নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বেস্ত সময়ের ফাঁকে যারা আমার ব্লগ পরেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ
উৎসব গুলো যখন আসে তখন বুঝা যায় আসলেই বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হইসে তা না হইলে নববর্ষে মানুষ এই ভাবে দুই হাতে পয়সা খরচ করে কি ভাবে ?দশ বছর আগেও তো মানুষ এই ভাবে নববর্ষের অনুষ্ঠান করতো না এখন যতো সময় যাচ্ছে অবস্থা ততো ভয়াবহ হচ্ছে। ফ্যাশন হাউস গুলাতে ঢুকলে কোনো কাপড় খুইজা পাওয়া যায় না সব নাকি কিনা শেষ কইরা ফালায় পাবলিক।সারা বছর ফ্যাশন হাউস বা বুটিক এর দোকান গুলো যা কাপড় বিক্রি করে বৈশাখ উপলক্ষে তার ২৫ থেকে ৩০ ভাগ বিক্রি হয়। শুধু শাড়ি বা কাপড় না এর সঙ্গে চুড়ি, মালা, দুল, মাটির তৈরি পণ্য, কুটিরশিল্পসহ নানা পণ্য বিক্রির টার্গেটও ছাড়িয়ে যায়। পন্থা ইলিশ নিয়া তো এই বারেও কম নাটক হইলো না চার টা মাঝারি সাইজের ইলিশ নাকি ২৪,০০০ টাকা এই টাকা দিয়া তো আস্ত একটা গরু কিনা আনা যায় এমনও শুনলাম পয়সায় কুলায় না দেইখা অনেকে নাকি ইলিশ কিনার জন্য মাওয়া ঘাট পর্যন্ত গেছে। যদিও শেষের দিকে ইলিশ মাছ বিক্রেতারা ভালই ধরা খাইসে।বিভিন্ন হোটেল আর রেস্টুরেন্ট দেখলাম ২ বা ৩ টা ভর্তার সাথে ইলিশ মাছ দিয়া ভালই ব্যবসা করছে ৩০০ টাকা থেকা শুরু কইরা ৩০০০ টাকা দিয়া এই খাবার বিক্রি করছে। এমনকি ৫ তারকা হোটেল গুলো পর্যন্ত বাদ যায় নি।ফুল ব্যবসায়ী মালিক সমিতি এই সময়ে কোটি টাকার ফুল বিক্রির টাগেট নিয়া নামে এমন কি এইবার নাকি শুনলাম গামসাও বিক্রি হইসে কয়েক কোটি টাকার উপরে।সরকার এই বছর প্রথম ২১ লাখ সরকারি কর্মচারী দের জন্য 'বাংলা নববর্ষ ভাতা' হিসাবে ৫৪০ কোটি টাকা খরচ করলো। এটা থেকা স্পষ্ট বুঝা যাইতাছে সামনের বছর গুলোতে নববর্ষের অনুষ্ঠান হয়তো আরো বৃহত আকার ধারণ করবে কিন্তু দুঃখের বিষয় আসল নববর্ষের অনুষ্ঠান যেই উদ্দেশ্য নিয়া শুরু হইসিলো তার সাথে হয়তো এর আর কোনো মিলই থাকবে না।বাংলা বছর গণনা শুরু হয় মূলত বাদশাহ আকবরের সময় থেকে তখন কৃষকরা চাদ তারা ও সূর্যের অবস্থান দেখে সময় আন্দাজ করতো আর বাদশারা সময়ের হিসাব রাখতেন আরবী সন হিসাবে যার ফলে কর আদায়ে সমস্যা হচ্ছিলো তাই সেই সমস্যা সমাধানের জন্য বাদশা আকবর বাংলা সনের প্রচলন শুরু করেন।পরবর্তি সময়ে পুরান ঢাকার দোকান গুলা এই রেওয়াজ ধরে রাখার চেষ্ঠা করে তারা বাংলা বছরের প্রথম দিন নতুন হাল খাতা খুলতো এমনকি যাদের কাছ থেকা টাকা পাওনা থাকতো তারাও এই দিন টাকা শোধ করতে দোকান গুলোতে আসতো।সবাইকে মিষ্টি খৈ লাড্ডু সন্দেশ দিয়া আপ্পায়ন করানো হতো স্বাভাবিক ভাবেই একটা উৎসব আমেজ থাকতো নববর্ষ কে কেন্দ্র করে।পরবর্তি সময়ে রমনার বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতের গানের অনুষ্ঠান ও চারুকলার মঙ্গল সভা যাত্রা একে আরো আকর্ষনীয় করে তুলে।যেহেতু হাল খাতার রং লাল আর সাদা তাই এর সাথে মিল রেখে কাপড় গুলো লাল সাদার মিশ্রনে তৈরী করা হতো।ফাল্গুনে হলুদ কাপড় ভালবাসা দিবসে লাল কাপড় বা ২১ শে ফেব্রুয়ারী তে সবাই শোকের প্রকাশ করতে কালো কাপড় পরে ঠিক ওই রকম লাল সাদা ছারা নববর্ষের কাপড় কল্পনা করা যেতো না এখন তো দেখি সব কিছুই উল্টা পাল্টা ৪০ ডিগ্রী গরমেও নববর্ষের দিন মানুষ কালো কাপড় পইরা ঘুরে সব চে বেশি দুঃখ লাগে যখন দেখি বাংলা নববর্ষের দিন ট্রাক এর পিছে খালি গায়ে লাফাইতে লাফাইতে স্পিকার দিয়া উচ্চ সুরে হিন্দি গান বাজায়া ঘুইরা বেড়ায় তখন নিজের কাছে মনে হয় লজ্জায় মাটির তলায় ঢুইকা যাই। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো এক সময় নিজেদের সংস্কৃতি বইলা আর হয়তো কিছুই থাকবে না।