নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্ধচোখে তাকাই, চোখাচোখি হয়.... দেখা হয়না কখনো, কোনদিন......

স্বপ্ন সতীর্থ

কাউকে না কাউকে হেরে যেতে হয়, নয়তো বিজয়ী বলে কিছু থাকত না......

স্বপ্ন সতীর্থ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টি বৈরাগী

৩১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৪২

পকেটে হাত দিলাম ! মানিব্যাগ পাচ্ছি না। স্পষ্ট মনে আছে মানিব্যাগ নিয়ে বের হয়েছি । পথে এক ঠোঙা ঝালমুড়িও খেলাম। সবকটা পকেট হাতড়ালাম । নেই। বুড়ো রিকশাওয়ালা সরু চোখে তাকিয়ে আছে। নীলক্ষেত থেকে কমলাপুর এসেছি। অনেক দরাদরির পর প্রায় জোড় করেই ৬০ টাকায় এই রিকশায় চড়েছি।
চারটার মত বাজে।আকাশের দিকে তাকালাম। বৃষ্টি আসবে । কমলাপুর এসেছি বাবরের কাছে। বেশ কিছু টাকা পাই ওর কাছে।যদিও পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।আক্ষরিক অর্থেই বাবর আমার নেংটো কালের বন্ধু। মাস্টার্স করে চাকরি খুঁজছে।হয়ে হয়েও কোন চাকরি হচ্ছেনা। টাকা না পাওয়া গেলেও অন্তত রিকশা ভাড়াটা পাবার আশা আছে।
রিকশাওয়ালার দিকে তাকালাম। চুল দাড়ি সব পাকা।মুখটা স্বাভাবিক রেখে বললাম, 'চাচা মানিব্যাগ খোয়া গেছে।একটু দাঁড়ান আমি এখনই এনে দিচ্ছি।' মুখটা ভোঁতা করে ডিপার্টমেন্টের কালাম স্যারের মতো বলল 'তাড়াতাড়ি আইসেন।' কালাম স্যারের আত্মীয় হয় কিনা কে জানে!
বাবর যে বাসায় থাকে সেটা তিনতলা। পুরোটাই মেসবাড়ি। বাসার গেটে বড় করে লেখা 'কোহিনূর ভবন'।ভবনের অবস্থা খুবই নড়বড়ে। ছোট একটা ভূমিকম্পের জন্য অপেক্ষা করে আছে। বাসাটার আরো একটা নাজুক ব্যেযাপার আছে।যে বাসার নাম মেয়েদের নামে সে বাসায় থাকে কেবল কতগুলো ব্যাচেলর। বাবরের অবশ্য এ নিয়ে একটা ব্যাখ্যা আছে। ওর মায়ের নাম ছিল কোহিনূর। ছোটবেলায় মাকে খুব বেশিদিন না পেলেও ভাগ্যক্রমে এই বাসাটা পেয়ে গেছে।সে নাকি এখনো তার মায়ের পেটেই এখনো তার বসবাস। দারোয়ান চাচাকে একটা মুচকি হাসি দিয়ে আমি ঢুকে পড়লাম বাবরের মায়ের পেটে।
বাবর মেসে নেই।মেসে নেই যে তাও শুধু না গত তিনদিন ধরে তার কোন খবর নেই। খবর নেবার অবশ্য মানুষজন খুব একটা নেই।ঠিক সময়ে তার দেখা ঠিকই পাওয়া যাবে। তার রুমমেট বজলুর কাছ থেকে একশ টাকা নিলাম।
রিকশাওয়ালার মধ্যে কোন ভাবান্তর হলো না চল্লিশ টাকা বেশি ভাড়া পেয়ে। যাবার সময় একবার তাকালো না পর্যন্ত।আকাশ কালো হতে শুরু করেছে। আমার গায়ে নীল পাঞ্জাবী। নিজেকে এখন আকাশ মনে হচ্ছে। রাস্তায় এসে নামলাম। মানুষের খুব তাড়াহুড়া।
মগবাজারের দিকে হাঁটা শুরু করলাম। যখন তখন বৃষ্টি আসতে পারে। বৃষ্টি আসলে রিকশার চেয়ে প্রাইভেটকারের মধ্যে ব্যস্ততা বেশি দেখা যায়। শাঁ শাঁ করে ছুটে যেতে চায় সব কিছু মাড়িয়ে। আমার পকেটে কিছুই নেই। ঝাড়া হাত পা। এ মাসে চলার মত টাকা পয়সাও নেই। মানিব্যাগে নয়শ বিরাশি টাকা ছিল সব মিলিয়ে। টিউসনির টাকাটা পেলে হয়।
বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। রাস্তায় জ্যাম লেগে গেছে। মাথাব্যথা করছে প্রচণ্ড।মাঝে মাঝে খুব মাথা ব্যথা হয়। কেমন যেন টলছি আমি। চোখে ঝাপসা দেখছি। বৃষ্টি নামছে। তুমুল বৃষ্টি।রাস্তা পাড় হচ্ছি আমি।জ্যাম ছুটে গেছে। সামনের দিক থেকে তুমুল বেগে ধেয়ে আসছে একটি ট্রাক। টলতে টলতে পড়ে যাচ্ছি আমি.............

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩৪

রেজওয়ান করিম বলেছেন: ভালো লিখেছেন

০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:১৩

স্বপ্ন সতীর্থ বলেছেন: ধন্যবাদ।অশেষ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.