![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কোহিনুর। জানিনা আমার নামের সঠিক মূল্যায়ন আমি রাখতে পেরেছি কিনা। তবে এটুকু বলবো অন্যায় দেখলে নীরব থাকতে পারিনা। অকপটে সত্যটা মুখের পরে বলে ফেলি। যাই হোক যা বলছিলাম। কিছু হ্যাংলা পুরুষ আছে তাদের বোধ বিচারের বড় অভাব। পথে-ঘাটে বা গাড়ির মধ্যে হ্যাংলামো করা চাই-ই চাই। চলার পথে পাশের সিটে বসা নারীটিকে হ্যাংলা পুরুষগুলো তাদের আপন সম্পত্তি ভেবে বসে নাকি! একলা একা পেয়ে পৌরুষত্ব দেখাতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে কোনটা? আমার বোধগম্য নয়। লম্বা জুব্বা টুপি পরা হুজুররাও এদের থেকে বাদ পড়েনা।
হুজুররা আলে-খাটো হয় জানতাম কিন্তু এতটা আলেখাটো তা জানতাম না। কথাটা নন্দিনীর। আজ দুপুরে পারহাউস মোড় দাঁড়িয়ে আছি ইজিবাইকের জন্য। উল্টো সিটে বসলে প্রচন্ড মাথা ঘুরায়। তাই সব সময় পিছনের সিটে বসার চেষ্টা করি। তাতে করে অনেক সময় অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়। আজও তাই হয়েছে। রাস্তার ওপারে একটা খালি ইজে দাঁড়ানো দেখে ইশারায় ঘুরাতে বললাম। এপার ঘুরে আসতেই হুড়মুড় করে একজন বয়স্কলোক উঠে বসলেন। পাশের সিটে বসলাম আমি। বিপরিত সিটে বসেছে একটা মেয়ে তার পাশের জন টুপি জুব্বা পরা হুজুর টাইফের একজন লোক বসলো। মেয়েটি বাঁকা হয়ে বসেছে। লোকটিও ঠিক একই সিস্টেমে বসেছে।
লক্ষ্য করছি লোকটি হেলতে হেলতে নন্দিনীর পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে দিয়েছে। রাগে গিড়গিড় করছে নন্দিনী। কপাল কুচকাচছে বারবার। মনে হচ্ছে পারলে কষে একটা চড় বসিয়ে দেয় লোকটার নাকে মুখে। কিছুদূর আসতেই আমার সিটে যে লোকটি বসেছিলেন উনি নেমে গেলেন। মেয়ে বলল আপনি ওই সিটে যান। আমি না সূচক মাথা নাড়লাম। বুঝিয়ে দিলাম তার অস্বাভাবিক আচরণ আমি লক্ষ্য করেছি। লোকটা চুপ করে বসে রইল। নন্দিনী বলল আপনি ওই সিটে যাবেন না? সে না সূচক মাথা নাড়ালো লোকটা। মেয়েটিকে ইঙ্গিত দিলাম আমার পাশে এসে বসার জন্য। ঘুরে আসে মেয়েটি। এবার যেন হাঁফ ছাড়লো ও।
এপাশে ঘুরে এসে কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে। এইতো ইজিবাইকে উঠেছি কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছাব গল্লামারী। অপর প্রান্তের লোকটি কি বলল বুঝতে পারলাম না। মেয়েটি বলল মেজজটা খুব খারাপ আছে ভালো লাগছে না । ইচ্ছে করছে কষে একটা চড় মারি। হয়তো অপর প্রান্ত থেকে প্রশ্ন করছিল কেন মেজাজ খারাপ কি হয়েছে।বাড়িতে এসেই সব বলছি। এইতো আর অল্পক্ষণের ভিতরে পৌঁছে যাবো। জানতে চাইলাম, কোথায় তোমার বাড়ি,? জবাবে বলল বটিয়াঘাটা? কোথায় থাকো? যশোর? কি পড়ছো? মেডিকেল। পথে নেমে গেল হুজুর। হুজুরকে নামতে দেখে দাঁত কিটকিট করে বলল যা ভাগ বেয়াদব । মনে মনে হাসলাম আমি। লোকটার এমন ব্যবহার দেখে আমারও ভীষণ রাগ হচ্ছিল। ইচ্ছে করছিল কষে একটা চড় দিতে।
অনেক সময় আমাদেরকে পাহাড় সমান রাগও কন্ট্রোল করতে হয়। আজও তাই করতে হলো। হুজুর যখন ড্রাইভারকে ভাড়া দিচ্ছিল তখন বলেই ফেললাম। শুনুন পথে-ঘাটে চলতে শিখুন। তা না হলে কোন একদিন মার খাবেন । এই মেয়েটা কিছু বলেনি বলে কাল যে কেউ কিছু বলবে না তা কিন্তু নয়। পোশাকই ভদ্রতার পরিচয়। এই পোশাকটাকে সবাই শ্রদ্ধা করে সম্মান করে। অথচ আপনার মত কিছু মানুষদের জন্য এই পোশাকটাকে মানুষ এখন ঘৃণা করা ধরেছে। ভালো হয়ে যান ভালো হতে পয়সা লাগে না। লোকটা হা করে তাকিয়ে রইলো আমার মুখের দিকে। নাদান কিছু বোঝেনা। লোকটা বলল আপা কি বলছেন কিছুই বুঝতে পারছিনা? বললাম কিছুই বুঝছেন না তাইনা রাবিশ কোথাকার। ড্রাইভারকে বললাম ভাই তুমি গাড়ি ছাড়ো। আমার কথা শুনে মেয়েটির মুখে ভোরের সকালের ন্যায় এক চিলতে হাসি ঝিলমিল করে উঠলো। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল জানেন না কতটা খারাপ আমার লাগছিল। আমার যশোর হলে আমি ওকে মেরে বসতাম। এখানে আপনি আর ওই ভদ্রলোক বসা ছিলেন বলে কিছু বলিনি আমি । বললাম এলাকা যেটাই হোক প্রতিবাদ করতে শেখো। অপরাধ যে করে আর অপরাধ যে সহে দুজনেই সম অপরাধী।
পুরুষ যেমন মানুষ, নারীও তেমনি মানুষ। আমরা চুপচাপ থালি বলে পুরুষেরা আমাদেরকে মানুষ বলে গণ্য করতে চায় না। আজ অন্দরমহল ছেড়ে রাজপথে নেমেছে নারী। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও করছে জীবন সংগ্রাম। এ সংগ্রামের কি কোন মূল্য নেই? আমাদের অধিকার আমাদেরকেই আদায় করে নিতে হবে। নিজে সৎ থাকো আর অন্যায়ের প্রতিবাদ করো। আজ তুমি করবে। তোমার দেখে দেখে আরেকজন করবে। তারপর তিনি আরো একজন। এভাবে ১-২-৩ করতে করতে পারলেই হবে। একদিন ওরা আপনা থেকেই সোজা হয়ে যাবে। মেয়েটি বলল আপু আপনার নামটা কি জানতে পারি? হ্যাঁ অবশ্যই। আমি নাবিলা।
শোনো এভাবে মুখ বুজে থাকলে ওরা কোনদিন ওদের শুধরে নেবে না। মেয়েটি বলল আপনার কথায় আজ আমার অনেকটা সাহস হল। আমি আর কোনদিনও চুপ করে থাকব না। কথা বলতে বলতে গল্লামারী এসে পৌছলাম। নেমে দাঁড়ালাম ইজিবাইক থেকে। মেয়েটি বিদায় নিতে নিতে বলল, হয়তো আপনার সাথে আমার আর কোনদিন দেখা হবে না। কিন্তু আপনার কথাগুলো আমার প্রেরণার বাতি হয়ে জ্বলবে আজীবন। ভালো থাকবেন আর আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন আপনার মত সাহসী হয়ে উঠতে পারি।
মেয়েটি চলে গেল তার পথে। সুনীল আকাশের দিকে চোখ তুলে তাকালাম। চোখের তারায় ভেসে উঠলো বেশ কিছু চেনাজানা মুখ। অকপটে নিষ্ঠুর সত্যটাকে মুখের পরে বলে ফেলি বলে অনেকে আমাকে পছন্দ করেনা। অনেকে আমাকে পাগল বলেও সম্বোধন করে। আবার অনেকে মিথ্যা কালিমা লেপন করতেও দ্বিধাবোধ করে না। ভাবে এই কারীমার কালি তো হয়তো দমে যাব আমি। কিন্তু আমি যে অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে শিখিনি। যারা এটা করে আনন্দ পায় তারা জানেনা তাদের অজান্তেই ওরা আমাকে খুলে দিলো আমার আর একটা নতুন সিঁড়ি আমার হাতে তুলে দিলো একটি আগামির সূর্য। আমার বুকের অঙ্কটা আরেকটু দগদগে হলো। চলার পথ আরো বিস্তৃত শুধু প্রসারী হলো। নারী তোমাকেই বলছি নারী, লাঞ্ছনায় আর নত করো না মাথা। আর মেনে নিও না। শালীনতা বজায় রেখে পথ চলো। মনে রেখো প্রতিবাদ মানে কিন্তু উগ্রতা নয়। তোমার উগ্রতায় কেউ জানেনা চলে আঙ্গুর। শত যুগের সিন্ডিকেট ভেঙে জ্বলে ওঠো আপন মহিমায়।
২১/১১/১৯
৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:১৮
এস সুলতানা বলেছেন: পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য জানাই সাধুবাদ বন্ধু
২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:৪৩
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: কিছু হ্যাংলা পুরুষ আছে তাদের বোধ বিচারের বড় অভাব।
পথে-ঘাটে বা গাড়ির মধ্যে হ্যাংলামো করা চাই-ই চাই।
.................................................................................
উপমহাদেশের সব দেশেই এমনতর কমবেশী হয়, তবে,
ইউরোপ, সিঙ্গাপুরে তা হয় না । এখানে রাস্তা ঘাটে মেয়েরা
ছোটবেলার পোষাক পড়তে পসন্দ করে, কিন্ত কেউ ফিরে তাকায় না,
ভুলক্রমে কোন আবাল কিছু করলে জেল জরিমানা নির্ঘাৎ ।
...................................................................................
৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:৫০
এস সুলতানা বলেছেন: প্রাণবন্ত মন্তব্য মুগ্ধ করলো আমাকে। প্রেতণা যোগালো আরো কিছু লেখার। আন্তরিক ধন্যবাদ বন্ধু।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:০০
এস সুলতানা বলেছেন: প্রাণবন্ত মন্তব্য মুগ্ধ করলো আমাকে। প্রেরণা যোগালো আরো কিছু লেখার। আন্তরিক ধন্যবাদ বন্ধু।
৪| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:৫৮
ইসিয়াক বলেছেন: ভালো লাগলে খুব করে ......।লেখা চলুক.....
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:০৩
এস সুলতানা বলেছেন: পাশে থাকুন নিশ্চয় লিখবো
৫| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৫২
নীল আকাশ বলেছেন: অসাধারণ লিখেছেন। নিজের সমস্যা নিজেকেই সামলাতে হয়। নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হয়।
এই সব লোকজন দেখতে হুজুরের মতো হলেও এরা নরাধম। এরা কোন ভাবেই পুরুষ হবার যোগ্য নয়।
দেখা মাত্র প্রতিবাদ করুন। আপনাকে দেখে আরেকজন প্রতিবাদ করতে শিখবে।
মেয়েদের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর নিয়েই লিখেছিলাম এটা, সময় পেলে পড়ে দেখবেনঃ -
গল্পঃ শবনম কাহিনী ৩ - ছেড়া পালে লাগে হাওয়া!
আর আপনি নিয়মিত লিখুন। বিশেষ করে এই ধরনের প্রবন্ধ লেখা। আপনার লেখার স্ট্যাইল বেশ ভালো হচ্ছে দিন দিন।
শুভ কামনা রইল।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৭
এস সুলতানা বলেছেন: নিশ্চই পড়বো আপনার লেখা। আমরা একে অপরের লেখা পড়েই তো, তা থেকে লুফে নিবো নির্যাস। যে নির্যস উপহার দিবে একটি সুষ্ঠু সুন্দর লেখনী। আপনাকে পাশে পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
৬| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৫৫
নীল আকাশ বলেছেন: ছবিটাতে মেয়েটাকে হারিকেনের আলোতে দেখতে ভালো লাগছে না। আরও রিলেভেন্ট / প্রাসঙ্গিক ছবি দেয়ার চেস্টা করবেন।
স্বপ্নের শঙ্খচিল ভাই যেই ছবিটা দিয়েছে সেটা মর্ম হলো "দশে মিলে করি কাজ"
একটা ভালো ছবি অনেক পাঠককে লেখার প্রতি আগ্রহী করে তোলে।
ধন্যবাদ।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৪
এস সুলতানা বলেছেন: ওই ছবিটা দেওয়ার পিছনে কারণ আছে । আর সে কারণটা হলো প্রতিটা মুহুর্তে মেয়েরা ভিবিন্ন ভাবে ইপ্টিজিং এর শিকার হচ্ছে। কোথাও নেই কোন স্বাধীনতা। মেয়ে হয়ে জন্মামার কারণে সে যেন নিজেকেই নিজে ধিক্কার দিচ্ছে । রাতের নিরাবতায় খুঁজি ফিরছে , একটি স্বস্তি, একটি শান্তি, আর না পাওয়া হাজারো প্রশ্নের উত্তর।
৭| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:০১
রাজীব নুর বলেছেন: গল্প সুন্দর হয়েছে।
ভাষা সুন্দর।
আরো গল্প লিখুন।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১৪
এস সুলতানা বলেছেন: বন্ধুর প্রেরণা যদি থাকে সাথে লিখব তব গল্প আমি দিবারাতে।
গল্প নিয়ে হাজির হবো সামুতে। ভাই-বোন আর বন্ধুদের ভালোবাসা নিতে।
অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো
৮| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪১
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সময়ের অভাবে আপনার ব্লগবাড়িতে আসা হয়নি। আমি দুঃখিত। এই গল্পটা পড়লাম। ভালোই লিখেছেন। তবে বিশুদ্ধ গল্প বলতে যা বুঝায়, এই গল্পে তার কিছু বৈশিষ্ট্য অনুপস্থিত। সামাজিক অনাচার, অনৈতিক আচরণ, মূল্যবোধের অভাব ইত্যাদির বিরুদ্ধে আপনার সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সাথে গল্প আপন গতিতে এগিয়ে গেছে। লিখনশৈলী সাবলিল। লিখতে থাকুন। ব্লগের আরো অনেক গল্পকারের তুলনায় আপনি অনেক বেশি উজ্জ্বল।
ধন্যবাদ বোন এস সুলতানা।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২৪
এস সুলতানা বলেছেন: প্রীতিময় শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা
৯| ২৯ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: নারীরা এই আধুনিক যুগে এসেও অসহায়।
২৯ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:৫১
এস সুলতানা বলেছেন: শিকল ভাঙার আপ্রাণ চেষ্টা করেও পারছি না ভাঙতে। পাশে দাঁড়ানোর জন্য জানাই সাধুবাদ বন্ধু
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৩৭
আসোয়াদ লোদি বলেছেন: বাস্তবতা থেকে উৎসারিত জীবন ঘনিষ্ঠ সমস্যার কথা ওঠে এসেছে গল্পে।