নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভারসাম্য মাত্রই কৃতিত্ব নয় ।

আল - বিরুনী প্রমিথ

আল - বিরুনী প্রমিথ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আইডেনটিটি

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:২১

আমরা তাকে শনাক্ত করতে পারি; রাকিব নামে, কেননা নামটি তার পিতৃপ্রদত্ত, যেই নামটির সাথে তার ২৭ বছরের জীবনের গন্ধ লেগে আছে। তাকে একদিন নিউমার্কেট ১ নাম্বার গেটের সামনে ঘোরগ্রস্ত হিসাবে আবিষ্কার করা হয়। সে ঘোরগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

অক্টোবর মাস, বাংলায় আশ্বিন। অথচ হাওয়া কার্তিক মাসের। রাতেরবেলায় হিম জোৎস্নার দেখাও মাঝেমাঝে আকাশে পাওয়া যায়। তার সবই পরিচিত। অক্টোবর মাসের করোটিতে দাপাদাপি করা উন্মাতাল হাওয়া, যেই হাওয়ায় স্মৃতি, যেই স্মৃতিতে বাগান, যেই বাগানে উজ্জ্বল অনুজ্জ্বল সব ফুল। ডান হাতে বইয়ের প্যাকেট নিয়ে এই সন্ধ্যায় সে দেখে সারি সারি মানুষ নিউমার্কেটে ঢুকছে আর বেরুচ্ছে। বেরুচ্ছে আর ঢুকছে।

রাকিব ঘোরগ্রস্ত হয়ে পড়ে। যা দেখছে তা কি আসলেই দেখছে?

দেখে থাকলে কিভাবে দেখছে?

ঠিক এভাবেই তো দেখেছিলো। অসংখ্যবার।

তবুও, এই দেখাটা নতুন।

মানুষের চোখে উজ্জ্বলতা, কৃত্রিম। রাকিব এমনটাই আবিষ্কার করে। এতো এতো মানুষ; স্বপ্নের কথা যদি জনে জনে জিজ্ঞেস করা হয়- রাকিবের বিশ্বাস, অনেকেরটা মিলে যাবে। হাজার মানুষ, কিন্তু স্বপ্ন ঘুরেফিরে গুটি কয়েকটা।

নিউমার্কেটে মানুষের সাথে পাল্লা দিয়ে আলোর উজ্জ্বলতাও বেড়ে যাচ্ছে।

রাকিব বিষয়টা সদ্যই লক্ষ্য করলো।

আচ্ছা, দশ বছর আগের অক্টোবর মাসের সাথে এই অক্টোবরের পার্থক্য সে খুঁজে পাচ্ছেনা। কেনো?

তবে কি তার অভিজ্ঞতার প্রাপ্তিতে কিছু যুক্ত হয়নি?

কিংবা অনুভূতি?

সেখানে নতুনত্ব কিছু আসেনি?

দশ বছরে তার সাথে কম কিছু তো হয়নি।

সে তো করলোনা কম কিছু।

তবে?

আশ্বিন মাসের ঘোরলাগা ঘ্রাণ রাকিব নিজের শরীরেও পাচ্ছে।

পৃথিবী আমার করায়ত্ত- সেই একই আদি অকৃত্রিম অনুভূতি।

রিকশার হল্লা ক্রমশই বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বেড়ে যাচ্ছে কোলাহল। অসহনীয়।

একটুকু শান্তি দাও। চারপাশ একটু নীরব হোক। রাকিব কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করলো।

আজকাল প্রার্থনায় ঈশ্বর পর্যন্ত সাড়া দেন না। নিউমার্কেটের কোলাহল কিভাবে সাড়া দেয়?

রাকিব বেশী কিছু চায়নি।

চেয়েছিলো শুধুমাত্র একটি গল্প লিখবে।

আদিঅন্তহীন।

লিখতেই থাকবে সে। লিখতেই থাকবে।

প্রকাশ করবে- কখনো ইচ্ছা হলে, নয়তো না।

এই স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষতি নেই কিছু। যাপনের গূঢ় আনন্দ আছে, কেন্দ্রে যার নিজেকে ছিঁড়ে খুঁড়ে অবলোকন করা।

আমি বাড়ি চলে যাই। রাকিব মনস্থির করলো।

সন্ধ্যা ক্রমশ অতিক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে।

রাকিব রিকশার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো।

কিংবা বাড়ালোনা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.