নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভারসাম্য মাত্রই কৃতিত্ব নয় ।

আল - বিরুনী প্রমিথ

আল - বিরুনী প্রমিথ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এপিটাফ

০৪ ঠা মে, ২০১৫ ভোর ৬:১৩

কিছুক্ষণ আগেও যেই মাখনের মতো গলে যাওয়া বাতাসকে অনুভব করা যাচ্ছিলো তা অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। বেশ চমৎকার হাওয়ায় পথ চলা যাচ্ছিলো। মনে হয়েছিলো কিছু সময় পরেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামবে। কিন্তু কোথায় কি? শামীম এরকম আবহাওয়ার কোন তল খুঁজে পায়না। শরীরটা দিব্যি ফুরফুরে লাগছিলো হাঁটবার সময়ে, কিন্তু বেরসিক গুমোট বাতাসে তার শার্টের পেছনদিকটা ঘামে একাকার। সামনের দিকের দুই দুইটা বোতাম উন্মুক্ত , বুকের সুবিশাল লোমরাজির উপরের অংশ স্পষ্ট। তবু যেন গুম মেরে থাকা বাতাস সেই উন্মুক্ত স্থান বরাবর তলপেট পর্যন্ত প্রবাহিত হতে বদ্ধপরিকর।

“মামা চা খাইবেন?” টঙের দোকান থেকে যার কন্ঠস্বর শামীমের কানে ভেসে আসে তাকে ভালো করে পরখ করলে ভাঙ্গা চোয়াল, সাদা-নীল চেক লুঙ্গি, যত্নে করে সামলে রাখা দাঁড়ি এবং মাথার চুলের বিষয়ে ততোধিকই উদাসীন একজন মধ্যবয়স্ক হোমোসেপিয়ান্সের অবয়ব দেখা যায়। বুড়া প্রস্তাব কিন্তু দিয়েছে ভালোই। যেই গরম তাতে গলা ভেজানোর প্রস্তাবকে শামীম কি যুক্তিতে না বলে? তাছাড়া শামসুদ্দীনের সাথে বারো মিনিট আগে কথা হয়েছে। হালকা স্বরে ক্যাজুয়াল গলায় বলে কিনা সবেমাত্র কাজী আলাউদ্দীন রোড থেকে রওনা দিয়েছে। শালা নবাবের বেটা, যেন উড়ে উড়ে কাজী আলাউদ্দীনের ব্যস্ত রাস্তা থেকে কাটাবনে নিমেষের মধ্যে চলে আসবে। অবশ্য শামীমেরই বা কি আসে যায়? এডভান্সে ১০০০ টাকা পে করেছিলো জিনিসটার জন্য। ৫ কেজি ওজনের জিনিসটা তার হাতে শামসুদ্দীন না কলিমুদ্দীন যেই নামই হোক সেই লোকটা তুলে দিলে বাকি ১০০০ পাবে। একেবারে সহজ হিসাব। তবে শামীম তো আর মানুষজনের সাথে খোঁজখবর না করে যাকে তাকে এই ধরণের কাজের দায়িত্ব দিতে পারেনা। অনেকের সাথেই কথা বলে শুনেছে যে লোকটা নাকি আসলেই কাজ ভালো জানে। ছোটখাটো এক ধরণের শিল্পী মানুষ। তা শামীমের অতো শিল্প দিয়ে কি হবে? এসব সূক্ষ্ণ জিনিস তার মাথাতে কোনকালেই তেমন ঢোকেনি। না সে কষ্মিনকালে তা নিয়ে চিন্তিত ছিলো। তার ভাবনা একেবারে সাফ। জিনিসটা দূর থেকে দেখতে পরিষ্কার আর সুন্দর হলেই চলবে।

শামসুদ্দীনকে নিয়ে এতো চিন্তা করে কি কাজ? তার চাইতে যেই টঙের দোকানটায় বসেছে তার দিকে আপাতত তাকিয়ে সময়টা পার করা যাক। চেয়ারগুলোর বিশেষত্ব বলতে একটার ডান দিকের পায়ায় ঘূণ ধরে ধরে দুর্বল হয়ে গেছে। সেই দিকটা শক্ত করে গর্তের সাথে আটকানো। চা বানাবার জায়গাটার আশেপাশে হরেক রকমের ব্র্যান্ডের সিগারেট। গোল্ডলিফ থেকে পলমল কোনটাই বাদ নেই। আরেকটা চেয়ারের নিচে হালকা সাদা রঙের এক বিড়াল নিজের মনে ঘোরাঘুরি করে। সেই চেয়ারের উপরে আটোসাঁটো পোশাকের এক যুবতী আর তার প্রেমিক বসে বসে মৃদুস্বরে নিজের মধ্যে কথা বলছে। ধরণটা এমনই যেন শামীমের কানে তাদের বাক্যমালা পৌঁছালে খুব বড় কোন দুর্বল সত্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে। যত্তসব বালের ছেনালী কথাগুলো শামীম বলে, তবে নিঃশব্দে। সেই কলেজ লাইফ থেকে প্রেম করে আসছে, এইসব ধরণ ধারণ একেবারে নাড়ি থেকে চেনে। প্রথমে নিজেদের মধ্যে গুজগুজ ফুসফুস, তারপরে আরেকটু সাহসী হয়ে উঠলে রাস্তাঘাটে কি পার্কে কোমর জড়িয়ে বসে থাকা, তারও পরে ......শামীম আর ভাবনাটার পরিণতি হতে দেয়না। ছাত্রবয়সে থাকতে এসবের শেষ পর্যন্ত কল্পনা করতেই তলপেটের নিচে কামবোধের তীব্র অনুভূতি হতো। এখন আর এসব কিছু হয় টয়না। অথচ শরীরের থেকে ছাত্রত্বের গন্ধ মুছে গিয়েছে খুব বেশী আগে নয়, মাত্র দুই বছর হলো।

সামনের চেয়ারে বসে থাকা আধুনিক যুগল নিজস্ব কথোপকথন নিজেদের সীমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাইলে কি হবে তার কিছু কিছু শামীমের মগজে প্রবেশ করলে তার তন্ত্রীসমূহ অতীতের সময়ে রিওয়াইন্ড করে।

“শোনো, তুমি কিন্তু কথা দিছিলা আমারে লেখার ডাইরী গিফট দিবা। তুমি এখনো দাওনাই।” যুবতীর কন্ঠে হালকা মাখো মাখো অভিমান।

“আরে দিবো তো, আমার মনে আছে।” যুবকের সংক্ষিপ্ত উত্তর।

তারপরে তাদের কথোপকথনের স্বর আবারো নিচুতে নেমে আসলে আর কি হবে? শামীমের মস্তিষ্ক সেই যে ডাইরী নামক শব্দটায় গিয়ে আটকেছে সেই আটকানো থেকে তার নিস্তার কোথায়? এই ডাইরী লেখার নেশা ছিলো তার বাপের। পিতার স্মৃতি হাতড়ালে শামীম উদাসীন লোকটার মাত্র দুইটা প্রিয় অভ্যাসের কথাই স্মরণ করতে পারে। এক হলো গিয়ে তারা ভাই বোন পরীক্ষায় ফেল করলে জালি বেত দিয়ে সপাত সপাত করে হাতের মধ্যে বাড়ি আর রাতের বেলায় খাবার শেষে নিজের মনে ডাইরী লেখা। নিজের স্ত্রীর সাথে এই নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া লাগতো লোকটার। নিজের স্বর্গত পিতাকে বারবার ‘লোকটা লোকটা’ বলে আওড়ানোতে শামীম নিজের মগজকেই শাসন করতে যায়। বলাই বাহূল্য কাজটা দূরহ। তবে এই এক ডাইরী লিখবার নেশা ছিলো তার বাপের। মায়রে বাপ, একটু অবসর পেলেই হতো। ডাইরী লিখবার জন্য আলাদা কলম ব্যবহার করতো। একটা দামী ফাউন্টেনপেন। শামীমের মগজের কোষে কোষে তার বাপ-মায়ের নিত্যনৈমিত্তিক কথোপকথনের খেলা শুরু হয়ে যায়।

“আইচ্ছা, তুমি কওতো ডাইরীতে লেখার এই অভ্যাস জুটাইছো কোত্থেইকা? পুরুষ মানুষ অবসরে কতো কি করে। টিভি দেখে, পত্রিকা পড়ে। তুমি খালি হাবিজাবি কি কি জানি লিখো। আমারে দেখতেও দাওনা। কি এতো গোপন কথা আছে তোমার?” শামীমের মা গৃহস্থালী কাজকর্ম সেরে স্বামীকে লিখতে দেখলেই টেপ রেকর্ডারের মতো করে প্রশ্নগুলা করতো, প্রায়ই।

শামীমের বাপে স্ত্রীর কাছ থেকে বাউন্সারের মতো সব প্রশ্ন শুনে বিশেষ কোন প্রতিক্রিয়া দেখাতোনা। লিখতে লিখতে আড়চোখে একবার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হেসে আবার ডাইরী লেখায় মন দিতো।

এরপর কার সাধ্যি আছে লেখা থেকে লোকটাকে নড়াবার? শামীমের মাকে তাই রণে ভঙ্গ দিয়েই নিজের মনে গজগজ করতে করতে শুয়ে পড়তে হতো। লাইট অফ করলেও কোন সমস্যা ছিলোনা। সাইড টেবিলের হালকা আলোতেই লোকটা ডাইরীতে নিজের মনের কথা সব লিখে যেতো। বহু বছর পরে বাপের মৃত্যু হলে প্রায় তিরিশ বছরের পুরনো সেই ডাইরী শামীমের হাতে পড়লে সে আজ পর্যন্ত তার এক পৃষ্ঠা পড়তে পারলোনা।

শামীমের মস্তিষ্কে কি জল জন্মে? উত্তর সে নিজে দেবে কি? তবে তার চোখজোড়া এখনো সিক্ত হয়না। শুধু সারাদিনের কর্মব্যস্ত দিবসে ক্লান্তি ছাড়া চোখের পাতায় ভিন্ন কোন অনুভূতি শামীম বোধ করেনা।

প্রথম কাপ চা খেয়ে শেষ করবার পরে দ্বিতীয় কাপ চায়ের কথা বুড়া দোকানীকে বলেছিলো মনে হয় ব্রিটিশ শাসনামলে। সেটার জন্য পুনরায় তাগাদা দিতে দিতেই চায়ের কাপ তার হাতে দিয়ে বুড়া মিয়া আর্দ্র গলায় বলে “ চায়ের মইধ্যে আদা দিয়া দিলাম। খান, ভালো লাগবো।”

শামীমের কোন শাব্দিক প্রতিক্রিয়া হয়না। কিন্তু ভেতরে ভেতরে তার যেই কাঁপুনী তার হদিস এই বুড়া দোকানী তো বহুত দূর নিকটতম বন্ধু কেউও তো কখনো জানেনি। শামীমের ডান চোখের পাতায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জন্মে। আরেকটু বেশী গড়ালে হয়তো আদামিশ্রিত চায়ের মধ্যেই পড়বে নিশ্চিত। কিন্তু শামীমের হৃদয়ে সুপ্ত থাকা যেই ঝাঁকুনি অনেকদিন পরে তোলপাড় হতে শুরু করেছে তাকে কে বুঁজিয়ে দেয়? আদামিশ্রিত চা পছন্দ করতো সেই একজনে। স্বর্না ছাড়া আর কাউকে শামীম জীবনে দেখেনি আদা দিয়ে চা খেতে এতোটা ভালোবাসে। যেখানেই যাও, হেঁটে কি রিকশায় চলতে চলতে কোথাও থামলেই হয়েছে। চায়ের দোকানে বসে পড়ো, আদা দেওয়া চা খোঁজ অতঃপর তা দিয়ে মহারানীর গলা ভেজাবার ব্যবস্থা করো। স্বর্নার পীড়াপীড়িতে শামীম কয়েকবার আদা দিয়ে চা খেয়েছিলো বটে কিন্তু একেবারেই স্বাদ পায়নি। প্রথমবার তো তার চোখ এড়িয়ে চা ফেলে দিতে গিয়ে ধরাই পড়ে গিয়েছিলো শামীম। তারপরে কি রাগ মেয়ের!! একবার রাগলেই হয়েছে কাজ। পরপর তিনদিন তাদের কোন কথা হতোনা।

কিন্তু আজকে এতো বছর পরে শামীমের পাকস্থলীর কি হয়েছে তার মাথায় আসেনা। বেশ লাগছে তো এই চাটা। কেমন এক ধরণের ঝাঁঝালো স্বাদ নিজের জিভে মিশে যাচ্ছে টের পেলে শামীমের চোখজোড়া এবারে যেন সিক্ত হতে আকাঙ্খা পোষণ করে। তা এরকম হলে তারই বা কি দোষ? মেয়েটার সাথে তার কম তো স্মৃতি নেই। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অলিগলি চষে বেড়ানো থেকে শুরু করে পুরান ঢাকা, মীরপুর বেড়িবাঁধ কোন জায়গায় বা তারা অবশিষ্ট রেখেছিলো প্রেম করবার জন্য? তারপরে তো স্বর্নার সেই বাঞ্চোর বড় ভাইটার জন্য, গালির প্রয়োগটা বিশ্রীভাবে তার অতীত প্রেমিকার দিকেই যায় বুঝতে পেরে নিমেষেই অন্য এক অশ্রাব্য গালি দিয়ে তাকে প্রতিস্থাপিত করে। কিন্তু ফেরত আসা স্মৃতি এতো সহজে পিছু ছাড়লে তো হয়েছিলোই। শামীমের তাই অতীতের অলিগলি চষে বেড়ানো থেকে নিজেকে প্রাণপণে সামলে রাখবার চেষ্টা করতে হয়।

চায়ের শেষ চুমুকটা দিতে দিতে বুড়ো দোকানী পলকহীন চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে লক্ষ্য করে শামীমের অস্বস্তি হয়। চোখের দৃষ্টি বড্ড তীক্ষ্ণ লোকটার। যেন শামীমের সমগ্র অতীত পড়ে নিয়েই তাকে সে আদা চা খেতে দিয়েছে। মোবাইলটা শব্দ করে বেজে উঠলে নিজেকে ধাতস্থ করবার সুযোগ পেয়ে তাকে গ্রহণ করতে সে দ্বিতীয়বার ভাবেনা।

শামসুদ্দীন ফোন দিয়েছে। প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে তাই কোথায় আসতে হবে জিজ্ঞাসা করলে শামীম ধীর কন্ঠে তাকে সঠিক জায়গাটার সন্ধান দেওয়ার পরে ধীরেসুস্থে বিল মেটাতে যায়। সুস্থির থাকতে চাইলেই বুঝি এতো সহজ? হয়না, এভাবে হয়না। সন্ধ্যার প্রথমে বাতাস যেরকম একটু খোলতাই হয়েছিলো তার কিছুটা এখন আবার ফিরে এসেছে। উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে শামীমের শরীরে তাই বাতাসটা একটু বেশীই মৃদুভাবে স্পর্শ করে। মনের ভেতরে অতীত স্মৃতির যেই জোয়ারভাঁটা চলতে থাকে তার স্থায়িত্ব যেন অনন্তকাল। তখন কিছু লজ্জাবনত মেঘ পুনরায় আকাশের চারপাশে ভিড় করতে শুরু করেছে।

শামসুদ্দীন পৌঁছে গেলে তার কাছ থেকে সুস্থিরভাবে জিনিসটা বুঝে নেয়। যেমনটা শুনেছিলো অন্যদের কাছে ঠিক তেমনই, লোকটা কাজ জানে। শুধু জানে তাই নয়, অত্যন্ত ভালো করে জানে। নয়তো এই আধো আলোতে, নগরীর অন্য সবাই যখন নিজেদের মনে মগ্ন হয়ে যার যার ঠিকানায় চলছে তখন পাঁচ কেজি ওজনের জিনিসটার অক্ষরগুলো এতোটা ধবধবে ফর্সা দেখায় কিভাবে? শামীমের চোখের মণি যে আচমকাই উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। নাইলে শামসুদ্দীনের কাছ থেকে সাবধানী ভঙ্গিতে নেওয়া পিতার এপিটাফে লেখা “নামঃ মোঃ নেজামুল হোসেন, জন্মঃ ৩১ জানুয়ারী, মৃত্যুঃ ৫ মার্চ, নিবাসঃ চাঁদপুর” কথাগুলোর উজ্জ্বলতা তার মস্তিষ্কের সর্বত্র শহরের প্রতিটা কৃত্রিম আলোর চাইতে বেশী ধরা পড়ে কিভাবে? অতীত স্মৃতির সাথে পিতার এপিটাফের উজ্জ্বল অক্ষরগুলোর মিশেলে তাই আকাশের লজ্জাবনত মেঘগুলো নিজেদের ব্রীড়া কাটিয়ে অন্যদের নজর এড়িয়েই সঙ্গোপনে শামীমের চোখজোড়ায় নেমে আসে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ সকাল ১০:০৭

ঘনায়মান মেঘ বলেছেন: সুন্দর…

২| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫১

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার গোছানো লেখা।

২য় ভালো লাগা।

৩| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১২

ইলিয়াস সাইফ বলেছেন: ভালো লাগলো।
চমত্‍কার ও গোছানো লেখা। 8-|

তবে ইংরেজী শব্দগুলোর বাংলা অনুবাদ ব্যবহার করাই কাম্য।

৪| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ বিকাল ৫:২৯

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
কিছু সম্পর্ক অসজ্ঞায়িত থাকে ৷ নিরবে মননে রয় ৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.