ তাদের নাগরিক পরিচয় , সেই পরিচয়ের দায়িত্ব ও অধিকারের সীমারেখার বিষয়গুলো যেভাবে দেখে থাকে সেই দৃষ্টিভঙ্গীতে আঘাত করা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে । কারণ বুঝে না বুঝে মধ্যশ্রেণীর এই বিপুল অংশই যেভাবে তাদের প্রাত্যহিক জীবনে “ আইনের শাসন “ , কেবল উপযুক্ত আইন – শাসনের মাধ্যমে দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যাওয়া যাবে জাতীয় অর্থহীন বাগাড়ম্বরে আকাশ – বাতাস প্রকম্পিত করে সেটা দিনের শেষে অজস্র প্রতিক্রিয়াশীল আইন – কানুনের জন্ম দেয় । র্যালবের ক্রসফায়ার নিঃসন্দেহে যার একটি । খোদ সর্ষের মধ্যেই যে ভূত বিদ্যমান এভাবে র্যা বের ক্রসফায়ারের বিষয়টি না দেখলে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড নিয়মানুসারেই একসময়ে ব্যক্তির শ্রেণী পরিচয়কে তোয়াক্কা করবেনা ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.