![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তেমন কেউ নই। শুধু বুকের মাঝে আমার বাংলাদেশকে ধারন করি।
এক সময় সবার পছন্দের একটি বার ছিল। বার’টির নাম শুক্রবার। সেই শুক্রবারে থাকতো না কারো স্কুল বা মাদ্রাসায় (অথবা অন্যান্য ধর্মীয় শিক্ষা) যাওয়ার তাড়া। না ছিল না কোন হোম টিউটর অথবা ঘুম থেকে উঠার তাড়া। মায়েরাও সেদিন তাদের সন্তানদের ঘুম থেকে তারাতারি উঠার তাড়া দিত না। সেই শুক্রবারের বেশির ভাগেরই প্লান থাকতো খেলাধুলা। সকালে এক সেশন কেটে যেত ব্যাট আর বল নিয়ে মাঠে। অথবা ফুটবল নিয়ে সদ্য কেটে ফেলা ধানের কাঁদা মাঠে কাঁদা মাখামাখিময় ফুটবল। তারপর ময়লায় মাখামাখি করে আসা জামা কাপড় নিয়ে পুকুরে লাফ। তারপর ইচ্ছেমত সাঁতার কাটা। পুকুরে আবার “হাইড এন্ড সিক” খেলা। তারপর মুরুব্বিদের তাড়া খেয়ে পুকুর থেকে উঠা। শুক্রবারের জুমা নামাজ পড়তে যাওয়া।
সেই শুক্রবারের বিকেলটা ছিল আরও সুন্দর। শুক্রবারের বিটিভির সিনেমা (আমাদের গ্রামের দিকে অনেকে বই বা ফিলিম বলত, এখনো বলে)নামে একটা ব্যাপার ছিল। সেই সিনেমার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করা। সিনেমার আগে “টিউনিজ মিউটেন নিনজা টারটলস” নামে একটা কার্টুন দেখা। আর সিনেমা শুরু হতেই উত্তেজনা। উত্তেজনার বসে অনেকেই সিনেমার মাঝখানে কয়টা বিজ্ঞাপন দেয় সেটা গুনা, এমনকি অ্যাকশন মুভি হলে কয়টা মারপিট হত সেটা পর্যন্ত গুনা। সেই সব সিনেমায় অদ্ভুত সেন্সর ছিল। কোন ইন্তেন্স দৃশ্য আসলে দুটি ফুলের মাখামাখি দেখিয়ে আসল দৃশ্য গোপন করা আবার হুহু করে হতাশার আহাজারি শুনা যেত যখন সিনেমার মাঝখানে বিদ্যুৎ চলে যেত
সেই সিনেমা শেষ হলেও রেষ রয়ে যেত অনেক্ষন। কেউ কেউ হয়তো আবার রাস্তার ধারে বসে গবেষণায় বসে যেত “রুবেলের মাইরটা দেখসস বেটা, সেই সেই”। অথবা দেখতাম আবেগের বসে কেউ কেউ লুকিয়ে চোখের পানি মুছতে।
সেই শুক্রবারের সন্ধ্যায় পড়ার তেমন চাপ থাকতো না। হালকা ক্লাসের পড়া রেডি করে খেয়ে দেয়ে অনেকে বসে পড়ত “আলিফ লাইলা” (এখন ভাবি হায়রে মঞ্চ নাটক ক্যামনে দেখার জন্য বসে থাকতাম ) দেখার জন্য। সেই আলিফ লাইলাতে ছিল জিঙ্গালু জুংলা। ছিল মালিকা হামিরা। মালিকা হামিরার হাতে ছিল “আক্রাব” নামে এক বিষধর কীট। সেই আক্রাব ধরে “আক্রাব আক্রাব” করে আওয়াজ দিলে বের হত বিষ। সেই “আক্রাব” তখন আবার মার্কেটেও পাওয়া যেত। সেই সব শুক্রবারে রাত ৯টায় মাঝে মাঝে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি থাকতো। ইত্যাদিতে নানা নাতির পর্ব থাকতো। তা দেখে আমরা হাসতাম। হানিফ সংকেতের গাওয়া প্যারডি গান থাকতো। ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান শুভেচ্ছা থাকতো, সেখানে পাপ্পু নামে একজনের কমেডি থাকতো। সেই সব মাগাজিন অনুষ্ঠানের মাঝে ছিল না বিজ্ঞাপনের দৌড়াত্ব। আবার মাঝে মাঝে মাসের একদিন শুক্রবারের রাত ১০টার সংবাদের পর থাকতো ছায়াছবির গান নিয়ে অনুষ্ঠান “ছায়াছন্দ”। বড়দের চোখ ফাঁকি দিয়ে ছোটরা সেই ছায়াছন্দ দেখত।
সেই শুক্রবার গুলোতে সমস্ত প্রকার সুখ-শান্তি,মজা নিয়ে আমরা ঘুমাতে যেতাম।
কালের বিবর্তনে সব কিছুর পরিবর্তন ঘটে গেছে। সেই শুক্রবার ও পরিবর্তন হয়ে আজ হয়ে গেছে “FRIDAY-The Weekend”
আজকালও ফ্রাই ডে তে কেউ তেমন সকালে উঠতে চাই না। তবে সকাল হয় ফেসবুকে "হ্যাপি ফ্রাই ডে" স্ট্যাটাস এর মাধ্যমে। আগের মত মাঠে যাওয়া হয়না। কারন ঘরে কি বোর্ড বা জয়স্তিক এর মাথায় যে সব খেলা। তার উপর মাঠ ঘাট সব দখল করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে গেছে বড় বড় দালান। বিকেল গুলো আগের মত নেই। বিভিন্ন চ্যানেলের ভিড়ে হারিয়ে গেছে বিটিভির বাংলা সিনেমা। হয়তো এখন ওই সময় কেউ বসে বসে চ্যানেল ঘুরায় অথবা ফেসবুকিং করে অথবা কেউ রেস্টুরেন্টে বসে "চেক ইন" দেয়। রাতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানও দেখা হয়না। চ্যানেল ঘুরাতে ঘুরাতে কোন এক চ্যানেলে স্থির হলেও বিজ্ঞাপনের জ্বালায় চলে যেতে হয় অন্য চ্যানেলে। ছায়াছন্দও আর দেখা হয়না হাজারো মিউজিক চ্যানেলের ভিড়ে।
আজকাল ফ্রাই ডে গুলোতে অন্যদিনের মত হতাশা নিয়ে পরের দিন কর্মক্ষেত্রে ঝাপিয়ে পড়ার চিন্তা নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।
সো হ্যাপি “FRIDAY- The Weekend” এর অগ্রিম শুভেচ্ছা সবাইকে।
বিদ্রঃ একটি আজাইরা পোস্ট
০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:১৬
এস কাজী বলেছেন: আমিও কুজেপিরি সেই শুক্কুরবার
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৫২
মিজভী বাপ্পা বলেছেন: আগের শুক্কুর বার ছিলো সবাই মিলে মজা করা আর এখন ব্যস্ততা থেকে রেহাই পেতে হলেও আবেদন দেয়া লাগে শুক্র বারের সে আমেজ আর নেই
০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৫৪
এস কাজী বলেছেন: ঠিক বলেছেন। এখন শুক্রবার গুলো কেমন ব্যস্ত ব্যস্ত। রেহাই নেই নাগরিক ব্যস্ততার এই শুক্রবারেও।
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৪০
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: আসলেই, কোথায় গ্যালো সেই স্বপ্ন আর কল্পনার শুক্রবার। আজকাল আলাদা বার বইলা কিছু মনে হয়না। জাস্ট তারিখ হইলেই হইতো।
০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:১১
এস কাজী বলেছেন: জি ভাউ, আজকাল সব দিন সমান। কোন আলাদা দিন নেই। আলাদা ফুরসত নেই
৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:২০
বোকামানুষ বলেছেন: অনেক পুরনো কথা মনে পড়ে গেল
০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:১৩
এস কাজী বলেছেন: হুম আমার ও মনে পড়ে গেসিলো। সেই চিন্তা থেকে লিখলাম। ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আহা!
কুতায় হারিয়ে গেল সেই শুক্কুরবার!!!!