নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপক্রমনিকা
রাজনীতির মহা থিয়েটারে একটি বিশেষ ধরনের রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব ঘটেছে। মিছিল সমাবেশে বিলি করা লিফলেটের মত এদের প্রতিশ্রুতির শেষ নেই। এই দলটি রাজনীতির চূড়ান্ত গোপন অস্ত্রটি আবিষ্কার করেতে পেরেছে: ধর্ম। আসলে যখন জনগনকে ঐশ্বরিকতার প্রলোভনে শান্ত রাখা যায় তখন স্বাস্থ্যসেবা বা শিক্ষার মতো সাধারণ বিষয়গুলি নিয়ে কে চিন্তা করে!
পবিত্র প্রচারণা
আমাদের গল্পের শুরু "পবিত্র পার্টি" দিয়ে; এদের স্লোগান হল “আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, এবং আপনিও করুন।” তাদের প্রচারণা সমাবেশগুলি লোকেলোকারণ্য, যেন এক বিশাল জনসভা, ভীর-আওয়াজ-ধর্মীয় সঙীত ইত্যাদিতে পরিপূর্ন। পার্টির নেতা, "আমীর পলিটিকো", সমবেত জনতাকে জানান তাদের দলকে দেয়া ভোটগুলি কেবল ভোট নয় বরং স্বয়ং ঈশ্বরকেই সমর্থন জানানো।
ঐশ্বরিক ইশতেহার
পবিত্র পার্টির ইশতেহারটি যেন ঈশ্বরপ্রদত্ত, ঠিক যেন ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণায় ভরা। এই ইশতেহারে স্কুলের চেয়ে উপাসনালয় স্থাপনের গুরুত্ব ও প্রতিশ্রুতি বেশি, কারণ পুথিঁগত বিদ্যার চেয়ে বিশ্বাসই সর্বোত্তম শিক্ষা। পবিত্র পার্টি সমস্ত সরকারি ছুটিকে ধর্মীয় উৎসবে প্রতিস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এর ফলে জীবনের প্রতিটি দিনই, এমনকি ছুটির দিনটিও, একটি পবিত্র দিন হিসেবে পালন হয়ে যাবে। দলটির ইশতেহার কাজের সময় বাধ্যতামূলক প্রার্থনা বিরতি চালু করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে, কারণ কাজের ফলাফল কাজ করার উপরে নয় হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করার উপর নির্ভর করে।
অলৌকিক নীতিমালা
পবিত্র পার্টি বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতার মসনদে বসেছে। ক্ষমতায় আসার পর তারা তাদের ঐশ্বরিক নীতিগুলি বাস্তবায়নে একটুও সময় নষ্ট করেনি। তারা সরকারের প্রতিটি স্তরে, প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পবিত্র গ্রন্থের কসম খেয়ে শপথ নেওয়ার আইন পাস করেছে। ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাস কারো ভিন্ন হলেও তাকে পবিত্র গ্রন্থের নামে শপথ নিতে হবে। কোন বৈষম্য এক্ষেত্রে মেনে নেয়া হবেনা। তারা একটি অলৌকিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। এই মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে প্রকৃত অলৌকিক প্রকল্প-দাবী যেন সরকারি তহবিল পায় তা নিশ্চিত করা। এই মন্ত্রণালয় লৌকিক-অলৌকিক সব প্রকল্পকে অলৌকিকতার মানদন্ডে পর্যালোচনা, বিশ্লেষন, ও যাচাই-বাছাই করে, এবং শুধু অলৌকিক প্রকল্পগুলোকেই অর্থায়ন করে।
অপবিত্র বিরোধিতা
সবাই যে পবিত্র পার্টির ঐশ্বরিক শাসনে খুশি তা কিন্তু নয়। বাস্তবতাবাদী "মিস্টার রিজন" গড়ে তুলেছেন "ধর্মনিরপেক্ষ পার্টি"। তাদের বক্তব্য সরকারের উচিত পার্থিব বিষয়গুলির উপরও মনোনিবেশ করা। কিন্তু তাদের সমাবেশগুলিতে নেই তেমন চাকচিক্য, ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে আসা লোকের ভীড় নেই, নেই কোন ঐশ্বরিক চমক। তাই তাদের বক্তব্য, তাদের দাবী পবিত্র পার্টির সাথে প্রতিযোগিতায় ঠিক পেরে ওঠেনা। ঐশ্বরিক প্রতিশ্রুতি আর চিরন্তন পরিত্রাণের প্রচারণার সাথে পেরে ওঠা কঠিন। যুগ যুগ ধরে এটাই হয়ে এসেছে।
ঐশ্বরিক কমেডি
পবিত্র পার্টির শাসন অব্যাহত থাকে, ধর্মীয় উপসানলয়ের কাঠামো আর এবং রাষ্ট্রের কাঠামো ও দায়িত্বের মাঝে যে ফারাকটি আছে তা যেন ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে। পুরো রাষ্ট্রই যেন হয়ে উঠছে একটি ধরমীয় প্রতিষ্ঠান; একটি নির্দিষ্ট ধর্মের উপসানালয়। জনসাধারণের ভিন্নমত থাকার কোন সুযোগ থাকছেনা, বরং যেকোন বিষয়ের প্রয়োজনিয় বিতর্কগুলিকে ধর্মতাত্ত্বিক আলোচনায় প্রতিস্থাপিত করা হচ্ছে। দেশ পরিচালনার নীতি, সিদ্ধান্তগুলো ঐশ্বরিক ইচ্ছার কথা বলে তার ভিত্তিতে নেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ বলে, আশংকা করে, এভাবে চলতে থাকলে সমাজনীতি, অর্থনীতি, বিদেশনীতি সব শিগগিরই পরিণত হবে ধ্বংসস্তূপে। তবে পবিত্র পার্টি জনগণকে আশ্বস্ত করে যে বিশ্বাসের চেয়ে বড় কিছু নেই, ঐশ্বরিক ইচ্ছার বাইরে কিছু হতে পারেনা।
উপসংহার
অবশেষে, পবিত্র পার্টির এই ঐশ্বরিক কমেডি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ধর্ম মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে পারে, আমাদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারে, কিন্তু সাথে সাথে এটি একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এই নাটকটি যখন শেষ হচ্ছে, যখন এর পর্দা পরার সময় হয়েছে তখন কেউ কেউ, মনে মনে, হয়ত ভাবছেন, "রাজনীতির নাট্যশালায়, সত্যিই কি পবিত্র বলে কিছু আছে?"
নোটঃ বানান কিছু ভুল থাকতে পারে। পরে ঠিক করার চেষ্টা করবো।
ট্যাগঃ এক্সপেরিমেন্ট
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:০৪
আরইউ বলেছেন:
অপু, কেমন আছেন?
লেখা সামনের পাতায় না যাবার যুক্তিযুক্ত কারণ আছে। অনল চৌধুরী সুলেমানি ব্যান হওয়ার ঘটনা মনে আছে? প্রায় বছর দু' এক আগের ঘটনা সম্ভবত। তখন আমাকেও জেনারেল করা হয়। সেই থেকে "জেনারেল" পদ পদবী নিয়েই আছি। এসব নিয়ে আসলে বলার কিছু নেই।
সাধারণ জনগনের আসলে কখনো কোন বক্তব্য কি থাকে আমাদের দেশে? হাসিনার সময়ে কে মন খুলে কী বলতে পেরেছে, খালেদার আমল কি খুব ভিন্ন ছিল? দেশ আসলে জিওপলিটিক্সের এক বিশাল জালে আটকা পরেছে। দেখা যাক কী হয়!
২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৪
শায়মা বলেছেন: হায় হায় ভাইয়ু!!!
তুমি জেনারেল এখনও!!!
মডু ভাইয়ু মনে হয় তোমাকে জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি দিতে ভুলেই গেছে।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯
আরইউ বলেছেন:
শায়মা,
ঠিক ধরেছেন, আমারও মনে হয় সেটাই হয়েছে।
আপনার পোস্ট দেখেছি, পড়েছি, মন্তব্য করবো কোন এক সময়।
ভালো থাকুন!
৩| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:০৩
মিরোরডডল বলেছেন:
ব্লগে এখন আমারও কম আসা হয়, এলেও আগের মতো ফোকাস না, তাই এই পোষ্ট পড়া হয়নি, ইন ফ্যাক্ট আজ এখন দেখলাম।
১০ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৭:৫৯
আরইউ বলেছেন:
কোন সমস্যা নেই, মিরর। আমি হ্যাবিটুয়ালি ব্লগে চোখ রাখি তবে ইমোশনাল এটাচমেন্ট অনেকটাই কমে গেছে।
৪| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:১২
মিরোরডডল বলেছেন:
তখন স্বাস্থ্যসেবা বা শিক্ষার মতো সাধারণ বিষয়গুলি নিয়ে কে চিন্তা করে!
অথচ এগুলোই হওয়া উচিত প্রথম প্রায়োরিটি।
ধর্ম আর রাষ্ট্র কখনোই এক করা উচিত না, এটা একান্ত আমার মতামত।
ধর্ম একান্তই ব্যক্তিগত বিশ্বাস। যার যে ধর্মে বিশ্বাস, সে সেটা পালন করবে, কেউ হয়তো কোন ধর্মই পালন করবে না।
কিন্তু একটা রাষ্ট্রে সব ধর্ম বর্ণের মানুষ একসাথে মিলেমেশে থাকবে। রাষ্ট্রের সংবিধান সেটার নিরাপত্তা দিবে।
রাষ্ট্র সবার জন্য, ধর্ম যার যার তার তার।
১০ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:০০
আরইউ বলেছেন:
কান্ট এগ্রি মোর!
৫| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:২০
মিরোরডডল বলেছেন:
শুধু অলৌকিক প্রকল্পগুলোকেই অর্থায়ন করে।
This is really funny
"রাজনীতির নাট্যশালায়, সত্যিই কি পবিত্র বলে কিছু আছে?"
পবিত্র???
সারা বিশ্বে যা হচ্ছে, আই বিলিভ রাজনীতি হচ্ছে সবচেয়ে ডার্টি গেইম।
১০ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:০৪
আরইউ বলেছেন:
রাজনীতি অন্যতম ডার্টি গেম। আরেকটা হচ্ছে রিয়েল এস্টেট বিজনেস! আমি একজন রাজনীতিবিদ আর একজন রিয়েল এস্টেট এজেন্টকে সমানভাবে বিশ্বাস করি!
ভালো থাকুন।
৬| ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:১২
আমি সাজিদ বলেছেন: বেশ।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৩
আরইউ বলেছেন:
ধন্যবাদ, সাজিদ। ভালো থাকুন!
৭| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৪২
অপু তানভীর বলেছেন: আর ইউ সাহেব, আপনাকে তো ইমেইল দিতে বলেছিলাম । সেটা তো আর দিলেন না।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:৩৭
আরইউ বলেছেন:
অপু! আড়াল যাদের পছন্দ তারা থাকনা আড়ালে... যাহোক, একদিন আপনার সাথে নিশ্চয়ই কথা হবে।
৮| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:০২
অপু তানভীর বলেছেন: আড়াল যাদের পছন্দ তারা থাকনা আড়ালে...
আরে একটা আলাদা মেইল খুলে ফেলুন। দুই মিনিট লাগবে। আর ইন্টারভিউতে, সম্পূর্ন আড়াল থেকেই অর্থ্যাৎ নিজের ব্যাপারে কোন তথ্য না দিয়েই অনেক কিছু নিয়েই কথা বলা যাবে।
যাইহোক, আপনার ইচ্ছেই বড় । তবে যদি ইচ্ছে হয় তবে আমার ওয়েবসাইটে গেলেই আমার সাথে যোগাযোগের ঠিকানা পাবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৪০
অপু তানভীর বলেছেন: এই লেখা সামনের পাতায় যায় নি কেন?
এই দেশের মানুষ যতই ধার্মিক হোক না কেন তারা মোল্লাকে কেবল মিলাদ পরানো পর্যন্তই দেখতে ভালবাসে । হুজুর তাদের উপর ছড়ি ঘোরাবে এমনটা তারা ভাবতেও পারে না ।