![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসুন সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলি
July 11, 2011 at 2:14am
আমাদের মানবাধিকার কর্মী অথবা বুদ্ধিজীবি, সুশীল সমাজের সম্মানিত গনকে জিজ্ঞাসা- বি.এন.পির চীফ হুইপ ফারুক সাহেবের সঙ্গে পুলিশের যে ঘটনা, ফারুক সাহেব কর্তৃক সংসদ ভবন এলাকার নিয়ম ভংগ এ নিয়ে গত তিনদিন যাবৎ বেশ ভালোই বলেছেন। মানবাধিকার, গণতন্ত্র নিয়ে মুখে ফেনা তুলেছেন কেউ কেউ! কিন্তু হরতালকারীদের পেট্রোল বোমা হামলায় নাটোরে যে ছেলেটি হাসপাতালে শরীরের ৯০ ভাগ দহন নিয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে, তার গনতান্ত্রিক অধিকার কোথায়, কোথায় তার মৌলিক অধিকার। এ নিযে সাংবাদিক ভাইদের তো কোন সমালোচনা দেখছি না। বিরোধী দলীয় নেত্রীর চোখে কোথায় সেই পানি,যে পানি বাড়ি হারিয়ে দেশ ভাসিয়েছিল? কোথায় সেই টক শো’র ভাড়াটে,তথাকথিত, সুশীল সমাজ? কোথায় সেই আল্লাহর নেক বান্দারা, যারা ইসলামের ডিলার শিপ নিয়েছেণ? নাকি ধরে নেব জয়নাল সাহেব ভবিষ্যতে এদের সবাইকে দেবেন,দেখবেন! নাকি বুঝব, তেলো মাথায় তেল দেয়া লাভজনক!
আজ টেলিভিশনে একটি টক শো দেখলাম। সেখানে ইসলামী দলগুলোর আজকের হরতাল সম্পর্কে আলোচনা হচ্ছিলএমন- হরতাল করা গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে বিমৃঙ্খলা করলে প্রশাসন ব্যাবস্থা নেবে।
সংবাদে দেখলাম হরতাল কারীরা ১) পিকেটিংয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যাবহার করেছে। ২) সবাই মোটামুটি ষংঘর্ষের মেজাজেই লাঠি, বাঁশ হাতে।৩) লাঠি চালানো দেখে আমি নিশ্চিত তারা ভালো ভাবেই প্রশিক্ষিত।
আমি হরতাল পছন্দ করি না । এটা আমার গণতান্ত্রি অধিকার। যখন হরতাল আমাকে দেয়ালে চেপে ধরবে, আমি প্রতিবাদ করবো, প্রতিরোধ করবো। এটাও আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসাবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করবে। যদি জনতা স্বতস্ফুর্ত ভাবে রাষ্ট্রের অরাজকতা প্রতিরোধে এগিয়ে আসে তবে, তা কি ধর্মের নাম ভাঙ্গানোর চেয়েও গর্হিত কাজ!
হয়তো সবাই দেখেছেন, আগুন জ্বালিয়ে, রাস্তা ব্লক করে একদল মাদ্রাসা ছাত্র- তাদের মাওলানা গণ হরতাল পালন করছে পবিত্র কলেমা আওড়ে।
ইসলামের কোথায় আছে মানুষকে কষ্ট দিয়ে ধর্ম রক্ষার কথা? আর বিসমিল্লাহির রাহমানুর রাহিম এর মধ্যে যারা আল্লাহকে খুজে পায়না, তারা আদোও কি আল্লাহকে চেনে? তারা আদোও কি ইসলাম বোঝে?
ইসলামের কোথায় আছে শিশুদের সহিংসাতায় ঠেলে ধর্ম রক্ষার কথা, কোথায় আছে আগ্রাসী হয়ে খুনের মেজাজে আল্রাহকে খোজার কথা? কোথায় আছে গরীব মায়ের আদরের সন্তানকে ধর্ম শিক্ষার নামে জঙ্গি প্রশিক্ষন দেয়ার কথা!
এবার আসি সেই ছেলেটির কথায়। কথায় কথা বাড়ে! এ কথা যেমন ঠিক তেমনি কথায় কাজও হয়। যখন হরতালের নামে, ইসলামের নামে গুটিকয়েক জ্ঞানপাপী ধর্ম সভার নামে করে মিথ্যাচার,হরতালের দিনে পুলিশের নিকট থেকে জঙ্গী কায়দায় ছিনিয়ে নেয় অস্ত্র, রাস্তায় ফেলে পিটাতে থাকে, তখন সত্যিই মনে হয় এ দেশে সভ্য মানুসের বড়োই অভাব!
বাংলাদেশ প্রতিদিন ১১/০৭/২০১১ ইং সংখ্যায় জনাব সাদেক খান এর লেখাটি পড়লাম। উনি আমার পিতৃতূল্য ব্যাক্তি। লেখাটি ভালো লাগল। বলা যায়, বেশ ভালো লাগল।মনে পড়ে গেল, সুন্দরবনের গোল পাতার গল্পটি। বাঘ না দেখেও বলা যায় বাঘ দেখেছি। নইলে গোল পাতা নড়লো কিভাবে!
তিনি তার লেখায় দেদারসে বলে গেলেন, হরতাল মানুষ স্বতস্ফুর্ত ভঅবে পালন করেছে। হরতাল সফলও হয়েছে। কারণ রাস্তায় পিকেটার না থাকলেও পুলিশ ছিল। পলিশের উপস্থিতিই প্রমাণ করে হরতালে মানুষের সমর্থন ছিল। সাধু !সাধু! কি চমৎকার ব্যাখ্যা!
তিনি হয়তো অজান্তেই ভুলে গেলেন এটা তাদেরই ডাকা হরতাল যারা, আফগান ফেরত যোদ্ধা, সিরিজ বোমা হামলার নেপথ্য সহযোগী। তারা যে কোন সময়ই যে কোন ঘটনা ঘটাতে পারেন। যার ভুক্তভোগী হবে সাধারণ জনগণ। তাদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ রাস্তায় থাকবে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, আর মূল্যায়িত হবে হরতাল আর হরতালকারীরা। নিজেকে ধণ্য মনে হচ্ছে এই ভেবে- আমরা সেই দেশে বাস করি যে দেশে সূশীল- সভ্যগণ মৌলবাদী গোষ্ঠি, সামপ্রদায়িক শক্তি গুলোকে শক্তি আর সাহস জুগিয়েছে কালে কালে । হয় অর্থ দিয়ে, নয়তো কলমের কালি দিয়ে! খোশ আমদেদ!
মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক ভাইদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তাদের কল্যাণেই এদেশের মানুষ জানতে পারে,সহায়তা পায় নানা অসঙ্গতির হাত থেকে, খবর হয় অন্যায়ের প্রতিবাদে। কিন্তু তারাও যখন মুখ ফিরিয়ে নেয় সেই বোমায় ঝলসানো যুবকের দিক থেকে, মেতে ওঠে একজন চীফ হুইপ কে নিয়ে আর মাওলানা -মোল্লা দের স্পর্ধাকে মৌন ভাবে মেনে নিয়ে কলম কে বুক পকেটে নির্বাসন দেন, তখন মনে হয় আমাদের জাতির কন্ঠ মানবাধির কর্মী আর সাংবাদিক ভাইয়েরা কিসের প্রলোভনে আজ বোবা হলো, মেনে নিল ধর্মান্ধদের চরম চুড়ান্ত দুঃসাহসকে। কিভাবে আজ স্বাধীনতা বিরোধী চক্র বুক চিতিয়ে বলতে পারে এ দেশে কোন যদ্ধাপরাধী নেই! আপনারা না বললে কে বলবে, কে সত্যকে সত্য রুপে প্রকাশ করবে?
যে দল গুলো ২০০৮ এর নির্বাচনের আগে যদ্ধাপরাধী ইস্যুতে সোচ্চার, পারলে জামায়াত ইসলামকে দাফনই করে দেয়, সেই দলগুলোর প্রধানগন আজকাল নাকি ক্ষমতার গন্ধ পাচ্ছেন, জামায়াত-বি.এন.পির হাতে। রাতারাতি যোগাযোগও হচ্ছে বলে আওয়াজ পাই। তাদের কাছে,জিজ্ঞাসা- আপনারা নাকি ধোয়া তুলসী পাতা, গতানুগতিক রাজনীতিকে পরিবর্তনই আপনাদের উদ্দেশ্য। তবে কেন সেই ক্ষমতার লোভ। আপনাদের লজ্জা হওয়া ইচিৎ। টেলিভিশনে টক শো’তে গলাবাজি বন্ধ করেন্।আপনাদের সাধু গিরি বুঝতে এ দেশের আম জনতার বাকি আছে বলে আমার মনে হয়না। সুতরাং সাধু সাবধান!
অথচ আমাদের তথাকথিত মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, রাজনীতিক বৃন্দ এবং হালের পর্দা কাঁপানো টক শো’র যদু-মধু-রাম-শ্যাম, তাদের মুখে এসব নিয়ে কোন কথা যখন বের হয়না, শুধু একজন ফারুক সাহেবকে নিয়ে গুজ্ঞন, তখন মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন জাগে, আমরা আর কবে সভ্য হবো, কবে আমরা মানুষকে মানুষ ভাবতে শিখবো, কবে আমরা সত্যিকার দেশপ্রেমিক হবো! নাকি কুকুরের লেজের মতো সোজা হবো না কোনকালেই!
©somewhere in net ltd.