নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যদি পর জনমেও আসিতে হয় তাহলে আমি বার বার আসিবো তোমারই কোলে হে বাংলা মা!!!

এস কাজী

আমি তেমন কেউ নই। শুধু বুকের মাঝে আমার বাংলাদেশকে ধারন করি।

এস কাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

দিল্লীর ডায়েরি-৫ঃ ভারতীয়দের আমরা যেমন ভাবি, আসলে তারা কেমন????

৩১ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:০০

আমার এই লেখাটি পড়ে অনেকের আমাকে ভারত দালাল মনে হতে পারে, না ও হতে পারে। তবে এর জন্য আগেই বলে নিচ্ছি আমার বিশ্লেষণের স্যাম্পল ছিল খুবই অল্প। তাই ভুল হতে পারে। তবে আমি ওদের সাথে মিশে যা জেনেছি তাই লিখছি। আমার এই সিরিজের কিছু লেখা আমার বাকি ব্লগ পোস্টে ঢুঁ মারলে পাওয়া যাবে।

একবার আমার এক সাউথ ইন্ডিয়ান ফ্রেন্ড আমাকে বলল যে তুমি কি জান আমাদের একদম পাড়াগাঁয়ের একজন মানুষের স্বপ্ন কি থাকে!! কিছুটা আন্দাজ করে বলেছিলাম রজনীকান্তের সাথে দেখা করা। সে বলেছিল না, রজনীকান্তকে তারা হৃদয়ে ধারন করে তাই দেখার কিছুই নেই। কিন্তু যদি স্বপ্ন একটা থেকে থাকে তা হল জীবনে একবার দিল্লী ঘুরতে আসতে পারা। আমার এই নিখাদ ভদ্রলোক সাউথ ইন্ডিয়ান বন্ধুর কথাতেই বুঝা যায় দিল্লী কি পরিমান কসমোপলিটান। দিল্লীতে আপনি ইন্ডিয়ান প্রায় সব প্রদেশের মানুষ পাবেন। তবে সবচেয়ে বেশি পাবেন পাঞ্জাবি এর পরে আমাদের দাদাবাবুদের।

সাউথ ইন্ডিয়ান বন্ধু দিয়ে যেহেতু শুরু করেছি তাই সাউথ ইন্ডিয়ানদের দিয়েই শুরু করি। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন সাউথ ইন্ডিয়ার বেশির ভাগ মানুষই হয় নিখাদ ভদ্রলোক। কথা বলতে গেলে হিন্দি ভাষা এড়িয়ে চলা এসব মানুষ আপনি কোন সাহায্য চাইলে সব চেষ্টা চালাবে আপনাকে সাহায্য করার জন্য। না পারলে বিনয়ের সাথে বলে দিবে। আমার এই বন্ধুটি বিশেষভাবে আমার কাছে আলাদা। কারন কিছুদিন আগে চিকিৎসার জন্য ভেলরে গিয়ে আমি ওর কাছে আর ওর পরিবারের কাছে যে হস্পিটালিটি পেয়েছি তা একদিনের গল্পে শেষ হবেনা। স্কিনটা প্রাকৃতিক কারনে কালো হলেও এদের মন মোটামুটি সাদা।

এবার আসি পাঞ্জাবিদের কথায়। যা বলার মুখের উপর বলে দেয়া টাইপের মানুষ এরা। কোন ধরনের পিছনের কথায় এরা বিশ্বাসী নয়। দিল্লীর বেশির ভাগ মাকান মালিক (বাড়িওয়ালা) হল পাঞ্জাবিরা। ভীষণ পার্টি প্রিয় এসব মানুষ বিয়েসাদিতে শোঅফ করতে সেই লেভেলের পছন্দ করে। অমুকের ছেলের বিয়েতে ১ কোটি খরচ করেছে তাই আমার মেয়ের বিয়েতে দেড় কোটি খরচ না করলে মান সম্মান থাকবেনা টাইপের চিন্তা ভাবনা এদের। আমাদের দেশে বাড়িতে মেহমান আসলে যেমন একটা কথা প্রচলন আছে "আসছেন আপনার ইচ্ছায় যাবেন আমার ইচ্ছায়" ইন্ডিয়ানদের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটা মেনে চলে পাঞ্জাবিরা। প্রচুর আতিথেয়তাপরায়ণ হয় এরা। আর পাঞ্জাবিদের বেশিরভাগের বাড়িতে ব্যক্তিগত পানশালা থাকে যেখানে বাপ ছেলে মেয়ে সবাই একসাথে বসে পান করে। এরকম এক পাঞ্জাবির বাসায় দাওয়াতের গল্প আরেকদিন লিখব।

মধ্যপ্রদেশ বা মুম্বাইয়ান কোন বন্ধু পরিচিত কেউ আমার ছিল না বলে এদের সম্পর্কে কিছু বলতে পারছিনা। তবে এরা মানুষ হিসেবে কিছুটা ইগো সম্পন্ন হয় বলে জেনেছি।

রাজস্থান এর মানুষরা বলতে গেলে এক প্রকার মাটির মানুষ টাইপের। এরা সবকিছুতেই অবাক হবে। আপনি ভাল ব্যবহার করলেও আবার খারাপ ব্যবহার করলেও। গোবেচারা নিরীহ টাইপের মানুষ হয় এরা। ঝগড়া ফ্যাসাদে একদম নেই। কথা বলবে হেসে হেসে। দুইজনের সিটওয়ালা ট্রেনে দাঁড়িয়ে থাকা সবাইকে বসানোর চেষ্টা করা টাইপের মানুষ এরা।

কাশ্মীরিরা জন্মগত ভাবেই মেজাজি। এরা একটু রেভলুশনারি টাইপের হয়। ভালোদের সাথে ভাল, খারাপের সাথে খারাপ। তবে একটা কথা স্পষ্ট জানতে পারেন সেটা হল কাশ্মীরিরা নিজেদেরকে কখনই ইন্ডিয়ান মনে করে না। আর ওদের পাকি প্রীতি সর্বজন স্বীকৃত।

নর্থ ইন্ডিয়ানরা হয় মিছকা টাইপের। চিপা দিয়া শয়তানি করে কোন আওয়াজ করবেনা। খালি তামাশা দেখবে। আর এরা খাটতে পারে খুব। আবেগ টাবেগ একটু কম। আমার এক বাংলাদেশি বন্ধুর রুমমেট ছিল ত্রিপুরার। তাদের মধ্যে কখনও বনিবনা হয়নি। প্রায় শুনতাম আমার ওই বন্ধুটির টাকা খোয়া যেত। কিন্তু কেউ জানতোনা এই টাকা কই যেত!!!

গুন্ডা মাওয়ালি টাইপের মানুষ বেশি পাবেন বিহারে। এরা হয় প্রচণ্ড বিয়াদব টাইপের। না সবাই না। তবে উঠতি বয়সের পোলারা সব এরকমই হয়। আমাদের দেশে যেমন একটা শ্রেণী আছে কিছু হয়লেই "এই ভাইরে ফোন দে, ওই তুই অগরে রেডি কর, আইজ দেইখা লমু ওগোরে" এই টাইপের হয় বিহারের মানুষ। ওদের দেশেও ওরা বিহারি আলাদা জাত হিসেবে পরিচিত। তবে জাওহারলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়য়ের বেশির ভাগ বামপন্থীনেতাদের কাতারে দাদাবাবুদের পর তাদেরই অবস্থান।

দিল্লীবাসী বলতে যেটা বুঝায় সেটা আসলে একটা মিক্সড জাতি। কোর দিল্লিয়ান আসলে খুব কম। পুরা ইন্ডিয়ার মিশ্রণেই হল দিল্লীবাসী। তবে দিল্লীবাসীদের ক্ষেত্রে যেটা সত্য সেটা হল এরা হয় স্বার্থপর টাইপের। নিজেরটা তারা ১০০ভাগ বুঝে নেবে। অন্যের কথা ভাবার সময় তাদের কম। তবে দিল্লীর যে ব্যপারটা অবাক করার সেটা হল দিল্লী খুব লিবারেল। ধর্মীয় ভিত্তিতে কাউকে আলাদা করে দেখা হয়না। দিল্লীর মানুষরা এসব নিয়ে একদম মাথা ঘামায় না। তবে এদের ক্ষেত্রে যেটা সত্য সেটা হল বলতে গেলে ৯০ ভাগ দিল্লীবাসীই (মেট্রোপলিটান এলাকা) টাকা পয়সায় বড়লোক। আর সে জন্যই বোধহয় দক্ষিন এশিয়ার সবচেয়ে কস্টলি সিটি বলা হয় দিল্লীকে।

এক ট্যাক্সিওয়ালা ১০০ টাকার ভাড়া চাইলো ৫০০ টাকা। তাকে বললাম দেখ তোমরা অন্যদেশ থেকে আসা মানুষদের সাথে এরকম বাজে বিহেভ কর কেন!! আমাদের দেশের কোন ট্যাক্সি ড্রাইভার হল এই প্রশ্ন শুনে অন্তত লজ্জা পাবে বলে আমার বিশ্বাস। কিন্তু ওই ট্যাক্সিওয়ালা আমাকে নির্লজ্জের মত বলল অন্যদেশ থেকে এখানে আস কেন দাদা, না এসে থাকতে পারনা??? বলেন তো এই নির্লজ্জ টাইপের মানুষগুলো ইন্ডিয়ার কোথায় পাবেন?? ঠিক ধরেছেন। এরা হল কলিকাতার দাদাবাবু। এদের কাছে আপনি এরকম বিহেভই পাবেন, অন্তত ৮ থেকে ১০ বার কলকাতা সফরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। তবে ইন্ডিয়ার মধ্যে সফিস্তিকেটেড হিসেবে এরাই পরিচিত। ইন্ডিয়ার প্রথম সারির যত অর্থনীতিবিদ আছে সব এই কলকাতা থেকেই, হালের প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত। এরা বাকি ইন্ডিয়ানদের কাছে জমিদার টাইপের মানুষ হিসেবে পরিচিত। সাহিত্য সংস্কৃতিতে ভরপুর হওয়ায় বাকি ইন্ডিয়ানরাও এটা মেনে থাকে। তবে বাকি ইন্ডিয়ান রা এদের কম পছন্দ করে। এরাও বাকি ইন্ডিয়ানদের খ্যাঁত মনে করে। কলকাতার লোকরা মানুষ হিসেবে খুবই আত্নকেন্দ্রিক হয়। নিজেদের আপার ক্লাসের লোক ভাবতে এরা খুব পছন্দ করে। আর পাঞ্জাবিদের সাথে একদম যায়না কল্কাতান্দের। ঠিক উলটো টাও সত্য। পাঞ্জাবিরাও এদের একদম পছন্দ করেনা।

উপরের লেখা থেকে ইন্ডিয়ান সম্পর্কে একটা ধারনা আপনি হয়তো এতক্ষণে পেয়েছেন। তবে যে ব্যাপারটা এখনও ধরতে পারেননি সেটা হল একটা জায়গায় পুরো ইন্ডিয়ার লোক এক। আর সেটা হল দেশপ্রেম। সেটার ক্ষেত্রে কোন ছাড় নেই। দেশ প্রেমের প্রশ্নে তারা একসাথে ঝাপিয়ে পড়বে সেটা হোক কলকাতান অথবা পাঞ্জাবি একসাথে।

বিঃদ্র- আগেই বলেছি লেখাটার ক্ষেত্রে স্যাম্পল হিসেবে আমি যাদের সাথে মিশেছি তাদের দিয়েই বিচার করেছি। ভিন্নতা অবশ্যই থাকতে পারে।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৮

শামছুল ইসলাম বলেছেন: এ বছরের ফেব্রুয়ারীতে দিল্লী গিয়ে ছিলাম, ৭ দিনের জন্য। জয়পুর, আগ্রাও দেখলাম। অনেক দেশী-বিদেশী পর্যটকও দেখলাম। দর্শনীয় স্থান হিসাবে সে গুলোর স্থানও অনেক উপরে, কিন্তু মানুষ পেলাম হাতে গোনা, বাকীরা...সে কথা একদিন বলবো ভাবছি সময় পেলে।
আপনার সাথে একটা বিষয়ে আমি এক মত:
//উপরের লেখা থেকে ইন্ডিয়ান সম্পর্কে একটা ধারনা আপনি হয়তো এতক্ষণে পেয়েছেন। তবে যে ব্যাপারটা এখনও ধরতে পারেননি সেটা হল একটা জায়গায় পুরো ইন্ডিয়ার লোক এক। আর সেটা হল দেশপ্রেম। সেটার ক্ষেত্রে কোন ছাড় নেই। দেশ প্রেমের প্রশ্নে তারা একসাথে ঝাপিয়ে পড়বে সেটা হোক কলকাতান অথবা পাঞ্জাবি একসাথে। //
শুভেচ্ছা রইল।
প্রিয়তে নিলাম।

০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১০:২০

এস কাজী বলেছেন: পর্যটন এলাকাগুলোর অবস্থা অবশ্য খারাপ। কোন ধরনের ভাল মানুষ পাবেন না। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ৯:৪৪

ডঃ আলম বলেছেন: এদের সবচেয়ে ভালোটা হোলো এক পিস শুয়রের বাচ্চা আর বাকি গুলা সব বেজম্মা, আমার পিএইচডির চার বছরে এমন কোনো দিন নাই, এরা ঝামেলা করে নাই। আমার ল্যাবে ৮ টা ছিলো, এগুলোকে হাড়ে হাড়ে চিনি।

০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১০:২৪

এস কাজী বলেছেন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এরা একটু হিংসুটে হয়। ভাগ্যবশত আমি কম পেয়েছি। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

৩| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১:০৩

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: আপনার লেখায় আর পাঠকের মন্তব্যে ধারনা পেলাম ইন্ডিয়ানদের সম্পর্কে !!!
আমার ব্যক্তিগত কোন অভিজ্ঞতা ছিল না। ইন্ডিয়া গিয়েছি একাধিকবার। কিন্তু বেশী সময় অবস্থান করিনি।
যা হোক, বুঝতে পারলাম, ওদের থেকে ১০০ হাত দূরে থাকতে হবে।:)
অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে।

০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১:১২

এস কাজী বলেছেন: আমার কিন্তু অনেক ভাল অভিজ্ঞতাও আছে। দুজন ফ্রেন্দ আছে এখনও নিজে থেকে আমাকে কল দেয়। বিশেয় দিনে গিফ্ট পাঠায় :) :)

৪| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১:৩৫

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: এমনটা নিপাতনে সিদ্ধ!!!!

৫| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ২:১৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: মুখে হাসি,মনে বিষ।। অন্ততঃ কর্মক্ষেত্রে বা কার্যহাসিলের ক্ষেত্রে।। এরা গোড়া কেে আগায় পানি দেয়।। অন্ততঃ আমর ২৩বছরের প্রবসজীবনের অভিজ্ঞতা যা বলে।। তবে হাতের পাঁচ আঙ্গুল যেমন সমান হয় না,তেমনি এের মাঝেও বন্ধুবৎসল অনেকেই আছেন।।

০২ রা জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩১

এস কাজী বলেছেন: ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য

৬| ০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ১:০০

গোয়েন্দাপ্রধান বলেছেন: আমার সরাসরি কোন অভিজ্ঞতা নাই
তবে ওদের চ্যাচড়ামি ক্রিকেট নিয়ে এদেশ নিয়ে কটুক্তি দেখে ওদের ঘৃণা করি।
আর আমার পরিচিত যারা কর্ম ক্ষেত্রে ইন্দিয়ান দের সাথে কাজ করেছে সবাই জানে এরা হইল হারামির বাচ্চা।
তবে ১০০ কোটির মাঝে সবাই ত এমন নয়।
তবে ওদের জাতিগত বৈষিষ্ট্যই এমন।
আর ওরা ওদের দেশে ইদানিং এদেশ থেকে ছাত্র নিচ্ছে।যারা ব্লগে পেপার এ ওদের সম্পর্কে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে।
গত বছর একটা ছাত্রদের ডেলিগেশন ওদের প্রধান্মন্ত্রি প্রেসিডেন্ট সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঘুরে এসে পত্রিকায় তাদের নিয়ে উচ্ছ্বাস করেছে।
মমতা মোদি তিস্তা পদ্মা এসব দেখার পরও বাংলাদেশিরা আমাদের বর্তমানের জাত শত্রু দের সম্পরকে ভাল বলে কেন?কেন অনেকেই বলে আমারা যা ভাবি ওরা তা নয়।

৭| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪২

ইমরান আশফাক বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষন।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:০৩

এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ ইমরান আশফাক ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.