![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভাবনা লিপিকার
‘রোহিঙ্গা’ মানবতা ভুলন্ঠিত একটি জনগোষ্ঠীর নাম। যারা অর্ধশত বছর ধরে নিস্পেষিত নিজ দেশ মায়ানমারে এবং নির্বাষিত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। যুগ যুগ ধরে তাদের আধুনিক রাস্ট্রের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে বার্মীস সরকার। কারন তারা মুসলমান। তারা রাস্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার। দেশের সেনাবাহিনী, পুলিশ, নাসাকা এমনকি বোদ্ধ ধর্মগুরুরা পর্যন্ত তাদের হত্যায় মেতে উঠে অতি উৎসাহে। এই জনগোষ্ঠীর মেয়েদেরকে তারা করছে ধর্ষন এবং ছেলেদের করছে নির্বিচারে হত্যা। জীবন বাঁচাতে তারা সীমান্ত পাঁড়ি দিতে গেলেও মুসলীম দেশ ছাড়া তাদের কেউ আশ্রয় দিচ্ছেনা। তাদের একমাত্র দোষ তারা মুসলমান। কি অদ্ভুত দৃষ্টিভঙ্গি তাদের। ইন্ডিয়া বলছে-মুসলীম বলে তাই তাদের গ্রহন করা হবে না। কারন তারা সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়বে। অথচ নিজ দেশে হিন্দু জঙ্গিরা পশু হত্যার দায়ে মানুষ হত্যা করছে। কি আজব এই দুনিয়ার মানুষগুলো !!
মিয়ানমার দোষারোপ করছে-
১। রোহিঙ্গারা মুসলমান। একটি দেশে বিভিন্ন ধর্মের, মতের ও বৈশিষ্ট্যের লোক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এটাই একটি দেশের সৌন্দয্য ধারণ করে।
২। রোহিঙ্গারা নাকি সে দেশের কৃষ্টি-কালচার কোন কিছুর সাথে মিলে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনেক আদীবাসী আছে যাদের কৃষ্টি-কালচার সেদেশের মুল গোষ্ঠীর সাথে মিলেনা।
৩। তাদের আদী নিবাস নাকি ভিন্ন দেশে, অথচ তারা শত বছর ধরে এদেশে বাস করছে। এমন বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি যদি সবাই ধারন করে পৃথিতে কেউ কোন দেশে বাস করতে পারবেনা। যেমন: বিশ্বের ধনী দেশ আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার সব অধিবাসীই শত বছর আগে অভিবাসী ছিল। তাই বলে কি সে দেশ তাদের না? তারা সেদেশকে ভালবাসেনা? তারা তাদের দেশকে প্রানের চেয়েও বেশী ভালবাসেন। ঠিক তেমনি রোহিঙ্গারাও তাদের দেশকে খুব ভালবাসেন। আমি স্বচক্ষে দেখেছি তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য কাঁদতে। কিন্তু হায় কি দুঃখ! তাদের দেশই তাদের দুরে ঠেলে দিচ্ছে।
বিশ্ব শক্তিগুলো কিছু বিপথগামী মুসলমান যুবককে লোভ দেখিয়ে ব্যবহার করে তাদের নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য কখনো আল-কায়েদা, কখনো আইএসআইএস এরকম বিভিন্ন নামে উদ্ভব ঘটায়। এতে তাদের অস্র ব্যবসা সহ বিভিন্ন ব্যবসার পথ উম্মোচন হয়। বিপথগামী এই যুবকরা নিজেরা বিশ্ব শক্তিগুলো ফাঁদে পড়ে মরন ডেকে আনে, পাশাপাশি নিজ সম্প্রদায়কে হুমকির মুখে ফেলে। ঠিক যেমনি বিশ্বব্যাপী সবাই মুসলীম ফোবিয়ার ভুগছে। যেন মুসলমান মানেই সন্ত্রসী। অথচ ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। একজন মুসলমান হন মার্জিত ও মার্জনার অধিকারী। যদিও সব ধর্মই শান্তির কথা বলে। কিন্তু স্বার্থান্বেসী মহলরাই অশান্তীর বিষ বাস্প ছড়িয়ে দেয় সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে।
যদিও সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো উদ্দেশ্য এমনটাই ছিলনা। তারা মুলতঃ নিদ্ধিষ্ট কোন স্বার্থ রক্ষার নিদ্ধিষ্ট কৌশল অবলম্বন করে। যেমন: আফগানিস্তানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আল কায়েদার দরকার ছিল এবং সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে আইএসআইএস এর দরকার ছিল। কিন্তু প্রত্যেক দেশে এক রকম কৌশল খাটেনা। কিন্তু তারা এখন বিশ্বকে বুঝাতেও পারছেনা যে আসলে মুসলমান মানেই সন্ত্রাসী নয়। অতীতে যা হয়েছে তা ছিল কৌশলগত ষড়যন্ত্র মাত্র। বরং আমরা দেখছি দেশে দেশে সব ধর্মের মধ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের দ্বারা অন্য সম্প্রদায়কে নিপিড়ন করতে। অবশ্য যেসব দেশে সরকার এসব উগ্রবাদীদের সহায়তা করে সেসব দেশেই মুলত এমনটা ঘটে থাকে।
মানবতার কাছে কোন ধর্ম, বর্ণই মূখ্য নয়। পশুসম হত্যার শিকার রোহিঙ্গাদের প্রতি হাত না বাড়িয়ে কতটা মানবতা বিবর্জিত ও হীন মানসিকতার কাজ তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। ফরওয়ারদিগার সবাইকে মানববৎসল ও মানবিক গুন সম্পন্ন করুক। সবার হৃদয় কেঁপে উঠুক মানবতার ক্রন্দনে।
©somewhere in net ltd.