নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

life is a game . lets make a highscore

প্রফেসর সাহেব

প্রফেসর সাহেব › বিস্তারিত পোস্টঃ

খাদ্যাভাব বনাম খাদ্যের অপচয়

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:৪৭



অনেক দিন আগে এক বিয়েতে গিয়েছিলাম,যথারীতি খাওয়ার টেবিলে বসেছি খাওয়ার জন্য,আমার পাশে এক ভদ্রলোক তার ৮-১০ বছর বয়সী ছেলেকে পাশে নিয়ে বসেছেন,ছেলেটি ছোট বিধায় বেয়ারা তার প্লেটে কারি একটু কম দেওয়ায় ভদ্রলোক অনেকটা রাগতস্বরে বেয়াড়াকে আরো বাড়িয়ে দিতে বললেন।বেয়ারা বাড়িয়ে দিলেও উনার মনঃপুত হয়নি তাই উনি নিজে বাটির অনেকটাই ছেলের প্লেটে ঢেলে দিলেন। বাচ্চা ছেলে তার সাধ্যমত খেয়েছে,খাওয়া শেষ ভদ্রলোক তার ছেলেকে নিয়ে হাত দোয়ার জন্য বেসিনের দিকে রওয়ানা দিলেন।
তখনও তার প্লেটে অবশিষ্ট খাদ্যের পরিমাণ একজন ক্ষুধার্তের ক্ষুধা নিবারণের জন্য যথেষ্ট।

এটা আমাদের দেশের বিয়ে বা এই ধরনের অনুষ্ঠানের নিয়মিত ঘটনা, মানুষ তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য প্লেটে নেয় কিন্তু খাওয়া শেষে দেখা যায় যে অনেক খাবার প্লেটে অবশিষ্ট রয়েছে,যার স্থান হয় ডাস্টবিনে।
মেহমানদারিতে গেলে অনেকে প্লেটে নাস্তার কিছু অংশ রেখে দেন, মনে করেন এটা ভদ্রতা (আসলে মূর্খতা), পুরোটা খেলে লোকে কি বলবে। আপনার রেখে দেওয়া খাবারের অবশিষ্টাংশ কেউ খায়না, তার স্থান হয় ডাস্টবিন কিংবা কুকুরের পেট।
রেস্টুরেন্ট গুলোতেও খাদ্যের ব্যাপক অপচয় হয়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্ডার করে কিন্তু খায় অল্প বাকিটা অপচয়,যা দেখলে বুঝার উপায় নাই যে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে এই দেশেরই ১৫ লক্ষ মানুষ মারা গেছে খাদ্যের অভাবে।

বর্তমানে খাদ্যের অভাবে প্রতিদিন সারা বিশ্বে গড়ে ৮৬৪০ জন লোক মারা যায়, যার বেশীরভাগই শিশু।
সে হিসেবে প্রতি ঘন্টায় ৩৬০ জন, প্রতি মিনিটে ৬ জন, অর্থাৎ প্রতি ১০ সেকেন্ডে ১ জন মানুষ মারা যায় খাদ্যের অভাবে।
বিশ্বে দৈনিক সতোরো কোটি লোক ক্ষুর্ধাত অবস্থায় দিন কাটায়।তাদের এক এক জন প্রতিদিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আপনি যখন এই লেখাটি পরছেন তখন পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে খাদ্যের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরছে কেউ না কেউ।

একদিকে মানুষ না খেয়ে মরছে আর অন্য দিকে চলছে খাদ্যের অপচয়।জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা – এফ এ ও'র "ফুড ওয়েষ্টেজ ফুটপ্রিন্ট: ইমপ্যাক্টস অন ন্যাচারাল রিসোর্সেস" শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে বিশ্বে বছরে প্রায় একশো ত্রিশ কোটি টন খাদ্য নষ্ট হয়,যা বিশ্বের মোট উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় এক তৃতীয়াংশ

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা আহার করো ও পান করো; কিন্তু অপব্যয় করবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না। ’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩১)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর তোমাদের অর্থ-সম্পদ অপ্রয়োজনীয় কাজে খরচ করবে না। জেনে রেখো, যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই, আর শয়তান নিজ প্রতিপালকের ঘোর অকৃতজ্ঞ। ’ (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ২৬, ২৭)

ওয়াদা করুন যে জীবনে যতদিন বেচে আছেন একটাও দানা অপচয় করবেননা, যতটুকু পারেন ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়াবেন,যদি না খাওয়াতে পারেন অন্তত নিজের খাওয়ার ব্যাপারে মিতব্যয়ী হবেন।

আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তৌফিক দান করুন যাতে আমরা খাদ্য অপচয় না করে পরিমিত ভোগে সন্তুষ্টচিত্তে তার শুকরিয়া আদায় করি।আমিন

ছবি:কেভিন কার্টার ১৯৯৩ সালে সুদানে দুর্ভিক্ষের সময় এই ছবিটি তুলেছিলেন (খাদ্যাভাবে মৃত্যুর অপেক্ষায় এক শিশু আর শিশুটির মৃত্যুর অপেক্ষায় এক শকুন)। যা তাকে পুলিৎজার পুরস্কার এনে দেয়, যদিও তিনি সমালোচিত হয়েছিলেন এজন্য যে তিনি শিশুটিকে বাচানোর চেষ্টা না করে ছবি তুলেই সেখান চলে আসেন। নিজেকে অপরাধী মনে করে কার্টার মানসিক অস্বস্তিতে ভুগেন যার ফলশ্রুতিতে কিছুদিন পরেই তিনি সুইসাইড করেন। তার মৃত্যুর পর তার লেখা এক ডায়েরীতে এই লেখাটি পাওয়া যায়

"Dear God, i promise i will never waste my food no matter how bad it can taste and how full i may be. I pray that He will protect this little child, guide and deliver her away from her misery. I pray that we will be more sensative towards the world around us and not be blinded by our own selfish nature and interests. I hope this picture will always serve as a reminder to us that how fortunate we are and that we must never ever take things for granted."

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ২:১৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


"যে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে এই দেশেরই ১৫ লক্ষ মানুষ মারা গেছে খাদ্যের অভাবে। "

-১৯৭৪ সালে ১৫ লক্ষ লোক মারা গিয়েছিল? আপনি অংক মংক কিছু বুঝেন?

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ২:৩৩

প্রফেসর সাহেব বলেছেন: তথ্যসূত্র :উইকিপিডিয়া

২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ২:৪৪

মুশি-১৯৯৪ বলেছেন:
কার্ল মার্কস ১৮১৩ সালকেই সাম্রাজ্যবাদের সূচনাকাল বলেছিলেন।
কারন এ সনেই ভারতের বাজারে ব্রিটেনের কারখানায় তৈরি সকল পণ্যের প্রবেশাধিকার অবাধ করে দেওয়া হয়।
আমাদের প্রথমে ‘স্বাধীন বাণিজ্যের সাম্রাজ্যবাদ’ থামাতে হবে ।

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ ভোর ৫:০১

প্রফেসর সাহেব বলেছেন: হুম, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৩:০৫

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালই তো হিসেব কষে সেকেন্ডে খাদ্যাভাবে মরার হিসেব বের করে দিলেন, খুব দুঃখজনক।
তবে সুখের কথা হচ্ছে যে দেশে একবছরে ১৫ লক্ষ্য লোক মারা গেছে সে দেশে এখন বছরে একজন মানুষও খাদ্যাভাবে মারা যায় না!! আমি আপাতত দেখিনি আমাদের দেশের কোন খবরে যে খাদ্যাভাবে কেউ মারা গেছেন।
তবে খাদ্য অপচয়ে আমাদের দেশ বর্তমানে বিশ্বে এক নম্বর হতে পারে।

ভালো লিখেছেন, পনেরো লক্ষের সাথে বর্তমান হিসেবটাও যদি কষ্ট করে তুলে দিতেন আরো ভালো লাগতো।

শুভকামনা জানবেন।

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ ভোর ৫:০৫

প্রফেসর সাহেব বলেছেন: ঠিক বলেছেন এখন আর দেশে কেউ না খেয়ে মারা যায়না। এটা সুখের খবরই বটে।মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: দুঃখজনক।
বাংলাদেশে কত মানুষ খাদ্যের অভাবে মারা যায়?

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:১০

প্রফেসর সাহেব বলেছেন: আসলেই,আমার মনে হয় এখন আর বাংলাদেশে না খেয়ে কেও মারা যায়না, তবে অপুষ্টিতে অনেকেই ভুগছে,এর সংখ্যা কিন্তু কম না

৫| ০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:১৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: এই পৃথিবী অসহায়দের জন্য নয়। কী কষ্টের ছবি! এই ছবিটি যতবার দেখেছি, ততবার এই শিশুটির জন্য চোখে পানি চলে এসেছে। এমন অসহায় শিশুদের জন্য কী এই পৃথিবীতে কেউ নাই?

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:১১

প্রফেসর সাহেব বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, আপনার প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নাই।

৬| ২১ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:১৮

ফেল কড়ি মাখ তেল বলেছেন: জনবা ভাল পোস্ট সব সময় ভাল মন্তব্য পাবেন। আসলে সত্যি কথা, যুদ্ধপিরিত ক্ষুধার্ত শিশুদের হাহাকার দেখলে কোন মানুশ এভাবে খাবার নস্ট করতো পারতো নাহ।

২৯ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:২৬

প্রফেসর সাহেব বলেছেন: সহমত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.