নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্ধচোখে তাকাই, চোখাচোখি হয়.... দেখা হয়না কখনো, কোনদিন......

স্বপ্ন সতীর্থ

কাউকে না কাউকে হেরে যেতে হয়, নয়তো বিজয়ী বলে কিছু থাকত না......

স্বপ্ন সতীর্থ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ও বিলাসী দুঃখ

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১

একটু আগে বৃষ্টি হয়েছে। তুমুল বৃষ্টি। মুহূর্তের মধ্যে ভিজে একসা। বৃষ্টি থামার পাঁচ মিনিটের মধ্যে আবার রোদ উঠেছে কড়া রোদ। ভেজা রাস্তায় পিচের উপর রোদের তীর্যক প্রতিফলন চোখে লাগছে। হাঁটছি ভিসি চত্বর দিয়ে। টিএসসি যাই। ইদানীং হঠাৎ হঠাৎ রোদ বৃষ্টির খেলা ভালোই দেখা যাচ্ছে। ভাদ্র মাসের তাল পাকা গরমের তেমন একটা দেখা নেই। আকাশে তাকালাম। এককোণে এখনো একটা কালো মেঘ। বাকী আকাশ মোটামুটি নীল।
এরকম দিনগুলোতে আমি ঘুরতে যেতাম প্রিয় কংস নদের সেই বাঁকটাতে। রাস্তার ইউলুপের মতন একটা মোড় নিয়েছে ছোট নদীটা। একটা চরের মতো বলা যায় জায়গাটাকে। পুরো জায়গাটার এ মাথা থেকে ও মাথা বিশাল একটা মাটির পায়ে হাঁটা পথ। ঘাস বিছানো সবুজ পথ। বৃষ্টি হলে সবুজে ঝকমক করে উঠে ঘাসগুলো। প্রায় পুরোটা পথ জুড়ে অসংখ্য বড়ই গাছ। রাস্তার একপাশে ধানী জমি। অন্য পাশটা তুলনামূলক উঁচু। সেখানটায় বিভিন্ন রবি শষ্যের আবাদ । বিশেষ করে টমেটো, কাঁচা মরিচ , ধনে।
আমার ছেলেবেলার অনেকটা সময় কেটেছে এই বাঁকে, এই রাস্তায় , এই গাছগুলোর শিকড়ে দোল খেতে খেতে। স্কুল থেকে খুব কাছেই ছিল জায়গাটা। প্রায় প্রতিদিনই টিফিন হলে ওখানটায় ছুটে যেতাম। কখনো একা, কখনো দলবেঁধে। বড়ইয়ের মৌসুম হলেতো কথাই নেই। সবার হাতেই বড়ই ভর্তা করার জন্য বাঁশ কেটে বানানো ঘুটনি থাকতো। বাড়ি থেকে লবন নিয়ে আসতাম সবাই। মরিচ ধনে পাতা, টমেটো বড়ই সবই এখান থেকে পেতাম। জমির মালিকরা কেউ কিছু বলতনা। অনেক জমি , কত খেয়ে শেষ করবো।
যখন খুব মন খারাপ থাকতো আমি ঘাসের মধ্যে শুয়ে আকাশ দেখতাম, নদীর জলের আন্দোলন দেখতাম। নৌকার বৈঠার ক্যারৎ ক্যারাৎ শব্দটার অন্য রকম একটা আনন্দ পেতাম।
নদীতে ভেসে বেড়ানো হাঁস দেখে নিজেকে কেমন অগোছালো লাগতো। একবার এক নাদুস নুদুস হাঁসের ভাবগম্ভীর হেলেদুলে চলা দেখে আমার কণ্ঠে জেগেছিল করুণ প্যাঁক প্যাঁক ধ্বণির বুদ্বুদ। তারপর একটিন এক চড়ুইয়ের ধূলোতে হুটোপুটির দৃশ্য দেখে কেমন আকাশ সমান শূন্যতায় কেঁদেছিলাম অজান্তেই। মাঝে মাঝে খুব রাগ করে বাড়ি থেকে পালিয়ে ওখানে বসে থাকতাম। শুয়ে শুয়ে আকাশ দেতাম । সারারাত তারা দেখতাম। কেমন নৈর্ব্যক্তিক প্রাচুর্যতা অনুভব করতাম। আবার যখন ভোর হতো ঘাসের ডগায় শিশির জমে থাকত। আমি হাঁটতাম আর আমার ভিজে যাওয়া পায়ের দিকে তাকিয়ে নিজেকে পবিত্র মানুষ মনে হতো...এই ইট কাঠের শহরে এসব স্মৃতি বড় তাড়না দেয়। মনকে কেমন ডুবিয়ে রাখে ভুলে। আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে । আমি রাস্তা পাড় হচ্ছি। শৈশব হারানোর বেদনা নিয়ে । এই বৃষ্টিতে ভেজার সাথে কত ফারাক আমার কংস নদের ববাঁকের সেই হিরণ্ময় মুহূর্তগুলোর।
আচ্ছা বৃষ্টিটা এতো নোনতা লাগছে কেন???.....

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এই বৃষ্টিতে ভেজার সাথে কত ফারাক আমার কংস নদের ববাঁকের সেই হিরণ্ময় মুহূর্তগুলোর।

গভীর অনুভূতি গুলো ছুঁয়ে গেল..

++++

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৫

নাসরীন খান বলেছেন: ভাল লাগল।

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৯

ফাহিমা বলেছেন: চমৎকার+++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.