নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভারসাম্য মাত্রই কৃতিত্ব নয় ।

আল - বিরুনী প্রমিথ

আল - বিরুনী প্রমিথ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কড়ই গাছ

১২ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:২৬

আধো আলোয় মনোয়ারার মুখে কৌতুকের পরিপূর্ণ হাসি প্রস্ফুটিত হয়, “শুনছিস নাকি রে আতাউল? রত্নার বাপকে নাকি সকালে পুলিশে ধরছে। এখন থানায় আছে। রত্নার বড় ভাই শুনেই থানায় গেছিলো। কোন লাভ হয়নাই।”

আতাউলের শরীরের কোথাও কোন প্রতিক্রিয়া হয়না। হলেও মনোয়ারার পক্ষে তা ধরতে পারা অসম্ভব। জন্মের পর থেকেই তো দেখে আসছে। পাড়াপ্রতিবেশীর বিপদ-আপদের খবর শুনলেই মহিলার চোখেমুখে কোন অজানা কূপ থেকে যেন আনন্দ ঠিকরে ঠিকরে বেরোয়। আজ পর্যন্ত ছেলেদের কাছে কম কথা শুনেছে এই নিয়ে? কোন লাভ হয়নি, শোধরায়নি। তার ভাই রেজাউল বিয়ের আগ পর্যন্তও নিজের মাকে কম কোথা শোনায়নি এই নিয়ে।

“মা , তোমার মন এত্তো ছোট ক্যান? মানুষের খারাপ কিছু হইলে তোমার ভালো হয় কিসে বুঝতে পারলাম না। ঘরে টাকাপয়সা বেশী আসে? মাগনায় চাল পাও? হয়না তো এর কিছুই, পেটভর্তি হিংসা নিয়া খালি তোমারেই ঘুমাই্তে দেখলাম।”

মনোয়ারা ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী ছিলেন না কোনকালেই। হিংসা, কিসের হিংসা? আমি নিজে কোনকালে ভালো ছিলাম যে অন্যের ভালো দেইখা সুখ হবে? সুখ কি গাছে ধরে? তোদের বাপ সারাটাজীবন আমারে জ্বালাইয়া মারলো, তাও সুখ কমেনাই। অসুখটা বাড়লো কি, আমারে একলা রেখে মরে গেলো। টাকাপয়সা কামাইতে পারেনাই দুই পয়সাও।” মনোয়ারার রিপিটেড আহাজারী শুরু হয়ে যেতে দেরী হতোনা। বিষয়টা অনেকটা রুটিনমাফিকই ছিলো একসময়।

সাংসারিক এই দর্শনগত জটিলতা কোনকালেই আতাউলকে টানেনি। এখন তো আরো টানেনা। ঘরে এসে নিজের টেবিল গোছাতে শুরু করলে লক্ষ্য করে অপ্রয়োজনীয় বহু কিছু জন্মেছে টেবিলে। পৃষ্ঠা পূর্ণ হয়ে যাওয়া এ৪ সাইজের খাতা, কালি শেষ হয়ে যাওয়া কলমের কামড়ে চ্যাপ্টা করে ফেলা মুখ, ধুলা জমে জমে অস্পষ্ট হয়ে যাওয়া পাতায় এলোমেলো পঙতিতে ভর্তি অসমাপ্ত কবিতা। পর্দাটাও অনেকদিন হলো ধোয়া হয়নি। কালচে কালচে দেখাচ্ছে। চোখ জানালার সীমানা অতিক্রম করলে নারিকেল গাছের পাতায় পাতায় বৃষ্টির স্নিগ্ধ ফোঁটা দৃশ্যমান হয়। প্রায় একুশদিন পরে চলমান এই জৈষ্ঠ্যে শহরের নীল আকাশ নিজের মুখে পানির অবারিত ধারা অনুভব করলো। মগ্ন অবস্থাতেই আতাউলের কানে তার ভাবী নাসরীনের হাইপিচের কন্ঠ ভেসে আসে “ আতাউল, একটু শুইনা যাও।” আতাউল ভাবীর ডাকে সাড়া দিতে বাস্তবে ফিরে আসে। তার বড় ভাইয়ের বিয়ের পর থেকেই সংসারের যাবতীয় ভার ভাবী তুলে নিয়েছে। পানের বাটা হাতে নিয়ে পান চাঁছা ছাড়া গত ছয় মাসে তার মা মনোয়ারার কাজের ভার বলতে গেলে অনেকটাই কমে গেছে। বুড়ি বোধহয় সেই কারণেই আরো বেশী পরনিন্দায় মুখর।

আতাউল কাছাকাছি আসলে নাসরীনের নৈর্ব্যক্তিক স্বরকে কঠোর আদেশ বলে মনে হয় আতাউলের। “বাইর হইতেছো না? তাইলে কষ্ট কইরা একটু মকবুল মিস্ত্রীর সাথে দেখা কইরা তারে আসতে বইলো। দশদিন হইলো বাথরুমের কল নষ্ট। তোমার ভাইরে দুইবার বলছিলাম। মানুষটা সারাদিন ব্যবসার চিন্তায় পেরেশান থাকে, ভুলে গেছে। তুমি একটু মকবুল মিস্ত্রীরে আইসা ঠিক করে দিতে বইলো।”

আতাউল মুখ থেকে কোন শব্দ বের করেনা। কিন্তু এভাবে কি আর নীরবতার চারাগাছ জন্মে? হৃৎপিন্ড ঠিকই শুনতে পায় “এহ, ঢঙের আর জায়গা পায়না বেটি। স্বামীসোহাগে কি গদগদ, ব্যবসার চিন্তায় পেরেশান। আতাউল যেন জানেইনা তার ভাই কত্ত পেরেশান!!!!” গেলো মাসে ঘরে নতুন ফ্যান আসছে তিনটা, তারও দুই মাস আগে নিজেদের শোবার ঘরে সাইঁত্রিশ ইঞ্চি কালার টিভি আতাউলের আর তার মায়ের চোখের সামনে দিয়ে ঢুকাইলো। পুরনো টিভিটা এখনো ভালোই চলে। বড় ভাইকে জিজ্ঞেস করলে দীর্ঘদিনের জমে যাওয়া তেল মুখে নিয়ে নিজের মাকে বলে কিনা “ এখন কালার টিভির টাইম, ঘরে একটা না থাকলে ইজ্জত থাকে নাকি? তুমি আর আতাউল এই টিভিতে দেইখো, আমি বসার ঘরে সেট কইরা দিবোনে।” তার মা আর আতাউল তো আতাউল সারা পাড়াই জানে কোত্থেকে কালার টিভি আসে, কেমনে আসে। এমপি রোমেলের সাথে দোস্তি করে করে সগীর সাহেবের হকের জমিটা নিজের নামে লিখিয়েই এইসব জিনিসপত্র ঘরে ঢুকছে সেটা কি গোটা পাড়ার জানতে বাকি আছে? তার মায়ের ঘরে নতুন সিলিং ফ্যান ঢুকবার পর থেকে তার মা জীবনে প্রথমবারের মতো হা মুখ করে বেঘোরে ঘুমায় আর বড় ছেলের কীর্তিকলাপে কুলুপ এঁটে বসে থাকে। আতাউলের জিভ কথাগুলো বুলেটের বেগে বলার জন্য উচাটন হয়। তবে এখনো ছাত্রমানুষ কিনা, এখনো ভাইয়ের পয়সায় খাচ্ছে, ঘুমাচ্ছে, পড়াশোনা করছে, কলেজে পড়া ছাত্রী কেয়ার বাসায় গিয়ে পড়ানোর ফাঁকে আলো কি আঁধার দিব্যি তার পায়ে নিজের গোবদা গোবদা পা ঘষিয়ে টু ইন ওয়ান করে আসছে। তাই স্বীয় অক্ষমতা গোপন করবার প্রয়োজোনীয়তা থেকে উৎসরিত উদারতা বশত কথাগুলো সে আর ভাবীকে জানায়না। থুথুর মতো নিজের মুখেই কথাগুলো গিলিয়ে নেয়। মাথা নেড়ে ইতিবাচক সায় দিয়ে বেরিয়ে যায়।

রাস্তায় বেরুতে বেরুতে কতক্ষণ আগেই জৈষ্ঠ্য মাসে একুশদিন পর আকাশ যে পানির অবারিত ধারার মুখ দেখলো বলে আপ্লুত হয়েছিলো তার রেশও থাকেনা। একটু পা টিপে টিপে সামনের রাস্তার কর্দমাক্ত অংশটুকু হাঁটবে ধরেছে সপাত করে গর্তের মধ্যে জমে থাকা পানিকে স্থানচ্যুত করে একটা প্রাইভেট কার এসে আতাউলের পাজামার গোড়ালী পর্যন্ত নোংরা পানিতে সিক্ত করলো। একেবারে সমগ্র শরীর পর্যন্ত সেই কাঁদা পৌঁছে যেতে পারতো। তাও ভালো যে সে পর্যন্ত গেলোনা। যার খোঁজে এই প্যাক-কাঁদা পার হওয়া সেই মকবুল মিস্ত্রীকে কাছাকাছিই পাওয়া গেলো। তাদের বাসায় আসবার কথাটুকু বলে নিতে আতাউলের বেশী সময় লাগলোনা। তারপরে হাতে আর বিশেষ কোন কাজ না থাকলে ভাবলো রমনা পার্কে যাবে। কাজ না থাকলে আতাউল প্রায়ই সেখানে যায়। নিবিষ্টমনে গাছগাছালি দেখে। মানুষজনের চলাফেরা দেখে। সবচেয়ে বেশী যায় দুপুরবেলাতে। সেই সময়ে যারাই প্রেম করতে আসে তাদেরকে দেখার মজাই আলাদা। তারা কতো রকমের যে কান্ড করে। আশেপাশের লোকজনদের থোড়াই কেয়ার করে খুল্লামখুল্লা পীরিত-ভালোবাসা করা তো আছেই, ঝগড়াগুলাও জবরদস্ত হয়। আতাউল একবার দেখেছিলো এক প্রেমিকে আক্ষরিক অর্থেই ক্ষমা চাইতে গিয়ে প্রেমিকার পায়ে ধরে ফেলেছিলো। বিব্রত হবে কি দৃশ্যটা দেখে প্রেমিকার সে কি খিলখিল হাসি!!!! রমনার এক বেঞ্চিতে বসে সে আর কেয়াও এরকম প্রেম করবে কতোবার যে কল্পনায় এসেছে, কিন্তু কোথায় আতাউলের কল্পনা আর কোথায় বাস্তব। বাড়িতে ইলেকট্রিসিটি চলে গেলো, জেনারেটর চালু হতে হতেও কমপক্ষে মিনিট দুয়েক। এই সময়ে পায়ে ঘষা দিলেও যদি মূখোমুখি প্রান্ত থেকে কেউ দেখে ফেলবে সেই দুশ্চিন্তায় কাতর ধ্বনি ভেসে আসে তাহলে কেমনে কি? রমনায় বসে প্রেম-ভালোবাসার দু চার কথা তো দু চার কথা একসাথে বাদাম খাচ্ছে সেই দৃশ্যও তো কষ্টকল্পনায় পরিণত হয়।

হাঁটতে হাঁটতে আতাউলের চোখ চারপাশে দেখে নিলে মোসলেম মিয়ার দোকানের পাশ ঘেঁষে বিল্লাহ ভাইকে দেখতে পায়। প্রতিবেশী রত্নার বড় ভাই। মা তো সকালেই বলছিলো যে তার আধাপাগলা বাপটাকে নাকি আজকে সকালে পুলিশে ধরেছে। তাদের বাপ জলিল হোসেন লোকটা আসলেই ওয়ান পিস একটা মাল। একসময় নাকি রাজনীতি করতো। সেই রাজনৈতিক সচেতনতার ছাপ এখনো লোকটার মনে রয়ে গেছে। প্রায়ই সারা পাড়া মাত করে রাজনৈতিক অত্যাচার-অনাচারের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত হয়ে কিছু না কিছু ডাক দেয়। পাড়ার বাচ্চাছেলেপুলে ছাড়া সেই ডাকে আর সাড়া দেবেটা কে? কেউ দেয়ও না। আবার লোকটাকে পাগলও বলা যায়না কোনভাবেই। পাড়ার প্রত্যেকের নামধাম, কে কি করে সব মুখস্থ লোকটার। এই মুহূর্তে এড়িয়ে যাবে ভাবলেও শেষ পর্যন্ত আতাউল এড়াতে পারেনা। বিল্লাহ ভাইয়ের কাছে সে এগিয়ে যায়।

“বিল্লাহ ভাই, শুনলাম চাচারে নাকি” আতাউল তার কথা শেষ করতে পারেনা।

“হ, ঠিকই শুনছোস। নতুন তো আর কাহিনী না। আব্বারে প্রেসক্লাবের সামনে থেইকা পুলিশে ধইরা নিয়া গেছে।” বিল্লাহর গলায় বটগাছের প্রাচীন ক্লান্তির সুর স্পষ্ট।

আতাউল কি বলবে ভেবে পায়না। বিল্লাহ ভাই ঠিকই তো বলেছে। এই ঘটনা তো আর নতুন কিছু না। তার করনীয় কথনের দোদুল্যমনতার হাত থেকে তাকে বিল্লাহই নিষ্কৃতি দেয়। আতাউলকে তার বলা কথাগুলো স্বগতোক্তির মতো শোনায় “ চিন্তা করা যায়? এইবারে আব্বারে ধরছে কড়ই গাছের উপর থেইকা, নামাইয়া আইনা পুলিশে ডাইরেক্ট হাজতে পুরছে। আমি সকালে গেছিলাম, কইলো যে ছাড়বোনা সহজে।”

আতাউল তার মা মনোয়ারার মতোই হেসে ফেলতে যাচ্ছিলো। তবে প্রখর ভদ্রতাবোধ তার সেই হাসিকে প্রতিহত করতে পারলে সে বোকার মতো প্রশ্ন করে “চাচা গাছে উঠছিলো ক্যান?”

“আর কি, এই বোমাবাজি-খুনখারাপি, জ্বালানি-পুড়ানির বিরুদ্ধে একলা কথা কইতে হইবোনা বুড়ার?” বিল্লাহর গলায় পিতার প্রতি ক্ষেদ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে আতাউলের কাছে। “সকালে তাই বুড়ায় কড়ই গাছের উপরে উইঠা গেছিলো প্রতিবাদ করতে। পুলিশে দেখছে, দেখার পরেই এরেস্ট কইরা নিয়া গেছে থানায়। আমি থানায় গেছি কথা কইতে। আমারে মুখের উপরে বইলা দিলো সহজে ছাড়বোনা।”

আতাউলের এই খবরে কি আসে যায়? জলিল চাচা তার আত্মীয়স্বজন তো কেউ না। তবে তার ছেলের কাছে তো আর এই মনোভাব প্রকাশিত হতে দেওয়া যায়না। সে যথেষ্ট উদ্বিগ্নতা গলায় আনার চেষ্টা করে বলে “ ইশ, চাচারে আগে তো আর কখনো ধরেনাই পুলিশে। শেষে বুড়া বয়সে আইসা ধরলো, কোন দেশে যে আছি।” তাৎক্ষণিক বানিয়ে নেওয়া দুশ্চিন্তা কি আর অতো সহজে গলায় ধরা দেয়? ধরা দিলে কথাগুলো বলেই জান প্রায় বেরিয়ে গেছে আতাউলের এমন উপলব্ধি হবে কেন?

পিতার পাগলামীতে বিরক্ত বিল্লাহ সেসব কথার জবাবে নিজে থেকে কিছু বলার প্রয়োজনবোধ না করলে আতাউল স্বস্তি নিয়ে তার কাছ থেকে বিদায় নেয়। তবে এই কথোপকথনের মধ্যেই আতাউলের মনে রমনা পার্কে প্রেমরত যুগলদের দেখবার পরিবর্তে খোদ নিজের প্রেম করবার ইচ্ছা জাগ্রত হলে সে কেয়ার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তিনদিন আগে শেষ পড়াতে গিয়েছিলো। আতাউলের পা জোড়া এখন সম্ভবত তাই একটু বেশীই চুলকাচ্ছে।

ততোমধ্যে শহরের আকাশ তো আকাশ রাস্তা পর্যন্ত পরিষ্কার হতে শুরু করেছে। কেয়ার বাড়ির সামনের রাস্তাটায় সারাবছরই খোঁড়াখুড়ি চলে। টেন্ডারবাজির জন্য এই রাস্তা সংশ্লিষ্টদের কি কারণে এতোটা প্রিয় কে জানে। তবে পথযাত্রীরা সেই পথে অনেক বেশীই সচেতনভাবে চলে। মিয়াবাড়ীর গলিটা পার হলে আর সামান্য একটুকু পথ। মিয়াবাড়ী পর্যন্ত আসতে রিকশা না নিয়ে উপায় নেই। আতাউল রিকশা করে মিয়াবাড়ী তো মিয়াবাড়ী প্রায় কেয়ার বাড়ীর সামনেই এসে থামে। ভাড়াটা মিটিয়ে সামনে এগোলে পা জোড়ার চুলকানীকে সংযত রাখতে রাখতে গেটে কড়া নাড়ে। কোন সাড়া পাওয়া যায়না।

আতাউলের অপেক্ষার তর আজকে আর সয়না। প্রতিবারই এই একই জ্বালা। গেটে কড়া নাড়লে যেন আধাঘন্টা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা। সময় কাটাতে নিজের পায়ের নখের দিকে তাকাতে তাকাতে আচমকা গেট খুলে যাবার প্রবল শব্দে আতাউলের কানে তালা লেগে যাবার দশা।

“কাকে চাই?” তাকে আগেও দেখেছে তবু কেয়ার চাচা এই প্রশ্ন কেন করলো আতাউলের মাথায় আসতে না আসতেই মুখের পরিবর্তে এবারে চোখজোড়াই কৌতূহলী প্রশ্ন রাখলে আতাউল থতমত খেয়ে বলে “আমি কেয়ার প্রাইভেট মাস্টার, তাকে”............

“ও , আপনি তাইলে জানেন না? কেয়ার বাবায় তো মেয়ের বিয়ে ঠিক করছে। দশদিন পরে বিয়ে, মেয়ে আজকে একটু বাইরে গেছে জামাইয়ের সাথে। আপনারা এই সময়ের ছেলেপেলে, বিয়ের আগে দুইজনে একটু দেখাসাক্ষাত করবার বিষয়, বুঝেনই তো।” বলে কেয়ার চাচা নিমেষেই তাকে নো বডি করে দিলে আতাউলের পায়ের চুলকানী হাওয়া।

বাড়ি ফিরে আসতে আসতেই সামনে বসার ঘরে নতুন লোকজনের স্বতঃস্ফূর্ত আনাগোনা দেখে আতাউল কিছু বুঝে উঠতে পারেনা। তার বড় ভাই আর ভাবীর প্রাণখোলা হাসি কৌতূহল আরো উস্কে দিলে মনোয়ায়ার দিকে সে একটাবার তাকায়। মায়ের মুখে সেই মুখে কুলুপ এঁটে থাকা হাসি। দুইটা নতুন সিলিং ফ্যান, কালার টিভির পর এমপি রোমেলের সাথে দোস্তির সর্বশেষ উপঢৌকন কিছু একটা ঘরে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। সকালে ভাবীকে বলতে ইচ্ছা করা কথাগুলো পুনরায় বলবার ইচ্ছা জাগ্রত হতে হতেই আতাউল নিজের ঘরে যায়। জানালাটা খুলে দিলে পরিষ্কার আকাশ আর সামনের নারিকেল গাছের পাতায় বৃষ্টির স্নিগ্ধ ফোঁটাকে একটা আস্ত কড়ই গাছ প্রতিস্থাপিত করলে নিজের চোখ আতাউলের ঝাপসা ঝাপসা ঠেকে ।

বিঃ দ্রঃ উৎসর্গঃ জালাল উদ্দীন মজুমদার । পেট্রোল বোমার আগুনে পোড়া মানুষের চিৎকার, ব্যবসায়ীদের চিৎকার, ক্রসফায়ারে মৃতদের স্বজনের চিৎকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে কড়ই গাছে উঠে প্রতিবাদ করলে গত সোমবার প্রেসক্লাবে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে ।


http://www.shomoynews.net/cat_view.php?news_id=3936

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:১৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাল| বেশি ভাল না

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.