![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তেমন কেউ নই। শুধু বুকের মাঝে আমার বাংলাদেশকে ধারন করি।
১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০১১। প্রথমবারের মত ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর ক্রিকেট বিশ্বকাপ বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশ মুখোমুখি ভারতের। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ভারতের সেই সময়ের ওপেনার বিরেন্দ্র শেবাগ ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশ একটি অরডিনারি দল। আর তা যেন প্রমান করতেই সেদিন সবচেয়ে বেশি তৎপর ছিল বাংলাদেশ দল। প্রথমে ব্যাট করে ভারত গড়ল ৩৭০ রানের বিশাল স্কোর। যেখানে সেই সেবাগই করল ১৭৫ রান। ফলাফল বাংলাদেশ ৮৭ রানে পরাজিত।
একবার ভাবুন তো আপনি ম্যাচটি দেখছেন ভারতে বসে ভারতের এক ঝাক উগ্র সমর্থকের মাঝখানে কেমন হতে পারে ব্যাপারটি!!!!! যেখানে এর আগের বিশ্বকাপে ভারত্মাতার নাকের জল চোখের জল এক করে দিয়েই এই বাংলাদেশ ভারতকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দিয়েছিল!!!!
আমরা ৪জন বাংলাদেশি আর সাথে হোস্টেল এর জনা পঞ্চাশেক ইন্ডিয়ান যার মধ্যে প্রায় ৩০ জন বিহারি যাদেরকে আমার আগের লেখায় ভারতের সবচেয়ে বিয়াদব এলাকার মানুষ বলেছিলাম। সেদিনের সেই অপমান আজও আমার মাথায় ঘুরে। গালাগালি আক্রমন করে কথা বলা কোন কিছুই বাদ যায়নি সেদিন। মিনোজ মনে করে সেদিন সব সহ্য করেছিলাম। প্রায় অনেকদিন ঘুমোতে পারিনি সেই কথা মনে করে। তবে বিশ্বাস করেছিলাম একদিন না একদিন সেই অপমানের প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ অবশ্যই পাব। এবং অবশেষে ১৬ই মার্চ ২০১২ অর্থাৎ এক বছর এক মাস পর সেই সুযোগ এনে দিল আমার দেশের সোনার ছেলেরা।
সেদিন ম্যাচ শুরু হওয়ার পর হোস্টেলের টিভি রুমের পুরোটাই দখল করে নিল ইন্ডিয়ানরা। আমাদের হোস্টেলের অর্ধেক হোটেল হওয়ায় বাইরের অনেক ইন্ডিয়ান ও যোগ দিল তাদের সাথে। আমরা জনা বিশেক বাংলাদেশি টিভির আশেপাশে তো দুরের কথা পুরো টিভি রুমের আশেপাশেও থাকতে পারলাম না। তার উপর সেদিন তাদের ক্রিকেট ঈশ্বর করলেন শততম সেঞ্চুরি। তাদের কে কি আর ধরা যায়!!! তবে শচিনের সেই স্বার্থপরতায় মোড়ানো সেঞ্চুরি (১৪৭ বলে ১১৪) দেখেই কেন জানি বুঝে ফেলেছিলাম আজকে বাংলাদেশ জিতবে। বাংলাদেশ ব্যাটিংও শুরু করল ওইভাবে। তামিম ওই সময় একটু প্রেশারে থাকায় একটু ধীর ভাবে স্টার্ট করলেন। তবে মিরাকল টা ঘটল যখন জহির ৫০ পূর্ণ করল। আমার এক নেপালি বন্ধু আমাকে এসে বলল “ডুড ডোন্ট ওরি, ইয়উ আর গোয়িং টু ওয়িন অ্যান্ড অল দোজ সিটস আর গোয়িং টু বি এভাকুইয়েট ফর ইয়উ গাইজ”।
এর পর ক্রিজে আসলেন বাংলাদেশের জান বাংলাদেশের প্রান সাকিব আল হাসান। স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে খেলে গেলেন ৩১ বলে ৪৯ রানের মারকাটারি এক ইনিংস। পুরো বিশ্ব সেদিন দেখেছে “বেনিফিট অব ডাউট বলতে কিছু নেই সব মিডিয়ার সৃষ্টি” প্রমান করে দিয়ে কি নির্লজ্জ ভাবে শ্রীলঙ্কান আম্পায়ার পালিয়াগুরুগে সাকিবকে স্ট্যাম্পিং এ আউট দিয়েছিলেন। মুশফিক আসলেন ক্রিজে। এসেই ইন্সাইড আউটে চার মারার সাথে সাথেই আস্তে আস্তে খালি হতে লাগলো টিভি রুম। সুনসান নীরবতা নেমে আসলো। সবাই ভুলে গেল ক্রিকেট ঈশ্বর আজ শততম সেঞ্চুরি করেছেন। আস্তে আস্তে সামনের সিট গুলো আমাদের দখলে আসতে শুরু করল এবং এক পর্যায়ে আমরা সব বাংলাদেশি আর কিছু নেপালি বাংলাদেশি সমর্থক ছাড়া কাউকে দেখতে পেলাম না। দুএকজন ইন্ডিয়ান কে জোর করে ধরে রাখতে চাইলাম। একজন শেষ পর্যন্ত বলল বন্দুক থেকে গুলি বের হওয়ার আগেই নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ায় বুদ্ধিমানের কাজ। পরে মাহামুদুল্লাহ চার মেরে ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত করার সাথে সাথে আমরা ফেটে পড়লাম। আর সৃষ্টি করলাম এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের।
বাংলাদেশের পতাকা হাতে পুরো হোস্টেলে আমরা প্রায় ২০জন বাংলাদেশি পৈশাচিক আনন্দ করলাম। ইন্ডিয়াতে বসে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে জয় উদযাপন করলাম মিছিল করে। এটাই প্রথম কোন বাংলাদেশিদের মিছিল ইন্ডিয়ার বুকে।তাই সিউরলি আমি মনে করে এটা ইতিহাস। আর আমি গর্বিত যে আমি সেই ইতিহাসের অংশ যেখানে আমি সামনে থেকেই মিছিল ধরেছিলাম।
মিছিল পরবর্তী ছবি!!
আজ অনেকদিন পর সেই স্মৃতি মনে করার কারন নিশ্চয় ধরতে পেরেছেন!!!! আজ বাংলাদেশ আর মিনোজ নয়, কারো চোখ রাঙ্গানি কে পরোয়া করেনা। দাঁতে দাঁত চেপে পাল্টা জবাব দেয় সবকিছুর। রমিজ রাজারা এক সময় অপমান করে কথা বলত। আর এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে কথা বলতে ওদের গলা ধরে যায়, গলা ধরে যায় মাঞ্জেরকারদের। দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ।
সো রেস্ট অব দ্যা ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড!! বি স্কিয়ারড বি ভেরি স্কিয়ারড!!! কজ
“টাইগার্স আর হান্টিং, প্লিজ এভাকুয়েট!!!!”
২৩ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৯:৩৫
এস কাজী বলেছেন: হ্যাঁ আমরা মাঠেই দেখিয়ে দিয়েছি। ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য।
২| ২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ১২:৩৯
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: সাবাশ বাংলাদেশ, যাও এগিয়ে...।
কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: জবাব দেবার সময় এখন এসেছে আমাদের! আমরা কোন গলাবাজি বা চাপাবাজি করব না, মাঠেই দেখিয়ে দেব।দেব কি, দেখিয়ে দিয়েছি!!!
আরেকটা ঘটনা, যে সুধীরের উপর হামলা নিয়ে সারা দুনিয়ায় নিউজ করে দেখাল এবিপি নিউজ; আজ রাতের বাংলাদেশের সময় চ্যানেলের খেলার সময় প্রোগ্রামের হাইলাইটে এইমাত্র সুধীরের বক্তব্য পাওয়া গেল। কেউ তার উপর হামলা করে নাই।
২৩ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৯:৪০
এস কাজী বলেছেন: প্রথম নিউজ টা আসে এবিপি চ্যানেলে। যেটি আনন্দবাজার পত্রিকার চ্যানেল। মিথ্যা নিউজ ছড়ায় এরা। শুধু সুধীরের টা না, ওরা বলেছে মুস্তাফিজ কে নিয়ে মাশরাফি ধনির কছে গেছে। আসলে যায়নি। আবার বলেছে ভারতের চাপে মুস্তাফিজ কে জরিমানা করা হয়েছে আম্পায়ার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি। অটাও ডাহা মিথ্যা। আম্পায়ার মুস্তাফিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল এবং নিয়ম অনুযায়ী মুস্তাফিজকে জরিমানা করা হয়েছে।
ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য।
৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৫০
বোকামানুষ বলেছেন: আমরা কারো থেকে কম নই
২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৩৩
এস কাজী বলেছেন: ইয়েস কারো থেকে কম নই
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:৪৭
কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: আপনার সমৃদ্ধ স্মৃতিকথা খুব খুউব ভাল লাগল।
জবাব দেবার সময় এখন এসেছে আমাদের!
আমরা কোন গলাবাজি বা চাপাবাজি করব না, মাঠেই দেখিয়ে দেব।দেব কি, দেখিয়ে দিয়েছি!!!
অনেক শুভেচ্ছা, ভাল থাকবেন।