নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্ধচোখে তাকাই, চোখাচোখি হয়.... দেখা হয়না কখনো, কোনদিন......

স্বপ্ন সতীর্থ

কাউকে না কাউকে হেরে যেতে হয়, নয়তো বিজয়ী বলে কিছু থাকত না......

স্বপ্ন সতীর্থ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার সুখেরকাঁটা

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২১

চৈত্রের শেষ দিন। পিঠ চিড়বিড় করা রোদে ঘামতে ঘামতে হাঁটছি। আকাশে তাকানো যায় না।চোখ ঝলসে যাবার জোগাড়। আবহাওয়া অফিস রেকর্ড ভেঙে ঠিকঠাক তাপমাত্রার ভবিষ্যৎ বাণী করছে গত কদিন ধরেই। টিএসসির দিকে যাচ্ছি আমি। কার্জন হল থেকে টিএসসি দূরের পথ না মোটেও। তবু মনে হচ্ছে এই পথ যেতে আমার একযুগ লেগে যাবে।
পুষ্টি ইন্সটিটিউট এর গেট লাগোয়া একটা 'ডেউয়া ' গাছ আছে। ওটার নিচে একটা পাকা বেঞ্চ আছে। আমি বসলাম। খুবই ক্লান্তি লাগছে।চোখ বুঁজে আসছে ঘুমে।
একটা রিকশা থামল আমার সামনে। শাড়ি পরা একটা মেয়ে বসে আছে রিকশায়। হাত ভর্তি নীল চুড়ি।টুংটাং শব্দ হচ্ছে কাঁচের চুড়ি থেকে। শাড়ির রঙও নীল। ঘন নীল। তার উপর নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম। আমি অপ্সরী দেখিনি। সম্ভবত এমনই হবে স্বর্গের অপ্সরীরা।
আমি চোখ ফিরিয়ে নিলাম। জগতের কঠিন সৌন্দর্যগুলোর একটা বড় ধরণের খুঁত থাকে। এই মেয়েটা সত্যিই অনেক সুন্দর। ওর খুঁতটা আমার চোখে পড়লে মন খারাপ হয়ে যাবে। ক্লান্তিকর এই গরম দুপুর বেলায় মন খারাপ করার কোন মানে হয় না।
- 'এই যে শুনছেন?' রিনিঝিনি করে বেজে উঠল একটা কন্ঠ।
আমি ফিরে তাকালাম। মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হাতে একটা একশ টাকার নোট।
-"এটার খুচরো হবে আপনার কাছে?"
সাকুল্যে আমার কাছে আছেই ৩২ টাকা। তারপরও মানিব্যাগ খুলে খুঁজে দেখলাম।
- " নাহ, হবেনা।" বললাম। একটা শুকনো হাসি ঠোঁটের কোণে জেগে উঠলো মেয়েটার।
অসহায়ের মত এদিক ওদিক তাকাচ্ছে মেয়েটা। রিকশাওয়ালাও মনে হয় ভালই বিপদে পড়েছে। এই সময়টা হচ্ছে রিকশা বদলের সময়। যারা একবেলা রিকশা চালায় তারা দুপুরবেলা রিকশা জমা দিয়ে ফেলে। রিকশাওয়ালা করুণ চোখে তাকাচ্ছে। কোন খালি রিকশাও আসছেনা।
-"আপনার ভাড়া কত?" রিকশাওয়ালাকে বললাম।
-"২৫ ট্যাহা মামা।"
আমি ২৫ টাকা বের করে দিলাম। আর সাত টাকা আছে মানিব্যাগে। রিকশাওয়ালা প্যাডেল মারতে মারতে চলে গেল।
আমার দিকে তাকিয়ে আছে মেয়েটি।
- " ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না। একটু অপেক্ষা করলে আমি ভেতরে গিয়ে কারো কাছ থেকে আপনার টাকাটা এনে দিই!"
আমি মৃদু হাসলাম। মেয়েটি ভেতরে চলে গেল। রাস্তাটা হঠাৎ ফাঁকা হয়ে গেছে। কেমন একটা শুনসান ঘোরলাগা পরিবেশ। শান্ত আর নির্জীব বাতাস।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। হাঁটতে শুরু করলাম টিএসসির দিকে। আকাশটাকে কেমন অসহায় অসহায় লাগছে। মাঝে মাঝে আকাশে কোন মেঘ না থাকলে অসহায় দেখায় খুব।
টিএসসিতে চলে এসেছি। মাঠের ঘাসের মধ্যে রোদ বিছিয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে কোন একটা প্রাণী ঘাসের ডগায় কিলবিল কিলবিল করছে। বাতাসে ঘাসগুলো কাঁপছে। আমি নাগকেশর গাছের নিচে গিয়ে বসলাম। কেমন শান্ত আর ঠান্ডা এই জায়গাটা। আমার হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করছে। প্রচন্ড বৃষ্টি নামুক। সব ধুয়ে মুছে যাক। আমি চোখ বন্ধ করলাম। অপেক্ষা করছি বৃষ্টির জন্য। আকাশ উথাল পাতাল করে বৃষ্টি নামুক.. আমি বসে আছি.. ভিজব। আয় বৃষ্টি...

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩১

চাঁদগাজী বলেছেন:



ইলিশের কাঁটা হয়তো।

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:১৮

স্বপ্ন সতীর্থ বলেছেন: কি করে বুঝলেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.