নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কুম্ভকর্ণের ঘুমের দেশে দানবেরা আছে জেগে

লেখক নাম : সাইইদ উজ্জ্বল

সাঈদ উজ্জল

সাইইদ উজ্জ্বল\nলিটলম্যাগ কর্মী

সাঈদ উজ্জল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইলিশ মাছ এবং বাঙালি হওয়ার বাসনা

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭

ফ্রিজের ভেতর ভাত ভিজিয়ে রেখে সকালে ইলিশ মাছ দিয়ে ভুড়িভোজনের মাধ্যমে বাঙালি হওয়ার বাসনা শহুরে মধ্যবিত্তের আবিস্কার। এ শ্রেণির লোকেদের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান শুরু হয় পান্তাভাত-ইলিশ খাওয়ার মধ্য দিয়ে। অন্তত এক টুকরো ইলিশ না হলে এদের বৈশাখের অনুষ্ঠান মাটি হয়ে যাবে।



পাশ্চাত্যের অনুকরণে অতি-আধুনিক হওয়ার প্রচেষ্ঠায় প্রতিনিয়ত আমাদের পশ্চাৎদেশ ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। তাই এই একটি দিন আমরা বাঙালি হওয়ার নব আবিস্কারে পুলকিত হই। অমৌসুমেরকালে এখন এক হালি ইলিশের দাম ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত ওঠেছে। কোরবানির গরুর মতো ইলিশ মাছও দর্শনীয় জিনিসে পরিনত হয়েছে। এটা কিনে এখন কেউ ব্যাগের মধ্যে রাখেন না। হাতে ঝুলিয়ে বীরের বেশে বাড়ি ফিরেন। দাম যতো বেশিই হোক না কেন ইলিশ কেনার মধ্যেও যে একটা বাহাদুরি ব্যাপার আছে এটা এদের হাসি মুখ দেখলেই বুঝা যায়।



বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষই নিম্নমধ্যবিত্ত। এরা গ্রামে বাস করে। একসময় এদের বেশিরভাগ লোকেরই সকালের খাবার ছিল পান্তাভাতের সাথে পেঁয়াজ ও মরিচ। কখনো কখনো সকালে গরম ভাতের সাথে শুঁটকি অথবা আলু অথবা বেগুন পুড়িয়ে তৈরী ভর্তা। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে খাদ্যভ্যাসের হয়তো পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু এদর সংখ্যা এখনো নেহায়েত কম নয়।



পান্তা-ইলিশকে মধ্যবিত্ত তাদের জাতে ওঠার স্মারক হিসেবে সুকৌশলে ব্যবহার করছে। রমনাবটমূল কেন্দ্রিক যে মধ্যবিত্ত শ্রেণি প্রচন্ড গরমে বৈশাখি পোষাক পড়ে হাত ধরাধরি করে রাজপথে শরীক হয় তারা তার নিম্ন মধ্যবিত্তের ইতিহাসকে স্মরণে রেখেও ভুলে যেতে চায়। সে কাঁচামরিচ পেঁয়াজকে ভুলে যেতে চায় অথবা এটাকে নিম্নশেণির হিসেবে গন্য করে তার জাতে ওঠার ইচ্ছাকে চরিতার্থ করতে চায়। এই আকাংখাকে সলজ্জভাবে ধারণকরে শহরে বসবাসকারী গামেন্টর্সকমীসহ নিন্মবিত্তরাও এতে শরীক হয়। চড়াদামে ইলিশ না কিনতে পারলে সে জাটকা দিয়ে হলেও বাঙালি হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে চায় না।



ইলিশ মাছ যেহেতু দূলর্ভ এবং দামী সেহেতু এটি খেলে উচ্চবিত্তের মান-সম্মান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও খুব কম। সেতো আরা নিম্মবিত্তের মতো পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে ভাত খেতে পারে না! তার অবস্থান জারি রেখেই সে বাঙালি থাকতে পারে। নিম্নবিত্তের বড় হওয়ার আকাংখা এবং উচ্চবিত্তের নিজের অবস্থান জারি রাখার সংযোগসেতু হলো এই মহার্ঘ্য ইলিশ।

তাই বেঁচে থাকুক আমাদের বাঙালিত্ব বেঁচে থাকুক ইলিশ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২২

কসমিক- ট্রাভেলার বলেছেন:








ভাই ইলিশের যে দাম তাতে পান্তা- ইলিশের বদলে
এখন থেকে
পান্তাপিয়া অর্থাৎ তেলাপিয়া খাওয়া ভালো



সহমত

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩২

পৌরাণিক খড়গ বলেছেন: বর্তমানে শ্রেণি আর তিনটি নেই। দুটি হয়ে গেছে। উচ্চবিত্ত আর নিম্নবিত্ত। মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষগুলো এই দুইটার একটার মাঝে মিশে গেছে। ধনীর গরিবের মত জীবন যাপন প্রচেষ্টাও এক ধরণের বিলাসিতা। বেঁচে থাক পহেলা বৈশাখ বেঁচে থাক পান্তা-ইলিশ।

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

পৌরাণিক খড়গ বলেছেন: বর্তমানে শ্রেণি আর তিনটি নেই। দুটি হয়ে গেছে। উচ্চবিত্ত আর নিম্নবিত্ত। মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষগুলো এই দুইটার একটার মাঝে মিশে গেছে। ধনীর গরিবের মত জীবন যাপন প্রচেষ্টাও এক ধরণের বিলাসিতা। বেঁচে থাক পহেলা বৈশাখ বেঁচে থাক পান্তা-ইলিশ।

৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

পৌরাণিক খড়গ বলেছেন: বর্তমানে শ্রেণি আর তিনটি নেই। দুটি হয়ে গেছে। উচ্চবিত্ত আর নিম্নবিত্ত। মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষগুলো এই দুইটার একটার মাঝে মিশে গেছে। ধনীর গরিবের মত জীবন যাপন প্রচেষ্টাও এক ধরণের বিলাসিতা। বেঁচে থাক পহেলা বৈশাখ বেঁচে থাক পান্তা-ইলিশ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.