![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যের জন্য সত্যকে অনুভব করার চেষ্টা করি।
না! এবার না লিখে, আর পারলাম না। হাজারো ব্যস্ততার মধ্যে বার বার লিখতে ইচ্ছা করছিল। কিন্তু সময়ের অভাবে পারছিলাম না। কিন্তু এবার যা ঘটলো তাতে না লিখলে নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না।
পাঠকগণ নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, বিগত পিএসসি, জেএসসি,এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ফাঁসের মহোৎসবের কথা। তারসাথে চলেছে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দেখেও না দেখার ভান। যা নিয়ে জনপ্রিয় লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারও প্রশ্ন তুলেছেন (স্যারের মতামত জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন)। কিন্তু এবার নিজ চোখে যা দেখলাম তা নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না আর তা বর্ণনা করলে পাঠক বিশ্বাস করবেন কি না, জানি না।
আমার রুমমেটের ছোটভাই। এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে ঢাকায় এসেছে। আমার পাশেই আছে প্রায় একমাস। আমার রুমমেট তার ছোটভাইয়ের পড়াশোনার বেহালদশা নিয়ে খুবই চিন্তিত। তাই তিনি আমাকে দায়িত্ব দিলেন তার পড়াশুনার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে।
আমি তাকে তৃতীয় শ্রেণির একটি ইংরেজী গ্রামার বই পড়তে দিলাম। দু’দিন পর সে বলল, বইটা পড়া শেষ। কিন্তু তার কাছ থেকে কোন পড়া আদায় করা সম্ভব হয়নি। তাকে দু’দিন Person পড়ালাম। পারছিল না। তাই তাকে আবারও Person পড়াতে গিয়ে দেখি I, We, You, They, Them –এর অর্থ পারছে না। অর্থ পড়ালাম। কয়েকদিন পরও সে এই শব্দগুলোর অর্থ বলতে পারছিল না। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ভাগ্নেকে ৫ মিনিটে যা শেখাতে পেরেছিলাম, তাকে দু’দিনেও তা শেখাতে পারিনি।
তার ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে জিজ্ঞাস করলাম, তার ইচ্ছা সে কোন এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ-তে পড়াশুনা করবে। আমি তাকে বললাম ‘স্বপ্ন দেখা অপরাধ না। তবে আমাদের সাধ্যের বাইরে কোন স্বপ্ন দেখা ঠিক নয়। কারণ, যেখানে সফলতার সম্ভবনা ২০% থেকেও কম, সেখানে ব্যর্থ হয়ে শুধু দু:খই পেতে হবে। আর যাইহোক তোমাকে দিয়ে কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া সম্ভব হবে না। তাই তুমি অন্যকিছু কর, তাতে ভাল করতে পারবে।’
আমার সকল উপদেশই ফিকে হয়ে গেল! কারণ, সেই ছেলেটি বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ ৪.০০ পেয়েছে। রাতে বাসায় ফিরে দেখি আমার জন্য মিষ্টি নিয়ে বসে আছে। আমি আসিনি বলে ওরা কেউই মিষ্টি খায়নি। আমি মাথা নিচু করে কোনরকম মিষ্টি খেয়ে রাতের কাজ শেষ করে বিছানায় গেলাম। সে বড় বড় স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।
তাহলে, এই ছেলে কিভাবে জিপিএ ৪.০০ পেল? তার খাতা কারা মূল্যায়ণ করল? কিভাবে মূল্যায়ণ করল? আমি যতটুকু জানি খাতামূল্যায়ণের নির্দেশনাবলীতে লিখা আছে, কোন খাতায় লেখা থাকলে তাকে পাস করাতে হবে। যদি কোন ছাত্র ফেল করে, তাহলে ঐ শিক্ষককে কারণ দর্শাতে হবে কেন এই ছাত্র ফেল করল। কোন শিক্ষক যদি এক হাজার খাতা সঠিকভাবে মূল্যায়ণ করেন, তাহলে সেখানে একশ ছাত্র-ছাত্রী ফেল করবে এটাই স্বাভাবিক। পাঠক আপনারাই বলুন,কোন শিক্ষকের কি ঠেকা পড়ে আছে আলাদাভাবে একশ কারণ দর্শানোর। তার চেয়ে বরং পাস করিয়ে দিলেই তো কোন কারণ দর্শাতে হবে না। তাহলে কেন শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের ফেল করাতে যাবে? তাই তারা পার পাবার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের পাস করিয়ে দেয়।
আর শিক্ষাব্যবস্থা যদি এমনি হবে। পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস,কোন শিক্ষার্থীকে ফেল করানো যাবে না। তাহলে এতকিছু আয়োজন করে অর্থে অপচয় করার কি দরকার ছিল? যারা পরীক্ষা দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে তাদের একটি মাত্র পরীক্ষা নিয়ে (আগের দিন প্রশ্নপত্র ফাঁস করে) সার্টিফিকেট দিয়ে দিলেই হয়।
এই যে তার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন। তা কি পূরণ করা সম্ভব? যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন বা ভর্তি হবার চেষ্টা করেছেন, তারা অবগত আছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া যে কতটা কঠিন কাজ। আমাদের শিক্ষামন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা লাখো লাখো ছাত্রছাত্রীদের তাদের সামর্থের বাহিরে যে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। তা পূরণ করতে যখন তারা ব্যর্থ হবে, তখন অবস্থা কি হবে?
এই ধরণের মেধাবী হয়ে যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখছে, আমার যতটুকু পর্যবেক্ষণ তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হতে পারবে না।
যারা তুলনামুলক কম মেধাবী, আমি তাদেরকে কোন দোষ দিচ্ছি না। আমি বলছি না যে, তাদের লেখাপড়ার দরকার নেই। আমি শুধু বলছি, এরা উচ্চশিক্ষার স্বপ্নে বিভোর হয়ে থাকবে। কিন্তু চাকুরীর বাজারে এরা শুধু দেশের বেকারত্বের পাল্লাই ভারী করবে। বরং এখানে যে সময়টুকু অপচয় করবে, সেইসময়টুকু কোন কারিগরি শিক্ষা, ব্যবসা বা অন্যকোন কাজে ব্যয় করলে তারা সহজেই সফলতা পাবে। তারা বেকার থাকবে না। পরিবার, সমাজ তথা দেশের বোঝা হবে না। সার্বিক বিবেচনায় তারা দেশের উন্নয়ণের জন্য কাজ করতে পারবে।
প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা না পাওয়ার কারণে এসকল স্বপ্নবিভোর ছাত্র-ছাত্রীদের যখন স্বপ্ন ভাঙ্গবে, তখন আর নতুন করে কোন স্বপ্ন দেখার সুযোগ থাকবে না। এদের মধ্যে যারা টাকার জোরে সার্টিফিকেট অর্জন করবে, তারা টাকা দিয়ে চাকুরী নিবে। আর এরা কোন চাকুরীতে ঢুকলে দূর্নীতির সকল রেকর্ড ভাঙ্গবে, কোন সন্দেহ নেই। দেশকে অজানা অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাবে।
যেসকল দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সাময়িক বাহবা পাওয়ার জন্য অর্থাৎ পাশের হার বৃদ্ধি তথা শিক্ষা ক্ষেত্রে সফলতা দেখানোর চেষ্টা করছেন, তারা যে, জাতির কত বড় ক্ষতি করছেন; তা পরবর্তীতে বুঝা যাবে। দেশ সার্টিফিকেটধারীদের দিয়ে ভরে যাবে। কিন্তু এদের মধ্যে দেশপ্রেম, সৃজনশীলতা বলতে কিছুই থাকবে না।
অতএব, আমাদের সকলের নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে এবং উত্তরপত্র সঠিকভাবে মূল্যায়ণের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। যাতে দায়িত্বশীল মহল সাধারণ মানুষের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়।
১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:৪৮
বিষণ্ন মন বলেছেন: আমার পোস্ট পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
২| ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১৬
উড়োজাহাজ বলেছেন: কোন শিক্ষকের কি ঠেকা পড়ে আছে আলাদাভাবে একশ কারণ দর্শানোর। তার চেয়ে বরং পাস করিয়ে দিলেই তো কোন কারণ দর্শাতে হবে না। তাহলে কেন শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের ফেল করাতে যাবে? তাই তারা পার পাবার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের পাস করিয়ে দেয়।
১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:৪৯
বিষণ্ন মন বলেছেন: সহমতের জন্য ধন্যবাদ।
৩| ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৩৬
তাহাসিন আহমেদ বলেছেন: ভালো বিশ্লেষণ
৪| ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৫৫
সুমন কর বলেছেন: ভালো বলেছেন। সহমত। আজকাল কোন খারাপ ছাত্র-ছাত্রী নাই। সবাই জিনিয়াস।
কিন্তু একই পোস্ট ৪বার কেন?
৫| ২০ শে মে, ২০১৪ ভোর ৫:৫২
মেহেদী হাসান ডালিম বলেছেন: বাংলাদেশের ভবিষ্যত এখন সরকারের কাছে জিম্মি। আপনার কথাগুলো যথার্থ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:০৫
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট! ভালো লিখেছেন।