নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের দর্পণ

সোহাগ তানভীর সাকিব

বাস্তবতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস।

সোহাগ তানভীর সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

সঙ্গদোষে লোহা ভাসে

১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩৭

এক
দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গনে পড়ালেখা করলেই মানুষ হওয়া যায় না।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মুরাদ হাসানকে ডাক্তার বানাতে পারলেও মানুষ বানাতে পারেনি। ইঞ্জিনিয়ার বানাতে পারলেও রাসেল, অনিক, মেহেদী, জিয়ন, অমিতদের মানুষ বানাতে পারেনি বুয়েট। একসাথে বিশজন শিক্ষার্থীর ফাঁসির আদেশ অন্যকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হয়েছে কিনা আমার জানা নাই। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় হওয়ার পর অনেকেই মন্তব্য করেছেন, বুয়েট আজ কলঙ্ক মুক্ত হলো।
আসলে কি তাই? আমি মনে করি, কলঙ্ক মুক্ত নয় বরং কলঙ্ক যুক্ত হলো। হত্যার দায়ে বিশজনের ফাঁসি ও পাঁচজনের যাবত জীবন কারাদন্ড দেশের অন্যকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর হয়নি কখনও। এই কলঙ্ক বুয়েটকে বহন করতে হবে দীর্ঘদিন। তবে একটা কথা। রাজনৈতিক নোংরামি দূর না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কলঙ্ক বাড়বে, কমবে না।

দুই
একটা হত্যা কাণ্ডের মধ্যদিয়ে নষ্ট হলো ২৬ টি মেধাবীর জীবন। একজন আবরার ফাহাদকে বুয়েট পর্যন্ত পৌঁছাতে বাবা-মায়ের কিন্তু কম কাঠ-খড় পুড়াতে হয়নি। ঠিক তেমনি ভাবে যারা হত্যায় জড়িত বলে প্রমাণিত হয়েছে তারাও বুয়েট শিক্ষার্থী। তাদের বাবা-মাও কষ্ট করে ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারের পাশাপাশি ভালো মানুষ হতে পাঠিয়েছিল দেশসেরা শিক্ষাঙ্গনে। আবরারের ফাহাদের মা যেমন ছেলেকে অকালে হারিয়ে শোকে বিমূর্ত ঠিক তেমনি ভাবে ছেলের ফাঁসির আদেশ হওয়ায় খুনিদের বাবা-মাও চিন্তাগ্রস্থ।
এবার আসি আবরার ফাহাদকে হত্যাকারী সাজাপ্রাপ্ত পঁচিশ বুয়েটিয়ানের দিকে। হত্যাকারী রাসেল, জিয়ন, মেহেদী, অনিক, অমিত, ইফতি, মাজেদ, তোহা,শামীম, সাদাত,অমর্ত্য, মুয়াজ রাফাত, সেতু সহ হত্যাকারীর কেউ কিন্তু স্কুল বা কলেজ জীবনে ব্যাকবেঞ্চের ছাত্র ছিল না। স্কুল বা কলেজ জীবনে তারা বখাটে ছিল এমন তথ্যও হয়তো পাওয়া যাবে না। কারণ কোনো বখাটে ছাত্র বুয়েটে চান্স পায় বলে মনে হয় না। বুয়েটে চান্স পেতে হলে পড়াশোনার মতো পড়াশোনা করেই চান্স পেতে হয়। যারা পড়াশোনার মতো করে তাদের বখাটে হওয়ার সুযোগ নাই। এদের তো খুনি হওয়ার কথা নয়। খুনি হলো কিভাবে?
নোংরা রাজনীতি এইসব মেধাবিদের খুন করতে উৎসাহিত করেছে। কথায় আছে, সঙ্গদোষে লোহা ভাসে। লোহা ধাতুর নিজস্ব ধর্ম অনুসারে পানিতে ভেসে থাকে না। কিন্তু সেই লোহাও ভাসমান ধাতুর সংস্পর্শে এলে ভাসে থাকে বা লোহাকেও পানিতে ভাসিয়ে রাখা যায়। এইসব মেধাবিরা সঙ্গদোষে আজ খুনি হয়ে ফাঁসির আসামি হয়ে জেলখানার কন্ডেমসেলে বন্দি।

তিন
আবরার ফাহাদের খুনিরা কিন্তু বুয়েটে প্রবেশের আগে খুনি হয়নি। বা কাউকে খুন করার চিন্তুাও করেনি। এইসব মেধাবিদের মাথায় যারা খুনের চিন্তুা ঢুকিয়ে দিয়েছে তাদের কিন্তু কিছু হয়নি। তারা ঠিকই ধরা ছোঁয়ার বাহিরে।
বুয়েটিয়ান আবরার ফাহাদ খুন হওয়ার পর বুয়েট কর্তৃপক্ষের বোধগম্য হয়েছে যে, বুয়েটে পড়তে এসে ভালো ইঞ্জিনিয়ার-ই হোক এদের রাজনীতিবিদ হওয়ার দরকার নাই। রাজনীতিবিদ হওয়ার ইচ্ছা থাকলে বুয়েট থেকে বেড়িয়ে গিয়ে হবে।
বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী (পরে বহিস্কৃত) কর্তৃক তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ খুন হওয়ার পর বুয়েটে সকল ধরণের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

চার
দেশের উচ্চ শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতির উদ্দেশ্যে হলো, শিক্ষিত মার্জিত ও রুচিশীল ভবিষ্যত রাজনীতিবীদ যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে থেকে উঠেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চার অভাবে আমাদের দেশেে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে মার্জিত ও রুচিশীল রাজনীতিবিদ ওঠে আসছে না। অবর্ণনীয় ক্ষমতার বলে মুরাদ হাসানের মতো বদমাশ ব্যক্তিরা হচ্ছে হর্তাকর্তা।



-সোহাগ তানভীর
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:০৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলেই আমরা মেধাবী বলি। আসলে এই সংজ্ঞাটা ঠিক না। মেধা বলতে শুধু শুধু বইয়ের জ্ঞান বুঝায় না। লেখাপড়ায় ভালো অনেক ছেলে খারাপ কাজে জড়িত হয়। তবে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এরা জাতে মাতাল তালে ঠিক থাকে।

২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৯

জ্যাকেল বলেছেন: বাংলাদেশের স্কুল কলেজ কাঠামো আমূল বদলে ফেলতে হইবে। শিক্ষা নিতে আসা ছাত্ররা যদি রাজনীতি করে তবে তাদেরকে ক্রেডিট কেড়ে নেওয়া সহ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। আর লেজুড়ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি/সংস্থাগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।
প্রতিবাদ/ইত্যাদি নিজ নিজ কলেজ/স্কুল/ভার্সিটি হইতে হইলে সমস্যা নাই কিন্তু রোড দখল করে লিগ, শিবির, দল করা এইসব শয়তানি বন্ধ করতে হইবে।

৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৩

মোগল সম্রাট বলেছেন: রোডস এন্ড হাইওয়ে, এলজিইআরডির নির্বাহী প্রকৌশলী (এক্স এন) যার আছে তারা যদি ঘুস না খাইতো তাইলে দেশর রাস্তা ঘাট ছয় মাসের মধ্যে নষ্ট হইতো না।
এই ইন্জিনিয়ার মানুষ তৈরির ফ্যাক্টরী নিয়া গবেষণা করন লাগবো।

৪| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট পড়লাম এবং মন্তব্য গুলোও পোড়লাম।
এখন বলুন তাহলে আসল সমস্যা কোথায়?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.