নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভারসাম্য মাত্রই কৃতিত্ব নয় ।

আল - বিরুনী প্রমিথ

আল - বিরুনী প্রমিথ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোপনে ভাস্বর

০৭ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:১৩

“তুমি তো আব্বাকে একেবারে যাকে বলে, ইয়ে মানে কি বলে”.........উপযুক্ত শব্দ স্মরণ করতে না পারার ব্যর্থতায় নীরা সাত সপ্তাহের পরিচিত স্বামীর দিকে তাকিয়ে বোকা বোকা হাসে। সেই হাসিটা তার নিজের কাছেই আনকনভিন্সিং ঠেকলে মুরাদ তাকে আশ্বস্ত করে।



“তুমি বলতে চাইতেছো যে আব্বাকে আমি ফিদা করে দিছি, এই তো?” রেস্টুরেন্টের আলোতে মুরাদের চোখজোড়া স্বাভাবিকের চাইতেও বেশী উজ্জ্বল দেখায়।



“হ্যা হ্যা, এটাই।” অপ্রস্তুতভাবটা দ্রুতই কাটিয়ে উঠার সুযোগ পাওয়া গেছে এই আনন্দে তার মুখের রেখাগুলো আড়ষ্টতা কাটিয়ে উঠে সপ্রতিভ হয়। “বাবা তো দুই মাসেই তোমার কথা বলতে অজ্ঞান। আমরা তো দেখে আসছি, সারাজীবনে রেজাকেও বোধহয় বাবা এতোটা স্নেহ করেনাই যা তোমাকে দুই মাসেই করতেছে। বাসায় আত্মীয়স্বজন যেই আসে সুযোগ পাইলেই হইলো। নিজের জামাইয়ের সম্পর্কে গলা উঁচু করে প্রশংসা না করলে যেন তার খাওয়াই হজম হয়না। পরশুদিন বাবা কি বলছে জানো?” মুরাদ জানতে চাইবে কি, তার আগে নীরা নিজেই হি হি হাসতে থাকে। পরনের হিজাবটার ডানপাশ সামান্য স্থানচ্যুত হলে হাসি থামিয়ে মুরাদকে স্বতপ্রণোদিতভাবে নিজে নিজেই বলে “বাবা কথায় কথায় ডাইনিং টেবিলে বলতেছিলো তোমার প্রভাবেই নাকি আমি হিজাব পরা শুরু করছি। ভার্সিটিতে থাকবার সময়ে আমাকে কতো করে বলতো হিজাব পরতে। আমি শুনিইনাই। সেদিন খাইতে খাইতে মাকে বলতেছিলো “তোমার মেয়েকে আমি সারাজীবনেও বলে বলে যা করাইতে পারিনাই জামাই দুই মাসেই সেটা পারছে। অন্তত মেয়েটার এখন সুমতি তো হইলো। হিজাবটা পরা শুরু করছে নিয়মিত। জামাইয়ের পরিবারকে তো কম সময় হলো চিনিনা। বেশ কনজারভেটিভ। তাদের বাড়ির বউরা হিজাব পরেই সব জায়গায় চলাফেরা করে। শুরুতে যা ভয়ে ছিলাম মেয়েটাকে নিয়ে। এডজাস্ট করতে পারবে কিনা, জামাইটা আমার সমস্ত টেনশন দূর করে দিছে। সত্যিই, সংসারের জন্য আর কিছু করতে পারছি কি না পারছি জামাই একটা সিলেক্ট করছিলাম পারফেক্ট।” পিতার গলার স্বর অনুকরণ করতে সক্ষম না হলেও নীরার বাচনভঙ্গীতে মুরাদকে হাসতেই হয়। অনুকরণ যদি আকর্ষণীয় নাও হয় তবু নববিবাহিতা স্ত্রীকে খুশী রাখবার জন্য হলেও। সেই প্রচেষ্টা অসতর্ক পর্যায়ে চলে গেলে মুরাদের কন্ঠ নিঃসৃত ঠা ঠা হাসি অন্যান্য টেবিলের কাস্টমারদের মনোযোগ আকৃষ্ট করে। এবারে মুরাদের অপ্রস্তুত হবার পালা। তবে স্ত্রীর সাথে পাল্লা দিয়েই নিজের অস্বস্তি সে দ্রুতই কাটিয়ে উঠে বলে,



“বাপরে, শুনে তো মনে হইতেছে আমার বউটার চাইতেও শ্বশুর আমাকে বেশী ভালোবাসে।” মুরাদের কন্ঠে গড়পড়তা নতুন জামাইয়ের কৌতুক। নিয়মানুযায়ীই নীরা ততক্ষণে গলায় কপট অভিমানের সুর তুলে নিয়েছে।



“তাই না ? আমি তোমাকে ভালোবাসিনা না? তাইলে আর আমাকে নিয়ে এখানে খাইতে আসার দরকার ছিলোনা। শ্বশুরের সাথেই আসতা। সেও তো জামাইয়ের সাথে ডেটিঙে আসবার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।”



মেহেদির গন্ধও হাত থেকে এখনো চলে যায়নি এই বউয়ের এসব কথার কি জবাব দিতে পারে মুরাদ? এটা তো আর নিজেদের শোবার ঘর না যে জানালাটা খুলে দিয়ে হিম জোৎসনায় নিজেদের স্নাত হতে দিয়ে মুখের কথা দিয়েই ভালোবাসার মহাকাব্য শোনাবে। রেস্টুরেন্টের উজ্জ্বল কৃত্রিম আলো, সান্ধ্য-রাত্রীকালীন ফ্লোরোসেন্ট বাতিই হবে সম্ভবত। চারপাশের সব টেবিলে অচেনা, অজানা, আজকের আগে অদেখা সব মানুষ। খাবারের অর্ডার দিয়েছে মিনিট দশেক হলো, পৌঁছাতে পৌঁছাতে আরো সময় লাগবে। জয়িতার সাথে শেষ সাক্ষাতের কথা মনে পড়ে গেলে মুরাদ কেজো কথা বলতে বেশী আগ্রহবোধ করে। নিজের বিয়ের খবর জয়িতাকে যখন দিতে গিয়েছিলো টুকটাক নানা কথার ফাঁকে জয়িতা নিজের সাবেক প্রেমিককে ছোটখাটো নানা টিপস দিয়েছিলো।



“বিয়ে করতে যাইতেছো ভালো। কয়েকটা জিনিস মনে রাখবা। আমি তো তোমার আগে বিয়ে করে ফেলছি, সেই হিসাবে এই বিষয়ে আমি তোমার সিনিয়র।” জয়িতার দাঁতগুলো বরাবরের মতোই খোলামেলা হয়েছিলো।



মুরাদ স্কুলগামী ভদ্র লক্ষী ছেলের মতো টিপসগুলো শুনেছিলো। আফটার অল তার সাড়ে চার বছরের পুরনো প্রেমিকা ছিলো বলে কথা। জেনেশুনে তাকে আজেবাজে পরামর্শ দেবে কেন? তাছাড়া জয়িতা সেরকম মেয়েই না, এভারেজ বাঙ্গালী মেয়ের মতো যে সাবেক প্রেমিকের বিয়ের খবর শুনে জেলাস হয়ে উঠবে। হাইলী সফিসটিকেটেড ঘরের মেয়ে। আর এটাও তো সত্য জয়িতা সেদিন যেই টিপসগুলো দিয়েছিলো সেগুলা সময় সুযোগ বুঝে এপ্লাই করে এ যাবত মুরাদের ভালো বৈ খারাপ কিছু হয়নি। প্রাক্তন প্রেমিকার কাছ থেকে শিখে নেওয়া টিপসগুলোর একটা প্রয়োগ করবার ইচ্ছাতে তাই স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মুরাদ প্রশ্ন করে “আচ্ছা, ভালো কথা আব্বাকে সেই কথাটা বলছিলা?”



“কোন কথাটা?” নিশ্চয়ই ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত কোন কথা হবে। এমন কতো কথাই তো মুরাদ তাকে জানায় নিজের শ্বশুরকে ইনফর্ম করবার জন্য, তার কয়টা সে মনে করে রাখবে?



“আরে, তুমিও না। এবারে মুরাদের কপট বিরক্তি দেখাবার পালা আসলে সে নিজেকে বিরত রাখেনা। তোমাকে বলছিলাম না শিপইয়ার্ডের ব্যাপারটা আব্বাকে জানাতে? আমি অফিস থেকে একেবারে পাক্কা খবর পেয়েছি। আগামী মাসেই অর্ডারটা দেশে আসতেছে শিউর। আব্বাকে জলদি জানাইয়ো। আব্বা নিজের বুঝে প্রয়োজন মতো লোকদের ধরতে পারলেই অর্ডারটা তার নিশ্চিত। বাদবাকী যেসব ফর্মালিটিজ সেগুলা সব আমিই সামলাইতে পারবো।” শ্বশুরের আসন্ন বিজনেস ডিল কনফার্মড করবার বন্দোবস্তের অগ্রিম আনন্দে মুরাদ অগ্রিম উচ্ছসিত হলে তার ডানদিকের চোয়ালের ভেতরে পোকায় খাওয়া দাঁতটি সদর্পে প্রকাশিত হয়।



নীরা প্রত্যুত্তর দেবে তার আগেই আনইম্প্রেসিভ কন্ঠে “স্যার, আপনাদের অর্ডার” বাক্যমালা শুনতে পেলে উদরপূর্তি অবস্থাতেও দুজনের সুপ্ত থাকা ক্ষিধা পুনরায় জাগ্রত হয়। ফ্রাইড রাইসের সাথে চিলি চিকেন মেন্যু বলে কথা, এড়িয়ে যায় কি করে? কিন্তু দুজনে খাওয়া শুরু করবে কি শুরুতেই ছন্দপতন ঘটে। নীরাকে বিমূঢ় করে অতি পরিচিত একটি কন্ঠে আওয়াজ কানে ভেসে আসে “কি খবর নীরা? অনেকদিন পর। দেখা হয়ে যাবে ভাবতেই পারিনাই।”



সদ্যই খেতে শুরু করা ফ্রাইড রাইস উইথ চিলি চিকেন পেটের ভেতরে প্রবেশ করে নাকি ফ্রাইড রাইস উইথ চিলি চিকেনের ভেতরে খোদ নিজের সমগ্র শরীরই প্রবেশ করতে চায় যায় তার ফাঁরাক করবার মগজের শক্তিও নীরার অবশিষ্ট থাকেনা। বাইরে বেরুলে পরিচিত মানুষজনের সাথে দেখা হবেই। কার না হয়? তাই বলে, ‘ধুর বাল’ শব্দযুগল মুখ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিঃসৃত হতে আকুলিবিকুলি করে। কিন্তু ‘ভদ্রলোকের’ পরিবারে জন্ম, চাইলেই কি আর সব মনের কথা আত্মপ্রকাশ করতে পারে? তাই চোখেমুখে ইনস্ট্যান্ট হাসি ফুটিয়ে “আরে রেহান, তুমি? মাই গড, তুমি এতো মোটা হইছো। তোমাকে চেনাই যাইতেছেনা।” বলা ব্যতীত নীরা আর কিছু বলতে পারেনা। মুরাদের চোখে প্রত্যাশিত কৌতূহল, তাকে আর বাড়তে না দেওয়ার জন্য নীরারই ইনিশিয়েটিভ নিতে হয়। “ও হলো রেহান, আমার ভার্সিটির ক্লাসমেট। ভার্সিটিতে পড়ার সময়ে আমি আবৃত্তির সংগঠণ করতাম বলছিলাম না তোমাকে? রেহান সেখানেও আমার সাথে ছিলো।” এবারে রেহানের সাথে নিজের স্বামীকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পালা। কিন্তু তার আগেই নীরাকে রেহানের থামিয়ে দেওয়া “আরে এরকম ফর্মাল ইন্ট্রোডাকশনের কি দরকার আছে? দেখেই তো বুঝতেছি” রেহান মুখে হাসি ফুটিয়েই তার বাক্য সমাপ্ত করবার ইঙ্গিত দেয়। মুরাদের কৌতূহল অন্য কোন দিকে ডাইভার্টেড হয়েছে কিনা নীরা বুঝতে পারেনা। ততক্ষণে রেহান তাদের টেবিল থেকে দূরে সরে গিয়ে বেশ পিছনের একটা টেবিলে গিয়ে একলা বসেছে। কিন্তু নীরার মাথা তো আর এই মুহূর্তে একই দিকে কেন্দ্রীভূত নেই। বিগত চার বছরের পছন্দের-অপছন্দের যাবতীয় সব স্মৃতি একসাথে এসে ফ্ল্যাশব্যাক ফ্ল্যাশব্যাক খেলা খেলতে শুরু করলে ফ্রাইড রাইস খেতে খেতে নীরা বিষম খায়। “আরে কি হইলো তোমার? নাও পানি নাও।” মুরাদ তাৎক্ষণিক পানির গ্লাস এগিয়ে দেয়। কিন্তু চোখের সেই কৌতূহলী ছায়ার দিকে তাকিয়ে পানিতে কি গলা ভেজে? নীরাকে তাই আবারো ইনিশিয়েটিভ নিতে হয়। “রেহানকে দেখলানা? ভার্সিটিতে থাকতে কি যে হ্যাংলা-পাতলা ছিলো, আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে তার নাম দিয়েছিলাম ‘তালপাতার সিপাই।’ নামটা বললেই কি যে ক্ষেপে যাইতো।” মুরাদ হাসতে গিয়েও হাসেনা। নীরাকে এতো নার্ভাস লাগে কি কারণে? তাহলে কি সে রেহানকে যেভাবে তার কাছে ইন্ট্রোডিউস করেছে বিষয়টা তার থেকে আলাদা? হলেও যে মুরাদের কিছু যায় আসেনা এটা নীরা, দুই মাস হলো তার স্ত্রী হয়েছে বুঝতে পারলোনা? মুরাদ ভেবেছিলো এফ্লুয়েন্ট পরিবারে বড় হয়েছে, এসব বিষয়ে ড্যাম স্মার্ট হবে। কিন্তু কোথায় কি? হঠাৎ করেই কি রকম অপ্রতিভ দেখাচ্ছে তার বউটাকে। সিমপ্যাথিটিক হবার সুযোগ নেই এখন, তেমন কিছু করলেই বেচারী বুঝতে পেরে আরো ছোট হয়ে যাবে। নাইলে জয়িতার সাথে তার প্রেমের ইতিবৃত্ত কি মুরাদ তাকে শোনাতে পারতোনা? আলবৎ পারতো। তার বন্ধুমহলে লিভ ইন তো লিভ ইন ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে এক কি দুই রাত্রির জন্য পার্টনার অদল-বদল করাটাও জলভাত ছিলো। এসব কথা কোনদিন শুনলে তো মনে হয় নীরা গলায় দঁড়ি দেবে। আহ, কি একটা তীব্র যৌবনময় যৌবনই না মুরাদ পার করেছে একটা সময়। প্রতি রবিবারে সন্ধ্যা সাতটা হলেই সব বন্ধুরা মিলে আশিকের ফ্ল্যাটে চলে যেতো। হুইস্কী, স্কচ, কেরু, জিন, ভদকা, রাম, সাথে তিন প্যাকেট চানাচুর। যেন মেশিনে কেটে রাখা হয়েছে এমন নিঁখুত করে কাটা পেঁয়াজ। জুয়া তো ডালভাত ব্যাপার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিলো ঘুরেফিরে সেই পার্টনার অদল বদল। লটারী করো, তারপরে নিজের প্রেমিকা বাদে যার ভাগ্যে যেই বন্ধুপ্রেমিকার নাম উঠে সেদিন তার সাথে বাকি রাতে, আহ। ফ্রাইড রাইস, চিকেন আর সফট ড্রিঙ্কসের বাইরে আরো এক ধরণের খাবারের রোমন্থনে মুরাদের জিভে পানি আসে। মুরাদের ভাগ্যে সবচেয়ে বেশীবার জুটেছিলো রবির প্রেমিকা নাবিলা। উফ, সেই ফিগার, সেই চাহনী। লটারীতে মুরাদের শয্যাসঙ্গিনী হবার সুযোগ পেলেই খিলখিল করে হাসি। আর জয়িতাকে সবচেয়ে বেশী পেয়েছিলো রাতুল। একেকবার করে জয়িতার সাথে রাত কাটাবার পরে হারামজাদাটা যখন মুরাদের কাছে এসে তার প্রতি নিজের ঈর্ষার কথা ব্যক্ত করতো মুরাদের আনন্দ ডাবল হয়ে যেতো। যেন জয়িতার ৩৪- ২৪ – ৩২ ফিগারটার আসল কৃতিত্বের হকদারও মুরাদ নিজেই। এই দুই মাসে কতোবার যে মুরাদ নীরাকে স্মরণীয় সেই সময়গুলোর কথা জানাতে চেয়েছে। কিন্তু সেই সুযোগ আর হলো কই? তার উপরে আজকে ভার্সিটির পুরনো বন্ধুর সাথে তার পরিচয় করাবার পর থেকেই নীরাকে সেই যে অফ দেখছে তারপরে তো আর, নাহ নীরার সাথে অতীত স্মৃতিচারণের ভাগ্য অন্তত তার নেই। কি আর করা যাবে? সবার তো আর সবকিছু মেলেনা।



খাওয়াদাওয়া সেরে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতেই ফুরফুরে বাতাসের সাথে উজ্জ্বল চাঁদের আলো তাদের অভ্যর্থনা জানালে কোথায় রেহান তো কোথায় জয়িতা, দুজনেই প্রাণবন্ত বাতাসে নীরা আর মুরাদের থেকে বিচ্ছেদ নিয়ে অতীতেই ফিরে যায়। গাড়িটা চালাতে চালাতে মুরাদ অনুভব করে এবারে বাতাসটা আরো বেশী শরীরকে আন্দোলিত করছে। দুজনের কাঁচই খোলা। চাঁদের আলোর কিছু অংশ গাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলে বাস্তবেও মুরাদ মূর্ছনার সঙ্গীত শোনে। ট্রাফিক সিগনালের জন্য সবার মতো তাদের গাড়িও স্থানু হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। মুরাদের কি থেকে কি মনে হয় সেই বলতে পারে। পর্যাপ্ত কৌতুক মিশিয়ে হঠাৎ নীরাকে “আচ্ছা , রেহানের সাথে আমার পরিচয় করানোর পর থেকেই তোমারে দেখতেছি” মুরাদ তার বাক্য সমাপ্ত করতে পারেনা। নীরা বিরক্তিসূচক মাথা নেড়ে “তোমারে সেটা কে বললো? নাকি নিজেই কিছু একটা ভেবে নিছো? তোমারে নিয়ে যদি পারা যায়।” নীরা স্বামীর কৌতূহলকে উড়িয়ে দেওয়ার প্রাণপণে চেষ্টা করে। কিন্তু সেটা করলে কি হবে রেহানের মুখাবয়ব থেকে তার সহসা মুক্তি মেলেনা। শেষবার আবরারকে এতো করে বলেছিলো কনডম ইউজ করতে। কিন্তু শুনলো কই? বলছিলো কি “ ধুর, সবসময়েই তো ইউজ করি। আজকে না হয় একটু এডভেঞ্চার করলাম। এতোদিন তোমার কথা শুনে আসছি, আজকে তুমি আমার কথা শুনবা।” নীরা আবরারের আবদার রেখেছিলো। ফলাফল? তিন মাসের মধ্যেই প্রেগনেন্সি টেস্ট পজিটিভ। আবরারটা কি কাওয়ার্ড, কি কাওয়ার্ড। নীরার এবোরশন করাতে সাথে নিজেই আসলোনা। রেহানকে সঙ্গে করে পাঠিয়ে দিলো। এবোরশন শেষ করে নীরাকে বাড়ি ফিরে দিয়ে আসতে আসতে হঠাৎই সিএনজির ভেতরে নীরার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিয়ে .........সমগ্র শরীর তেতো হয়ে আসছে অনুভব করলে নীরা বাস্তবে ফিরে আসতে প্রাণপণ চেষ্টা করতে নীরবে গাড়ি চালাতে থাকা মুরাদের কাঁধে আলতো করে ডান হাত রাখে। তবে অব্যবহৃত কিছু চকোলেট ফ্লেভারের কনডম, আবরারের কাওয়ার্ডলীনেস আর রেহানের চেপে বসা ঠোঁটজোড়া ক্রমাগত নীরার মস্তিষ্কে অশ্রুত হুমকি দিতে থাকলে স্বামীর কাঁধ থেকে সরয়ে এসে নীরার হাত হিজাবটা ঠিক ঠিক দু পাশে সেট করে নেয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.