নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কাউকে না কাউকে হেরে যেতে হয়, নয়তো বিজয়ী বলে কিছু থাকত না......
তারপর? সব থেমে যাবে, ফুরিয়ে যাবে সব?
আসলে কিছুই হবে না। এমনকি একটা গাছের পাতাও টের পাবে না পৃথিবীতে আমি ছিলাম। আমার জন্য কিছুই আটকে থাকবে না। যেমন থেমে নেই আমি থাকাতেই। এমনই হয়। এমনটাই সত্য। চলে গেলে যা ক্ষত হয় সেটা সাময়িক। কিংবা অনেকখানি ভান। ঘুম ভাঙার পর থেকে আমার কেবলই এমন অনুভব ডুকরে ডুকরে উঠছে ভেতরে। কেমন একটা শূন্যতা এসে থেমে আছে গলা অবধি। হাহাকার। কেন এমন লাগে? পৃথিবীর তাবৎ দুঃখ তো না পাওয়া থেকেই আসে। পেয়ে গেলেই আর কোন দুঃখ থাকে না মানুষের। নাকি পাওয়ার পরও জমা হয় কোন নিরেট বেদনা? আমি জানি না আসলে। আমি না পাওয়াদের দলে।
সকালে বেশ রোদ দেখেই বের হয়েছিলাম বাসা থেকে। এখন আকাশ মেঘলা। একদম কাকঘাড় রঙ। এখন তখন নামে অবস্থা। বসে আছি বাসে। মৎস্য ভবনের মোড়ে জ্যামে গিট্টু লেগে আছে মনে হয়। মিনিট বিশেক হবে এখানে বসে আছি। অবশ্য অন্য পাশের রাস্তা দিয়ে সাঁই সাঁই করে ছুটে যাচ্ছে গাড়ি। আমার না বলতে পারা অনুভব যদি এইভাবে ছুটে যেত আমার থেকে।
গত দুইদিন ধরে এই বাসে অবশ্য একটা সুন্দর ব্যাপার ঘটছে। আজকে একটু বেশি সুন্দরই ঘটে গেছে। একজন মানুষের সাথে বাসে বেশ কয়েকদিন দেখা হয়েছে। দেখা বলতে চোখাচোখি আরকি। উনি একটা দারুণ মুচকি হাসি ঝুলিয়ে রাখেন ঠোঁটের ডগায়। আমার সাথে চোখাচোখি হলেই হাসিটা পেয়েছি আমি। অচেনা একজন সুন্দরী তরুণীর চোখে চোখ রেখে হাসার মতন অত সাহস আমার নাই। তাই সেই হাসি আর ফেরত দেই নি আমি। আমরা একই স্টপেজ থেকে উঠি প্রতিদিন। উনার একটা ব্যাপার বেশ ভালো লাগে। বাসের মধ্যে বই পড়েন। এই অভ্যাসটা আমার সাথে মিলে গেছে। আজকে কাকতালীয়ভাবে আমরা পাশাপাশি বসে যাচ্ছি। উনি একটা বই পড়ছেন। আমিও এতক্ষণ পড়ছিলাম । অদ্ভুত সুন্দর লাগলো এইটুকু আমার কাছে। এই ব্যাপারটা বাসের খুব পরিচিত দৃশ্য যদি হতো দারুণ হতো না?
বাইরে বেশ ঝড়ো একটা হাওয়া বয়ে গেল। বেশ খানিকটা এলোমেলো ধুলো ছেয়ে গেল চারপাশে। পরক্ষণেই নামলো ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। বৃষ্টির ছাট এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে বাসের ভেতরেও। জানালা টেনে দিলাম। জানালার কাঁচে বৃষ্টির ফোঁটা দেখে আমার মধ্যে অদ্ভুত কিছু ভাবনা এলো। সেইসাথে কোত্থেকে উড়ে এলো একরাশ হাহাকার। কেবলই মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে। যাচ্ছে না ফেলছি বুঝি না আমি। ক্রমশ একটা ছোট্ট জায়গায় আবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে আমার ভুবন। প্রতিদিন একই ঘটনা, একই সব।
দশ বছরের সেই দুষ্ট ছেলেটার মতন আবার হতে ইচ্ছে করে। ফুটবল খেলতে গিয়ে পা কেটে ঘরে ফিরে মায়ের কোলে ঘুমিয়ে পড়া সেই ছেলেটার দেখা পাওয়া দরকার। সেই ছেলেটার সাথে আমার আবার দেখা হোক। এক বর্ষার দিনে হালকা জ্বর গায়ে যে বাইরে বেরিয়ে প্রথম চার লাইন ছড়া লিখে খুশি হয়ে দৌড়ে বাড়ি চলে এসেছিলো। এসেই খাতা কলম নিয়ে বসে পড়েছিলো। সেই ছেলেটার আত্মবিশ্বাসটা দরকার আমার। কিংবা রাত জেগে লুকিয়ে লুকিয়ে গল্পের বই পড়ে সকালে ক্লাসে গিয়ে ঘুমানো ছেলেটার কল্পনা শক্তি দরকার আবার আমার। সেই ছেলেটা আর নেই। সেসবও নেই…
কী আবোল তাবোল লিখছি! আচ্ছা আমার এই হাহাকারের কারণ কি এইসব? লেখাটার সুর কেটে গেছে। আর লিখতে ইচ্ছে করছে না। তারচেয়ে বরং গান শুনি। কানে একটা খেয়াল ছেড়ে দিয়ে আমি বৃষ্টি দেখতে আরম্ভ করলাম। বাস চলছে, আমিও চলছি নিয়মিত গন্তব্যে। কানে বেজে চলেছে কারও ঘরে ফেরার আকুতি...
আচ্ছা এমন বাস কোথাও আছে শৈশবে নিয়ে যাবে?
কবি জসিম উদ্দিন রোড,
কমলাপুর, ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩০
২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সুন্দর লেখা।
৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৩২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সুন্দরী মেয়েটার হাসির জবাব দেয়া উচিত ছিল। মুখ দিয়ে না হেসে না হলেও চোখ দিয়ে হেসে জবাব দেয়া উচিত ছিল। চোখ দিয়েও অনেক কিছু বলা যায়।
তাই তো গান রচনা হয়েছে;
চোখ যে মনের কথা বলে
চোখে চোখ রাখা শুধু নয়
চোখের সে ভাষা বুঝতে হলে
চোখের মত চোখ থাকা চাই
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:০০
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: ভালো লিখেছেন।